বিত্তবানরা গৃহকোণে

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জুয়েল দুস্থদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার

হাবিবুর রহমান জুয়েল নিজের তেমন জমি জমা নেই আছে ছোট্ট একটি মুরগির খামার আর কয়েকটি গরু। এই সামান্য উপার্জিত অর্থ দিয়েই কর্মহিন দুস্থদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য বিতরণ করছেন তিনি। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়ামাসিমপুর ইউনিয়নের বুজরুক সন্তোষপুর গ্রামে তার বাড়ি।

এলাকাবাসি জানান, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন কৃষি শ্রমিকসহ অন্য পেশার মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতরভাবে দিন কাটাচ্ছে। সরকারি বেসরকারিভাবে কেউ তাদের কোন ত্রাণ দেয়নি। অনেক বিত্তশালী থাকলেও তারা কোন খোঁজ নেয় না কিন্তু জুয়েল মিয়া এগিয়ে এসেছেন। তিনি আগের দিন বালুয়ামাসিমপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেন কারা না খেয়ে আছে কাদের বাড়িতে খাবার নেই। এরপর তালিকা করে, ডাল, আলু, আটা, সাবানসহ অন্য খাদ্যসামগ্রী ছোট্ট বস্তার মধ্যে ভরে ভ্যানে করে সেই সব বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। গত ১৫ দিন ধরে তার এ কার্যক্রম চলছে।

এদিকে আকস্মিক বাড়িতে এসে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেবার ঘটনায় হতবাক এলাকাবাসি। হামিদপুর গ্রামের কৃষি শ্রমিক জোনাব আলী জানান তাদের এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার আছেন আরও আছেন অনেক বিত্তশালী কিন্তু কেউই তাদের খোঁজ নেয়নি। করোনার কারণে কর্মহীন অবস্থায় অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতরভাবে দিন কাটছে তাদের এই মুহূর্তে জুয়েল মিয়ার খাদ্যসামগ্রী অনেক উপকারে আসবে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে বৃদ্ধা আলেফা মাই বললেন তার বাসায় এসে কেউ খাবার দিয়ে যাবে এটা কল্পনাও করি নাই। জুয়েল মিয়ার এই খাবার তার এক সপ্তাহের জন্য যথেষ্ট বলে জানান তিনি। বৃদ্ধা আরেফার মতো আরও অনেকে খাবার পেয়ে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

জুয়েল মিয়া জানান, আমার তেমন কোন সামর্থ্য না থাকলেও এ দুর্দিনে যতটুকু পাচ্ছি খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি এ পর্যন্ত ৬০০ পরিবারকে খাদ্য দিয়েছেন এবং এটা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে বালুয়ামাসিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়নুল হক জানান, এই দুর্দিনে বিত্তবানরা না আসলেও জুয়েল মিয়ার মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মহতী উদ্যোগে অন্যরাও অনুসরণ করবে বলে তার প্রত্যাশা।

মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল ২০২০ , ১ বৈশাখ ১৪২৭, ১৯ শাবান ১৪৪১

বিত্তবানরা গৃহকোণে

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জুয়েল দুস্থদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

image

রংপুরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন -সংবাদ

হাবিবুর রহমান জুয়েল নিজের তেমন জমি জমা নেই আছে ছোট্ট একটি মুরগির খামার আর কয়েকটি গরু। এই সামান্য উপার্জিত অর্থ দিয়েই কর্মহিন দুস্থদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য বিতরণ করছেন তিনি। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়ামাসিমপুর ইউনিয়নের বুজরুক সন্তোষপুর গ্রামে তার বাড়ি।

এলাকাবাসি জানান, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন কৃষি শ্রমিকসহ অন্য পেশার মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতরভাবে দিন কাটাচ্ছে। সরকারি বেসরকারিভাবে কেউ তাদের কোন ত্রাণ দেয়নি। অনেক বিত্তশালী থাকলেও তারা কোন খোঁজ নেয় না কিন্তু জুয়েল মিয়া এগিয়ে এসেছেন। তিনি আগের দিন বালুয়ামাসিমপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নেন কারা না খেয়ে আছে কাদের বাড়িতে খাবার নেই। এরপর তালিকা করে, ডাল, আলু, আটা, সাবানসহ অন্য খাদ্যসামগ্রী ছোট্ট বস্তার মধ্যে ভরে ভ্যানে করে সেই সব বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। গত ১৫ দিন ধরে তার এ কার্যক্রম চলছে।

এদিকে আকস্মিক বাড়িতে এসে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেবার ঘটনায় হতবাক এলাকাবাসি। হামিদপুর গ্রামের কৃষি শ্রমিক জোনাব আলী জানান তাদের এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার আছেন আরও আছেন অনেক বিত্তশালী কিন্তু কেউই তাদের খোঁজ নেয়নি। করোনার কারণে কর্মহীন অবস্থায় অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতরভাবে দিন কাটছে তাদের এই মুহূর্তে জুয়েল মিয়ার খাদ্যসামগ্রী অনেক উপকারে আসবে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে বৃদ্ধা আলেফা মাই বললেন তার বাসায় এসে কেউ খাবার দিয়ে যাবে এটা কল্পনাও করি নাই। জুয়েল মিয়ার এই খাবার তার এক সপ্তাহের জন্য যথেষ্ট বলে জানান তিনি। বৃদ্ধা আরেফার মতো আরও অনেকে খাবার পেয়ে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

জুয়েল মিয়া জানান, আমার তেমন কোন সামর্থ্য না থাকলেও এ দুর্দিনে যতটুকু পাচ্ছি খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি এ পর্যন্ত ৬০০ পরিবারকে খাদ্য দিয়েছেন এবং এটা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে বালুয়ামাসিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়নুল হক জানান, এই দুর্দিনে বিত্তবানরা না আসলেও জুয়েল মিয়ার মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মহতী উদ্যোগে অন্যরাও অনুসরণ করবে বলে তার প্রত্যাশা।