ভাঙা বাঁধ দিয়ে ঢুকছে লবণ পানি ৫ হাজার একর অনাবাদির আশঙ্কা

পটুয়াখালীর দশমিনায় সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে উপজেলার নদী তীরবর্তী ৩টি ইউনিয়নের ৪ শত মিটার ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় প্রায় পাঁচ হাজার একর জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এই কারণে আমন ধান চাষাবাদ নিয়ে কৃষকরা বিপাকে রয়েছে। ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধ দিয়ে ফসলি জমিতে তেতুঁলিয়া, বুড়াগৌরাঙ্গ ও সুতাবাড়িয়া নদীর জোয়ারের নোনা পানি ঢুকে প্রতিদিন প্লাবনের সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের কৃষক মো. মানিক হাওলাদার জানান, আম্ফানের আঘাতে খলিশাখালীর কালিবাড়ি বাঁধ ভেঙ্গে হুহু করে সুতাবাড়িয়া নদীর জোয়ারের পানি ঢুকে আমন ধানের বীজতলা তৈরি করা যাচ্ছে না। এই কারণে আমন বীজতলা করা নিয়ে কৃষকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামের কৃষক মো. জাফর জানান, বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় আমরা কৃষকরা আমন চাষাবাদ নিয়ে চরম হতাশায় আছি। বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের হোসেন আলী, আজাহার বেপারী জানান, আম্পানের আঘাতে বাঁশবাড়িয়া লঞ্চঘাট এলাকা হইতে উত্তরে প্রায় দুইশ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় তেতুঁলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর নোনা পানি ঢুকে রবিশস্য পচে নষ্ট হয়েছে। এখন আমন ধান চাষাবাদেও অনিশ্চয়তা রয়েছে। ওই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকদের দাবি, দ্রুত বেড়িবাঁধ সংস্কার করা না হলে হাজার হাজার কৃষক এ বছর আমন ধান চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হবে। পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, আম্ফানে উপজেলার ৫২/ডি পোল্ডারের উত্তর রনগোপালদী থেকে আলীপুরা হয়ে বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের মাছুয়াখালী পর্যন্ত প্রায় ৪ শত মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এই বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দশমিনার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা জানান, ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য স্থানীয়রা মাটি দিতে রাজি না হওয়ায় কোন ঠিকাদার এই মুহূর্তে কাজ করতে চাইছেন না। এই জন্য এ বছর ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কার করা সম্ভব নাও হতে পারে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বনি আমিন খান জানান, আম্ফানে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কার করা না হলে উপজেলার হাজার হাজার কৃষক আমন চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হবে এবং উপজেলায় আমনের উৎপাদন অনেকটাই কমে যাবে।

বুধবার, ১৭ জুন ২০২০ , ৩ আষাঢ় ১৪২৭, ২৪ শাওয়াল ১৪৪১

ভাঙা বাঁধ দিয়ে ঢুকছে লবণ পানি ৫ হাজার একর অনাবাদির আশঙ্কা

আহাম্মদ ইব্রাহিম অরবিল, দশমিনা (পটুয়াখালী)

image

দশমিনা (পটুয়াখালী) : তেঁতুলিয়া নদীর উত্তর রনগোপালদীর ভাঙা বাঁধ দিয়ে ঢুকছে পানি -সংবাদ

পটুয়াখালীর দশমিনায় সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে উপজেলার নদী তীরবর্তী ৩টি ইউনিয়নের ৪ শত মিটার ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কার না হওয়ায় প্রায় পাঁচ হাজার একর জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এই কারণে আমন ধান চাষাবাদ নিয়ে কৃষকরা বিপাকে রয়েছে। ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধ দিয়ে ফসলি জমিতে তেতুঁলিয়া, বুড়াগৌরাঙ্গ ও সুতাবাড়িয়া নদীর জোয়ারের নোনা পানি ঢুকে প্রতিদিন প্লাবনের সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের কৃষক মো. মানিক হাওলাদার জানান, আম্ফানের আঘাতে খলিশাখালীর কালিবাড়ি বাঁধ ভেঙ্গে হুহু করে সুতাবাড়িয়া নদীর জোয়ারের পানি ঢুকে আমন ধানের বীজতলা তৈরি করা যাচ্ছে না। এই কারণে আমন বীজতলা করা নিয়ে কৃষকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামের কৃষক মো. জাফর জানান, বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় আমরা কৃষকরা আমন চাষাবাদ নিয়ে চরম হতাশায় আছি। বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের হোসেন আলী, আজাহার বেপারী জানান, আম্পানের আঘাতে বাঁশবাড়িয়া লঞ্চঘাট এলাকা হইতে উত্তরে প্রায় দুইশ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় তেতুঁলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর নোনা পানি ঢুকে রবিশস্য পচে নষ্ট হয়েছে। এখন আমন ধান চাষাবাদেও অনিশ্চয়তা রয়েছে। ওই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকদের দাবি, দ্রুত বেড়িবাঁধ সংস্কার করা না হলে হাজার হাজার কৃষক এ বছর আমন ধান চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হবে। পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, আম্ফানে উপজেলার ৫২/ডি পোল্ডারের উত্তর রনগোপালদী থেকে আলীপুরা হয়ে বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের মাছুয়াখালী পর্যন্ত প্রায় ৪ শত মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এই বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দশমিনার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা জানান, ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য স্থানীয়রা মাটি দিতে রাজি না হওয়ায় কোন ঠিকাদার এই মুহূর্তে কাজ করতে চাইছেন না। এই জন্য এ বছর ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কার করা সম্ভব নাও হতে পারে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বনি আমিন খান জানান, আম্ফানে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কার করা না হলে উপজেলার হাজার হাজার কৃষক আমন চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হবে এবং উপজেলায় আমনের উৎপাদন অনেকটাই কমে যাবে।