মাহমুদ আকাশ
রাজধানীর যানজট নিরসনে উড়াল ও পাতালপথের সমন্বয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ৫টি ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) বা মেট্রোরেল। এর মধ্যে রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়ালপথে এমআরটি-৬ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ২০১৬ সালের জুনে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত এই প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ২৫ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বর প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। উড়াল ও পাতালরেলপথের সমন্বয়ে বাকি ৪টি মেট্রোরেল ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) সূত্র জানায়।
প্রকল্প সূত্র জানায়, রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়ালসড়কের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত চার কিলোমিটার অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। এমআরটি-৬ প্রকল্পের আওতায় ৮টি প্যাকেজে নির্মাণ করা হচ্ছে মেট্রোরেল। ১ নম্বর প্যাকেজের আওতায় দিয়াবাড়ী এলাকায় ডিপো এলাকার ভূমি উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের অক্টোবর। গত বছরের জানুয়ারিতে এর কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। ডিপো এলাকার পূর্তকাজ করা হচ্ছে প্যাকেজ ২-এর আওতায়। এর মধ্যে ডিপোতে ট্রেন রাখার স্থান, ট্রেন মেরামত ও মালামালের গুদাম, প্রধান ওয়ার্কশপসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। ২০১৭ সালের অক্টোবর শুরু হওয়া এই প্যাকেজের বর্তমান অগ্রগতি ৪০ শতাংশ। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের উড়ালপথ ও স্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর। প্যাকেজ-৩ ও ৪-এর আওতায় উত্তরা নর্থ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট ও ৯টি স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে। উভয় প্যাকেজের কাজ ২০১৭ সালের ১ আগস্ট শুরু হয়। এই প্যাকেজের অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। এই প্যাকেজে ৪ কিলোমিটার অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। এছাড়া আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভায়াডাক্ট (উড়ালপথ) ও স্টেশন নির্মাণ কাজ হচ্ছে প্যাকেজ-৫ এবং ৬-এর অধীন। এ দুটি প্যাকেজ বাস্তবায়নের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। প্রকল্পের বৈদ্যুতিক ও মেকানিক্যাল সিস্টেম বাস্তবায়ন হচ্ছে ৭ নম্বর প্যাকেজের আওতায়। রেলের কোচ ও ডিপোর যন্ত্রপাতি সংগ্রহের কাজ হচ্ছে প্যাকেজ ৮-এর অধীন। ইতোমধ্যে প্রথম মেট্রোরেলের সামনে ও পেছনের নকশা এবং বাইরের রঙ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে লাল-সবুজের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এর বাস্তব অগ্রগতি ২৪ দশমিক ৫০ ও আর্থিক অগ্রগতি ২৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত মেট্রোরেলের দূরত্ব ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার। এর পরোটাই হবে উড়ালসড়কে মাটির ১৩ মিটার ওপর দিয়ে। শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য লাইনের পাশে শব্দনিরোধক দেয়াল নির্মাণ করা হবে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৪ কিলোমিটার উড়ালসড়ক দৃশ্যমান হয়েছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দূরত্ব ৮ দশমিক ১২ কিলোমিটার। এই পথে পাইলিং ও পিলার তৈরির কাজ চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা দেবে জাইকা। মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশন হবে। এগুলো হচ্ছে উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয় ও মতিঝিল। উত্তরা থেকে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত মেট্রোরেলের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। এই পথ পাড়ি দিতে লাগবে ৩৫ মিনিট। মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোও হবে তিনতলা উচ্চতায়। টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য সুবিধা থাকবে দ্বিতীয় তলায় আর ট্রেনে ওঠার জন্য প্ল্যাটফর্ম থাকবে তৃতীয় তলায়। স্টেশনগুলোয় ওঠার জন্য সাধারণ সিঁড়ির পাশাপাশি থাকবে লিফট ও চলন্ত সিঁড়ি। টিকিট দিয়ে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের ব্যবস্থা হবে স্বয়ংক্রিয়। নিরাপত্তার জন্য স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে নিরাপত্তা বেষ্টনী বা প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিনডোর স্থাপন করা হবে। শুরুতে মেট্রোরেলে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রতিসেট ট্রেনে কোচ থাকবে ছয়টি। ঘণ্টায় সাড়ে ২২ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে। দিনে যাত্রী পরিবহন করতে পারবে ৫ লাখের কাছাকাছি।
