টাঙ্গাইলের মধুপুরে

খাদ্যাভাবে বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে

টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ে বন্যপ্রাণীর তীব্র খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। বনে খাবার না থাকায় বন্যপ্রাণীরা ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। অনেক সময় মানুষের চলাচলের পথ আটকে দিচ্ছে খাবারের আশায়। পথচারীদের হাতে কোন কিছু দেখলেই বনের ভেতর থেকে দৌড়ে আসছে বানর। বন্যপ্রাণীর তীব্র খাদ্য সংকট হওয়ায় বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ কিছুদিন ধরে শুরু করেছে সরকারিভাবে সামান্য খাবার বিতরণ। কিন্তু সামান্য খাদ্য যেন আরও ক্ষুধা বাড়িয়ে দিচ্ছে বন্যপ্রাণীর। বন বিভাগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা খাবার বাড়ানোর দাবি করছেন।

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ৫৯ হাজার একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে মধুপুর বনাঞ্চল। ক্রমেই বন উজাড় ও এলাকার প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় বনের আয়তন কমে গেছে। অথচ একসময় এটি গহীন বন ছিল। এখন বনের ভেতরেই আবাদ হচ্ছে ফসল, গড়ে উঠছে মসজিদ-মাদ্রাসা ও বাসস্থান। এতে মধুপুর বন তার জৌলুস হারিয়েছে অনেক আগেই। বন উজাড়ের সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীও হারিয়ে গেছে বন থেকে। এখন শুধু কিছু বানর রয়েছে। খাবারের অভাবে এসব বানরও এখন বন থেকে বের হয়ে আশ্রয় নিচ্ছে বিভিন্ন গ্রাম ও শহরে। দলছুট হয়ে বেরিয়ে পড়ছে সামান্য খাবারের খোঁজে। এরপরও বনে রয়ে গেছে প্রায় ১০ হাজার বানর ও হনুমান। আর মধুপুর বনের ভেতরে লহড়িয়া এলাকায় কাঁটাতারের বেষ্টনীর ভেতরে রাখা হয়েছে ৭০টি হরিণ। সরকারিভাবে এই ৭০টি হরিণের জন্য শুধু খাদ্য সরবরাহ করা হয়। তাও আবার যৎসামান্য। কাঁটাতারের বাইরে রয়েছে আরও শতাধিক হরিণ। এদের জন্য কোন খাদ্যের বরাদ্দ নেই। বনজুড়ে থাকা বানরের জন্যও খাদ্যের বরাদ্দ ছিল না।

তবে সম্প্রতি সামান্য খাবার সরবরাহ করছে বন বিভাগ। চারটি স্পটে প্রতিদিন সামান্য বিস্কুট ও মুড়ি দেয়া হচ্ছে। আর মাঝে মধ্যে দেয়া হয় গুটিকয়েক কলা। এসব খাবার হাজার হাজার বানরের জন্য কিছুই না। বরং বানরের ক্ষুধার জ্বালা আরও তীব্র হয়ে উঠছে। বনে গজারি বাগান ছাড়া আর কোন গাছ না থাকায় খাঁ খাঁ করছে পুরো বনাঞ্চল। এতে খাবার না থাকায় বনের প্রাণীরা সামান্য খাদ্যের আশায় বন ছেড়ে ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। বনসংলগ্ন এলাকার বাড়িঘরে হানা দিচ্ছে বানরের দল। বনের বাসিন্দা সোহেল মিয়া বলেন, বনের ভেতর বন্যপ্রাণীর তীব্র খাদ্যের অভাবে প্রায়ই দল বেঁধে তাদের বাড়িতে হানা দেয় বন্যপ্রাণী। অনেক সময় ঘরে ঢুকে রান্না করা খাবার খেয়ে ফেলে। এছাড়া তাদের আবাদ করা পেঁপে, কলা ও আনারস খেয়ে ফেলছে বানরের দল।

টাঙ্গাইল বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, বিশাল এলাকার বনাঞ্চলে বানর ও হনুমানসহ প্রায় পাঁচ হাজার বন্যপ্রাণী রয়েছে। একসময় এসব পশুর জন্য কোন খাবারের ব্যবস্থা ছিল না। তবে কিছুদিন ধরে চারটি স্পটে সামান্য খাবার দেয়া হচ্ছে। এসব খাবার বন্যপ্রাণীদের জন্য যথেষ্ট নয়। তারা চান খাবার যেন আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়।

image
আরও খবর
গোমতী নদীর ১৩ স্থান থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন
শতভাগ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইট চলাচল শুরু আজ থেকে
ঢাকা থেকে রেল সংযোগের পর কক্সবাজার হবে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী রেলমন্ত্রী
সারাদেশে বিদ্যুতের তার হবে ভূগর্ভে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
১ অক্টোবর থেকে রাজধানীর ঝুলন্ত তার উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করবে ডিএনসিসি ৩
এসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের মৃত্যু
অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
অনিয়মের তদন্ত রিপোর্ট একসঙ্গে ৭ জনকে অবসর প্রদান
তদন্ত শুরু : আলামত রাসায়নিক পরীক্ষাগারে
ইলিশ ধরা পড়ছে ব্যাপক হারে চিন্তিত মৎস্য বিশেষজ্ঞরা
মানব পাচারের অভিযোগে নৃত্যশিল্পী সোহাগ গ্রেফতার

