ইলিশ ধরা পড়ছে ব্যাপক হারে চিন্তিত মৎস্য বিশেষজ্ঞরা

পদ্মা, মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে না। অথচ ইলিশে বাজার সয়লাব। এত মাছ কোথায় ধরা পড়ল প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যেয়ে জানা গেল সাগর মোহনা ও সাগর থেকে এই ইলিশ আহরণ করা হচ্ছে। আশ্বিনের মূল প্রজনন মৌসুমকে সামনে রেখে দক্ষিণ উপকূলের সাগর মোহনায় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ডিমওয়ালা মা ইলিশের বিচরণ ও ধরা পড়ায় আগামী বছর ইলিশের উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে মৎস্য বিশেষজ্ঞদের।

এমাসের শেষেই আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার দিন ছাড়াও পূর্ণিমার অগের ৪ দিন ও পরের ১৭ দিন নিরাপদ প্রজননের জন্য ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকবে। গতবছরও ভাদ্রের মধ্যভাগের পরেই সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মা ইলিশ উপকূলসহ দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে উঠে আসায় তা ব্যাপক হারে জালে ধরা পরে। তবে এবার এখনো সাগরের ইলিশ উপকূল হয়ে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে উঠে না আসায় বিচরণ কম। জেলে ও মৎস্যজীবীদের মতে, এবার দেশের উত্তর ও মধ্যঞ্চলে বন্যাসহ ভাদ্রের বড় অমাবস্যায় ফুঁসে ওঠা সাগরের ভয়াল জোয়োরের প্লাবনে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল প্লাবিত হয়। সেসব পানি আবার প্রবল বেগে এখন সাগরে নেমে যাওয়ার কারণেই ইলিশ এখনো দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে উঠে আসছে না। তবে আসন্ন প্রজননকালের আগেই যদি সাগরের মা ইলিশ আরো উজানে উঠে আসতে শুরু করে তবে তা ইলিশ প্রজনন ও প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বড় বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে বলেও শঙ্কিত মৎস্য বিজ্ঞানীরা।

মৎস্য বিজ্ঞানীদের সুপারিশ মেনেই সরকার আশ্বিনের পূর্ণিমার আগের ৪ দিন ও পরের ১৭ দিন সহ মোট ২২দিন ইলিশের মূল প্রজননকাল হিসেবে চিহ্নিত করে উপকূলের ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার মূল প্রজননস্থলে সবধরনের মাছের আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে। পাশাপাশি এই সময়ে সবগুলো অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে ইলিশ আহরণ ছাড়াও সারাদেশে ইলিশের পরিবহন ও বিপণন নিষিদ্ধ থাকবে।

আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে ইলিশের একক অবদান এখন ১%-এরও বেশি। আর মৎস্য খাতে অবদান প্রায় ১২-১৩%। বিগত দুই দশকে ইলিশ নিয়ে নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে এর উৎপাদন ১.৯৮ লাখ টন থেকে ইতোমধ্যে সোয়া ৫ লাখ টন অতিক্রম করেছে। যারমধ্যে মূল প্রজননকালীন ২২ দিন সময়ে আহরণ ও বিপণন নিষিদ্ধ থাকার বিষয়টি ছাড়াও জাটকা আহরণ ও বিপণনে নিষেধাজ্ঞা অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করছে। ২০১৫ সালে আশ্বিনের পূর্ণিমার আগে ও পরে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময় ১৫ দিনের স্থলে ২০১৭ সালে ২২ দিনে উন্নীত করা হয়। ফলে এ সময়ে ইলিশের নিষিক্ত ডিমের পরিমাণ ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬৫ কেজি থেকে ৩৭% বেশি অর্থাৎ ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৫ কেজিতে উন্নীত হয়। এমনকি ইলিশ পোনা জাটকার উৎপাদনও ২০১৫ সালে ৩৯ হাজার ২৬৮ কোটি থেকে ২০১৭ সালে ৪২ হাজার ২৭৪ কোটিতে উন্নীত হয়েছে বলে মৎস্য অধিদফতর সূত্রে বলা হয়েছে।

