মুজিব শাসন আমল : ১৯৭২

১৪ জানুয়ারি

পুনর্বাসন ও বাংলাদেশকে ক্ষতিপূরণদানে পাকিস্তানের দায়িত্ব

বর্তমানে যেহেতু দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ও আইনের শাসন পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এমতাবস্থায় আমাদের পরবর্তী প্রধান কর্তব্য হচ্ছে বাস্তচ্যুত ও অক্ষম ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে আশু মনোনিবেশ করা। তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের নির্দয় শোষণ ও নিপীড়ন এবং পরবর্তী পর্যায়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পাকিস্তান হানাদারবাহিনী কর্তৃক ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডের দরুণ এদেশের প্রায় এক কোটি লোককে তাদের ভিটে-মাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছিল প্রতিবেশী মিত্ররাষ্ট্র ভারতে। ৩০ লাখ লোককে হৃদয়হীনভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং বাদবাকি যারা দেশে বেঁচে ছিলেন তাঁরাও শিকার হয়েছেন অবাধ লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসের। ভবিষ্যতের সুখস্বপ্নময় আশা-আকাক্সক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে তারা হয়েছেন নিরাশ্রয়। এক কথায় বলতে গেলে দেশের সবাইকেই পুনর্বাসিত করা প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে প্রত্যাগতদের পুনর্বাসনের প্রশ্নটিই সবচেয়ে জরুরি। যেহেতু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে লাখো লাখো শরণার্থী পুনরায় তাদের নিজেদের ভিটে-মাটিতে ফিরে আসতে শুরু করেছেন, তাই বাংলাদেশ সরকারও ইতোমধ্যে তাদের পুনর্বাসিত করার জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এ কাজের দায়িত্ব অত্যন্ত বিরাট। দেশ ও বিদেশ থেকে গৃহনির্মাণের সরঞ্জামাদি ক্রয়ের জন্য অর্থ এবং বৈদেশিক মুদ্রা উভয়েরই প্রয়োজন রয়েছে বিরাট অঙ্কের। হিসেব মতে ছিন্নমূল ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। এই টাকা একদিকে দেশ থেকেই যেমন সগ্রহ করতে হবে, অন্যদিকে তেমন বিদেশ থেকেও সাহায্য গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের নিপীড়িত-লাঞ্ছিত জনগণ মনে করে যে, পাকিস্তান হানাদারবাহিনী বাংলাদেশের জানমালের যে ক্ষয়-ক্ষতি সাধন করেছে তার পরিপেক্ষিতে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকারের ক্ষতিপূরণ পাবার অধিকার রয়েছে। পাকিস্তানি ইয়াহিয়া- ভুট্টো চক্র বাংলাদেশকে আক্রমণ করেছে। পাকিস্তানবাহিনীর বর্বরোচিত আক্রমণের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি পূরণ রবার রেওয়াজ প্রচলিত আছে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বাংলাদেশকে আক্রমণ ও বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত গণহত্যার ব্যাপারে পাকিস্তান সামরিক জান্তার পরিকল্পনার সঙ্গে ভুট্টোও মনেপ্রাণে জড়িত ছিলেন। কোনো রকম ছলে-বলে কিংবা কৌশলেই ভুট্টো বাঙালির রক্তে রঞ্জিত তার হাতকে ধৌত করবার সুযোগ পাবেন না। যেকোনো মানদণ্ডেই বিচার করা হোক না কেন, এ কথা অস্বীকার করবার কোনো উপায় নেই যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সামরিক জান্তার সমস্ত চক্রান্ত এবং অপরাধের একজন সক্রিয় সহযোগী ছিলেন ভুট্টো। পাকিস্তানের (পশ্চিম পাকিস্তান) সামন্ততন্ত্র ও সামরিক চক্র যে অপরাধে অপরাধী ভুট্টো তারও যৌথ দায়িত্বের অংশীদার। এ প্রসঙ্গে একথা স্মরণ করা যেতে পারে যে, ভুট্টো কোনো বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হননি, বরং খুনি ইয়াহিয়ার উত্তরাধিকারী সরকার হিসেবে ক্ষমতায় আরোহণ করেছেন। সুতরাং এমতাবস্থায় পূর্ববর্তী সরকারের দায়দাযিত্ব স্বাভাবিকভাবে ভুট্টোর ওপরই বর্তায়। প্রকৃত প্রস্তাবে আপনাপনিভাবেই ভুট্টো সরকার স্বীকৃতি লাভ করেছিলেন। কারণ আপাতদৃষ্টিতে ভুট্টো সরকার তার পূর্ববর্তী সরকারেরই স্থলাভিষিক্ত হয়েছে। অতএব, যেহেতু ভুট্টো সরকার তার পূর্ববর্তী সরকার কর্তৃক চুক্তিবদ্ধ ও গৃহীত সমস্ত ঋণ এবং দেনা পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবে, তেমনি ঠিক একই কারণে ভুট্টোর পূর্ববর্তী সরকার তাদের ভাড়াটে খুনিদের দ্বারা বাংলাদেশের জানমালের যে বিপুল ক্ষতিসাধন করেছে, তার ক্ষতিপূরণ করবার জন্য ভুট্টো সরকার বাধ্য। অতএব ক্ষগ্রিস্তদের সাহায্যার্থে আন্তর্জাতিক বিধান অনুযায়ী এখন আমরা ন্যায়সঙ্গতভাবেই পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারি। এ ধরনের দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে আক্রমণকারীরাও এ থেকে যথেষ্ট শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। এখন পুনরায় জরুরি পুনর্বাসন প্রসঙ্গে ফিরে এসে আমরা বলতে পারি যে, পুনর্বাসনের ব্যাপারে শুধু সরকারি উদ্যোগের গুরুত্বকেই বড় করে দেখলে চলবে না-এর সঙ্গে দেশের জনগণের সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণসংস্থা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সাহায্যেরও প্রয়োজন রয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সমস্ত সাহায্য সহযোগিতার সম্ভাবনাকেই একসূত্রে গ্রথিত করতে হবে। আমাদের দিক থেকে আমরা বলতে পারি, ছিন্নমূল মানুষের জীবনকে সুখ সমৃদ্ধিময় করে তুলতে আমরা আমাদের সাধ্যমতো সবকিছুই করে যাবো। এক কথায় সদ্যমুক্ত ও স্বাধীন একটি নতুন জাতির আশা-আকাক্সক্ষাকে বাস্তবায়িত করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন আমরা তার জন্য সব রকম আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত।

