২২৪৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ

সংসদ সদস্যদের (এমপি) চাহিদাপত্র এবং দীর্ঘদিন অবকাঠামো সুবিধাবঞ্চিত থাকা সারাদেশের আরও দুই হাজার ২৪৪টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি যেসব প্রতিষ্ঠানে চারতলা ভিত্তিসহ একতলা ভবন নির্মাণ করা যাবে এবং চারতলা ভিত্তিবিশিষ্ট কোন ভবন রয়েছে, সে ধরনের তিন হাজার ২০০টি প্রতিষ্ঠানে ঊর্ধ্বমুখী সংস্কার করা হচ্ছে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডা. দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ২৪ মার্চ প্রতি সংসদীয় এলাকার যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এর আগে শিক্ষাভবন নির্মাণ হয়নি এমন ৫টি করে প্রতিষ্ঠানের নাম এবং ঊর্ধ্বতমুখী সম্প্রসারণ ও সংস্কারের জন্য আরও ১০টি করে প্রতিষ্ঠানের তালিকা চান এমপিদের কাছে। গত ৭ এপ্রিলের মধ্যে এই তালিকা দেয়ার অনুরোধ জানানো হলেও এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত সংসদ সদস্য নতুন অবকাঠামো নির্মাণ ও বিদ্যমান অবকাঠামো সংস্কারের জন্য প্রতিষ্ঠানের তালিকা দেয়নি।

এ ব্যাপারে শিক্ষা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, ‘অবকাঠামো সংকটে থাকা দেশের প্রায় সব এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই গত ১০ বছরে নতুন অবকাঠামো নির্মাণ ও পুরনো অবকাঠামোর সংস্কার করা হয়েছে। এজন্য কোন কোন এমপি হয়তো তাদের দৃষ্টিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামো সংকট দেখছেন না। আবার কেউ কেউ নানা রকম ব্যস্ততার কারণে হয়তো তালিকা দিতে পারেননি। তবে এমপিরা তালিকা না দিলেও দেশের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও অবকাঠামো সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকবে না।’

সংসদ সদস্যদের দেয়া শিক্ষামন্ত্রীর চিঠিতে বলা হয়, ‘বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০৪১-এ শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সারাদেশে যে কর্মসূচি চলমান রয়েছে তারই অংশ হিসেবে আগামী কিছু দিনের মধ্যেই কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণ এবং সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপনার নির্বাচনী এলাকার যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম সন্তোষজনক এবং পূর্বে সরকারি অর্থায়নে কোন ভবন নির্মিত হয়নি, কিন্তু চাহিদা রয়েছে-এ রকম ৫টি প্রতিষ্ঠানের, যেখানে চারতলা ভিত্তিসহ একতলা ভবন নির্মাণ করা যাবে অথবা বর্তমানে চারতলা ভিত্তিবিশিষ্ট কোন ভবন রয়েছে, যেটির ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা যাবে, তার তালিকা এবং সংস্কার প্রয়োজন-এ রকম ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা ৭ এপ্রিলের মধ্যে অনুগ্রহ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের (ইইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির আলোকে এখন পর্যন্ত ২৫০ থেকে ২৬০ জন সংসদ সদস্য নিজেদের এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ ও পুরাতন ভবন সংস্কারের তালিকা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরে জমা দিয়েছেন। বাকি অর্ধশত সংসদ সদস্য তাদের তালিকা দেয়নি। সব সংসদ সদস্য অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও সংস্কারের থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা না দেয়ায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইইডি’র প্রকৌশলীরা সারাদেশের এই ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা সংগ্রহ করেছেন। এই তালিকা অনুযায়ী, দুই হাজার ২৪৪টি প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ এবং তিন হাজার ২০০টি প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইইডি’র প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মো. হানজালা সংবাদকে বলেছেন, ‘গত ১০ বছরে সারাদেশে প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। এর মধ্যে ১২ হাজার প্রতিষ্ঠানের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১২ হাজার প্রতিষ্ঠানের বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে, যা ২০২১ সালের মধ্যে শেষ হবে। এরপরও যেসব প্রতিষ্ঠানে ইতিপূর্বে ভবন নির্মাণ হয়নি, সেগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। এর ধারাবাহিকতায় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় নিজ উদ্যোগেই সংসদ সদস্যদের কাছে ৫টি নতুন ভবন নির্মাণ এবং ১৫টি বিদ্যমান ভবনের সম্প্রসারণ ও সংস্কারের তালিকা চেয়েছেন। এই তালিকা অনুযায়ী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’

তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল, যখন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নতুন ভবন নির্মাণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদবির করতেন। বর্তমানে সেই অবস্থা আর নেই। কারণ গত ১০ বছরে দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই পর্যাপ্ত অবকাঠামো নিশ্চিত হয়েছে। এরপরও শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, ইইডি’র প্রকৌশলীরাই কোন কোন প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামো প্রয়োজন তা খুঁজে বের করছেন।’

