হাসপাতালে ভর্তি ৭ জনের অবস্থা স্থিতিশীল

করোনাভাইরাস রোধে সমুদ্র ও স্থলবন্দরে সতর্ক ব্যবস্থা

করোনাভাইরাস ঠেকাতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিদেশ থেকে আসা লোকজনকে প্রতিদিন বিমান বন্দরে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। এছাড়াও হাসপাতালগুলোতে আগাম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কুর্মিটোলা জেনালের হাসপাতাল থেকে শুরু করে সব হাসপাতালে আগাম প্রস্তুতি আছে। মহাখালী রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ টিম সর্বক্ষণ তৎপর রয়েছে। তাদের গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসের আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি। এরপরও সন্দেহভাজনদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, চীন থেকে ফেরত আসা ৩০২ যাত্রীর সবাই সুস্থ আছে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গ নিরোধ (কোয়ারান্টাইন) ব্যবস্থাপনা কোর কমিটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রলালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে অতিরিক্তি সচিব (প্রশাসন) হাবিবুর রহমানকে আহ্বায়ক ও ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মঈনুল আহসানকে সদস্য-সচিবের দায়িত্ব প্রদান করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

সার্বিক পরিস্থিতি :

চীন থেকে ৩১২ জন বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরে আসেন। তাদের মধ্যে দেহের তাপমাত্রা বেশি থাকায় ৭ জনকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর একজনকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমইচ) ভর্তি করা হয়েছে অন্য ধরনের অসুস্থতার কারণে। দুইজন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি রোগীর পরিবারের সদস্য, তারা রোগীর পরিচর্যাকারী হিসেবে সেখানে আছেন। হাসাপাতালে ৮ জন চিকিৎসাধীন আছেন। আশকোনা হাজি ক্যাম্পে থাকা ৩০২ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত কোন যাত্রীর মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ পাওয়া যায় নাই। পরবর্তীতে কোন লক্ষণ দেখা দিলে সেনাবাহিনী ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিশেষ দল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে এবং করোনাভাইরাস (২০১৯-হঈড়ঠ) সংক্রমণ শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহের জন্য আইইডিসিআরএর একটি দল প্রস্তুত রয়েছে। (২০১৯-হঈড়ঠ) ভাইরাস সংক্রান্ত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ও কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহ যাবত চীনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নতুন একটি করোনাভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। করোনাভাইরাসের (২০১৯-হঈড়ঠ) পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আইইডিসিআরের নীচতলায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।

চীন থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের অভিভাবক ও পবিরারের সদস্যদের আতঙ্কিত না হওয়ার এবং বিমানবন্দর ও আশকোনা হাজী ক্যাম্প এলাকায় অবস্থান না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। আশকোনা হাজী ক্যাম্পে অবস্থানরত চীন থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বাস্থ্যগত তথ্য তাদের অভিভাবক ও পবিরারের সদস্যদের নিয়মিত অবহিত করা হবে।

মহাখালী রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা পাঠানো এক তথ্যে বলা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত চীন থেকে আসা বিমানবন্দরে ৫৬৩১ জনের স্ক্রিনিং করা হয়েছে। আইইডিসিআরের হটলাইনে মোট কল সংখ্যা ৪৬৮। তারা গতকাল পর্যন্ত ২৮ জনকে সেবা দিয়েছে।

করোনাভাইরাস রোধে সমুদ্র ও স্থল বন্দরে সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে

‘করোনাভাইরাস’ প্রতিরোধে সতর্ককতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সমুদ্র্র ও স্থল বন্দরগুলোতে। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে নেয়া হয়েছে দু’স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে আসা জাহাজের নাবিকদের পোর্ট হেলথ অফিসার স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে নিরাপদ ঘোষণা করলেই বন্দরে ঢোকার অনুমতি দেয়া হবে। করোনাভাইরাস প্রবেশ প্রতিরোধে জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং এজেন্ট জাহাজ বহির্নোঙ্গরে আসার সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে যথাযথ ঘোষণা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বন্দরে আসা জাহাজের মাস্টারকে পোর্ট লিমিটে আসার সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা দিতে হবে যে, ওই জাহাজে করোনাভাইরাস আক্রান্ত নাবিক নেই। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরে দু’স্তরের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। থার্মাল ও কোয়ারেন্টাইন টেস্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গতকাল নৌ-মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আবদুস সামাদসহ সংশ্লিষ্ট দফতর ও সংস্থা প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে নৌ-প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন সঠিকভাবে করতে আরও আন্তরিক হতে হবে। নিয়মিত প্রকল্পের কাজ মনিটরিং করতে হবে। মনিটরিং সঠিকভাবে করতে পারলে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা যাবে। কাজ করতে গেলে চ্যালেঞ্জ থাকবে; চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পদক্ষেপও থাকবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও এর অধিনস্ত সংস্থাগুলো অনেক কাজ করছে এবং আলোচনায় রয়েছে।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয় চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দর এলাকায় কর্মরত চীনা নাগরিকদের নিজ দেশে যেতে এ মুহূর্তে ছুটি দেয়া হচ্ছে না। যারা ছুটিতে গেছেন তাদেরকে এখন না আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বন্দরে জাহাজে কর্মরতদের করোনাভাইরাস সম্পর্কে লোকদের সচেতন করা হচ্ছে। বেনাপোল বন্দরসহ অন্য স্থল বন্দরেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা এবং সহায়তায় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রা বন্দর এবং বেনাপোল স্থলবন্দরসহ অন্য স্থল বন্দরগুলো। জাহাজ থেকে হাসপাতালে দ্রুত রোগী স্থানান্তরের জন্য বন্দরে ‘অ্যাম্বুলেন্স শিপ’ রাখা হয়েছে। বন্দর ইমিগ্রেশন ডেক্সে পোর্ট হেলথ অফিসারের তত্ত্বাবধানে একটি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। কোন নাবিক বাইরে যেতে চাইলে মেডিকেল স্ক্রিনিংয়ে সুস্থতা সাপেক্ষেই শুধু অনুমতি দেয়া হবে। এছাড়া সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে মাস্ক ও অন্যসব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবাইকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৭১৩ কোটি ১৩ লাখ ব্যয়ে ৪৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এগুলোর মধ্যে এডিপিভুক্ত প্রকল্প ৪০টি এবং ৯টি প্রকল্প সংস্থার নিজস্ব। এডিপিভুক্ত প্রকল্পে ৩০১৩ কোটি ৪৪ লাখ এবং নিজস্ব প্রকল্পে ১৬৯৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ২০ মাঘ ১৪২৬, ৮ জমাদিউল সানি ১৪৪১

চীন থেকে ফেরত

হাসপাতালে ভর্তি ৭ জনের অবস্থা স্থিতিশীল

করোনাভাইরাস রোধে সমুদ্র ও স্থলবন্দরে সতর্ক ব্যবস্থা

বাকিবিল্লাহ |

করোনাভাইরাস ঠেকাতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিদেশ থেকে আসা লোকজনকে প্রতিদিন বিমান বন্দরে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। এছাড়াও হাসপাতালগুলোতে আগাম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কুর্মিটোলা জেনালের হাসপাতাল থেকে শুরু করে সব হাসপাতালে আগাম প্রস্তুতি আছে। মহাখালী রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ টিম সর্বক্ষণ তৎপর রয়েছে। তাদের গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসের আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি। এরপরও সন্দেহভাজনদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, চীন থেকে ফেরত আসা ৩০২ যাত্রীর সবাই সুস্থ আছে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গ নিরোধ (কোয়ারান্টাইন) ব্যবস্থাপনা কোর কমিটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রলালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে অতিরিক্তি সচিব (প্রশাসন) হাবিবুর রহমানকে আহ্বায়ক ও ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ডা. মঈনুল আহসানকে সদস্য-সচিবের দায়িত্ব প্রদান করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

সার্বিক পরিস্থিতি :

চীন থেকে ৩১২ জন বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফিরে আসেন। তাদের মধ্যে দেহের তাপমাত্রা বেশি থাকায় ৭ জনকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর একজনকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমইচ) ভর্তি করা হয়েছে অন্য ধরনের অসুস্থতার কারণে। দুইজন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি রোগীর পরিবারের সদস্য, তারা রোগীর পরিচর্যাকারী হিসেবে সেখানে আছেন। হাসাপাতালে ৮ জন চিকিৎসাধীন আছেন। আশকোনা হাজি ক্যাম্পে থাকা ৩০২ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত কোন যাত্রীর মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ পাওয়া যায় নাই। পরবর্তীতে কোন লক্ষণ দেখা দিলে সেনাবাহিনী ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিশেষ দল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে এবং করোনাভাইরাস (২০১৯-হঈড়ঠ) সংক্রমণ শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহের জন্য আইইডিসিআরএর একটি দল প্রস্তুত রয়েছে। (২০১৯-হঈড়ঠ) ভাইরাস সংক্রান্ত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ও কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহ যাবত চীনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নতুন একটি করোনাভাইরাস এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। করোনাভাইরাসের (২০১৯-হঈড়ঠ) পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আইইডিসিআরের নীচতলায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।

