পিপিই’র প্রয়োজনীয়তা বনাম অপচয়

অধ্যাপক রাশিদা বেগম

‘পিপিই সবার জন্য নয়। যারা করোনা রোগীর সেবা করবে পিপিই শুধু তারা পরবে। ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া যারা পিপিই পরবে তাদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেব করোনা রোগীর সেবা করতে’- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আমরা এক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এক ভয়াবহ অস্থির এবং অনিশ্চিত সময় পার করছি। এ সময়ে নিজেদের সুরক্ষার জন্য আমরা যখন ঘরে বসে আছি তখন সাহসী কিছু মানুষ করোনাকে উপেক্ষা করে মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য লড়ছে। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সমাজসেবক, স্বেচ্ছাসেবী সবারই ভূমিকা অপরিসীম। প্রত্যেকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, ল্যাব টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান, ক্লিনার হোল সেসব মানুষ যারা জীবন বাজি রেখে মানুষের কল্যাণে কাজ করছে এ করোনা যুদ্ধে। আইসিইউ’র চিকিৎসক ও নার্সের রয়েছে মৃত্যু ঝুঁকির মতো সর্বোচ্চ ঝুঁকি। এই বৈশ্বিক দুর্যোগে আপনার অর্থবিত্ত, ক্ষমতা সব তুচ্ছ। আর কোন এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নেই, কোন ক্রস বর্ডার চিকিৎসা নেই। সকলের এ দেশের চিকিৎসার ওপর নির্ভর করতে হবে। নির্ভর করতে হবেযেমন স্বাস্থ্যসুবিধা আমাদের দেশ এ যাবতকাল তৈরি করে রেখেছে তার ওপরে। অন্তত সেজন্য হলেও চিকিৎসকদের ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ওরা না বাঁচলে আমাদের বাঁচাবে কে?

তাই পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) প্রথমেই দরকার তাদের জন্য যারা সরাসরি রোগীর পরিচর্যা করে। এ প্রয়োজন তাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য এবং অন্য রোগীদের নিরাপত্তার জন্য। আর এ উদ্দেশ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ওই উক্তি।

তবে কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে হলে পিপিই এর আগে অনেক প্রতিরোধ রয়ে গেছে। আমরা যদি সচেতন হই, প্রত্যেকে যদি নিয়ম কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই তাহলে এই রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাবে। আপনার সহযোগিতা রক্ষা করবে আপনাকে এবং সাথে আরও হাজার জনকে। কমিউনিটির সবার মঙ্গলের জন্য এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর চাপ কমাবার জন্য ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের সুপারিশ অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব এবং হাতের পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন।

কী করতে হবে-

১। হাত ধোয়া : ঘন ঘন হাত ধুতে হবে। এটি নাক, মুখ ও চোখ দিয়ে প্রবেশ করে। বিভিন্ন জায়গায় ভাইরাসটি ৩ ঘন্টা থেকে শুরু করে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে। কাজেই স্পর্শে সেটি হাতের সাথে চলে আসে এবং হাত নাকে, মুখে, চোখে স্পর্শ হলে নাসা রন্ধ্রে বা মুখে বা চোখে ঢুকে যাবে। খুবই ভালো যে এটির বাহ্যিক পর্দাটা সাবান এবং এলকোহলে নষ্ট হয়ে যায়। তাই যা কিছুই ধরেন না কেন হাত ময়লা থাকলে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন এবং পরিষ্কার থাকলে স্যানিটাইজার দিয়ে ঘষে ফেলবেন।

২। নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।

৩। হাঁচি, কাশি দেবার সময়ে শিষ্টাচার এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। কারো মুখের সামনে হাঁচি, কাশি দিবেন না। কনুই দিয়ে মুখ ঢেকে নিন। খালি হাত দিবেন না, হাতের কাছে টিস্যু থাকলে টিস্যু দিয়ে মুখ ঢাকুন এবং সাথে সাথেই মুখ ঢাকা টিস্যুটি বিনে ফেলে দিন। হাত ধুয়ে ফেলুন।