‘মুজিববাদ’ প্রতিষ্ঠা ছাড়া বাংলার কল্যাণ সম্ভব নয়

মোহাম্মদপুরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় ছাত্রলীগের প্রমােদ সম্পাদক শেখ ফজলুল করিম সেলিম তেজোদীপ্তকণ্ঠে বলেন যে, বিশ্বের তৃতীয় মতবাদ “মুজিববাদ” প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত বাংলার সাড়ে সাতকোটি জনগণের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে এবং বাংলার মানুষ যে কোনো মূল্যে “মুজিববাদ” প্রতিষ্ঠা করবেই। তিনি বলেন যে, বাংলার মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও বাচার নিশ্চয়তাবিধান তথা “মুজিববাদ” প্রতিষ্ঠা ছাড়া বাংলার জনগণের কল্যাণ হতে পারে না। সভায় প্রধান বক্তা আবদুল শহীদ খান সেন্টু বলেন যে, বাংলার লক্ষ লোক রক্তের মাধ্যমে বাংলাকে স্বাধীন ও বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করেছে এবং দরকার হলে বাংলার জনগণ আরও বহু রক্তের বিনিময়ে হলেও এই মহামানবের মতবাদ “মুজিববাদকে প্রতিষ্ঠা করবে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বরকত মাস্টার, হাসেম খান ও আলী আহমদ বাদল বক্তৃতা করেন।

সূত্র : দিনলিপি, বঙ্গবন্ধুর শাসন সময়, ১৯৭২

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২০ , ২ মাঘ ১৪২৬, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