ইলিশ সারাবছর কমবেশি ডিম ছাড়লেও আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার আগে ও পড়ে গভীর সমুদ্র থেকে উপকূলের সাগর মোহনার ৪টি এলাকার প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটারে ডিম ছেড়ে আবার সাগরে ফিরে যায়। কিন্তু এবার ভাদ্রের মধ্যভাগ থেকে সাগর মোহনার নদ-নদীতে ইলিশের উপস্থিতি মৎস্য বিজ্ঞানীসহ অধিদফতরের দায়িত্বশীলদের কিছুটা ভাবনায় ফেলেছে।

গত সপ্তাহখানেক ধরেই মেঘনা, তেঁতুলিয়া, বলেশ্বর ও আন্ধারমানিকসহ উপকূলের বিভিন্ন নদ-নদী মোহনায় মা ইলিশের ব্যাপক বিচরণে জেলেদের জালে ধরাও পড়ছে প্রচুর। তবে এবার করোনা সংকটে দক্ষিণাঞ্চলসহ সারাদেশেই ইলিশের চাহিদা কিছুটা কম থাকায় দাম পাচ্ছে না জেলেরা। এরপর রয়েছে বরফের সংকট। বরিশাল বা পাথরঘাটার বরফ কলগুলোতে এখন যে বরফ উৎপাদন হয় তা দিয়ে এখন ইলিশ সংরক্ষণ করাও সম্ভব না হওয়ায় খুলনা, সাতক্ষিরা থেকে বরফ এনে ইলিশ সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও পিরোজপুরের ইলিশের মোকামগুলো কিছুটা সরব হলেও বেচাকেনা অন্য বছরের তুলনায় কম বলে জানিয়েছেন একাধিক মৎস্যজীবী। পাশাপাশি আর দিন কুড়ি পরেই আশি^নের বড় পূর্ণিমার আগের ৪ দিন থেকে ২২ দিনের জন্য ইলিশ আহরণ ও বিপণন বন্ধ হয়ে যাবে। সে বিবেচনায় আড়তদাররা জেলেদের খুব একটা দাদন বা আগাম টাকাও ছাড় করছে না। ফলে টাকার যোগানের অভাবে বরফ, জ্বালানি ও দৈনন্দিন খরচের টাকার অপ্রতুলতায় সাগর মোহনায় ছুটে গিয়ে ইলিশ আহরণে ততটা উৎসাহিত হচ্ছে না জেলেরা।

এর পরেও প্রতিদিন দক্ষিণাঞ্চলের আড়তগুলোতে ন্যূনতম ১শ’ টন মা ইলিশ নিয়ে বিপুল সংখ্যক ট্রলার আসছে। মৎস্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক মূল প্রজননকালের আগে অধিকহারে মা ইলিশ সাগর থেকে উঠে আসাকে ভালো লক্ষণ নয় বলে মন্তব্য করলেও তাদের কিছুই করণীয় নেই বলেও জানিয়েছেন। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক জানান, পরিবেশ ও জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে গত কয়েক বছরের মতো এবারের বর্ষা মৌসুমেও দক্ষিণাঞ্চলসহ উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল। ফলে তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের থেকে ১-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকায় উপকূলীয় এলাকাসহ অভ্যন্তরের নদ-নদী সমূহের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা উত্তপ্ত। বৃষ্টির অভাবের সঙ্গে তাপমাত্রার আধিক্যে নদ-নদী ও সাগর উপকূলের পনির উষ্ণতা বেশি থাকায় ভরা বর্ষার সময় সাগর থেকে এবার ইলিশ উঠে আসেনি। কিন্তু মূল প্রজননকাল সামনে রেখে ইলিশের আগাম উঠে আসা মেটেই ভালো লক্ষণ নয় বলে মনে করছেন এই মৎস্য বিজ্ঞনী। তিনিও ব্যাপক গবেষণার ওপর জোর দিয়েছেন।

image
আরও খবর
গোমতী নদীর ১৩ স্থান থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন
শতভাগ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইট চলাচল শুরু আজ থেকে
ঢাকা থেকে রেল সংযোগের পর কক্সবাজার হবে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী রেলমন্ত্রী
সারাদেশে বিদ্যুতের তার হবে ভূগর্ভে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
১ অক্টোবর থেকে রাজধানীর ঝুলন্ত তার উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করবে ডিএনসিসি ৩
এসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের মৃত্যু
অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
অনিয়মের তদন্ত রিপোর্ট একসঙ্গে ৭ জনকে অবসর প্রদান
তদন্ত শুরু : আলামত রাসায়নিক পরীক্ষাগারে
মানব পাচারের অভিযোগে নৃত্যশিল্পী সোহাগ গ্রেফতার
খাদ্যাভাবে বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৩ মহররম ১৪৪২, ২৫ ভাদ্র ১৪২৭

