রাহুল পদত্যাগের সিদ্ধান্তে অনড়

মানছেন না কংগ্রেস নেতারা

ইস্তফা দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছেন না কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক থেকে শুরু করে একাধিক আলোচনায় নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করে জানিয়েছেন তিনি। লোকসভা নির্বাচনের সময় দলীয় প্রবীণ নেতাদের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। রাহুল নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় গতকাল তার নিজ বাসভবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। আগামী সপ্তাহে আবার বৈঠকে বসতে চলেছে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটি।

গতকালের বৈঠকে দলের একাধিক প্রবীণ নেতাই উপস্থিত ছিলেন। রাহুলকে তারা নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার অনুরোধ করেন। সকালেই কংগ্রেস সভাপতির বাড়ি গিয়েছেন বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা, রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রী শচিন পাইলট।

এদিকে রাহুল নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় আগামী সপ্তাহে আবার বৈঠকে বসতে চলেছে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটি। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য তথা আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ জানিয়েছেন রাহুল নিজের মত পরিবর্তন করবেন না। দলের কয়েকজন প্রবীণ নেতা যে আচরণ করেছেন তা তিনি মেনে নিতে পারেননি। আর তাই তার মনে হয়েছে সভাপতি পদে থেকে কাজ করা ঠিক হবে না। রাহুল আশা করেছিলেন ওই সমস্ত প্রবীণ নেতারা নির্বাচনে কঠোর পরিশ্রম করবেন কিন্তু তাদের কাজ তাকে খুশি করতে পারেনি।

কংগ্রেসের এমন বিপদের সময় রাহুলের দল থেকে দূরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারছেন না কেউ। তরুণ বলেন, এই প্রশ্নের উত্তরে দলের অন্দরে রাহুল জানিয়েছেন তিনি কোনভাবেই পরিস্থিতি থেকে দূরে চলে যাচ্ছেন না। আগের চেয়ে আরও বেশি করে লড়াই করবেন। কিন্তু দলের দায়িত্ব না থাকলে মতাদর্শের লড়াই বেশি করতে পারবেন বলেই পদ ছাড়তে চাইছেন কংগ্রেস সভাপতি।

ঠিক একদিন আগে কংগ্রেসের দুই প্রবীণ নেতা আহমেদ প্যাটেল এবং কে কে বেনু গোপালের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল। সেখানে তিনি নিজের বিকল্প কাউকে খুঁজে বের করতে বলেন। এই দুজনের সঙ্গে দেখা করলেও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলতের সঙ্গে দেখা করতে চাননি রাহুল। কংগ্রেসি রাজনীতিতে অশোক অত্যন্ত প্রভাবশালী একটি নাম। রাহুলের টিম কংগ্রেসেও অশোক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু গত নির্বাচনে তিনি যেভাবে তার ছেলের জন্য প্রচার করেছেন তাতে দলের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করেন রাহুল। আর সেই কারণেই অশোকের সঙ্গে দেখা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সভাপতি। এরকমই নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে আজ রাহুলের বাড়ি যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা।

এদিকে কংগ্রেসের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করে টুইটারে শরণাপন্ন হয়েছেন প্রধান মুখপাত্র। টুইট করে সোমবার রণদীপ বলেছেন সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সবার কাছে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনারা আমাদের দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল হন। কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কী আলোচনা করছে তা নিয়ে মতামত পোষণের নামে গুজব ছড়াবেন না। সংবাদমাধ্যমের এই আচরণ অপ্রয়োজনীয় এবং অবাঞ্ছিত।

বুধবার, ২৯ মে ২০১৯ , ১৫ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২৩ রমজান ১৪৪০

রাহুল পদত্যাগের সিদ্ধান্তে অনড়

মানছেন না কংগ্রেস নেতারা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

ইস্তফা দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছেন না কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক থেকে শুরু করে একাধিক আলোচনায় নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করে জানিয়েছেন তিনি। লোকসভা নির্বাচনের সময় দলীয় প্রবীণ নেতাদের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ। রাহুল নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় গতকাল তার নিজ বাসভবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। আগামী সপ্তাহে আবার বৈঠকে বসতে চলেছে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটি।

গতকালের বৈঠকে দলের একাধিক প্রবীণ নেতাই উপস্থিত ছিলেন। রাহুলকে তারা নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার অনুরোধ করেন। সকালেই কংগ্রেস সভাপতির বাড়ি গিয়েছেন বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা, রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রী শচিন পাইলট।

এদিকে রাহুল নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় আগামী সপ্তাহে আবার বৈঠকে বসতে চলেছে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটি। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য তথা আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ জানিয়েছেন রাহুল নিজের মত পরিবর্তন করবেন না। দলের কয়েকজন প্রবীণ নেতা যে আচরণ করেছেন তা তিনি মেনে নিতে পারেননি। আর তাই তার মনে হয়েছে সভাপতি পদে থেকে কাজ করা ঠিক হবে না। রাহুল আশা করেছিলেন ওই সমস্ত প্রবীণ নেতারা নির্বাচনে কঠোর পরিশ্রম করবেন কিন্তু তাদের কাজ তাকে খুশি করতে পারেনি।

কংগ্রেসের এমন বিপদের সময় রাহুলের দল থেকে দূরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারছেন না কেউ। তরুণ বলেন, এই প্রশ্নের উত্তরে দলের অন্দরে রাহুল জানিয়েছেন তিনি কোনভাবেই পরিস্থিতি থেকে দূরে চলে যাচ্ছেন না। আগের চেয়ে আরও বেশি করে লড়াই করবেন। কিন্তু দলের দায়িত্ব না থাকলে মতাদর্শের লড়াই বেশি করতে পারবেন বলেই পদ ছাড়তে চাইছেন কংগ্রেস সভাপতি।

ঠিক একদিন আগে কংগ্রেসের দুই প্রবীণ নেতা আহমেদ প্যাটেল এবং কে কে বেনু গোপালের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল। সেখানে তিনি নিজের বিকল্প কাউকে খুঁজে বের করতে বলেন। এই দুজনের সঙ্গে দেখা করলেও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলতের সঙ্গে দেখা করতে চাননি রাহুল। কংগ্রেসি রাজনীতিতে অশোক অত্যন্ত প্রভাবশালী একটি নাম। রাহুলের টিম কংগ্রেসেও অশোক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু গত নির্বাচনে তিনি যেভাবে তার ছেলের জন্য প্রচার করেছেন তাতে দলের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করেন রাহুল। আর সেই কারণেই অশোকের সঙ্গে দেখা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সভাপতি। এরকমই নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে আজ রাহুলের বাড়ি যাচ্ছেন কংগ্রেস নেতারা।

এদিকে কংগ্রেসের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করে টুইটারে শরণাপন্ন হয়েছেন প্রধান মুখপাত্র। টুইট করে সোমবার রণদীপ বলেছেন সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে সবার কাছে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনারা আমাদের দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে শ্রদ্ধাশীল হন। কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে কী আলোচনা করছে তা নিয়ে মতামত পোষণের নামে গুজব ছড়াবেন না। সংবাদমাধ্যমের এই আচরণ অপ্রয়োজনীয় এবং অবাঞ্ছিত।