বাগেরহাটের চিতলমারীতে সবজি চাষে অনিহা প্রকাশ করেছে স্থানীয় চাষিরা। দফায় দফায় ঝড়-বৃষ্টি আর বন্যার কারণে বিগত কয়েক বছর চাষে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের। এখন বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে জনজীবন থমকে গেছে। চলছে সরকার ঘোষিত লকডাউন। এরমধ্যে চাষ করলে উৎপাদিত ফসল বিক্রি হবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে তারা। ব্যাপক হারে চাষাবাদ করতে ভীত কৃষকরা ভবিষ্যতের চিন্তায় নিমগ্ন। হাতে নগদ টাকা না থাকায় শুধু নিজেদের খাবার জন্য অল্প স্বল্প কিছু জমিতে চাষ করছে তারা। ফলে বানিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে না এখানকার অধিকাংশ ফসলি জমি। মাঠের অধিকাংশ জমি বিনা চাষে পড়ে রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রমতে, এ উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে ১৫ হাজার কৃষি পরিবার আছে। এবছর প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে শশা, করোলা, বরবটি, মিষ্টিকুমড়া ইত্যাদি চাষ হচ্ছে। শশা করলায় বিখ্যাত এ উপজেলায় খাসেরহাট, কালীগঞ্জ, নালুয়া এবং সদর বাজারসহ ৬টি কাঁচামালের বাজার রয়েছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এসব বাজার থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক শশা, করোলা, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, বরবটি, চিচিঙ্গা ইত্যাদি শাকসবজি রাজধানী ঢাকা, চট্টড়গ্রাম, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। এছাড়া নৌপথে বরিশালের বিভিন্ন জেলায় এখানকার উৎপাদিত সবজি বিক্রি হয়। হাটে বড় পাইকারি ব্যবসায়ী আসে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে। উপজেলার বাওয়ালী পাড়ার সবজি চাষি অসীম বাড়ৈ জানায়, ‘গতবছর আমি ৪ হাজার শশা, ৩ হাজার করোলা এবং ২শ’ লাউ গাছ লাগিয়েছিলাম। এ বছর করোনাভাইরাসের যে খবর শুনতেছি তাতে চাষ করবার হাউস (ইচ্ছা) নাই। ভাবছি কোনমতে অল্পকিছু গাছ লাগাব।
নিজেদের খাবার কয়ডা হলেই হবে।’ শান্তিখালি গ্রামের সবজি চাষি হীরা জানায়, গতবছর ৩৫শ’ শশা গাছ লাগিয়েছিলাম এ বছর মাত্র ৪-৫শ’ গাছ লাগাব। দেশের অবস্থা এ রকম থাকলে ব্যাপারী আসবে কি না-আসবে তার শিওর কি? যদি না আসে তাহলে উৎপাদিত ফসল কোথায় বিক্রি করবো। এ জন্য কমকম চাষ করছি।’ চিতলমারী সদর বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী সেলিম সুলতান সাগর বলেন, বিগত বছরগুলোতে যে পরিমাণ বীজ সার এবং কীটনাশক বিক্রি হতো এ বছর তার অনেক কম বিক্রি হচ্ছে। মনে হয় এ বছর চাষাবাদ অনেক কম হচ্ছে।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার জানান, ফসল বিক্রি নিয়ে আমরা চিন্তিত। যদি ঢাকা-চিটাগাং থেকে কোন ব্যাপারি আসে তারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত কিনা এটা নিয়ে চাষীরা আতঙ্কিত হতে পারেন।
তাই বিকল্প কিছু করার জন্য স্যারদের জানিয়েছি। এছাড়া ফসলি জমি চাষের জন্যে উপ-সহকারীদের নিয়ে আমি নিজেও নিয়মিত ফিল্ডে কাজ করে যাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার, ১১ জুন ২০২০ , ২৮ জৈষ্ঠ ১৪২৭, ১৮ শাওয়াল ১৪৪১