চীন থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের অভিভাবক ও পবিরারের সদস্যদের আতঙ্কিত না হওয়ার এবং বিমানবন্দর ও আশকোনা হাজী ক্যাম্প এলাকায় অবস্থান না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। আশকোনা হাজী ক্যাম্পে অবস্থানরত চীন থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বাস্থ্যগত তথ্য তাদের অভিভাবক ও পবিরারের সদস্যদের নিয়মিত অবহিত করা হবে।

মহাখালী রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা পাঠানো এক তথ্যে বলা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত চীন থেকে আসা বিমানবন্দরে ৫৬৩১ জনের স্ক্রিনিং করা হয়েছে। আইইডিসিআরের হটলাইনে মোট কল সংখ্যা ৪৬৮। তারা গতকাল পর্যন্ত ২৮ জনকে সেবা দিয়েছে।

করোনাভাইরাস রোধে সমুদ্র ও স্থল বন্দরে সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে

‘করোনাভাইরাস’ প্রতিরোধে সতর্ককতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সমুদ্র্র ও স্থল বন্দরগুলোতে। চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে নেয়া হয়েছে দু’স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে আসা জাহাজের নাবিকদের পোর্ট হেলথ অফিসার স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে নিরাপদ ঘোষণা করলেই বন্দরে ঢোকার অনুমতি দেয়া হবে। করোনাভাইরাস প্রবেশ প্রতিরোধে জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং এজেন্ট জাহাজ বহির্নোঙ্গরে আসার সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে যথাযথ ঘোষণা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বন্দরে আসা জাহাজের মাস্টারকে পোর্ট লিমিটে আসার সঙ্গে সঙ্গে ঘোষণা দিতে হবে যে, ওই জাহাজে করোনাভাইরাস আক্রান্ত নাবিক নেই। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দরে দু’স্তরের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। থার্মাল ও কোয়ারেন্টাইন টেস্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। গতকাল নৌ-মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আবদুস সামাদসহ সংশ্লিষ্ট দফতর ও সংস্থা প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে নৌ-প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন সঠিকভাবে করতে আরও আন্তরিক হতে হবে। নিয়মিত প্রকল্পের কাজ মনিটরিং করতে হবে। মনিটরিং সঠিকভাবে করতে পারলে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করা যাবে। কাজ করতে গেলে চ্যালেঞ্জ থাকবে; চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পদক্ষেপও থাকবে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও এর অধিনস্ত সংস্থাগুলো অনেক কাজ করছে এবং আলোচনায় রয়েছে।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয় চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা বন্দর এলাকায় কর্মরত চীনা নাগরিকদের নিজ দেশে যেতে এ মুহূর্তে ছুটি দেয়া হচ্ছে না। যারা ছুটিতে গেছেন তাদেরকে এখন না আসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বন্দরে জাহাজে কর্মরতদের করোনাভাইরাস সম্পর্কে লোকদের সচেতন করা হচ্ছে। বেনাপোল বন্দরসহ অন্য স্থল বন্দরেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা এবং সহায়তায় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রা বন্দর এবং বেনাপোল স্থলবন্দরসহ অন্য স্থল বন্দরগুলো। জাহাজ থেকে হাসপাতালে দ্রুত রোগী স্থানান্তরের জন্য বন্দরে ‘অ্যাম্বুলেন্স শিপ’ রাখা হয়েছে। বন্দর ইমিগ্রেশন ডেক্সে পোর্ট হেলথ অফিসারের তত্ত্বাবধানে একটি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। কোন নাবিক বাইরে যেতে চাইলে মেডিকেল স্ক্রিনিংয়ে সুস্থতা সাপেক্ষেই শুধু অনুমতি দেয়া হবে। এছাড়া সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে মাস্ক ও অন্যসব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবাইকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪৭১৩ কোটি ১৩ লাখ ব্যয়ে ৪৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এগুলোর মধ্যে এডিপিভুক্ত প্রকল্প ৪০টি এবং ৯টি প্রকল্প সংস্থার নিজস্ব। এডিপিভুক্ত প্রকল্পে ৩০১৩ কোটি ৪৪ লাখ এবং নিজস্ব প্রকল্পে ১৬৯৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে।