রংপুরে বিএনপির ৫ নেতার ১০ বছর কারাদণ্ড

দীর্ঘ ১০ বছর পর হরতালের নামে নাশকতা করার অভিযোগে ককটেলসহ বোমা রাখার দায়ে রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহাফুজুন্নবী ডন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকু যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির আলম নয়নসহ ৫ বিএনপি নেতাকে দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১ এর বিচারক কৃষ্ণকান্ত রায় এ রায় প্রদান করেন। অন্য দুই আসামি হলেন যুবদল নেতা তারিক হোসেন সোহাগ ও আরিফ মিয়া।

রায় ঘোষণার সময় কারাগারে আটক বিএনপি নেতা ডনকে আদালতে হাজির করা হলেও বাকি ৪ আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৯ মে তারিখে রাত সাড়ে ১০টার দিকে রংপুর নগরীর জুম্মাপাড়ায় অবস্থিত রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিউটের ভেতরে পুকুরপাড়ে পরের দিন ২০ মে তারিখে ডাকা হরতালে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সমবেত হয়। পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে ৭ বিএনপি ও যুবদল নেতাকে আটক করে। সেখান থেকে ৫৬টি চকলেট বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানার এস আই চন্দন কুমার চক্রবর্তী বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে পুলিশ ৭ আসামির নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলার বিচার চলাকালীন অবস্থায় দুই আসামি রইছ আহাম্মেদ ও ঝন্টু মৃত্যু বরণ করে। আদালত তাদের মামলা থেকে মৃত্যুজনিত কারণে অব্যাহতি প্রদান করে। মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে ৫ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ের ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অতিরিক্ত পিপি আবদুস সাত্তার জানান তারা ন্যায়বিচার পেয়েছেন এ রায়ে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন। অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী আফতাব হোসেন বলেন এটা ফরমায়েশি রায়। কারণ তিনি বলেন, এই মামলায় দুজন নিরপেক্ষ সাক্ষী ছিলেন পলিটেকনিক ইনস্টিউটের দুই কর্মচারী তারা আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছে তাদের ঘুম থেকে তুলে পুলিশ তাদের সিজার লিস্টে স্বাক্ষর নিয়েছে। তারা কোনো বোমা দেখেনি পুলিশ তাদের দেখাওনি। শুধু তাই নয় ওই রাতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কেউ আসেনি কাউকে তারা দেখেনি।

তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে মামলার বেশিরভাগ সাক্ষী পুলিশ সদস্য তারাও আদালতে একেকজন একেক ধরনের সাক্ষ্য দিয়েছে। এই মামলায় আসামিদের সাজা দেয়ার মতো কোনো ইনগিরেন্ট পুলিশ প্রমাণ করতে পারেনি। ফলে একটি সাজানো মিথ্যা মামলা করে আসামিদের ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে সাজা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আসামিরা ন্যায়বিচার পাননি এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩ , ৬ অগ্রায়ন ১৪৩০, ৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

রংপুরে বিএনপির ৫ নেতার ১০ বছর কারাদণ্ড

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

দীর্ঘ ১০ বছর পর হরতালের নামে নাশকতা করার অভিযোগে ককটেলসহ বোমা রাখার দায়ে রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মাহাফুজুন্নবী ডন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকু যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির আলম নয়নসহ ৫ বিএনপি নেতাকে দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১ এর বিচারক কৃষ্ণকান্ত রায় এ রায় প্রদান করেন। অন্য দুই আসামি হলেন যুবদল নেতা তারিক হোসেন সোহাগ ও আরিফ মিয়া।

রায় ঘোষণার সময় কারাগারে আটক বিএনপি নেতা ডনকে আদালতে হাজির করা হলেও বাকি ৪ আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৯ মে তারিখে রাত সাড়ে ১০টার দিকে রংপুর নগরীর জুম্মাপাড়ায় অবস্থিত রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিউটের ভেতরে পুকুরপাড়ে পরের দিন ২০ মে তারিখে ডাকা হরতালে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সমবেত হয়। পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে ৭ বিএনপি ও যুবদল নেতাকে আটক করে। সেখান থেকে ৫৬টি চকলেট বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কোতয়ালী থানার এস আই চন্দন কুমার চক্রবর্তী বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে পুলিশ ৭ আসামির নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলার বিচার চলাকালীন অবস্থায় দুই আসামি রইছ আহাম্মেদ ও ঝন্টু মৃত্যু বরণ করে। আদালত তাদের মামলা থেকে মৃত্যুজনিত কারণে অব্যাহতি প্রদান করে। মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে ৫ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ের ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী অতিরিক্ত পিপি আবদুস সাত্তার জানান তারা ন্যায়বিচার পেয়েছেন এ রায়ে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন। অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী আফতাব হোসেন বলেন এটা ফরমায়েশি রায়। কারণ তিনি বলেন, এই মামলায় দুজন নিরপেক্ষ সাক্ষী ছিলেন পলিটেকনিক ইনস্টিউটের দুই কর্মচারী তারা আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছে তাদের ঘুম থেকে তুলে পুলিশ তাদের সিজার লিস্টে স্বাক্ষর নিয়েছে। তারা কোনো বোমা দেখেনি পুলিশ তাদের দেখাওনি। শুধু তাই নয় ওই রাতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কেউ আসেনি কাউকে তারা দেখেনি।

তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে মামলার বেশিরভাগ সাক্ষী পুলিশ সদস্য তারাও আদালতে একেকজন একেক ধরনের সাক্ষ্য দিয়েছে। এই মামলায় আসামিদের সাজা দেয়ার মতো কোনো ইনগিরেন্ট পুলিশ প্রমাণ করতে পারেনি। ফলে একটি সাজানো মিথ্যা মামলা করে আসামিদের ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে সাজা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আসামিরা ন্যায়বিচার পাননি এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।