এ বিষয়ে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, চলমান মেট্রোরেল রুট ৬-এর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ২০১৯ সালের মধ্যে আগারগাঁও এবং ২০২০ সালের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের পূর্তকাজ শেষ হবে। আমরা আশা করছি, ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে মেট্রো রুট। মেট্রো রুট ১-এর কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। প্রায় ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রুটে থাকছে দুটি অংশ। প্রথম অংশ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত। দ্বিতীয় অংশ পূর্বাচল রুট। তা নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত। বিমানবন্দর রুটে ২০ কিলোমিটার বাংলাদেশের প্রথম পাতালরেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল নির্মিত হতে যাচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ মেট্রোরেলের ছয়টি রুটের কাজ শেষ হবে। তখন যানজটের ভোগান্তি অনেকটা কমে আসবে বলে আশা করা যায়। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর ২০ কিলোমিটার এমআরটি লাইন ১-এর কাজ শীঘ্রই শুরু করা যাবে। এ রুটেই দেশের প্রথম পাতালরেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল করা হবে। এর খরচ হবে পদ্মা সেতু ও এমআরটি লাইন ৬-এর খরচের সমান।
এদিকে এমআরটি-১ ও ৫ নির্মাণে প্রস্তুতি চলছে। এ দুটি মেট্রোরেলে নতুন করে যুক্ত হয়েছে পাতালরেল। তা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম। ২০২৭ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এমআরটি লাইন-১ ও এমআরটি লাইন ৫-এর নর্দান রুট বা উত্তরাংশ শীর্ষক মেট্রোরেল দুটি নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৯১ হাজার কোটি টাকা। এ দুই প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দেবে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। এছাড়া মেট্রোরেল দুটির সম্ভাব্যতা যাচাই ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়নেও সহায়তা করছে সংস্থাটি। ২০২৬ সালে শেষ হবে দ্বিতীয়টি তথা এমআরটি লাইন-১। এর দুটি অংশ রয়েছে। একটি অংশ বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচার পার্ক, নতুনবাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত যাবে। এ অংশের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৬ দশমিক ২১ কিলোমিটার হবে মাটির নিচ দিয়ে। তা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম পাতালরেল। বাকি তিন দশমিক ৬৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথে (এলিভেটেড)। এ অংশে ১২টি স্টেশন থাকবে। এর সবই হবে মাটির নিচে।
এমআরটি লাইন ১-এর দ্বিতীয় অংশটি নতুনবাজার থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা, পুলিশ অফিসার্স হাউসিং সোসাইটি, মস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল সেন্টার হয়ে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত যাবে। এ রুটের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার। এর পুরোটাই উড়ালপথে। এ রুটে স্টেশন সংখ্যা ৯টি। এর মধ্যে নতুনবাজার স্টেশনে ইন্টারচেঞ্জ থাকবে। এটি ব্যবহারের মাধ্যমে বিমানবন্দর রুট থেকে পূর্বাচল রুটে ও পূর্বাচল রুট থেকে বিমানবন্দর রুটে যেতে পারবেন যাত্রীরা। দুই অংশ মিলিয়ে ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। ২০১৮ সালে ৯ ডিসেম্বর এই প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন কাজ শুরু হয়।
এমআরটি লাইন ৫-এর নর্দান (উত্তরাংশ) রুটের দৈর্ঘ্য হবে ১৯ দশমিক ৬০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৩ দশমিক ৬০ কিলোমিটার মাটির নিচ দিয়ে (পাতালরেল) ও বাকি ৬ কিলোমিটার উড়ালপথে হবে। এ মেট্রোরেলটি সাভারের হেমায়েতপুর থেকে বালিয়ারপুর, মধুমতি, আমিনবাজার, গাবতলী, দারুস সালাম, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মিরপুর-১৪, কচুক্ষেত, বনানী, গুলশান-২ ও নতুনবাজার হয়ে ভাটারা যাবে। এ রুটে ১৪টি স্টেশন থাকবে। এর মধ্যে ৯টি মাটির নিচে ও ৫টি উড়ালপথে হবে। এমআরটি লাইন ৫-এর নর্দান রুটটির নির্মাণ কাজ ২০২৭ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া এমআরটি লাইন ৫-এর সাউদার্ন (দক্ষিণাংশ) রুট নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৩০ সাল। এ অংশটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ কিলোমিটার। এর উড়ালপথ ও মাটির নিচ মিলিয়ে নির্মাণ করা হবে। এ অংশে মেট্রোরেলটি গাবতলী থেকে টেকনিক্যাল, কল্যাণপুর, শ্যামলী, আসাদগেট, পান্থপথ, কারওয়ান বাজার, হাতিরঝিল, নিকেতন, রামপুরা, আফতাবনগর পশ্চিম, আফতাবনগর সেন্টার, আফতাবনগর পূর্ব হয়ে দাশিরকান্দি পর্যন্ত যাবে। এ রুটে ১৭টি স্টেশন থাকবে। এরই মধ্যে এমআরটি লাইন ৫-এর সাউদার্ন রুটের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়েছে।
