তৃতীয় বর্ষে ফেল করে চতুর্থ বর্ষে পরীক্ষা দিচ্ছেন ঢাবি ছাত্রলীগ সা. সম্পাদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে আইন অনুষদের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনকে তৃতীয় বর্ষে ফেল করার পরও চতুর্থ বর্ষে উন্নীত করে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নিয়ম অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থী কোন বর্ষে এক বা একাধিক বিষয়ে ফেল করার পরও যদি গ্রেড পয়েন্টে পাস করেন, তবে তিনি পরবর্তী বর্ষে উন্নীত হওয়ার সুযোগ লাভ করেন। তবে ফেল করার কারণে তাকে সেসব বিষয়ের পরীক্ষার মানোন্নয়ন (ইমপ্রুভ) দিতে হয়। তবে কেউ যদি এক বা একাধিক বিষয়ে ফেল করেন এবং গ্রেড পয়েন্টে পাস না করেন, তবে তিনি কোনভাবেই পরবর্তী বর্ষে পরীক্ষা দিতে পারেন না। সাধারণত কোন শিক্ষার্থী সেমিস্টার বা বাৎসরিক পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হলে ফলাফলের খাতায় নাম আসে না। ফলাফলের তালিকায় যাদের নাম আসে না তাদের আগের সেমিস্টার বা বর্ষে পুনরায় পড়াশুনা করে এবং পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। কিন্তু এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে সাদ্দাম হোসেনের ক্ষেত্রে। তৃতীয় বর্ষে দুইটি কোর্সে ফেল করলেও তাকে চতুর্থ বর্ষের প্রথম পর্বের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হয়ে পরবর্তী বর্ষে পদোন্নতি পাওয়ার নজির নেই আইন বিভাগে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, মানবিক বিবেচনায় তাকে এ সুযোগ দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, টানা সাত বছর ধরে আইন বিভাগে পড়ছেন সাদ্দাম হোসেন। গেল জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় বর্ষের সমাপনী পরীক্ষায়ও তিনি উত্তীর্ণ হতে পারেনি। ফল প্রকাশের খাতায়ও তার নাম আসেনি। বিষয়টি স্বীকার করে সাদ্দাম নিজেই তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তবুও চতুর্থ বর্ষের প্রথম পর্বের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়েছে তাকে। এতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বিভাগটির সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পদোন্নতি পাওয়ার পর চতুর্থ বর্ষের প্রথম পর্বের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন তিনি। এর মধ্যে পাঁচটি পরীক্ষায় অংশও নিয়েছেন। আজ শেষ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে তার। পরীক্ষায় অংশ নেয়া জন্য তার ক্লাসে উপস্থিতি রয়েছে ২০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। যদিও ২০ শতাংশ উপস্থিতি থাকার শর্তে এর আগে কারও পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি। এদিকে, চতুর্থ বর্ষের পাবলিক ইন্টারন্যাশনাল ল (৪০৪) কোর্সেও ১৮টি ক্লাসের মধ্যে তার উপস্থিতি দেখানো হয়েছে ১২টিতে। যদিও চতুর্থ বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তিনি কোন কোর্সেই নিয়মিত ক্লাস করেন না। তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দেয়ার জন্যই তার উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আইন বিভাগে প্রতিবছর অনেকেই ফেল করে। কিন্তু সাদ্দামের মতো এমন সুযোগ কাউকে দেয়া হয় না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার সময় সাদ্দামের উপস্থিতি ছিল ৩০ শতাংশ। এজন্য বিভাগ থেকে নিয়ম করা হয় যে, যাদের ৩০ শতাংশের বেশি উপস্থিতি আছে, তারাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। এর কম উপস্থিতি যাদের তারা তখন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়নি। এবার তার উপস্থিতি ২০ শতাংশ, এবার বিভাগ থেকে নিয়ম করে দেয়া হয়েছে, যাদের ২০ শতাংশের বেশি উপস্থিতি আছে, তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। এর কম উপস্থিতি এমন অনেককেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি। মূলত, আইন বিভাগের অন্য শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, একমাত্র সাদ্দামের জন্যই নিয়ম পরিবর্তন করা হয়। জানা যায়, গত ২৭ মে আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যায়, ১২৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে ১২১ জন পরীক্ষায় পাস করেন। পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অনুত্তীর্ণ তিনজনের একজন হলেন সাদ্দাম হোসেন। ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ২০১১-১২ সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। প্রথম বর্ষ পার হতে তিনি তিন বছর সময় নেন। ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি অকৃতকার্য হন। চতুর্থবারের প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালে তিনি প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০১৬ সালের দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা পাস করতে পারেননি সাদ্দাম হোসেন। ২০১৭ সালের ফাইনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৮ সালে তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করেন। সেই তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি শুরু হয়। সেই পরীক্ষায়ও অকৃতকার্য হয়েছেন সাদ্দাম। এই ছাত্রনেতা গত সাত বছরে পাঁচবার ফাইনাল পরীক্ষায় ফেল করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে ইমপ্রুভ দেয়ার সুযোগ এমনিতেই পাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আশা করব, প্রকৃত সত্য প্রকাশ পাবে।