ইলিশ ধরা পড়ছে ব্যাপক হারে চিন্তিত মৎস্য বিশেষজ্ঞরা

মানবেন্দ্র বটব্যাল, বরিশাল

image

পদ্মা, মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে না। অথচ ইলিশে বাজার সয়লাব। এত মাছ কোথায় ধরা পড়ল প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যেয়ে জানা গেল সাগর মোহনা ও সাগর থেকে এই ইলিশ আহরণ করা হচ্ছে। আশ্বিনের মূল প্রজনন মৌসুমকে সামনে রেখে দক্ষিণ উপকূলের সাগর মোহনায় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ডিমওয়ালা মা ইলিশের বিচরণ ও ধরা পড়ায় আগামী বছর ইলিশের উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে মৎস্য বিশেষজ্ঞদের।

এমাসের শেষেই আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার দিন ছাড়াও পূর্ণিমার অগের ৪ দিন ও পরের ১৭ দিন নিরাপদ প্রজননের জন্য ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকবে। গতবছরও ভাদ্রের মধ্যভাগের পরেই সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মা ইলিশ উপকূলসহ দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে উঠে আসায় তা ব্যাপক হারে জালে ধরা পরে। তবে এবার এখনো সাগরের ইলিশ উপকূল হয়ে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে উঠে না আসায় বিচরণ কম। জেলে ও মৎস্যজীবীদের মতে, এবার দেশের উত্তর ও মধ্যঞ্চলে বন্যাসহ ভাদ্রের বড় অমাবস্যায় ফুঁসে ওঠা সাগরের ভয়াল জোয়োরের প্লাবনে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল প্লাবিত হয়। সেসব পানি আবার প্রবল বেগে এখন সাগরে নেমে যাওয়ার কারণেই ইলিশ এখনো দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে উঠে আসছে না। তবে আসন্ন প্রজননকালের আগেই যদি সাগরের মা ইলিশ আরো উজানে উঠে আসতে শুরু করে তবে তা ইলিশ প্রজনন ও প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বড় বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে বলেও শঙ্কিত মৎস্য বিজ্ঞানীরা।

মৎস্য বিজ্ঞানীদের সুপারিশ মেনেই সরকার আশ্বিনের পূর্ণিমার আগের ৪ দিন ও পরের ১৭ দিন সহ মোট ২২দিন ইলিশের মূল প্রজননকাল হিসেবে চিহ্নিত করে উপকূলের ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার মূল প্রজননস্থলে সবধরনের মাছের আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে। পাশাপাশি এই সময়ে সবগুলো অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে ইলিশ আহরণ ছাড়াও সারাদেশে ইলিশের পরিবহন ও বিপণন নিষিদ্ধ থাকবে।

আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে ইলিশের একক অবদান এখন ১%-এরও বেশি। আর মৎস্য খাতে অবদান প্রায় ১২-১৩%। বিগত দুই দশকে ইলিশ নিয়ে নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে এর উৎপাদন ১.৯৮ লাখ টন থেকে ইতোমধ্যে সোয়া ৫ লাখ টন অতিক্রম করেছে। যারমধ্যে মূল প্রজননকালীন ২২ দিন সময়ে আহরণ ও বিপণন নিষিদ্ধ থাকার বিষয়টি ছাড়াও জাটকা আহরণ ও বিপণনে নিষেধাজ্ঞা অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করছে। ২০১৫ সালে আশ্বিনের পূর্ণিমার আগে ও পরে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময় ১৫ দিনের স্থলে ২০১৭ সালে ২২ দিনে উন্নীত করা হয়। ফলে এ সময়ে ইলিশের নিষিক্ত ডিমের পরিমাণ ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৩৬৫ কেজি থেকে ৩৭% বেশি অর্থাৎ ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৫ কেজিতে উন্নীত হয়। এমনকি ইলিশ পোনা জাটকার উৎপাদনও ২০১৫ সালে ৩৯ হাজার ২৬৮ কোটি থেকে ২০১৭ সালে ৪২ হাজার ২৭৪ কোটিতে উন্নীত হয়েছে বলে মৎস্য অধিদফতর সূত্রে বলা হয়েছে।