৪। কাশি এবং শ্বাসের সমস্যা থাকলে মেডিকেল (সার্জিক্যাল) মাস্ক ব্যবহার করুন। মাস্ক খোলার পরে হাত ধুয়ে ফেলুন এবং মাস্কটি মুখ ঢাকা বিনে ফেলে দিন।

৫। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। নিজ বাসায় অবস্থান করুন এবং সব রকমের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। খুব প্রয়োজনে বাইরে গেলেও ভিড় এড়িয়ে চলুন। সাধারণের সাথে কিংবা কারো শ্বাসজনিত কোনো সমস্যা দেখলে কমপক্ষে ১ মিটার দূরে অবস্থান করুন।

সারা পৃথিবীতে পিপিই’র স্বল্পতা। অগণিত মানুষ রোগী হয়ে যাচ্ছে। তাদের সেবা দেবার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে অসংখ্য সেবাদানকারীর। এমতাবস্থায় পিপিই’র অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার রোধে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন সুপারিশ করেছে Rational use of personal protective equipment for coronavirus disease 2019 (COVID-19)’ সেই সুপারিশ অনুযায়ী কার কার পিপিই ব্যবহার করা দরকার সেটা লিখছি। তবে ব্যবহারের আগেএকটু জেনে নেই পিপিই কি?

পিপিই হোল অনেক গুলো জিনিষের সমন্বিত একটি বিশেষ বেশভুষা যা পরিধানকারী ব্যক্তিকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।তবে সেই সমন্বিত জিনিসের অংশ বিশেষও পিপিই।

জিনিসগুলো হোল ১। গাউন, এটি শুধু ফুল হাতা গাউন হতে পারে বা ফুল কভার (কভার অল) গাউন হতে পারে ২। ক্যাপ, ৩। গ্লাভস ৪। ফেস শিল্ড, ৫। গগলস, ৬। ফেস মাস্ক, ৭। সুকভার-

এই পূর্ণাঙ্গ সেট সকলের জন্য প্রযোজ্য নয়। মাস্কটি গুরুত্বপূর্ণ বলে এটি সম্পর্কে আর একটু বিস্তারিত বলি।

ফেস মাস্ক :

এটি দু’রকমের

১। মেডিকেল মাস্ক

২। রেসপিরেটর

মেডিকেল মাস্ক : ব্যক্তির নাক ও মুখ ঢাকার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি নাকে মুখে শক্ত হয়ে সেটে থাকে না, একটু ফাঁকা থাকে এবং যে ফাঁকা থাকে তাতে সবরকম কনা এবং ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস চলাচল বন্ধ করতে পারে না।

ব্যবহার মাত্রা : কেবল একবারই ব্যবহারযোগ্য।

রেসপিরেটর : এটি একটি ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রবিশেষ যেটা পরিধান করলে নাক মুখ এমনভাবে ঢাকা থাকে যে যেকোন বায়ুবাহিত ক্ষতিকর জীবাণু এবং কনা প্রবেশ রোধ করতে পারে। এটি এমনভাবে মুখের সাথে শক্ত হয়ে লেগে থাকে যে কোন ফাঁকা থাকে না। এটিতে একটি ফিল্টার থাকে যা ৯৫% কণা ও সংক্রামক জীবাণু শোষণ বা ফিল্টার করতে পারে।

ঘ৯৫ মাস্ক এমনই একটি মাস্ক। এটির কার্যকারী তা পরীক্ষা করে একটি সনদ দেয়া হয়। এটির আকারের তারতম্য আছে। তাই যে পরিধান করবে তারও ঠিকভাবে সেঁটে থাকে কিনা সেটা প্রথমে পরীক্ষা করে নিতে হয়।

ব্যবহারমাত্রা : এটিও পুনঃব্যবহার যোগ্য নয়। তবে কোন ছেড়া বা ফুটো না হলে এবং ফিল্টার ক্ষমতা নষ্ট না হলে ৮ ঘণ্টার বেশি ব্যবহার করা যেতে পারে।

কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধের জন্য কে কখন কি সুরক্ষা ব্যবস্থা নিবেন :