সোমবার, ১৭ জুন ২০১৯ , ৩ আষাঢ় ১৪২৫, ১৩ শাওয়াল ১৪৪০

২২৪৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভবন নির্মাণের উদ্যোগ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সংসদ সদস্যদের (এমপি) চাহিদাপত্র এবং দীর্ঘদিন অবকাঠামো সুবিধাবঞ্চিত থাকা সারাদেশের আরও দুই হাজার ২৪৪টি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি যেসব প্রতিষ্ঠানে চারতলা ভিত্তিসহ একতলা ভবন নির্মাণ করা যাবে এবং চারতলা ভিত্তিবিশিষ্ট কোন ভবন রয়েছে, সে ধরনের তিন হাজার ২০০টি প্রতিষ্ঠানে ঊর্ধ্বমুখী সংস্কার করা হচ্ছে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডা. দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ২৪ মার্চ প্রতি সংসদীয় এলাকার যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এর আগে শিক্ষাভবন নির্মাণ হয়নি এমন ৫টি করে প্রতিষ্ঠানের নাম এবং ঊর্ধ্বতমুখী সম্প্রসারণ ও সংস্কারের জন্য আরও ১০টি করে প্রতিষ্ঠানের তালিকা চান এমপিদের কাছে। গত ৭ এপ্রিলের মধ্যে এই তালিকা দেয়ার অনুরোধ জানানো হলেও এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত সংসদ সদস্য নতুন অবকাঠামো নির্মাণ ও বিদ্যমান অবকাঠামো সংস্কারের জন্য প্রতিষ্ঠানের তালিকা দেয়নি।

এ ব্যাপারে শিক্ষা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, ‘অবকাঠামো সংকটে থাকা দেশের প্রায় সব এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই গত ১০ বছরে নতুন অবকাঠামো নির্মাণ ও পুরনো অবকাঠামোর সংস্কার করা হয়েছে। এজন্য কোন কোন এমপি হয়তো তাদের দৃষ্টিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামো সংকট দেখছেন না। আবার কেউ কেউ নানা রকম ব্যস্ততার কারণে হয়তো তালিকা দিতে পারেননি। তবে এমপিরা তালিকা না দিলেও দেশের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও অবকাঠামো সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকবে না।’

সংসদ সদস্যদের দেয়া শিক্ষামন্ত্রীর চিঠিতে বলা হয়, ‘বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ও বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০৪১-এ শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সারাদেশে যে কর্মসূচি চলমান রয়েছে তারই অংশ হিসেবে আগামী কিছু দিনের মধ্যেই কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণ এবং সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপনার নির্বাচনী এলাকার যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম সন্তোষজনক এবং পূর্বে সরকারি অর্থায়নে কোন ভবন নির্মিত হয়নি, কিন্তু চাহিদা রয়েছে-এ রকম ৫টি প্রতিষ্ঠানের, যেখানে চারতলা ভিত্তিসহ একতলা ভবন নির্মাণ করা যাবে অথবা বর্তমানে চারতলা ভিত্তিবিশিষ্ট কোন ভবন রয়েছে, যেটির ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা যাবে, তার তালিকা এবং সংস্কার প্রয়োজন-এ রকম ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা ৭ এপ্রিলের মধ্যে অনুগ্রহ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের (ইইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর প্রেরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির আলোকে এখন পর্যন্ত ২৫০ থেকে ২৬০ জন সংসদ সদস্য নিজেদের এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ ও পুরাতন ভবন সংস্কারের তালিকা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরে জমা দিয়েছেন। বাকি অর্ধশত সংসদ সদস্য তাদের তালিকা দেয়নি। সব সংসদ সদস্য অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও সংস্কারের থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা না দেয়ায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইইডি’র প্রকৌশলীরা সারাদেশের এই ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা সংগ্রহ করেছেন। এই তালিকা অনুযায়ী, দুই হাজার ২৪৪টি প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ এবং তিন হাজার ২০০টি প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইইডি’র প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মো. হানজালা সংবাদকে বলেছেন, ‘গত ১০ বছরে সারাদেশে প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। এর মধ্যে ১২ হাজার প্রতিষ্ঠানের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১২ হাজার প্রতিষ্ঠানের বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে, যা ২০২১ সালের মধ্যে শেষ হবে। এরপরও যেসব প্রতিষ্ঠানে ইতিপূর্বে ভবন নির্মাণ হয়নি, সেগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। এর ধারাবাহিকতায় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় নিজ উদ্যোগেই সংসদ সদস্যদের কাছে ৫টি নতুন ভবন নির্মাণ এবং ১৫টি বিদ্যমান ভবনের সম্প্রসারণ ও সংস্কারের তালিকা চেয়েছেন। এই তালিকা অনুযায়ী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’

তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল, যখন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নতুন ভবন নির্মাণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদবির করতেন। বর্তমানে সেই অবস্থা আর নেই। কারণ গত ১০ বছরে দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই পর্যাপ্ত অবকাঠামো নিশ্চিত হয়েছে। এরপরও শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, ইইডি’র প্রকৌশলীরাই কোন কোন প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামো প্রয়োজন তা খুঁজে বের করছেন।’