দেড় মাসে ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে পুরনো মামলায় সাজা দেয়ার অভিযোগ বিএনপির

সরকারবিরোধী আন্দোলনে গত জুলাই মাস থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সারাদেশে ৮ শতাধিক মামলা হয়েছে। গত ৪ মাসে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এসব মামলায় আসামি কমপক্ষে অর্ধলক্ষ নেতাকর্মী। একাধিক মামলায় আসামি বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা। এমন পরিস্থিতিতে গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পরবর্তী হরতাল অবরোধ কর্মসূচি পালনের মধ্যে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে নতুন করে অন্তত ৪ শতাধিক মামলা হয়েছে।

এসব মামলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি জেলা উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাশাপাশি পুরনো মামলায় ইতোমধ্যে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। আরও একাধিক মামলায় ‘রায় ঘোষণার’ অপেক্ষায় আছে। এসব মামলায়ও বিএনপির নেতাকর্মীকের সাজা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিএনপির অভিযোগ, সরকার ‘একতরফা’ নির্বাচনের আয়োজনের পাশাপাশি বিএনপিকে নির্বাচনের আশার আহ্বান জানাচ্ছে অন্যদিকে দলের সাহসী নেতাকর্মীদের বেছে বেছে পুরনো মামলায় কারাদ- দিচ্ছে। গত দেড় মাসে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ে অনেক নেতাসহ কমপক্ষে ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মামলা সাজা দিয়েছে। তবে সাজা পাওয়া এসব নেতাদের নামের তালিকা বিএনপির পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়নি।

এদিকে, লক্ষ্মীপুর ও মৌলবীবাজারে বিএনপির ২ নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করার অভিযোগ করেছে দলটি। অন্যদিকে খুলনা জেলা কৃষক দলের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাকদ মোল্লা কবির হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে না পেরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ম্যানেজার ও ভাগ্নেকে ধরি নিয়ে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর অভিযোগ করা হয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অজ্ঞাত স্থান থেকে দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লিখিত অভিযোগে বলেছেন, সরকার একদিকে বলছে নির্বাচনে আসুন, অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী তাদেরসহ আন্দোলনে সক্রিয় ও সাহসী নেতাদের টার্গেট করে বেছে বেছে কারাদ- দেয়া হচ্ছে। পুরনো মামলায় সাজা দেয়ার হিড়িক শুরু হয়েছে। নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে দুই বছরের নিচে কারোর সাজা হচ্ছে না। কারণ দুই বছরের সাজা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রতিবন্ধক। এসব কারাদ- প্রদান করা হচ্ছে ‘আজব আদালত’ থেকে-যেখানে মৃত নেতা, গুম হওয়া নেতাদেরও রেহাই নেই। মৃতদেরও সাজা দিচ্ছেন শেখ হাসিনার পুতুল আদালত।

গত দেড় মাসে বিএনপির ৫৮২ জন নেতাকর্মীকে প্রহসনের বিচারে দ-িত ঘোষণা করা হয়েছে। আসামিদের অনুপস্থিতিতে চার্জ গ্রহণ ও কারাগারে বন্দী অবস্থায় আসামিকে সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা শোনার সুযোগ না দিয়ে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে দ- ঘোষণা করা হচ্ছে। সমস্ত মামলার বাদী পুলিশ। রাত-দিন আদালত খুলে আওয়ামী দলদাসরাই সাক্ষী-তারাই বিচারক। ফরমায়েশি রায়ও দেয়া হচ্ছে প্রহসনের নির্বাচনের মতো।

বিএনপি অভিযোগ করেছে, কেন্দ্রীয় কৃষকদলের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং খুলনা জেলা কৃষক দলের সভাপতি মোল্লা কবির হোসেনকে ‘মিথ্যা’ মামলায় গ্রেপ্তার করতে গত ২০ নভেম্বর রাতে তার গ্রামের বাড়িতে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। পরের দিন ডুমিরিয়া উলা বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে তাকে না পেয়ে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার জিয়াউল করিম কবিরাজ ও তার ভাগ্নে জাফর শেখকে গ্রেপ্তার করে ‘মিথ্যা’ নাশকতার মামলায় চালান দেয় পুলিশ।

একইভাবে লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলকে ‘মিথ্যা’ মামলায় তার বাড়িতে গ্রেপ্তার যায় পুলিশ। তাকে না পেয়ে তার পরিবারের লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। গত শুক্রবার মৌলভীবাজার জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব, মো. মোনাহিম কবিরকে জেলার শ্যামলী আবাসিক এলাকায় তার বাড়িতে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করতে যায়। এ সময় ডিবি পুলিশের সঙ্গে মুখে মাক্স পরে আওয়ামী লীগের কর্মীরাও ছিল। তারা বাসায় অভিযান চালায় তাকে না পেয়ে তার পরিবারে লোকজনদের গালাগাল করেন এবং বাসা ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।