প্রতিনিধি, চিতলমারী, বাগেরহাট
বাগেরহাটের চিতলমারীতে সবজি চাষে অনিহা প্রকাশ করেছে স্থানীয় চাষিরা। দফায় দফায় ঝড়-বৃষ্টি আর বন্যার কারণে বিগত কয়েক বছর চাষে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের। এখন বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে জনজীবন থমকে গেছে। চলছে সরকার ঘোষিত লকডাউন। এরমধ্যে চাষ করলে উৎপাদিত ফসল বিক্রি হবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে তারা। ব্যাপক হারে চাষাবাদ করতে ভীত কৃষকরা ভবিষ্যতের চিন্তায় নিমগ্ন। হাতে নগদ টাকা না থাকায় শুধু নিজেদের খাবার জন্য অল্প স্বল্প কিছু জমিতে চাষ করছে তারা। ফলে বানিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে না এখানকার অধিকাংশ ফসলি জমি। মাঠের অধিকাংশ জমি বিনা চাষে পড়ে রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রমতে, এ উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে ১৫ হাজার কৃষি পরিবার আছে। এবছর প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে শশা, করোলা, বরবটি, মিষ্টিকুমড়া ইত্যাদি চাষ হচ্ছে। শশা করলায় বিখ্যাত এ উপজেলায় খাসেরহাট, কালীগঞ্জ, নালুয়া এবং সদর বাজারসহ ৬টি কাঁচামালের বাজার রয়েছে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এসব বাজার থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক শশা, করোলা, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, বরবটি, চিচিঙ্গা ইত্যাদি শাকসবজি রাজধানী ঢাকা, চট্টড়গ্রাম, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। এছাড়া নৌপথে বরিশালের বিভিন্ন জেলায় এখানকার উৎপাদিত সবজি বিক্রি হয়। হাটে বড় পাইকারি ব্যবসায়ী আসে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে। উপজেলার বাওয়ালী পাড়ার সবজি চাষি অসীম বাড়ৈ জানায়, ‘গতবছর আমি ৪ হাজার শশা, ৩ হাজার করোলা এবং ২শ’ লাউ গাছ লাগিয়েছিলাম। এ বছর করোনাভাইরাসের যে খবর শুনতেছি তাতে চাষ করবার হাউস (ইচ্ছা) নাই। ভাবছি কোনমতে অল্পকিছু গাছ লাগাব।
নিজেদের খাবার কয়ডা হলেই হবে।’ শান্তিখালি গ্রামের সবজি চাষি হীরা জানায়, গতবছর ৩৫শ’ শশা গাছ লাগিয়েছিলাম এ বছর মাত্র ৪-৫শ’ গাছ লাগাব। দেশের অবস্থা এ রকম থাকলে ব্যাপারী আসবে কি না-আসবে তার শিওর কি? যদি না আসে তাহলে উৎপাদিত ফসল কোথায় বিক্রি করবো। এ জন্য কমকম চাষ করছি।’ চিতলমারী সদর বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী সেলিম সুলতান সাগর বলেন, বিগত বছরগুলোতে যে পরিমাণ বীজ সার এবং কীটনাশক বিক্রি হতো এ বছর তার অনেক কম বিক্রি হচ্ছে। মনে হয় এ বছর চাষাবাদ অনেক কম হচ্ছে।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি অফিসার ঋতুরাজ সরকার জানান, ফসল বিক্রি নিয়ে আমরা চিন্তিত। যদি ঢাকা-চিটাগাং থেকে কোন ব্যাপারি আসে তারা করোনাভাইরাস আক্রান্ত কিনা এটা নিয়ে চাষীরা আতঙ্কিত হতে পারেন।
তাই বিকল্প কিছু করার জন্য স্যারদের জানিয়েছি। এছাড়া ফসলি জমি চাষের জন্যে উপ-সহকারীদের নিয়ে আমি নিজেও নিয়মিত ফিল্ডে কাজ করে যাচ্ছি।