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৩ মহররম ১৪৪২, ২৫ ভাদ্র ১৪২৭

টাঙ্গাইলের মধুপুরে

খাদ্যাভাবে বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে

জেলা বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল

image

টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ে বন্যপ্রাণীর তীব্র খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। বনে খাবার না থাকায় বন্যপ্রাণীরা ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। অনেক সময় মানুষের চলাচলের পথ আটকে দিচ্ছে খাবারের আশায়। পথচারীদের হাতে কোন কিছু দেখলেই বনের ভেতর থেকে দৌড়ে আসছে বানর। বন্যপ্রাণীর তীব্র খাদ্য সংকট হওয়ায় বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ কিছুদিন ধরে শুরু করেছে সরকারিভাবে সামান্য খাবার বিতরণ। কিন্তু সামান্য খাদ্য যেন আরও ক্ষুধা বাড়িয়ে দিচ্ছে বন্যপ্রাণীর। বন বিভাগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা খাবার বাড়ানোর দাবি করছেন।

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ৫৯ হাজার একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে মধুপুর বনাঞ্চল। ক্রমেই বন উজাড় ও এলাকার প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় বনের আয়তন কমে গেছে। অথচ একসময় এটি গহীন বন ছিল। এখন বনের ভেতরেই আবাদ হচ্ছে ফসল, গড়ে উঠছে মসজিদ-মাদ্রাসা ও বাসস্থান। এতে মধুপুর বন তার জৌলুস হারিয়েছে অনেক আগেই। বন উজাড়ের সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীও হারিয়ে গেছে বন থেকে। এখন শুধু কিছু বানর রয়েছে। খাবারের অভাবে এসব বানরও এখন বন থেকে বের হয়ে আশ্রয় নিচ্ছে বিভিন্ন গ্রাম ও শহরে। দলছুট হয়ে বেরিয়ে পড়ছে সামান্য খাবারের খোঁজে। এরপরও বনে রয়ে গেছে প্রায় ১০ হাজার বানর ও হনুমান। আর মধুপুর বনের ভেতরে লহড়িয়া এলাকায় কাঁটাতারের বেষ্টনীর ভেতরে রাখা হয়েছে ৭০টি হরিণ। সরকারিভাবে এই ৭০টি হরিণের জন্য শুধু খাদ্য সরবরাহ করা হয়। তাও আবার যৎসামান্য। কাঁটাতারের বাইরে রয়েছে আরও শতাধিক হরিণ। এদের জন্য কোন খাদ্যের বরাদ্দ নেই। বনজুড়ে থাকা বানরের জন্যও খাদ্যের বরাদ্দ ছিল না।

তবে সম্প্রতি সামান্য খাবার সরবরাহ করছে বন বিভাগ। চারটি স্পটে প্রতিদিন সামান্য বিস্কুট ও মুড়ি দেয়া হচ্ছে। আর মাঝে মধ্যে দেয়া হয় গুটিকয়েক কলা। এসব খাবার হাজার হাজার বানরের জন্য কিছুই না। বরং বানরের ক্ষুধার জ্বালা আরও তীব্র হয়ে উঠছে। বনে গজারি বাগান ছাড়া আর কোন গাছ না থাকায় খাঁ খাঁ করছে পুরো বনাঞ্চল। এতে খাবার না থাকায় বনের প্রাণীরা সামান্য খাদ্যের আশায় বন ছেড়ে ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। বনসংলগ্ন এলাকার বাড়িঘরে হানা দিচ্ছে বানরের দল। বনের বাসিন্দা সোহেল মিয়া বলেন, বনের ভেতর বন্যপ্রাণীর তীব্র খাদ্যের অভাবে প্রায়ই দল বেঁধে তাদের বাড়িতে হানা দেয় বন্যপ্রাণী। অনেক সময় ঘরে ঢুকে রান্না করা খাবার খেয়ে ফেলে। এছাড়া তাদের আবাদ করা পেঁপে, কলা ও আনারস খেয়ে ফেলছে বানরের দল।

টাঙ্গাইল বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, বিশাল এলাকার বনাঞ্চলে বানর ও হনুমানসহ প্রায় পাঁচ হাজার বন্যপ্রাণী রয়েছে। একসময় এসব পশুর জন্য কোন খাবারের ব্যবস্থা ছিল না। তবে কিছুদিন ধরে চারটি স্পটে সামান্য খাবার দেয়া হচ্ছে। এসব খাবার বন্যপ্রাণীদের জন্য যথেষ্ট নয়। তারা চান খাবার যেন আরও বাড়িয়ে দেয়া হয়।