কুষ্টিয়া জেলা কারাগার

বাধ্যতামূলক শিক্ষার সঙ্গে কারিগরিতে স্বনির্ভরতার পাঠ কয়েদিদের

নুর মোহাম্মদ। কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকার মুনসাদ আলীর ছেলে। একটি মামলায় সে বেশ কিছুদিন কুষ্টিয়া কারাগারে বন্দি ছিল। বন্দি থাকা অবস্থায় নুর মোহাম্মদ তিন মাস মেয়াদী ইলেকট্রিক এন্ড হাউজ ওয়ারিং হিসেবে ট্রেনিং গ্রহণ করে। জামিনে বের হয়ে এসে সে এখন ইলেকট্রিক ওয়ারিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। প্রতিদিন তার গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা উপার্জন হয়। এ দিয়ে তার সংসার চলে। তারমতো নাহিদ হাসান, নাসিম, চান্নু মিয়া, সুমন আহমেদ, রুবেল হোসেন, ফজলে রাব্বিসহ অনেকেই এখন পেশাদার ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। কারাগার তাদের আলোর পথ দেখিয়েছি। অপরাধ ছেড়ে বেছে নিয়ে পেশা। এতে তাদের মর্যাদা বেড়েছে সমাজের কাছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কারা কর্তৃপক্ষের নেয়া বেশ কয়েকটি পদক্ষেপে আমূল বদলে গেছে কারাগার। বিশেষ করে বন্দিদের আলোর পথে নিয়ে আসার জন্য বর্তমান জেল সুপার জাকের হোসেন নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বিশেষ করে গত দুই বছরে কারাগার বদলে গেছে। প্রথম দিকে নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও এখন সুবিধা পাচ্ছেন কয়েদি ও হাজতিরা। জেল সুপার জাকের হোসেনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় কুষ্টিয়া জেলা কারাগার এখন মাদক ও নিরক্ষরমুক্ত। এখানে বন্দীদের স্যানিটেশন বিষয় পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি তাদের শারীরিক ব্যয়াম করানো হয় নিয়মিত।

কারা কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানা গেছে,‘ সরকারের একটি কর্মসূচি আছে নিরক্ষর কেউ থাকবে না। সেই কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে কুষ্টিয়া কারাগারে। নতুন কোন আসামি কারাগারে আসলে তার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কেউ লেখাপড়া ও নাম স্বাক্ষর না জানলে তাকে আলাদা ওয়ার্ডে রাখা হয়। কারগারে আসার পর দিনই শুরু হয় নাম স্বাক্ষর শেখানো। বর্তমানে একটি মামলায় যাবজ্জীবন জেল হওয়া উচ্চশিক্ষিত সোহেল রানা শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন।

সোহেল রানা বলেন, তিনি এখন পর্যন্ত কারাগারে আসার পর থেকে ৯০০ জনকে স্বাক্ষরসহ লেখাপড়া শিখিয়েছেন। ২০১৭ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ৩ হাজার ২৮৮ জনকে স্বাক্ষরসহ লেখাপড়া শেখানো হয়েছে। লাহিনীপাড়া এলাকায় বাড়ি পারুল নামের এক নারী বলেন, তার স্বামী ইসমাইল কারাগারে আছেন। নাম স্বাক্ষরসহ লেখাপড়া জানতেন না। কারাগারে আসার পর এখন পড়তে পারেন নামও লিখতে পারেন। এছাড়া কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করেছেন তিনি।’

কারাগার সুত্রে জানা গেছে, কারাগারকে প্রকৃত পক্ষেই সংশোধনাগার করতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যাতে মাদক ব্যবসায়ী, ছিনতাইকারী, চুরিসহ নানা অপরাধ করে আসা আসামীরা কারাগার বের হয়ে কাজ করে জীবন যাপন করতে পারে। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে তাঁতপল্লী ও হস্তশিল্প, পাওয়ার লুম, দর্জি প্রশিক্ষণ, পুথির কাজ, ইলেকট্রিক এন্ড হাউজ ওয়ারিং এর মত বিষয়গুলো হাজতিদের ট্রেনিং করানো হচ্ছে। পাশাপাশি কয়েদিরাও শিখছে এসব কাজ। কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে কয়েকজন শিক্ষক এসে প্রথমে কয়েদিদের প্রশিক্ষন দেয়। এরপর কয়েদিরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে নিজেরায় হস্তশিল্প ও পাওয়ার লুমে প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। তারা নিজেরায় শাড়ি, লুঙ্গি উৎপাদন করেছে কারাগারে। এসব উৎপাদনকৃত পন্য কুষ্টিয়া কারাগারের সামনে তৈরীকৃত কারা পন্য প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্রে বিক্রি হচ্ছে।

কারাগার থেকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বিপ্লব, শাজাহান, রুবেলসহ আরো অনেকেই। মুক্তি পেয়ে তারাও এখন এ কাজ করে উপার্জন করছে। চলতি জানুয়ারি মাস থেকে পাওয়ার লুম ও হস্ত চালিত তাঁতা পুরোদমে উৎপাদনে যাবে। তখন চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হবে। উৎপাদনকৃত পণ্য বিক্রির অর্ধেক পাবেন কয়েদিরা। কয়েদিরা কারাগারে একতারা তৈরি করছেন। এই একতারা লালন একাডেমির অনুষ্ঠানে অতিথিদের উপহার দেয়া হয়। পাশাপাশি প্রতিদিন সকালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও কারাগার থেকে পৃথকভাবে কুরআন শিক্ষা দেয়া হচ্ছে বন্দিদের।

ভাদালিয়া এলাকায় বাড়ি রুবেল হুসাইন বলেন, ‘কারাগার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাইরের একটি দোকানে চাকুরি শুরু করেছি। প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা বেতন পান তিনি। ভাদালিয়া বাজারে মা টেলিকমে কাজ করেন রুবেল। একই সঙ্গে বিনোদনের জন্য জেল সুপার জাকের হোসেন সাংস্কৃতিক টিম গঠন করেছেন। কয়েদিদের নিয়ে বিশেষ টিম গঠন করেছেন তিনি। নিয়মিত সঙ্গীত প্রশিক্ষনসহ পরিবেশন করেন শিল্পীরা। জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কারাগার পরিদর্শনে গেলে এ টিমের সদস্যরা গান পরিবেশন করেন।

একই সঙ্গে কারা অভ্যন্তরে একটি লাইব্রেরি স্থাপন করা হয়েছে। বন্দিদের বই পড়ার সুযোগ দিতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে অর্থের অভাবে লাইব্রেরির অনেক কাজ বাকি রয়েছে। কারাগার বিশেষ করে যারা মাদক ব্যবসায়ী আছেন তাদের পুনর্বাসন করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষন দিয়ে তাদের কর্মের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এতে অনেক মাদক ব্যবসায়ী প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন কাজ করে উপার্জন করছে।

তবে প্রশিক্ষন নিয়ে যারা বাইরে কাজ করছেন এমন কয়েকজন বলেন, তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে লোন পাচ্ছেন না। লোন পেলে তারা নিজেরাই সাবলম্বী হতে পারতেন। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি যাতে লোন পাওয়া যায় সে বিষয়টি বিবেচনার দাবি করেন তারা।

জেল সুপার জাকের হোসেন বলেন,‘ বন্দীদের আলোর পথে আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে নাম স্বাক্ষরসহ লেখাপড়া শেখা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি পাওয়ার লুম, দর্জি, হস্তচালিত তাঁত, ইলেকট্রিক, সঙ্গীত চর্চার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্দীদের মাঝে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ীসহ অন্য আসামিদের আলোর পথে আনতে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অনেকেই আলোর পথ খুঁজে পেয়েছেন। তারা উপার্জন করে সংসার চালাচ্ছে। এছাড়া বন্দীরা নানা ধরনের পণ্য উৎপাদন করছে। এ পণ্য বিক্রির অর্থ তারাও পাচ্ছে।’ জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন বলেন,‘ জেল সুপারের তৎপরতায় কারাগারে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ পাচ্ছে বন্দিরা। পাশাপাশি যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাদের যাতে অর্থ দিয়ে পূর্ণবাসন করা যায় এমন বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে। যাতে তারা কর্মসংস্থানের পথ করে নিতে পারে। আর যাতে নতুন করে কোন অপরাধে না জড়ায়।’

বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২০ , ২৬ পৌষ ১৪২৬, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