এ বিষয়ে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাইমা হক বলেন, মানবিক বিবেচনায় তাকে এ সুযোগ দেয়া হয়েছে। ফেল করার পরও সাদ্দামকে প্রমোশন দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের লঙ্ঘন কিনা জানতে চাইলে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ সংবাদকে বলেন, মানবিক বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগে শিক্ষার্থীদের এমন সুযোগ দেয়া হয়। তার ক্ষেত্রেও তেমন সুযোগ দেয়া হয়েছে। এ সুযোগ দেয়া না হলে অনেকেই শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে। আইনে এমন অনেক কিছুই আছে, যা বাস্তবতার নিরিখে চিন্তা করলে তার প্রয়োগ সম্ভব হয় না। সেজন্য চাইলেই সব জায়গায় আইনের প্রয়োগ ঘটানো যায় না। সাদ্দামের উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই কোন বিভাগে ফল প্রকাশিত হয় না। ফল প্রকাশের আগেই কেউ পরবর্তী বর্ষে ক্লাস শুরু করতে পারে। তার ক্ষেত্রেও এমন হতে পারে যে, ফল প্রকাশের আগে পরবর্তী বর্ষে ক্লাস শুরু করেছে। সেজন্যই তার উপস্থিতি এসেছে।

ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এটা সম্ভবত ডিনস কমিটি করে থাকে। ডিনস কমিটিতে এমন অনেক অভিযোগ আছে যেগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ব্যতিক্রম। এমন অনেক অভিযোগ আসে ডিনস কমিটিতে। তখন কমিটি তাকে হয়তো জরিমানার মাধ্যমে ইমপ্রুভের বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়।