বিএনপি অভিযোগ করেছে, গত ২৩ ঘণ্টায় সারাদেশে ১০টি মামলা করা হয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৪৩৫ বিএনপি নেতাকর্মীকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩২৫ বিএনপি নেতাকর্মীকে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে মামলা হয়েছে ১৩৮টি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৬ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে। তফসিল ঘোষণার পর ৩ জন নেতাকর্মীকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে আহত হয়েছে ৫ শতাধিক নেতাকর্মী। বিএনপি এক পরিসংখ্যানে বলেছে, ২৮ অক্টোবর থেকে গতকাল পর্যন্ত বিএনপির ১৬ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা হয়েছেন ৩ শতাধিক। মারা গেছেন ১৬ নেতাকর্মী। পরিসংখ্যান বলছে, গত জুলাই মাস থেকে নানা কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে হামলাসহ নানাভাবে আহত হয়েছেন ৮ হাজারের বেশি নেতাকর্মী। অন্তত ৮ শতাধিক মামলা হয়েছে সারাদেশে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অনন্ত ২০ হাজার নেতাকর্মীকে।

বিএনপি অভিযোগ করছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের শাহজাহানপুর থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জিকিরকে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা জজ আদালত থেকে ডিবি পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। গতকাল পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। রাজশাহী জেলার পবা উপজেলা ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহকে গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মসজিদ থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। রাজশাহীতে মোট ২৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নওগাঁ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আহসান হাবিবকে গত শুক্রবার রাত ৯টার সময় বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। গতকাল পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র ফেইসবুকে লেখালেখির কারণে গত শুক্রবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিকান্দি ইউনিযয়ন ছাত্রদল নেতা রনিকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করে বাঞ্ছারামপুর থানাপুলিশ। নোয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক সভাপতি ছাবের আহমেদ, যুবদল নেতা মো. দেলোয়ার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জসিম উদ্দিনসহ ৬৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩ , ১১ অগ্রায়ন ১৪৩০, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৫

দেড় মাসে ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে পুরনো মামলায় সাজা দেয়ার অভিযোগ বিএনপির

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সরকারবিরোধী আন্দোলনে গত জুলাই মাস থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সারাদেশে ৮ শতাধিক মামলা হয়েছে। গত ৪ মাসে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এসব মামলায় আসামি কমপক্ষে অর্ধলক্ষ নেতাকর্মী। একাধিক মামলায় আসামি বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা। এমন পরিস্থিতিতে গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পরবর্তী হরতাল অবরোধ কর্মসূচি পালনের মধ্যে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে নতুন করে অন্তত ৪ শতাধিক মামলা হয়েছে।

এসব মামলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি জেলা উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাশাপাশি পুরনো মামলায় ইতোমধ্যে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। আরও একাধিক মামলায় ‘রায় ঘোষণার’ অপেক্ষায় আছে। এসব মামলায়ও বিএনপির নেতাকর্মীকের সাজা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিএনপির অভিযোগ, সরকার ‘একতরফা’ নির্বাচনের আয়োজনের পাশাপাশি বিএনপিকে নির্বাচনের আশার আহ্বান জানাচ্ছে অন্যদিকে দলের সাহসী নেতাকর্মীদের বেছে বেছে পুরনো মামলায় কারাদ- দিচ্ছে। গত দেড় মাসে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ে অনেক নেতাসহ কমপক্ষে ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মামলা সাজা দিয়েছে। তবে সাজা পাওয়া এসব নেতাদের নামের তালিকা বিএনপির পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয়নি।

এদিকে, লক্ষ্মীপুর ও মৌলবীবাজারে বিএনপির ২ নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করার অভিযোগ করেছে দলটি। অন্যদিকে খুলনা জেলা কৃষক দলের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাকদ মোল্লা কবির হোসেনকে গ্রেপ্তার করতে না পেরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ম্যানেজার ও ভাগ্নেকে ধরি নিয়ে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর অভিযোগ করা হয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অজ্ঞাত স্থান থেকে দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লিখিত অভিযোগে বলেছেন, সরকার একদিকে বলছে নির্বাচনে আসুন, অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে যারা নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী তাদেরসহ আন্দোলনে সক্রিয় ও সাহসী নেতাদের টার্গেট করে বেছে বেছে কারাদ- দেয়া হচ্ছে। পুরনো মামলায় সাজা দেয়ার হিড়িক শুরু হয়েছে। নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে দুই বছরের নিচে কারোর সাজা হচ্ছে না। কারণ দুই বছরের সাজা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার প্রতিবন্ধক। এসব কারাদ- প্রদান করা হচ্ছে ‘আজব আদালত’ থেকে-যেখানে মৃত নেতা, গুম হওয়া নেতাদেরও রেহাই নেই। মৃতদেরও সাজা দিচ্ছেন শেখ হাসিনার পুতুল আদালত।