১। স্বাস্থ্যকর্মী : চিকিৎসক, নার্স, তাদের সাহায্যকারী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী যারা আইসিইউতে কাজ করে এবং যারা ওয়ার্ডে, বহির্বিভাগে, ট্রায়াজে কাজ করে, ল্যাব টেকনোলজিস্ট যারা পরীক্ষাসামগ্রী সংগ্রহ করে এবং পরীক্ষার সাথে জড়িত, অস্থায়ী সঙ্গনিরোধ জায়গায়, স্ক্রিনিংয়ের জায়গায়, সর্বত্র তাদের সকলেরই পিপিই দরকার। তবে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ধরন ভিন্ন হবে সেটি তারা ভালো করে জানে।

২। রোগীর দর্শনার্থী : যদিও দর্শন নিষিদ্ধ, যদি কেউ নিতান্তই দেখতে চায় শুধু রোগীর কক্ষে প্রবেশ করবে এবং স্পর্শ করবে না। সে মেডিকেল মাস্ক, গাউন এবং গ্লাভস পরবে।

৩। রোগী নিজে : শ্বাসকষ্ট থাকলে যানবাহনে চলাচলে, বহির্বিভাগে অপেক্ষমাণ অবস্থায়, ট্রায়ালে মেডিকেল মাস্ক পরবে। না সহ্য করতে পারলে অন্যের সাথে কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখবে। যদি শ্বাসকষ্ট না থাকে মাস্কের দরকার নেই, কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখবে।

৪। অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার : যদি কোভিড রোগী বা সন্দেহজনক রোগী নিয়ে ড্রাইভিং করে এবং ড্রাইভারের সিটের সাথে রোগীর জায়গার মধ্যে পার্টিশন থাকে তাহলে কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখলেই চলবে। কিন্তু পার্টিশন না থাকলে মেডিকেল মাস্ক পরতে হবে। ড্রাইভার যদি রোগী উঠানো নামানোতে সাহায্য করে তাহলে তাকে মেডিকেল মাস্ক, গাউন, গ্লাভস, গগলস পরতে হবে।

৫। কিছু কর্মচারী : যে সকল কর্মচারী রোগ শনাক্তের সাথে জড়িত তাদের কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখলেই চলবে তবে রোগীর জ্বর এবং অন্য লক্ষণাদি থাকলে মেডিকেল মাস্ক এবং গ্লাভস পরতে হবে।

৬। বাড়িতে রোগীর সেবাদানকারী : শুধু রুমে ঢুকলে কোন সংস্পর্শ নেই তাহলে শুধু মাস্ক পরবে। যদি সংস্পর্শ থাকে এবং মলমূত্র পরিষ্কার করে তাহলে গ্লাভস, মেডিকেল মাস্ক এবং অ্যাপ্রোন পরবে।

৭। কমিউনিটির যে কোন জায়গায় দ্রুত অনুসন্ধানী দল :

সন্দেহজনক বা নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী বা তাদের সংশ্রব-

ক. কোন পিপিই দরকার নেই।

খ. টেলিফোন বা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার

সন্দেহজনক বা নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী উপস্থিতিতে সাক্ষাৎকার, কোন সরাসরি সংস্পর্শ নেই-

ক. মেডিকেল মাস্ক

খ. কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখা

গ. সাক্ষাৎকার ঘরের বাইরে নিতে হবে। রোগী যদি সহ্য করতে পারে মেডিকেল মাস্ক পরবে।

কোভিড-১৯ রোগীর লক্ষণবিহীন সংশ্রবের উপস্থিতিতে সাক্ষাৎকার-

ক. কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখবে

খ. কোন ধরনের পিপিই দরকার নেই

গ. সাক্ষাৎকার বাড়ির বাইরে নিতে হবে

ঘ. যদি বাড়ির ভিতরে ঢুকতে হয় থারমাল ইমেজিং ক্যামেরা দিয়ে জ্বর পরীক্ষা করতে হবে, কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং ঘরের কোন জিনিস স্পর্শ করা যাবে না।