মুজিব শতবর্ষ

মুজিব শাসন আমল : ১৯৭২

১৪ জানুয়ারি

পুনর্বাসন ও বাংলাদেশকে ক্ষতিপূরণদানে পাকিস্তানের দায়িত্ব

বর্তমানে যেহেতু দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ও আইনের শাসন পুনঃ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এমতাবস্থায় আমাদের পরবর্তী প্রধান কর্তব্য হচ্ছে বাস্তচ্যুত ও অক্ষম ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে আশু মনোনিবেশ করা। তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের নির্দয় শোষণ ও নিপীড়ন এবং পরবর্তী পর্যায়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পাকিস্তান হানাদারবাহিনী কর্তৃক ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডের দরুণ এদেশের প্রায় এক কোটি লোককে তাদের ভিটে-মাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছিল প্রতিবেশী মিত্ররাষ্ট্র ভারতে। ৩০ লাখ লোককে হৃদয়হীনভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং বাদবাকি যারা দেশে বেঁচে ছিলেন তাঁরাও শিকার হয়েছেন অবাধ লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসের। ভবিষ্যতের সুখস্বপ্নময় আশা-আকাক্সক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে তারা হয়েছেন নিরাশ্রয়। এক কথায় বলতে গেলে দেশের সবাইকেই পুনর্বাসিত করা প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে প্রত্যাগতদের পুনর্বাসনের প্রশ্নটিই সবচেয়ে জরুরি। যেহেতু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে লাখো লাখো শরণার্থী পুনরায় তাদের নিজেদের ভিটে-মাটিতে ফিরে আসতে শুরু করেছেন, তাই বাংলাদেশ সরকারও ইতোমধ্যে তাদের পুনর্বাসিত করার জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এ কাজের দায়িত্ব অত্যন্ত বিরাট। দেশ ও বিদেশ থেকে গৃহনির্মাণের সরঞ্জামাদি ক্রয়ের জন্য অর্থ এবং বৈদেশিক মুদ্রা উভয়েরই প্রয়োজন রয়েছে বিরাট অঙ্কের। হিসেব মতে ছিন্নমূল ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। এই টাকা একদিকে দেশ থেকেই যেমন সগ্রহ করতে হবে, অন্যদিকে তেমন বিদেশ থেকেও সাহায্য গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের নিপীড়িত-লাঞ্ছিত জনগণ মনে করে যে, পাকিস্তান হানাদারবাহিনী বাংলাদেশের জানমালের যে ক্ষয়-ক্ষতি সাধন করেছে তার পরিপেক্ষিতে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকারের ক্ষতিপূরণ পাবার অধিকার রয়েছে। পাকিস্তানি ইয়াহিয়া- ভুট্টো চক্র বাংলাদেশকে আক্রমণ করেছে। পাকিস্তানবাহিনীর বর্বরোচিত আক্রমণের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি পূরণ রবার রেওয়াজ প্রচলিত আছে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বাংলাদেশকে আক্রমণ ও বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত গণহত্যার ব্যাপারে পাকিস্তান সামরিক জান্তার পরিকল্পনার সঙ্গে ভুট্টোও মনেপ্রাণে জড়িত ছিলেন। কোনো রকম ছলে-বলে কিংবা কৌশলেই ভুট্টো বাঙালির রক্তে রঞ্জিত তার হাতকে ধৌত করবার সুযোগ পাবেন না। যেকোনো মানদণ্ডেই বিচার করা হোক না কেন, এ কথা অস্বীকার করবার কোনো উপায় নেই যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সামরিক জান্তার সমস্ত চক্রান্ত এবং অপরাধের একজন সক্রিয় সহযোগী ছিলেন ভুট্টো। পাকিস্তানের (পশ্চিম পাকিস্তান) সামন্ততন্ত্র ও সামরিক চক্র যে অপরাধে অপরাধী ভুট্টো তারও যৌথ দায়িত্বের অংশীদার। এ প্রসঙ্গে একথা স্মরণ করা যেতে পারে যে, ভুট্টো কোনো বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হননি, বরং খুনি ইয়াহিয়ার উত্তরাধিকারী সরকার হিসেবে ক্ষমতায় আরোহণ করেছেন। সুতরাং এমতাবস্থায় পূর্ববর্তী সরকারের দায়দাযিত্ব স্বাভাবিকভাবে ভুট্টোর ওপরই বর্তায়। প্রকৃত প্রস্তাবে আপনাপনিভাবেই ভুট্টো সরকার স্বীকৃতি লাভ করেছিলেন। কারণ আপাতদৃষ্টিতে ভুট্টো সরকার তার পূর্ববর্তী সরকারেরই স্থলাভিষিক্ত হয়েছে। অতএব, যেহেতু ভুট্টো সরকার তার পূর্ববর্তী সরকার কর্তৃক চুক্তিবদ্ধ ও গৃহীত সমস্ত ঋণ এবং দেনা পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবে, তেমনি ঠিক একই কারণে ভুট্টোর পূর্ববর্তী সরকার তাদের ভাড়াটে খুনিদের দ্বারা বাংলাদেশের জানমালের যে বিপুল ক্ষতিসাধন করেছে, তার ক্ষতিপূরণ করবার জন্য ভুট্টো সরকার বাধ্য। অতএব ক্ষগ্রিস্তদের সাহায্যার্থে আন্তর্জাতিক বিধান অনুযায়ী এখন আমরা ন্যায়সঙ্গতভাবেই পাকিস্তান সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারি। এ ধরনের দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে আক্রমণকারীরাও এ থেকে যথেষ্ট শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। এখন পুনরায় জরুরি পুনর্বাসন প্রসঙ্গে ফিরে এসে আমরা বলতে পারি যে, পুনর্বাসনের ব্যাপারে শুধু সরকারি উদ্যোগের গুরুত্বকেই বড় করে দেখলে চলবে না-এর সঙ্গে দেশের জনগণের সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণসংস্থা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সাহায্যেরও প্রয়োজন রয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সমস্ত সাহায্য সহযোগিতার সম্ভাবনাকেই একসূত্রে গ্রথিত করতে হবে। আমাদের দিক থেকে আমরা বলতে পারি, ছিন্নমূল মানুষের জীবনকে সুখ সমৃদ্ধিময় করে তুলতে আমরা আমাদের সাধ্যমতো সবকিছুই করে যাবো। এক কথায় সদ্যমুক্ত ও স্বাধীন একটি নতুন জাতির আশা-আকাক্সক্ষাকে বাস্তবায়িত করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন আমরা তার জন্য সব রকম আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত।