গত দেড় মাসে বিএনপির ৫৮২ জন নেতাকর্মীকে প্রহসনের বিচারে দ-িত ঘোষণা করা হয়েছে। আসামিদের অনুপস্থিতিতে চার্জ গ্রহণ ও কারাগারে বন্দী অবস্থায় আসামিকে সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা শোনার সুযোগ না দিয়ে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করে দ- ঘোষণা করা হচ্ছে। সমস্ত মামলার বাদী পুলিশ। রাত-দিন আদালত খুলে আওয়ামী দলদাসরাই সাক্ষী-তারাই বিচারক। ফরমায়েশি রায়ও দেয়া হচ্ছে প্রহসনের নির্বাচনের মতো।

বিএনপি অভিযোগ করেছে, কেন্দ্রীয় কৃষকদলের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং খুলনা জেলা কৃষক দলের সভাপতি মোল্লা কবির হোসেনকে ‘মিথ্যা’ মামলায় গ্রেপ্তার করতে গত ২০ নভেম্বর রাতে তার গ্রামের বাড়িতে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। পরের দিন ডুমিরিয়া উলা বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে তাকে না পেয়ে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার জিয়াউল করিম কবিরাজ ও তার ভাগ্নে জাফর শেখকে গ্রেপ্তার করে ‘মিথ্যা’ নাশকতার মামলায় চালান দেয় পুলিশ।

একইভাবে লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেলকে ‘মিথ্যা’ মামলায় তার বাড়িতে গ্রেপ্তার যায় পুলিশ। তাকে না পেয়ে তার পরিবারের লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। গত শুক্রবার মৌলভীবাজার জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব, মো. মোনাহিম কবিরকে জেলার শ্যামলী আবাসিক এলাকায় তার বাড়িতে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করতে যায়। এ সময় ডিবি পুলিশের সঙ্গে মুখে মাক্স পরে আওয়ামী লীগের কর্মীরাও ছিল। তারা বাসায় অভিযান চালায় তাকে না পেয়ে তার পরিবারে লোকজনদের গালাগাল করেন এবং বাসা ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ।

বিএনপি অভিযোগ করেছে, গত ২৩ ঘণ্টায় সারাদেশে ১০টি মামলা করা হয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৪৩৫ বিএনপি নেতাকর্মীকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩২৫ বিএনপি নেতাকর্মীকে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে মামলা হয়েছে ১৩৮টি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৬ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে। তফসিল ঘোষণার পর ৩ জন নেতাকর্মীকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে আহত হয়েছে ৫ শতাধিক নেতাকর্মী। বিএনপি এক পরিসংখ্যানে বলেছে, ২৮ অক্টোবর থেকে গতকাল পর্যন্ত বিএনপির ১৬ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা হয়েছেন ৩ শতাধিক। মারা গেছেন ১৬ নেতাকর্মী। পরিসংখ্যান বলছে, গত জুলাই মাস থেকে নানা কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে হামলাসহ নানাভাবে আহত হয়েছেন ৮ হাজারের বেশি নেতাকর্মী। অন্তত ৮ শতাধিক মামলা হয়েছে সারাদেশে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অনন্ত ২০ হাজার নেতাকর্মীকে।

বিএনপি অভিযোগ করছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের শাহজাহানপুর থানা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম জিকিরকে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা জজ আদালত থেকে ডিবি পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। গতকাল পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। রাজশাহী জেলার পবা উপজেলা ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহকে গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মসজিদ থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। রাজশাহীতে মোট ২৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নওগাঁ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আহসান হাবিবকে গত শুক্রবার রাত ৯টার সময় বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। গতকাল পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র ফেইসবুকে লেখালেখির কারণে গত শুক্রবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিকান্দি ইউনিযয়ন ছাত্রদল নেতা রনিকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করে বাঞ্ছারামপুর থানাপুলিশ। নোয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক সভাপতি ছাবের আহমেদ, যুবদল নেতা মো. দেলোয়ার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা জসিম উদ্দিনসহ ৬৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।