কুষ্টিয়া জেলা কারাগার

বাধ্যতামূলক শিক্ষার সঙ্গে কারিগরিতে স্বনির্ভরতার পাঠ কয়েদিদের

প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া

image

কুষ্টিয়া : প্রশিক্ষণ শেষে জেলখানায় তাঁতের শাড়ি বুনছেন কয়েদিরা -সংবাদ

নুর মোহাম্মদ। কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকার মুনসাদ আলীর ছেলে। একটি মামলায় সে বেশ কিছুদিন কুষ্টিয়া কারাগারে বন্দি ছিল। বন্দি থাকা অবস্থায় নুর মোহাম্মদ তিন মাস মেয়াদী ইলেকট্রিক এন্ড হাউজ ওয়ারিং হিসেবে ট্রেনিং গ্রহণ করে। জামিনে বের হয়ে এসে সে এখন ইলেকট্রিক ওয়ারিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। প্রতিদিন তার গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা উপার্জন হয়। এ দিয়ে তার সংসার চলে। তারমতো নাহিদ হাসান, নাসিম, চান্নু মিয়া, সুমন আহমেদ, রুবেল হোসেন, ফজলে রাব্বিসহ অনেকেই এখন পেশাদার ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। কারাগার তাদের আলোর পথ দেখিয়েছি। অপরাধ ছেড়ে বেছে নিয়ে পেশা। এতে তাদের মর্যাদা বেড়েছে সমাজের কাছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কারা কর্তৃপক্ষের নেয়া বেশ কয়েকটি পদক্ষেপে আমূল বদলে গেছে কারাগার। বিশেষ করে বন্দিদের আলোর পথে নিয়ে আসার জন্য বর্তমান জেল সুপার জাকের হোসেন নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বিশেষ করে গত দুই বছরে কারাগার বদলে গেছে। প্রথম দিকে নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও এখন সুবিধা পাচ্ছেন কয়েদি ও হাজতিরা। জেল সুপার জাকের হোসেনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় কুষ্টিয়া জেলা কারাগার এখন মাদক ও নিরক্ষরমুক্ত। এখানে বন্দীদের স্যানিটেশন বিষয় পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি তাদের শারীরিক ব্যয়াম করানো হয় নিয়মিত।

কারা কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানা গেছে,‘ সরকারের একটি কর্মসূচি আছে নিরক্ষর কেউ থাকবে না। সেই কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে কুষ্টিয়া কারাগারে। নতুন কোন আসামি কারাগারে আসলে তার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কেউ লেখাপড়া ও নাম স্বাক্ষর না জানলে তাকে আলাদা ওয়ার্ডে রাখা হয়। কারগারে আসার পর দিনই শুরু হয় নাম স্বাক্ষর শেখানো। বর্তমানে একটি মামলায় যাবজ্জীবন জেল হওয়া উচ্চশিক্ষিত সোহেল রানা শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন।

সোহেল রানা বলেন, তিনি এখন পর্যন্ত কারাগারে আসার পর থেকে ৯০০ জনকে স্বাক্ষরসহ লেখাপড়া শিখিয়েছেন। ২০১৭ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ৩ হাজার ২৮৮ জনকে স্বাক্ষরসহ লেখাপড়া শেখানো হয়েছে। লাহিনীপাড়া এলাকায় বাড়ি পারুল নামের এক নারী বলেন, তার স্বামী ইসমাইল কারাগারে আছেন। নাম স্বাক্ষরসহ লেখাপড়া জানতেন না। কারাগারে আসার পর এখন পড়তে পারেন নামও লিখতে পারেন। এছাড়া কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করেছেন তিনি।’

কারাগার সুত্রে জানা গেছে, কারাগারকে প্রকৃত পক্ষেই সংশোধনাগার করতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যাতে মাদক ব্যবসায়ী, ছিনতাইকারী, চুরিসহ নানা অপরাধ করে আসা আসামীরা কারাগার বের হয়ে কাজ করে জীবন যাপন করতে পারে। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে তাঁতপল্লী ও হস্তশিল্প, পাওয়ার লুম, দর্জি প্রশিক্ষণ, পুথির কাজ, ইলেকট্রিক এন্ড হাউজ ওয়ারিং এর মত বিষয়গুলো হাজতিদের ট্রেনিং করানো হচ্ছে। পাশাপাশি কয়েদিরাও শিখছে এসব কাজ। কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে কয়েকজন শিক্ষক এসে প্রথমে কয়েদিদের প্রশিক্ষন দেয়। এরপর কয়েদিরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে নিজেরায় হস্তশিল্প ও পাওয়ার লুমে প্রশিক্ষণ প্রদান করছেন। তারা নিজেরায় শাড়ি, লুঙ্গি উৎপাদন করেছে কারাগারে। এসব উৎপাদনকৃত পন্য কুষ্টিয়া কারাগারের সামনে তৈরীকৃত কারা পন্য প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্রে বিক্রি হচ্ছে।