৮। প্রশাসনিক কর্মকর্তা : প্রশাসনিক কর্মকর্তা যদি চিকিৎসকও হন তাদের কোন পিপিই’র দরকার নেই। কারণ রোগীর সাথে তাদের কোন সংশ্রব নেই।

এছাড়া মৃতদেহ গোসল এবং সৎকারের কাজ যারা করবেন তারা মাস্ক, গাউন, গ্লাভস ব্যবহার করবেন। যদিও এ ব্যাপারে ডাব্লিউ এইচও কোন সুপারিশ করেনি। কেননা মৃতদেহ যেহেতু শ্বাস-প্রশ্বাস করেনা তাই ড্রপলেট হিসেবে ছড়াবে না।

এই করোনায় সারা পৃথিবী কম্পিত। করোনা সমস্যাকে বিশ্ব যুদ্ধ বললেও ভুল হবে না। যেখানে সারা পৃথিবীর মানুষ একদিকে আর অদৃশ্য ভাইরাসটি অন্যদিকে। উন্নত অনুন্নত সকল দেশ হিমশিম খাচ্ছে। আর এই যুদ্ধের সম্মুখ সমরে আছে স্বাস্থ্যকর্মীরা। যারা সরাসরি আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে বাঁচা মরার যুদ্ধ করে। এই সৈনিকদের সারা বিশ্ব সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠায়। তাদের যুদ্ধকালীন ভাতা দেয়। যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে তাদের বীমা বা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে।

করোনার মতো একটি অতি উচ্চ সংক্রামক ব্যাধি যা এখন প্যানডেমিক তার স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা দেবার দায়িত্ব শুধু রাষ্ট্রেরই নয়, জনগণেরও। এই জনগণের অংশ হিসেবে অনেক মহান সমাজকর্মী ইতিমধ্যে এগিয়ে এসেছেন। চিকিৎসকরা শুধু চিকিৎসাই করেন না তারা বড় বড় অনুদানও করে থাকেন এই চিকিৎসাক্ষেত্রে এবং দরিদ্র মানুষের খাদ্য জোগাতে। পিপিই’র ঘাটতি পোষাতেও অনেক চিকিৎসকই এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু দুখঃজনক বিষয় যে সরকারী পিপিই প্রশাসনিক সরকারী কর্মকর্তারা চার দেয়ালের মধ্যে পরে বসে থাকে। অন্যদিকে অনেক স্বাস্থ্যকর্মীই পিপিই ছাড়া মৃত্যু ঝুঁকিতে। তাই এর সুবণ্টন হওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়।

সাধারণ মানুষের জন্য পিপিই নয়। শুধু সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে ক্ষেত্র বিশেষে। যদি আপনার হাঁচি, কাশি থাকে তাহলে অবশ্যই সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করুন। তবে সাধারণ মানুষ লোকালয়ে গেলে কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করা কিছু না করার চেয়ে ভালো। তাতে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমবে। কোনক্রমেই স্বাস্থ্য কর্মীদের পিপিই আপনারা ব্যবহার করে অপচয় করবেন না। মনে রাখবেন পিপিইর অভাবে কোন চিকিৎসক আপনার অসুস্থতার সময়ে আপনার কাছে যেতে না পারলে তাকে দায়ী করতে পারবেন না। চিকিৎসককে বাঁচিয়ে রাখুন। আপনি বাঁচুন। আপনি যদি সুস্থ থাকেন, আপনার যদি একটি অব্যবহৃত N95 মাস্ক থাকে সেটা স্বাস্থ্যকর্মীদের দান করুন। সরকারের সাথে আপনিও এগিয়ে আসুন দেশ ও দশের কল্যাণে।

[লেখক : ফার্টিলিটি স্পেশালিস্ট, চিফ কনসালট্যান্ট, ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার; ট্রেজারার, ওবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকলজিক্যাল সোসাইটি, বাংলাদেশ; বোর্ড মেম্বার, এশিয়া প্যাসিফিক ইনিশিয়েটিভ অ্যান্ড রিপ্রোডাকশন]

