মোবাইল ব্যাংকিংয়ে আগ্রহ বাড়ছে গ্রাহকদের

দিন দিন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে গ্রাহকদের। ২০১৯ সালের নভেম্বর শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯৪ হাজার যা তার আগের মাস অক্টোবরে ছিল ৭ কোটি ৭৩ লাখ ৯৫ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ১২ লাখ। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা। বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যানের তথ্যে এই তথ্য জানা গেছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বর্তমানে ১৬টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত। ২০১৯ সালের নভেম্বর শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯৪ হাজার। এই সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার যা আগের মাসের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি। অক্টোবরে সক্রিয় গ্রাহক ছিল ২ কোটি ৯০ লাখ ১১ হাজার। জানা গেছে, টানা তিন মাস একবারও লেনদেন করেনি এমন হিসাবকে নিষ্ক্রিয় হিসাব বলে গণ্য করে থাকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এমএফএসে গত নভেম্বরে ২৩ কোটি ৪ লাখ ২৩ হাজার ১২০টি লেনদেনের মাধ্যমে ৩৭ হাজার ৯১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় এক হাজার ২৬৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আর আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪৭১।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন পছন্দের মাধ্যম। আলোচিত মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে টাকা জমা পড়েছে ১৩ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা। উত্তোলন করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ৯ হাজার ৯৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে ৮৭০ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪৬৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪৩৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সরকারি পরিশোধ ২৯৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এছাড়া অন্য হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৬২১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।

সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২০ , ২৯ পৌষ ১৪২৬, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে আগ্রহ বাড়ছে গ্রাহকদের

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

দিন দিন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে গ্রাহকদের। ২০১৯ সালের নভেম্বর শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯৪ হাজার যা তার আগের মাস অক্টোবরে ছিল ৭ কোটি ৭৩ লাখ ৯৫ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে গ্রাহক বেড়েছে প্রায় ১২ লাখ। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা। বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যানের তথ্যে এই তথ্য জানা গেছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বর্তমানে ১৬টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত। ২০১৯ সালের নভেম্বর শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯৪ হাজার। এই সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় সক্রিয় গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার যা আগের মাসের চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি। অক্টোবরে সক্রিয় গ্রাহক ছিল ২ কোটি ৯০ লাখ ১১ হাজার। জানা গেছে, টানা তিন মাস একবারও লেনদেন করেনি এমন হিসাবকে নিষ্ক্রিয় হিসাব বলে গণ্য করে থাকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এমএফএসে গত নভেম্বরে ২৩ কোটি ৪ লাখ ২৩ হাজার ১২০টি লেনদেনের মাধ্যমে ৩৭ হাজার ৯১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় এক হাজার ২৬৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। আর আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪৭১।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন পছন্দের মাধ্যম। আলোচিত মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে টাকা জমা পড়েছে ১৩ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা। উত্তোলন করা হয়েছে ১২ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ৯ হাজার ৯৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে ৮৭০ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪৬৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪৩৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সরকারি পরিশোধ ২৯৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এছাড়া অন্য হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৬২১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।