ইলিশ সারাবছর কমবেশি ডিম ছাড়লেও আশ্বিনের বড় পূর্ণিমার আগে ও পড়ে গভীর সমুদ্র থেকে উপকূলের সাগর মোহনার ৪টি এলাকার প্রায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটারে ডিম ছেড়ে আবার সাগরে ফিরে যায়। কিন্তু এবার ভাদ্রের মধ্যভাগ থেকে সাগর মোহনার নদ-নদীতে ইলিশের উপস্থিতি মৎস্য বিজ্ঞানীসহ অধিদফতরের দায়িত্বশীলদের কিছুটা ভাবনায় ফেলেছে।

গত সপ্তাহখানেক ধরেই মেঘনা, তেঁতুলিয়া, বলেশ্বর ও আন্ধারমানিকসহ উপকূলের বিভিন্ন নদ-নদী মোহনায় মা ইলিশের ব্যাপক বিচরণে জেলেদের জালে ধরাও পড়ছে প্রচুর। তবে এবার করোনা সংকটে দক্ষিণাঞ্চলসহ সারাদেশেই ইলিশের চাহিদা কিছুটা কম থাকায় দাম পাচ্ছে না জেলেরা। এরপর রয়েছে বরফের সংকট। বরিশাল বা পাথরঘাটার বরফ কলগুলোতে এখন যে বরফ উৎপাদন হয় তা দিয়ে এখন ইলিশ সংরক্ষণ করাও সম্ভব না হওয়ায় খুলনা, সাতক্ষিরা থেকে বরফ এনে ইলিশ সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও পিরোজপুরের ইলিশের মোকামগুলো কিছুটা সরব হলেও বেচাকেনা অন্য বছরের তুলনায় কম বলে জানিয়েছেন একাধিক মৎস্যজীবী। পাশাপাশি আর দিন কুড়ি পরেই আশি^নের বড় পূর্ণিমার আগের ৪ দিন থেকে ২২ দিনের জন্য ইলিশ আহরণ ও বিপণন বন্ধ হয়ে যাবে। সে বিবেচনায় আড়তদাররা জেলেদের খুব একটা দাদন বা আগাম টাকাও ছাড় করছে না। ফলে টাকার যোগানের অভাবে বরফ, জ্বালানি ও দৈনন্দিন খরচের টাকার অপ্রতুলতায় সাগর মোহনায় ছুটে গিয়ে ইলিশ আহরণে ততটা উৎসাহিত হচ্ছে না জেলেরা।

এর পরেও প্রতিদিন দক্ষিণাঞ্চলের আড়তগুলোতে ন্যূনতম ১শ’ টন মা ইলিশ নিয়ে বিপুল সংখ্যক ট্রলার আসছে। মৎস্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক মূল প্রজননকালের আগে অধিকহারে মা ইলিশ সাগর থেকে উঠে আসাকে ভালো লক্ষণ নয় বলে মন্তব্য করলেও তাদের কিছুই করণীয় নেই বলেও জানিয়েছেন। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক জানান, পরিবেশ ও জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে গত কয়েক বছরের মতো এবারের বর্ষা মৌসুমেও দক্ষিণাঞ্চলসহ উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল। ফলে তাপমাত্রাও স্বাভাবিকের থেকে ১-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকায় উপকূলীয় এলাকাসহ অভ্যন্তরের নদ-নদী সমূহের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা উত্তপ্ত। বৃষ্টির অভাবের সঙ্গে তাপমাত্রার আধিক্যে নদ-নদী ও সাগর উপকূলের পনির উষ্ণতা বেশি থাকায় ভরা বর্ষার সময় সাগর থেকে এবার ইলিশ উঠে আসেনি। কিন্তু মূল প্রজননকাল সামনে রেখে ইলিশের আগাম উঠে আসা মেটেই ভালো লক্ষণ নয় বলে মনে করছেন এই মৎস্য বিজ্ঞনী। তিনিও ব্যাপক গবেষণার ওপর জোর দিয়েছেন।