মাগুরার শালিখায় কোভিড-পরবর্তী সময়ে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা। সামাজিক অস্থিরতা, ব্যক্তিগত স্বার্থপরতা, উচ্চবিলাসিতা, বনিবনা না হওয়া, পরকীয়া, মতভেদসহ নানা কারণে ভেঙে যাচ্ছে দাম্পত্য সম্পর্ক। শালিখার আড়পাড়া ইউনিয়নের মুসলিম বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রার রোকনুজ্জামান বলেন, অধিকাংশ বিয়ে বিচ্ছেদের কারণ পরকীয়া সম্পর্ক। এছাড়া পরিবারে বনিবনার অভাব, স্বামীর দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকাসহ নানা কারণে ঘটছে এ বিচ্ছেদের ঘটনা।
শালিখা উপজেলার মুসলিম বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রারের দেওয়া এক পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, নারীদের তরফ থেকেই দেওয়া হচ্ছে অধিকাংশ তালাকের নোটিস, যাদের বয়স ২০-৩০ এর মধ্যে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অর্থাৎ গত এগারো মাসে ধনেশ্বরগাতি ইউনিয়নে ১৬, তালখড়ি ইউনিয়নে ৩০, শতখালী ইউনিয়নে ২৯, শালিখা ইউনিয়নে ১৯, বুনাগাতি ইউনিয়নে ২৫, আড়পাড়ায় ৪৭, গঙ্গারামপুর ইউনিয়নে ১৯টি বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ উপজেলার সাত ইউনিয়নে ১৮৫টি তালাকের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ৫৮২টি বিয়ে বা নিকাহ সম্পন্ন হয়েছিল।
শালিখায় বিয়ে বিচ্ছেদের ফলে স্বামী-স্ত্রী পৃথক থাকছেন। বাড়ছে মানসিক সংকট। সন্তানরা অনাদর, অবহেলার শিকার হচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাদের শৈশব। ভেঙে যাচ্ছে পারিবারিক বন্ধন। বিরূপ প্রভাব পড়ছে সমাজে। তালাকের ঘটনাগুলোর কারণ সব একই রকম।
আড়পাড়া ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামে সম্প্রতি স্বামীকে তালাক দিয়েছেন রেবেকা (ছন্মনাম)। তিনি জানান, স্বামী মাদকাসক্ত। আয় রোজগার করেন না। কথায় কথায় মারধর করেন। তাই স্বামীকে তালাক দিয়েছেন তিনি। তালখড়ি ইউনিয়নের ছান্দড়া গ্রামে স্ত্রীর তালাকের শিকার হয়েছেন আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানান, তার স্ত্রী ফেসবুক আসক্ত। স্ত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ায় সে ছেড়ে চলে যায়। এক মাস পরে ডিভোর্স লেটার পাঠায়।
এ ব্যাপারে ইন্দ্রনীল অ্যাসোসিয়েটের প্রধান সংগঠক ও গবেষক ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী নারী উন্নয়নে যতগুলো পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন তা যদি গুরুত্বের সঙ্গে বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে একদিকে নারীরা যেমন তাদের অধিকার পাবেন অপরদিকে এদের মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদের প্রবণতা হ্রাস পাবে। তালাকের ঘটনা বাড়ার কারণ জানতে চাইলে উপজেলা কোর্ট মসজিদের খতিব মোশারফ হোসেন কাসেমী বলেন, ইসলামিক বিষয়ে অজ্ঞতা, পরকীয়া এবং ইসলামি বিধি নিষেধ না মানার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ বেশি হচ্ছে।
মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩ , ৬ অগ্রায়ন ১৪৩০, ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫
লক্ষ্মণ চন্দ্র মন্ডল, শালিখা (মাগুরা)
মাগুরার শালিখায় কোভিড-পরবর্তী সময়ে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা। সামাজিক অস্থিরতা, ব্যক্তিগত স্বার্থপরতা, উচ্চবিলাসিতা, বনিবনা না হওয়া, পরকীয়া, মতভেদসহ নানা কারণে ভেঙে যাচ্ছে দাম্পত্য সম্পর্ক। শালিখার আড়পাড়া ইউনিয়নের মুসলিম বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রার রোকনুজ্জামান বলেন, অধিকাংশ বিয়ে বিচ্ছেদের কারণ পরকীয়া সম্পর্ক। এছাড়া পরিবারে বনিবনার অভাব, স্বামীর দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকাসহ নানা কারণে ঘটছে এ বিচ্ছেদের ঘটনা।
শালিখা উপজেলার মুসলিম বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রারের দেওয়া এক পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, নারীদের তরফ থেকেই দেওয়া হচ্ছে অধিকাংশ তালাকের নোটিস, যাদের বয়স ২০-৩০ এর মধ্যে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অর্থাৎ গত এগারো মাসে ধনেশ্বরগাতি ইউনিয়নে ১৬, তালখড়ি ইউনিয়নে ৩০, শতখালী ইউনিয়নে ২৯, শালিখা ইউনিয়নে ১৯, বুনাগাতি ইউনিয়নে ২৫, আড়পাড়ায় ৪৭, গঙ্গারামপুর ইউনিয়নে ১৯টি বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ উপজেলার সাত ইউনিয়নে ১৮৫টি তালাকের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ৫৮২টি বিয়ে বা নিকাহ সম্পন্ন হয়েছিল।
শালিখায় বিয়ে বিচ্ছেদের ফলে স্বামী-স্ত্রী পৃথক থাকছেন। বাড়ছে মানসিক সংকট। সন্তানরা অনাদর, অবহেলার শিকার হচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাদের শৈশব। ভেঙে যাচ্ছে পারিবারিক বন্ধন। বিরূপ প্রভাব পড়ছে সমাজে। তালাকের ঘটনাগুলোর কারণ সব একই রকম।
আড়পাড়া ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামে সম্প্রতি স্বামীকে তালাক দিয়েছেন রেবেকা (ছন্মনাম)। তিনি জানান, স্বামী মাদকাসক্ত। আয় রোজগার করেন না। কথায় কথায় মারধর করেন। তাই স্বামীকে তালাক দিয়েছেন তিনি। তালখড়ি ইউনিয়নের ছান্দড়া গ্রামে স্ত্রীর তালাকের শিকার হয়েছেন আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানান, তার স্ত্রী ফেসবুক আসক্ত। স্ত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ায় সে ছেড়ে চলে যায়। এক মাস পরে ডিভোর্স লেটার পাঠায়।
এ ব্যাপারে ইন্দ্রনীল অ্যাসোসিয়েটের প্রধান সংগঠক ও গবেষক ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী নারী উন্নয়নে যতগুলো পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন তা যদি গুরুত্বের সঙ্গে বাস্তবায়ন করা হয়, তাহলে একদিকে নারীরা যেমন তাদের অধিকার পাবেন অপরদিকে এদের মধ্যে বিয়ে বিচ্ছেদের প্রবণতা হ্রাস পাবে। তালাকের ঘটনা বাড়ার কারণ জানতে চাইলে উপজেলা কোর্ট মসজিদের খতিব মোশারফ হোসেন কাসেমী বলেন, ইসলামিক বিষয়ে অজ্ঞতা, পরকীয়া এবং ইসলামি বিধি নিষেধ না মানার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ বেশি হচ্ছে।