ঢাকা ও আশপাশ এলাকার জন্য আরও দুটি মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে এমআরটি লাইন-৪ নির্মাণ করা হবে কমলামপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত বিদ্যমান রেলপথের নিচ দিয়ে। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মেট্রোরেলের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে উন্নয়ন সহযোগী অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এছাড়া গাবতলী থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতু পর্যন্ত এমআরটি লাইন-২ নির্মাণ করা হবে জিটুজি ভিত্তিতে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) পদ্ধতিতে মেট্রোরেলটি নির্মাণে জাপান ও বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে সহযোগিতা স্মারক সই করেছে। প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মেট্রোরেলের সম্ভাব্য যাচাইয়ে প্রস্তাব দাখিল করা হয়েছে। ঢাকায় পাতালরেল হবে সড়কের ১৫০ থেকে ২০০ ফুট নিচে। স্টেশনগুলোর আকার হবে কয়েক হাজার বর্গফুট ও তিন-চার তলার নির্মাণ হবে বলে প্রকল্প সূত্র জানায়।
এ বিষয়ে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং নতুনবাজার থেকে পিতলগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল রুট ১-এর কাজ শুরুর লক্ষ্যে কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে। এ রুটে ১১ কিলোমিটার হবে পাতালরেল। ইতোমধ্যে এর সম্ভাব্যতা যাচাই, পরিবেশগত সমীক্ষা ও মূল নকশার কাজ শেষ হয়েছে। প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি অংশে বিভক্ত মেট্রোরেল রুট ১-এর কাজ ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল রুট ৫-এর সাড়ে ১৩ কিলোমিটার হবে পাতালরেল। এ রুটের অপর অংশ গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। মেট্রোরেল রুট ৫-এর পরামর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
রবিবার, ২৮ জুলাই ২০১৯ , ১৩ শ্রাবন ১৪২৫, ২৪ জিলকদ ১৪৪০
মাহমুদ আকাশ
রাজধানীর যানজট নিরসনে উড়াল ও পাতালপথের সমন্বয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ৫টি ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) বা মেট্রোরেল। এর মধ্যে রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়ালপথে এমআরটি-৬ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। ২০১৬ সালের জুনে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত এই প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ২৫ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বর প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। উড়াল ও পাতালরেলপথের সমন্বয়ে বাকি ৪টি মেট্রোরেল ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) সূত্র জানায়।
প্রকল্প সূত্র জানায়, রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়ালসড়কের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত চার কিলোমিটার অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। এমআরটি-৬ প্রকল্পের আওতায় ৮টি প্যাকেজে নির্মাণ করা হচ্ছে মেট্রোরেল। ১ নম্বর প্যাকেজের আওতায় দিয়াবাড়ী এলাকায় ডিপো এলাকার ভূমি উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের অক্টোবর। গত বছরের জানুয়ারিতে এর কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। ডিপো এলাকার পূর্তকাজ করা হচ্ছে প্যাকেজ ২-এর আওতায়। এর মধ্যে ডিপোতে ট্রেন রাখার স্থান, ট্রেন মেরামত ও মালামালের গুদাম, প্রধান ওয়ার্কশপসহ নানা অবকাঠামো নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। ২০১৭ সালের অক্টোবর শুরু হওয়া এই প্যাকেজের বর্তমান অগ্রগতি ৪০ শতাংশ। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের উড়ালপথ ও স্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর। প্যাকেজ-৩ ও ৪-এর আওতায় উত্তরা নর্থ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট ও ৯টি স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে। উভয় প্যাকেজের কাজ ২০১৭ সালের ১ আগস্ট শুরু হয়। এই প্যাকেজের অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। এই প্যাকেজে ৪ কিলোমিটার অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। এছাড়া আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভায়াডাক্ট (উড়ালপথ) ও স্টেশন নির্মাণ কাজ হচ্ছে প্যাকেজ-৫ এবং ৬-এর অধীন। এ দুটি প্যাকেজ বাস্তবায়নের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। প্রকল্পের বৈদ্যুতিক ও মেকানিক্যাল সিস্টেম বাস্তবায়ন হচ্ছে ৭ নম্বর প্যাকেজের আওতায়। রেলের কোচ ও ডিপোর যন্ত্রপাতি সংগ্রহের কাজ হচ্ছে প্যাকেজ ৮-এর অধীন। ইতোমধ্যে প্রথম মেট্রোরেলের সামনে ও পেছনের নকশা এবং বাইরের রঙ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে লাল-সবুজের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এর বাস্তব অগ্রগতি ২৪ দশমিক ৫০ ও আর্থিক অগ্রগতি ২৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত মেট্রোরেলের দূরত্ব ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার। এর পরোটাই হবে উড়ালসড়কে মাটির ১৩ মিটার ওপর দিয়ে। শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য লাইনের পাশে শব্দনিরোধক দেয়াল নির্মাণ করা হবে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৪ কিলোমিটার উড়ালসড়ক দৃশ্যমান হয়েছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দূরত্ব ৮ দশমিক ১২ কিলোমিটার। এই পথে পাইলিং ও পিলার তৈরির কাজ চলছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাড়ে ১৬ হাজার কোটি টাকা দেবে জাইকা। মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশন হবে। এগুলো হচ্ছে উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয় ও মতিঝিল। উত্তরা থেকে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত মেট্রোরেলের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। এই পথ পাড়ি দিতে লাগবে ৩৫ মিনিট। মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোও হবে তিনতলা উচ্চতায়। টিকিট কাউন্টার ও অন্যান্য সুবিধা থাকবে দ্বিতীয় তলায় আর ট্রেনে ওঠার জন্য প্ল্যাটফর্ম থাকবে তৃতীয় তলায়। স্টেশনগুলোয় ওঠার জন্য সাধারণ সিঁড়ির পাশাপাশি থাকবে লিফট ও চলন্ত সিঁড়ি। টিকিট দিয়ে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের ব্যবস্থা হবে স্বয়ংক্রিয়। নিরাপত্তার জন্য স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে নিরাপত্তা বেষ্টনী বা প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিনডোর স্থাপন করা হবে। শুরুতে মেট্রোরেলে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রতিসেট ট্রেনে কোচ থাকবে ছয়টি। ঘণ্টায় সাড়ে ২২ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে। দিনে যাত্রী পরিবহন করতে পারবে ৫ লাখের কাছাকাছি।
এ বিষয়ে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, চলমান মেট্রোরেল রুট ৬-এর কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। ২০১৯ সালের মধ্যে আগারগাঁও এবং ২০২০ সালের মধ্যে মতিঝিল পর্যন্ত অংশের পূর্তকাজ শেষ হবে। আমরা আশা করছি, ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে মেট্রো রুট। মেট্রো রুট ১-এর কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। প্রায় ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রুটে থাকছে দুটি অংশ। প্রথম অংশ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত। দ্বিতীয় অংশ পূর্বাচল রুট। তা নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত। বিমানবন্দর রুটে ২০ কিলোমিটার বাংলাদেশের প্রথম পাতালরেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল নির্মিত হতে যাচ্ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ মেট্রোরেলের ছয়টি রুটের কাজ শেষ হবে। তখন যানজটের ভোগান্তি অনেকটা কমে আসবে বলে আশা করা যায়। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর ২০ কিলোমিটার এমআরটি লাইন ১-এর কাজ শীঘ্রই শুরু করা যাবে। এ রুটেই দেশের প্রথম পাতালরেল বা আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল করা হবে। এর খরচ হবে পদ্মা সেতু ও এমআরটি লাইন ৬-এর খরচের সমান।
এদিকে এমআরটি-১ ও ৫ নির্মাণে প্রস্তুতি চলছে। এ দুটি মেট্রোরেলে নতুন করে যুক্ত হয়েছে পাতালরেল। তা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম। ২০২৭ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এমআরটি লাইন-১ ও এমআরটি লাইন ৫-এর নর্দান রুট বা উত্তরাংশ শীর্ষক মেট্রোরেল দুটি নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৯১ হাজার কোটি টাকা। এ দুই প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দেবে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। এছাড়া মেট্রোরেল দুটির সম্ভাব্যতা যাচাই ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়নেও সহায়তা করছে সংস্থাটি। ২০২৬ সালে শেষ হবে দ্বিতীয়টি তথা এমআরটি লাইন-১। এর দুটি অংশ রয়েছে। একটি অংশ বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচার পার্ক, নতুনবাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত যাবে। এ অংশের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৬ দশমিক ২১ কিলোমিটার হবে মাটির নিচ দিয়ে। তা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম পাতালরেল। বাকি তিন দশমিক ৬৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথে (এলিভেটেড)। এ অংশে ১২টি স্টেশন থাকবে। এর সবই হবে মাটির নিচে।