কারাগার থেকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বিপ্লব, শাজাহান, রুবেলসহ আরো অনেকেই। মুক্তি পেয়ে তারাও এখন এ কাজ করে উপার্জন করছে। চলতি জানুয়ারি মাস থেকে পাওয়ার লুম ও হস্ত চালিত তাঁতা পুরোদমে উৎপাদনে যাবে। তখন চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা হবে। উৎপাদনকৃত পণ্য বিক্রির অর্ধেক পাবেন কয়েদিরা। কয়েদিরা কারাগারে একতারা তৈরি করছেন। এই একতারা লালন একাডেমির অনুষ্ঠানে অতিথিদের উপহার দেয়া হয়। পাশাপাশি প্রতিদিন সকালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও কারাগার থেকে পৃথকভাবে কুরআন শিক্ষা দেয়া হচ্ছে বন্দিদের।

ভাদালিয়া এলাকায় বাড়ি রুবেল হুসাইন বলেন, ‘কারাগার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাইরের একটি দোকানে চাকুরি শুরু করেছি। প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা বেতন পান তিনি। ভাদালিয়া বাজারে মা টেলিকমে কাজ করেন রুবেল। একই সঙ্গে বিনোদনের জন্য জেল সুপার জাকের হোসেন সাংস্কৃতিক টিম গঠন করেছেন। কয়েদিদের নিয়ে বিশেষ টিম গঠন করেছেন তিনি। নিয়মিত সঙ্গীত প্রশিক্ষনসহ পরিবেশন করেন শিল্পীরা। জেলা ও দায়রা জজ এবং জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কারাগার পরিদর্শনে গেলে এ টিমের সদস্যরা গান পরিবেশন করেন।

একই সঙ্গে কারা অভ্যন্তরে একটি লাইব্রেরি স্থাপন করা হয়েছে। বন্দিদের বই পড়ার সুযোগ দিতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে অর্থের অভাবে লাইব্রেরির অনেক কাজ বাকি রয়েছে। কারাগার বিশেষ করে যারা মাদক ব্যবসায়ী আছেন তাদের পুনর্বাসন করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষন দিয়ে তাদের কর্মের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এতে অনেক মাদক ব্যবসায়ী প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন কাজ করে উপার্জন করছে।

তবে প্রশিক্ষন নিয়ে যারা বাইরে কাজ করছেন এমন কয়েকজন বলেন, তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে লোন পাচ্ছেন না। লোন পেলে তারা নিজেরাই সাবলম্বী হতে পারতেন। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি যাতে লোন পাওয়া যায় সে বিষয়টি বিবেচনার দাবি করেন তারা।

জেল সুপার জাকের হোসেন বলেন,‘ বন্দীদের আলোর পথে আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে নাম স্বাক্ষরসহ লেখাপড়া শেখা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি পাওয়ার লুম, দর্জি, হস্তচালিত তাঁত, ইলেকট্রিক, সঙ্গীত চর্চার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্দীদের মাঝে পরিবর্তন আনার পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ীসহ অন্য আসামিদের আলোর পথে আনতে এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অনেকেই আলোর পথ খুঁজে পেয়েছেন। তারা উপার্জন করে সংসার চালাচ্ছে। এছাড়া বন্দীরা নানা ধরনের পণ্য উৎপাদন করছে। এ পণ্য বিক্রির অর্থ তারাও পাচ্ছে।’ জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন বলেন,‘ জেল সুপারের তৎপরতায় কারাগারে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ পাচ্ছে বন্দিরা। পাশাপাশি যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাদের যাতে অর্থ দিয়ে পূর্ণবাসন করা যায় এমন বিষয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে। যাতে তারা কর্মসংস্থানের পথ করে নিতে পারে। আর যাতে নতুন করে কোন অপরাধে না জড়ায়।’