রবিবার, ১৪ জুলাই ২০১৯ , ৩০ আষাঢ় ১৪২৫, ১০ জিলকদ ১৪৪০

তৃতীয় বর্ষে ফেল করে চতুর্থ বর্ষে পরীক্ষা দিচ্ছেন ঢাবি ছাত্রলীগ সা. সম্পাদক

প্রতিনিধি, ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে আইন অনুষদের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনকে তৃতীয় বর্ষে ফেল করার পরও চতুর্থ বর্ষে উন্নীত করে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নিয়ম অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থী কোন বর্ষে এক বা একাধিক বিষয়ে ফেল করার পরও যদি গ্রেড পয়েন্টে পাস করেন, তবে তিনি পরবর্তী বর্ষে উন্নীত হওয়ার সুযোগ লাভ করেন। তবে ফেল করার কারণে তাকে সেসব বিষয়ের পরীক্ষার মানোন্নয়ন (ইমপ্রুভ) দিতে হয়। তবে কেউ যদি এক বা একাধিক বিষয়ে ফেল করেন এবং গ্রেড পয়েন্টে পাস না করেন, তবে তিনি কোনভাবেই পরবর্তী বর্ষে পরীক্ষা দিতে পারেন না। সাধারণত কোন শিক্ষার্থী সেমিস্টার বা বাৎসরিক পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হলে ফলাফলের খাতায় নাম আসে না। ফলাফলের তালিকায় যাদের নাম আসে না তাদের আগের সেমিস্টার বা বর্ষে পুনরায় পড়াশুনা করে এবং পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। কিন্তু এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে সাদ্দাম হোসেনের ক্ষেত্রে। তৃতীয় বর্ষে দুইটি কোর্সে ফেল করলেও তাকে চতুর্থ বর্ষের প্রথম পর্বের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়েছে। তবে একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হয়ে পরবর্তী বর্ষে পদোন্নতি পাওয়ার নজির নেই আইন বিভাগে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, মানবিক বিবেচনায় তাকে এ সুযোগ দেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, টানা সাত বছর ধরে আইন বিভাগে পড়ছেন সাদ্দাম হোসেন। গেল জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় বর্ষের সমাপনী পরীক্ষায়ও তিনি উত্তীর্ণ হতে পারেনি। ফল প্রকাশের খাতায়ও তার নাম আসেনি। বিষয়টি স্বীকার করে সাদ্দাম নিজেই তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তবুও চতুর্থ বর্ষের প্রথম পর্বের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়েছে তাকে। এতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বিভাগটির সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পদোন্নতি পাওয়ার পর চতুর্থ বর্ষের প্রথম পর্বের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন তিনি। এর মধ্যে পাঁচটি পরীক্ষায় অংশও নিয়েছেন। আজ শেষ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে তার। পরীক্ষায় অংশ নেয়া জন্য তার ক্লাসে উপস্থিতি রয়েছে ২০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। যদিও ২০ শতাংশ উপস্থিতি থাকার শর্তে এর আগে কারও পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়নি। এদিকে, চতুর্থ বর্ষের পাবলিক ইন্টারন্যাশনাল ল (৪০৪) কোর্সেও ১৮টি ক্লাসের মধ্যে তার উপস্থিতি দেখানো হয়েছে ১২টিতে। যদিও চতুর্থ বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, তিনি কোন কোর্সেই নিয়মিত ক্লাস করেন না। তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে দেয়ার জন্যই তার উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আইন বিভাগে প্রতিবছর অনেকেই ফেল করে। কিন্তু সাদ্দামের মতো এমন সুযোগ কাউকে দেয়া হয় না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার সময় সাদ্দামের উপস্থিতি ছিল ৩০ শতাংশ। এজন্য বিভাগ থেকে নিয়ম করা হয় যে, যাদের ৩০ শতাংশের বেশি উপস্থিতি আছে, তারাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। এর কম উপস্থিতি যাদের তারা তখন পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়নি। এবার তার উপস্থিতি ২০ শতাংশ, এবার বিভাগ থেকে নিয়ম করে দেয়া হয়েছে, যাদের ২০ শতাংশের বেশি উপস্থিতি আছে, তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। এর কম উপস্থিতি এমন অনেককেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়নি। মূলত, আইন বিভাগের অন্য শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, একমাত্র সাদ্দামের জন্যই নিয়ম পরিবর্তন করা হয়। জানা যায়, গত ২৭ মে আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। তাতে দেখা যায়, ১২৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে ১২১ জন পরীক্ষায় পাস করেন। পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অনুত্তীর্ণ তিনজনের একজন হলেন সাদ্দাম হোসেন। ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ২০১১-১২ সেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। প্রথম বর্ষ পার হতে তিনি তিন বছর সময় নেন। ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালের প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় তিনি অকৃতকার্য হন। চতুর্থবারের প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালে তিনি প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০১৬ সালের দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা পাস করতে পারেননি সাদ্দাম হোসেন। ২০১৭ সালের ফাইনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০১৮ সালে তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করেন। সেই তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি শুরু হয়। সেই পরীক্ষায়ও অকৃতকার্য হয়েছেন সাদ্দাম। এই ছাত্রনেতা গত সাত বছরে পাঁচবার ফাইনাল পরীক্ষায় ফেল করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে ইমপ্রুভ দেয়ার সুযোগ এমনিতেই পাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আশা করব, প্রকৃত সত্য প্রকাশ পাবে।

এ বিষয়ে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাইমা হক বলেন, মানবিক বিবেচনায় তাকে এ সুযোগ দেয়া হয়েছে। ফেল করার পরও সাদ্দামকে প্রমোশন দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের লঙ্ঘন কিনা জানতে চাইলে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ সংবাদকে বলেন, মানবিক বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগে শিক্ষার্থীদের এমন সুযোগ দেয়া হয়। তার ক্ষেত্রেও তেমন সুযোগ দেয়া হয়েছে। এ সুযোগ দেয়া না হলে অনেকেই শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে। আইনে এমন অনেক কিছুই আছে, যা বাস্তবতার নিরিখে চিন্তা করলে তার প্রয়োগ সম্ভব হয় না। সেজন্য চাইলেই সব জায়গায় আইনের প্রয়োগ ঘটানো যায় না। সাদ্দামের উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই কোন বিভাগে ফল প্রকাশিত হয় না। ফল প্রকাশের আগেই কেউ পরবর্তী বর্ষে ক্লাস শুরু করতে পারে। তার ক্ষেত্রেও এমন হতে পারে যে, ফল প্রকাশের আগে পরবর্তী বর্ষে ক্লাস শুরু করেছে। সেজন্যই তার উপস্থিতি এসেছে।

ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এটা সম্ভবত ডিনস কমিটি করে থাকে। ডিনস কমিটিতে এমন অনেক অভিযোগ আছে যেগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ব্যতিক্রম। এমন অনেক অভিযোগ আসে ডিনস কমিটিতে। তখন কমিটি তাকে হয়তো জরিমানার মাধ্যমে ইমপ্রুভের বা পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়।