বৃহস্পতিবার, ০২ এপ্রিল ২০২০ , ১৯ চৈত্র ১৪২৬, ৭ শাবান ১৪৪১

পিপিই’র প্রয়োজনীয়তা বনাম অপচয়

অধ্যাপক রাশিদা বেগম

‘পিপিই সবার জন্য নয়। যারা করোনা রোগীর সেবা করবে পিপিই শুধু তারা পরবে। ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া যারা পিপিই পরবে তাদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেব করোনা রোগীর সেবা করতে’- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আমরা এক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এক ভয়াবহ অস্থির এবং অনিশ্চিত সময় পার করছি। এ সময়ে নিজেদের সুরক্ষার জন্য আমরা যখন ঘরে বসে আছি তখন সাহসী কিছু মানুষ করোনাকে উপেক্ষা করে মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য লড়ছে। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সমাজসেবক, স্বেচ্ছাসেবী সবারই ভূমিকা অপরিসীম। প্রত্যেকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়, ল্যাব টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান, ক্লিনার হোল সেসব মানুষ যারা জীবন বাজি রেখে মানুষের কল্যাণে কাজ করছে এ করোনা যুদ্ধে। আইসিইউ’র চিকিৎসক ও নার্সের রয়েছে মৃত্যু ঝুঁকির মতো সর্বোচ্চ ঝুঁকি। এই বৈশ্বিক দুর্যোগে আপনার অর্থবিত্ত, ক্ষমতা সব তুচ্ছ। আর কোন এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নেই, কোন ক্রস বর্ডার চিকিৎসা নেই। সকলের এ দেশের চিকিৎসার ওপর নির্ভর করতে হবে। নির্ভর করতে হবেযেমন স্বাস্থ্যসুবিধা আমাদের দেশ এ যাবতকাল তৈরি করে রেখেছে তার ওপরে। অন্তত সেজন্য হলেও চিকিৎসকদের ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ওরা না বাঁচলে আমাদের বাঁচাবে কে?

তাই পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) প্রথমেই দরকার তাদের জন্য যারা সরাসরি রোগীর পরিচর্যা করে। এ প্রয়োজন তাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য এবং অন্য রোগীদের নিরাপত্তার জন্য। আর এ উদ্দেশ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ওই উক্তি।

তবে কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে হলে পিপিই এর আগে অনেক প্রতিরোধ রয়ে গেছে। আমরা যদি সচেতন হই, প্রত্যেকে যদি নিয়ম কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই তাহলে এই রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাবে। আপনার সহযোগিতা রক্ষা করবে আপনাকে এবং সাথে আরও হাজার জনকে। কমিউনিটির সবার মঙ্গলের জন্য এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর চাপ কমাবার জন্য ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের সুপারিশ অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব এবং হাতের পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন।

কী করতে হবে-

১। হাত ধোয়া : ঘন ঘন হাত ধুতে হবে। এটি নাক, মুখ ও চোখ দিয়ে প্রবেশ করে। বিভিন্ন জায়গায় ভাইরাসটি ৩ ঘন্টা থেকে শুরু করে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে। কাজেই স্পর্শে সেটি হাতের সাথে চলে আসে এবং হাত নাকে, মুখে, চোখে স্পর্শ হলে নাসা রন্ধ্রে বা মুখে বা চোখে ঢুকে যাবে। খুবই ভালো যে এটির বাহ্যিক পর্দাটা সাবান এবং এলকোহলে নষ্ট হয়ে যায়। তাই যা কিছুই ধরেন না কেন হাত ময়লা থাকলে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন এবং পরিষ্কার থাকলে স্যানিটাইজার দিয়ে ঘষে ফেলবেন।

২। নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।

৩। হাঁচি, কাশি দেবার সময়ে শিষ্টাচার এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। কারো মুখের সামনে হাঁচি, কাশি দিবেন না। কনুই দিয়ে মুখ ঢেকে নিন। খালি হাত দিবেন না, হাতের কাছে টিস্যু থাকলে টিস্যু দিয়ে মুখ ঢাকুন এবং সাথে সাথেই মুখ ঢাকা টিস্যুটি বিনে ফেলে দিন। হাত ধুয়ে ফেলুন।