‘মুজিববাদ’ প্রতিষ্ঠা ছাড়া বাংলার কল্যাণ সম্ভব নয়

মোহাম্মদপুরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় ছাত্রলীগের প্রমােদ সম্পাদক শেখ ফজলুল করিম সেলিম তেজোদীপ্তকণ্ঠে বলেন যে, বিশ্বের তৃতীয় মতবাদ “মুজিববাদ” প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত বাংলার সাড়ে সাতকোটি জনগণের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে এবং বাংলার মানুষ যে কোনো মূল্যে “মুজিববাদ” প্রতিষ্ঠা করবেই। তিনি বলেন যে, বাংলার মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও বাচার নিশ্চয়তাবিধান তথা “মুজিববাদ” প্রতিষ্ঠা ছাড়া বাংলার জনগণের কল্যাণ হতে পারে না। সভায় প্রধান বক্তা আবদুল শহীদ খান সেন্টু বলেন যে, বাংলার লক্ষ লোক রক্তের মাধ্যমে বাংলাকে স্বাধীন ও বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করেছে এবং দরকার হলে বাংলার জনগণ আরও বহু রক্তের বিনিময়ে হলেও এই মহামানবের মতবাদ “মুজিববাদকে প্রতিষ্ঠা করবে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বরকত মাস্টার, হাসেম খান ও আলী আহমদ বাদল বক্তৃতা করেন।

সূত্র : দিনলিপি, বঙ্গবন্ধুর শাসন সময়, ১৯৭২