এস-৪০০ ক্রয় ইস্যু

যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিলে পাল্টা জবাব দেবে তুরস্ক

রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কারণে যুক্তরাষ্ট্র যদি কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তবে তুরস্ক পাল্টা জবাব দেবে বলে হুমকি দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু। চলতি মাসের শুরুতে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সরঞ্জামের প্রথম চালান হাতে পেয়েছে আঙ্কারা। এর জেরে নিরাপত্তা উদ্বেগ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান প্রকল্প থেকে তুরস্ককে সরিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

গত সোমবার স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মেভলুত বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র আমাদের প্রতি প্রতিকূল মনোভাব দেখায় তবে আমরাও এর জবাব দিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করব, এটা আমরা আগেই বলেছি। এটা হুমকি বা গলাবাজি নয়। কেউ তুরস্ককে শত্রুতা দেখাবে আর তারপরও তাদের সামনে মাথা নিচু করে থাকব, আমরা তেমন দেশ নই।’ তবে যুক্তরাষ্ট্র আঙ্কারার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না বলেই বিশ্বাস মেভলুতের।

তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প তুরস্কের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চান না এবং তিনি বারবারই বলেছেন, তার প্রশাসন এবং তার পূর্বসূরিদের প্রশাসনের কারণেই তুরস্ক মার্কিন প্যাট্রিয়ট সিস্টেম কিনতে পারেনি।’ অত্যাধুনিক এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম। যুক্তরাষ্ট্র তাদের সর্বাধুনিক এ অস্ত্র নেটো ভুক্তদেশ এবং অন্যান্য মিত্রদের ব্যবহার করতে দেয়। রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনলে তুরস্ককে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান দেয়া হবে না বলে আগেই দেশেটিকে জানিয়ে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের ওই হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই তুরস্ক ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা ব্যবস্থা কিনেছে এবং ট্রাম্প নিজের কথামতো তুরস্ককে এফ-৩৫ কর্মসূচি থেকে বাদ দিয়েছে।

স-৪০০ রাশিয়ার তৈরি সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। এটি তিন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত হানতে সক্ষম। রাশিয়ার আলমাস সেন্ট্রাল ডিজাইন ব্যুরো এটি তৈরি করেছে। এর একটা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থায় ৮টি স্তর রয়েছে। ৭২টি লঞ্চারকে একসঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এ সিস্টেম। ৩৮৪টি মিসাইলকেও একসঙ্গে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার। অনেক দিক থেকে আক্রমণ ছুটে এলেও এই রুশ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তাকে রুখতে পারবে। এক সঙ্গে ৩০০টি টার্গেটের ওপর নজরদারি চালাতে পারবে। এর স্বয়ংক্রিয় মিসাইল ব্যাটারি এক সঙ্গে ৩৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে সক্ষম।

স্টেলথ ফাইটার গোত্রের যুদ্ধবিমান আকাশে নিজের অস্তিত্বকে এতটাই লুকিয়ে রাখতে সক্ষম যে সাধারণ রাডারে তা ধরা পড়ে না। তবে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র পরিকাঠামোয় এমন এক শক্তিশালী রাডার থাকবে, যার কারণে স্টেল্থ ফাইটারও তাকে ফাঁকি দিতে পারবে না। শুধু যুদ্ধবিমান নয়, আকাশপথে ধেয়ে আসা যে কোনও বিপদকেই রুখে দিতে পারবে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ। দেশের আকাশসীমার দিকে প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র ধেয়ে এলেই এস-৪০০ ট্রায়াম্ফের স্বয়ংক্রিয় মিসাইল ব্যাটারি বা লঞ্চ প্যাড থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে গিয়ে মাঝ আকাশে প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে দেবে।

বুধবার, ২৪ জুলাই ২০১৯ , ৯ শ্রাবন ১৪২৫, ২০ জিলকদ ১৪৪০

এস-৪০০ ক্রয় ইস্যু

যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিলে পাল্টা জবাব দেবে তুরস্ক

সংবাদ ডেস্ক

image

মেভলুত কাভুসোগলু

রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কারণে যুক্তরাষ্ট্র যদি কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তবে তুরস্ক পাল্টা জবাব দেবে বলে হুমকি দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু। চলতি মাসের শুরুতে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সরঞ্জামের প্রথম চালান হাতে পেয়েছে আঙ্কারা। এর জেরে নিরাপত্তা উদ্বেগ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান প্রকল্প থেকে তুরস্ককে সরিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

গত সোমবার স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে মেভলুত বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্র আমাদের প্রতি প্রতিকূল মনোভাব দেখায় তবে আমরাও এর জবাব দিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করব, এটা আমরা আগেই বলেছি। এটা হুমকি বা গলাবাজি নয়। কেউ তুরস্ককে শত্রুতা দেখাবে আর তারপরও তাদের সামনে মাথা নিচু করে থাকব, আমরা তেমন দেশ নই।’ তবে যুক্তরাষ্ট্র আঙ্কারার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না বলেই বিশ্বাস মেভলুতের।

তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প তুরস্কের উপর কোন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চান না এবং তিনি বারবারই বলেছেন, তার প্রশাসন এবং তার পূর্বসূরিদের প্রশাসনের কারণেই তুরস্ক মার্কিন প্যাট্রিয়ট সিস্টেম কিনতে পারেনি।’ অত্যাধুনিক এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম। যুক্তরাষ্ট্র তাদের সর্বাধুনিক এ অস্ত্র নেটো ভুক্তদেশ এবং অন্যান্য মিত্রদের ব্যবহার করতে দেয়। রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনলে তুরস্ককে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান দেয়া হবে না বলে আগেই দেশেটিকে জানিয়ে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের ওই হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই তুরস্ক ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা ব্যবস্থা কিনেছে এবং ট্রাম্প নিজের কথামতো তুরস্ককে এফ-৩৫ কর্মসূচি থেকে বাদ দিয়েছে।

স-৪০০ রাশিয়ার তৈরি সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। এটি তিন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত হানতে সক্ষম। রাশিয়ার আলমাস সেন্ট্রাল ডিজাইন ব্যুরো এটি তৈরি করেছে। এর একটা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থায় ৮টি স্তর রয়েছে। ৭২টি লঞ্চারকে একসঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এ সিস্টেম। ৩৮৪টি মিসাইলকেও একসঙ্গে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার। অনেক দিক থেকে আক্রমণ ছুটে এলেও এই রুশ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তাকে রুখতে পারবে। এক সঙ্গে ৩০০টি টার্গেটের ওপর নজরদারি চালাতে পারবে। এর স্বয়ংক্রিয় মিসাইল ব্যাটারি এক সঙ্গে ৩৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে সক্ষম।

স্টেলথ ফাইটার গোত্রের যুদ্ধবিমান আকাশে নিজের অস্তিত্বকে এতটাই লুকিয়ে রাখতে সক্ষম যে সাধারণ রাডারে তা ধরা পড়ে না। তবে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র পরিকাঠামোয় এমন এক শক্তিশালী রাডার থাকবে, যার কারণে স্টেল্থ ফাইটারও তাকে ফাঁকি দিতে পারবে না। শুধু যুদ্ধবিমান নয়, আকাশপথে ধেয়ে আসা যে কোনও বিপদকেই রুখে দিতে পারবে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ। দেশের আকাশসীমার দিকে প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র ধেয়ে এলেই এস-৪০০ ট্রায়াম্ফের স্বয়ংক্রিয় মিসাইল ব্যাটারি বা লঞ্চ প্যাড থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে গিয়ে মাঝ আকাশে প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে দেবে।