৪। কাশি এবং শ্বাসের সমস্যা থাকলে মেডিকেল (সার্জিক্যাল) মাস্ক ব্যবহার করুন। মাস্ক খোলার পরে হাত ধুয়ে ফেলুন এবং মাস্কটি মুখ ঢাকা বিনে ফেলে দিন।

৫। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। নিজ বাসায় অবস্থান করুন এবং সব রকমের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। খুব প্রয়োজনে বাইরে গেলেও ভিড় এড়িয়ে চলুন। সাধারণের সাথে কিংবা কারো শ্বাসজনিত কোনো সমস্যা দেখলে কমপক্ষে ১ মিটার দূরে অবস্থান করুন।

সারা পৃথিবীতে পিপিই’র স্বল্পতা। অগণিত মানুষ রোগী হয়ে যাচ্ছে। তাদের সেবা দেবার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে অসংখ্য সেবাদানকারীর। এমতাবস্থায় পিপিই’র অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার রোধে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন সুপারিশ করেছে Rational use of personal protective equipment for coronavirus disease 2019 (COVID-19)’ সেই সুপারিশ অনুযায়ী কার কার পিপিই ব্যবহার করা দরকার সেটা লিখছি। তবে ব্যবহারের আগেএকটু জেনে নেই পিপিই কি?

পিপিই হোল অনেক গুলো জিনিষের সমন্বিত একটি বিশেষ বেশভুষা যা পরিধানকারী ব্যক্তিকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।তবে সেই সমন্বিত জিনিসের অংশ বিশেষও পিপিই।

জিনিসগুলো হোল ১। গাউন, এটি শুধু ফুল হাতা গাউন হতে পারে বা ফুল কভার (কভার অল) গাউন হতে পারে ২। ক্যাপ, ৩। গ্লাভস ৪। ফেস শিল্ড, ৫। গগলস, ৬। ফেস মাস্ক, ৭। সুকভার-

এই পূর্ণাঙ্গ সেট সকলের জন্য প্রযোজ্য নয়। মাস্কটি গুরুত্বপূর্ণ বলে এটি সম্পর্কে আর একটু বিস্তারিত বলি।

ফেস মাস্ক :

এটি দু’রকমের

১। মেডিকেল মাস্ক

২। রেসপিরেটর

মেডিকেল মাস্ক : ব্যক্তির নাক ও মুখ ঢাকার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি নাকে মুখে শক্ত হয়ে সেটে থাকে না, একটু ফাঁকা থাকে এবং যে ফাঁকা থাকে তাতে সবরকম কনা এবং ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস চলাচল বন্ধ করতে পারে না।

ব্যবহার মাত্রা : কেবল একবারই ব্যবহারযোগ্য।

রেসপিরেটর : এটি একটি ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রবিশেষ যেটা পরিধান করলে নাক মুখ এমনভাবে ঢাকা থাকে যে যেকোন বায়ুবাহিত ক্ষতিকর জীবাণু এবং কনা প্রবেশ রোধ করতে পারে। এটি এমনভাবে মুখের সাথে শক্ত হয়ে লেগে থাকে যে কোন ফাঁকা থাকে না। এটিতে একটি ফিল্টার থাকে যা ৯৫% কণা ও সংক্রামক জীবাণু শোষণ বা ফিল্টার করতে পারে।

ঘ৯৫ মাস্ক এমনই একটি মাস্ক। এটির কার্যকারী তা পরীক্ষা করে একটি সনদ দেয়া হয়। এটির আকারের তারতম্য আছে। তাই যে পরিধান করবে তারও ঠিকভাবে সেঁটে থাকে কিনা সেটা প্রথমে পরীক্ষা করে নিতে হয়।

ব্যবহারমাত্রা : এটিও পুনঃব্যবহার যোগ্য নয়। তবে কোন ছেড়া বা ফুটো না হলে এবং ফিল্টার ক্ষমতা নষ্ট না হলে ৮ ঘণ্টার বেশি ব্যবহার করা যেতে পারে।

কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধের জন্য কে কখন কি সুরক্ষা ব্যবস্থা নিবেন :