এমআরটি লাইন ১-এর দ্বিতীয় অংশটি নতুনবাজার থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা, পুলিশ অফিসার্স হাউসিং সোসাইটি, মস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল সেন্টার হয়ে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত যাবে। এ রুটের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার। এর পুরোটাই উড়ালপথে। এ রুটে স্টেশন সংখ্যা ৯টি। এর মধ্যে নতুনবাজার স্টেশনে ইন্টারচেঞ্জ থাকবে। এটি ব্যবহারের মাধ্যমে বিমানবন্দর রুট থেকে পূর্বাচল রুটে ও পূর্বাচল রুট থেকে বিমানবন্দর রুটে যেতে পারবেন যাত্রীরা। দুই অংশ মিলিয়ে ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। ২০১৮ সালে ৯ ডিসেম্বর এই প্রকল্পের বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন কাজ শুরু হয়।
এমআরটি লাইন ৫-এর নর্দান (উত্তরাংশ) রুটের দৈর্ঘ্য হবে ১৯ দশমিক ৬০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৩ দশমিক ৬০ কিলোমিটার মাটির নিচ দিয়ে (পাতালরেল) ও বাকি ৬ কিলোমিটার উড়ালপথে হবে। এ মেট্রোরেলটি সাভারের হেমায়েতপুর থেকে বালিয়ারপুর, মধুমতি, আমিনবাজার, গাবতলী, দারুস সালাম, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মিরপুর-১৪, কচুক্ষেত, বনানী, গুলশান-২ ও নতুনবাজার হয়ে ভাটারা যাবে। এ রুটে ১৪টি স্টেশন থাকবে। এর মধ্যে ৯টি মাটির নিচে ও ৫টি উড়ালপথে হবে। এমআরটি লাইন ৫-এর নর্দান রুটটির নির্মাণ কাজ ২০২৭ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া এমআরটি লাইন ৫-এর সাউদার্ন (দক্ষিণাংশ) রুট নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৩০ সাল। এ অংশটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ কিলোমিটার। এর উড়ালপথ ও মাটির নিচ মিলিয়ে নির্মাণ করা হবে। এ অংশে মেট্রোরেলটি গাবতলী থেকে টেকনিক্যাল, কল্যাণপুর, শ্যামলী, আসাদগেট, পান্থপথ, কারওয়ান বাজার, হাতিরঝিল, নিকেতন, রামপুরা, আফতাবনগর পশ্চিম, আফতাবনগর সেন্টার, আফতাবনগর পূর্ব হয়ে দাশিরকান্দি পর্যন্ত যাবে। এ রুটে ১৭টি স্টেশন থাকবে। এরই মধ্যে এমআরটি লাইন ৫-এর সাউদার্ন রুটের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়েছে।
ঢাকা ও আশপাশ এলাকার জন্য আরও দুটি মেট্রোরেল নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে এমআরটি লাইন-৪ নির্মাণ করা হবে কমলামপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত বিদ্যমান রেলপথের নিচ দিয়ে। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মেট্রোরেলের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে উন্নয়ন সহযোগী অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এছাড়া গাবতলী থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতু পর্যন্ত এমআরটি লাইন-২ নির্মাণ করা হবে জিটুজি ভিত্তিতে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) পদ্ধতিতে মেট্রোরেলটি নির্মাণে জাপান ও বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে সহযোগিতা স্মারক সই করেছে। প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মেট্রোরেলের সম্ভাব্য যাচাইয়ে প্রস্তাব দাখিল করা হয়েছে। ঢাকায় পাতালরেল হবে সড়কের ১৫০ থেকে ২০০ ফুট নিচে। স্টেশনগুলোর আকার হবে কয়েক হাজার বর্গফুট ও তিন-চার তলার নির্মাণ হবে বলে প্রকল্প সূত্র জানায়।
এ বিষয়ে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর এবং নতুনবাজার থেকে পিতলগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল রুট ১-এর কাজ শুরুর লক্ষ্যে কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে। এ রুটে ১১ কিলোমিটার হবে পাতালরেল। ইতোমধ্যে এর সম্ভাব্যতা যাচাই, পরিবেশগত সমীক্ষা ও মূল নকশার কাজ শেষ হয়েছে। প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি অংশে বিভক্ত মেট্রোরেল রুট ১-এর কাজ ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রোরেল রুট ৫-এর সাড়ে ১৩ কিলোমিটার হবে পাতালরেল। এ রুটের অপর অংশ গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। মেট্রোরেল রুট ৫-এর পরামর্শক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।