১। স্বাস্থ্যকর্মী : চিকিৎসক, নার্স, তাদের সাহায্যকারী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী যারা আইসিইউতে কাজ করে এবং যারা ওয়ার্ডে, বহির্বিভাগে, ট্রায়াজে কাজ করে, ল্যাব টেকনোলজিস্ট যারা পরীক্ষাসামগ্রী সংগ্রহ করে এবং পরীক্ষার সাথে জড়িত, অস্থায়ী সঙ্গনিরোধ জায়গায়, স্ক্রিনিংয়ের জায়গায়, সর্বত্র তাদের সকলেরই পিপিই দরকার। তবে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ধরন ভিন্ন হবে সেটি তারা ভালো করে জানে।

২। রোগীর দর্শনার্থী : যদিও দর্শন নিষিদ্ধ, যদি কেউ নিতান্তই দেখতে চায় শুধু রোগীর কক্ষে প্রবেশ করবে এবং স্পর্শ করবে না। সে মেডিকেল মাস্ক, গাউন এবং গ্লাভস পরবে।

৩। রোগী নিজে : শ্বাসকষ্ট থাকলে যানবাহনে চলাচলে, বহির্বিভাগে অপেক্ষমাণ অবস্থায়, ট্রায়ালে মেডিকেল মাস্ক পরবে। না সহ্য করতে পারলে অন্যের সাথে কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখবে। যদি শ্বাসকষ্ট না থাকে মাস্কের দরকার নেই, কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখবে।

৪। অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার : যদি কোভিড রোগী বা সন্দেহজনক রোগী নিয়ে ড্রাইভিং করে এবং ড্রাইভারের সিটের সাথে রোগীর জায়গার মধ্যে পার্টিশন থাকে তাহলে কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখলেই চলবে। কিন্তু পার্টিশন না থাকলে মেডিকেল মাস্ক পরতে হবে। ড্রাইভার যদি রোগী উঠানো নামানোতে সাহায্য করে তাহলে তাকে মেডিকেল মাস্ক, গাউন, গ্লাভস, গগলস পরতে হবে।

৫। কিছু কর্মচারী : যে সকল কর্মচারী রোগ শনাক্তের সাথে জড়িত তাদের কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখলেই চলবে তবে রোগীর জ্বর এবং অন্য লক্ষণাদি থাকলে মেডিকেল মাস্ক এবং গ্লাভস পরতে হবে।

৬। বাড়িতে রোগীর সেবাদানকারী : শুধু রুমে ঢুকলে কোন সংস্পর্শ নেই তাহলে শুধু মাস্ক পরবে। যদি সংস্পর্শ থাকে এবং মলমূত্র পরিষ্কার করে তাহলে গ্লাভস, মেডিকেল মাস্ক এবং অ্যাপ্রোন পরবে।

৭। কমিউনিটির যে কোন জায়গায় দ্রুত অনুসন্ধানী দল :

সন্দেহজনক বা নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী বা তাদের সংশ্রব-

ক. কোন পিপিই দরকার নেই।

খ. টেলিফোন বা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার

সন্দেহজনক বা নিশ্চিত কোভিড-১৯ রোগী উপস্থিতিতে সাক্ষাৎকার, কোন সরাসরি সংস্পর্শ নেই-

ক. মেডিকেল মাস্ক

খ. কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখা

গ. সাক্ষাৎকার ঘরের বাইরে নিতে হবে। রোগী যদি সহ্য করতে পারে মেডিকেল মাস্ক পরবে।

কোভিড-১৯ রোগীর লক্ষণবিহীন সংশ্রবের উপস্থিতিতে সাক্ষাৎকার-

ক. কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখবে

খ. কোন ধরনের পিপিই দরকার নেই

গ. সাক্ষাৎকার বাড়ির বাইরে নিতে হবে

ঘ. যদি বাড়ির ভিতরে ঢুকতে হয় থারমাল ইমেজিং ক্যামেরা দিয়ে জ্বর পরীক্ষা করতে হবে, কমপক্ষে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং ঘরের কোন জিনিস স্পর্শ করা যাবে না।

৮। প্রশাসনিক কর্মকর্তা : প্রশাসনিক কর্মকর্তা যদি চিকিৎসকও হন তাদের কোন পিপিই’র দরকার নেই। কারণ রোগীর সাথে তাদের কোন সংশ্রব নেই।

এছাড়া মৃতদেহ গোসল এবং সৎকারের কাজ যারা করবেন তারা মাস্ক, গাউন, গ্লাভস ব্যবহার করবেন। যদিও এ ব্যাপারে ডাব্লিউ এইচও কোন সুপারিশ করেনি। কেননা মৃতদেহ যেহেতু শ্বাস-প্রশ্বাস করেনা তাই ড্রপলেট হিসেবে ছড়াবে না।

এই করোনায় সারা পৃথিবী কম্পিত। করোনা সমস্যাকে বিশ্ব যুদ্ধ বললেও ভুল হবে না। যেখানে সারা পৃথিবীর মানুষ একদিকে আর অদৃশ্য ভাইরাসটি অন্যদিকে। উন্নত অনুন্নত সকল দেশ হিমশিম খাচ্ছে। আর এই যুদ্ধের সম্মুখ সমরে আছে স্বাস্থ্যকর্মীরা। যারা সরাসরি আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে বাঁচা মরার যুদ্ধ করে। এই সৈনিকদের সারা বিশ্ব সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠায়। তাদের যুদ্ধকালীন ভাতা দেয়। যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে তাদের বীমা বা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে।

করোনার মতো একটি অতি উচ্চ সংক্রামক ব্যাধি যা এখন প্যানডেমিক তার স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা দেবার দায়িত্ব শুধু রাষ্ট্রেরই নয়, জনগণেরও। এই জনগণের অংশ হিসেবে অনেক মহান সমাজকর্মী ইতিমধ্যে এগিয়ে এসেছেন। চিকিৎসকরা শুধু চিকিৎসাই করেন না তারা বড় বড় অনুদানও করে থাকেন এই চিকিৎসাক্ষেত্রে এবং দরিদ্র মানুষের খাদ্য জোগাতে। পিপিই’র ঘাটতি পোষাতেও অনেক চিকিৎসকই এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু দুখঃজনক বিষয় যে সরকারী পিপিই প্রশাসনিক সরকারী কর্মকর্তারা চার দেয়ালের মধ্যে পরে বসে থাকে। অন্যদিকে অনেক স্বাস্থ্যকর্মীই পিপিই ছাড়া মৃত্যু ঝুঁকিতে। তাই এর সুবণ্টন হওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়।

সাধারণ মানুষের জন্য পিপিই নয়। শুধু সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে ক্ষেত্র বিশেষে। যদি আপনার হাঁচি, কাশি থাকে তাহলে অবশ্যই সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করুন। তবে সাধারণ মানুষ লোকালয়ে গেলে কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করা কিছু না করার চেয়ে ভালো। তাতে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমবে। কোনক্রমেই স্বাস্থ্য কর্মীদের পিপিই আপনারা ব্যবহার করে অপচয় করবেন না। মনে রাখবেন পিপিইর অভাবে কোন চিকিৎসক আপনার অসুস্থতার সময়ে আপনার কাছে যেতে না পারলে তাকে দায়ী করতে পারবেন না। চিকিৎসককে বাঁচিয়ে রাখুন। আপনি বাঁচুন। আপনি যদি সুস্থ থাকেন, আপনার যদি একটি অব্যবহৃত N95 মাস্ক থাকে সেটা স্বাস্থ্যকর্মীদের দান করুন। সরকারের সাথে আপনিও এগিয়ে আসুন দেশ ও দশের কল্যাণে।

[লেখক : ফার্টিলিটি স্পেশালিস্ট, চিফ কনসালট্যান্ট, ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার; ট্রেজারার, ওবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকলজিক্যাল সোসাইটি, বাংলাদেশ; বোর্ড মেম্বার, এশিয়া প্যাসিফিক ইনিশিয়েটিভ অ্যান্ড রিপ্রোডাকশন]