পানি ও স্যানিটেশনের জন্য ২০ কোটি ডলার ঋণ বিশ্বব্যাংকের

গ্রামাঞ্চলে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের সুযোগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে ২০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের সদর দফতরে গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত বিশ্ব ঋণদাতা সংস্থাটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এই ঋণ অনুমোদন দেয়া হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ রুরাল ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন ফর হিউম্যান ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্প বাস্তবায়নে এই ঋণ দেয়া হবে। এর আওতায় গ্রামাঞ্চলের প্রায় ছয় লাখ মানুষকে বড় ও ছোট পাইপের মাধ্যমে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহ করা হবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে ঘরে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে এবং মানুষকে হাত ধোয়ার যথাযথ পদ্ধতি মানতে উদ্বুদ্ধ করা হবে, যাতে কোভিড-১৯ এর মতো সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা মেলে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, সবার জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ এবং খোলা জায়গায় মলত্যাগ অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটিয়ে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। টবে পানি ও স্যানিটেশন এর মান এবং নিরাপদ পানি স্যানিটেশন ও মানবসম্পদ উন্নয়নের মধ্যে যে যোগসূত্র সেটিতে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। প্রকল্পটি পরিষ্কার পানি এবং স্যানিটেশন সেবা দেবে, যা ডায়রিয়াজনিত রোগ ও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে অপুষ্টিজনিত প্রতিবন্ধিতা কমাবে এবং পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের মান উন্নত করবে। বিশেষত অপেক্ষাকৃত দুর্বলরা এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবেন। এটি দেশের দারিদ্র্য হ্রাস করতে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে।

২০১৭ সালে গ্রামাঞ্চলে মাত্র তিন শতাংশ পরিবারে পাইপযুক্ত পানির সংযোগ ছিল। এই বড় ও ছোট পাইপযুক্ত স্কিমগুলোতে বিনিয়োগের পাশাপাশি প্রকল্পটি পরিবারের পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা উন্নত করতে ঋণ দেবে। এতে করে স্থানীয় উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারবে। এছাড়াও পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহের প্রকল্পের গুণমান এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে এবং স্যানিটেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে।

প্রকল্প প্রধান ও বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পানি বিশেষজ্ঞ রোকেয়া আহমেদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাময় দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ অন্যতম। আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানির গুণমান এবং সহজলভ্যতা কমেছে। এই প্রকল্পটি প্রকৃতি থেকে বিশুদ্ধ পানির সুযোগ এবং স্যানিটেশন সুবিধা তৈরি করবে। সেই সঙ্গে ভূ-পৃষ্ঠের জলাবদ্ধতা এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির দূষণ কমাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় দেড়শ নারী উদ্যোক্তাকে ঘরে ঘরে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রয় করার জন্য ক্ষুদ্র ঋণ দেয়া হবে। ময়মনসিংহ, রংপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ৭৮টি উপজেলায় এই প্রকল্প চলবে।

রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৮ মহররম ১৪৪২, ০৯ আশ্বিন ১৪২৭

পানি ও স্যানিটেশনের জন্য ২০ কোটি ডলার ঋণ বিশ্বব্যাংকের

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

গ্রামাঞ্চলে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের সুযোগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে ২০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের সদর দফতরে গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত বিশ্ব ঋণদাতা সংস্থাটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এই ঋণ অনুমোদন দেয়া হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ রুরাল ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন ফর হিউম্যান ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্প বাস্তবায়নে এই ঋণ দেয়া হবে। এর আওতায় গ্রামাঞ্চলের প্রায় ছয় লাখ মানুষকে বড় ও ছোট পাইপের মাধ্যমে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহ করা হবে। প্রকল্পটির মাধ্যমে ঘরে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে এবং মানুষকে হাত ধোয়ার যথাযথ পদ্ধতি মানতে উদ্বুদ্ধ করা হবে, যাতে কোভিড-১৯ এর মতো সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা মেলে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, সবার জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ এবং খোলা জায়গায় মলত্যাগ অভ্যাসের পরিবর্তন ঘটিয়ে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। টবে পানি ও স্যানিটেশন এর মান এবং নিরাপদ পানি স্যানিটেশন ও মানবসম্পদ উন্নয়নের মধ্যে যে যোগসূত্র সেটিতে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। প্রকল্পটি পরিষ্কার পানি এবং স্যানিটেশন সেবা দেবে, যা ডায়রিয়াজনিত রোগ ও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে অপুষ্টিজনিত প্রতিবন্ধিতা কমাবে এবং পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের মান উন্নত করবে। বিশেষত অপেক্ষাকৃত দুর্বলরা এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবেন। এটি দেশের দারিদ্র্য হ্রাস করতে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে।

২০১৭ সালে গ্রামাঞ্চলে মাত্র তিন শতাংশ পরিবারে পাইপযুক্ত পানির সংযোগ ছিল। এই বড় ও ছোট পাইপযুক্ত স্কিমগুলোতে বিনিয়োগের পাশাপাশি প্রকল্পটি পরিবারের পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা উন্নত করতে ঋণ দেবে। এতে করে স্থানীয় উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারবে। এছাড়াও পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহের প্রকল্পের গুণমান এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে এবং স্যানিটেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে।

প্রকল্প প্রধান ও বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পানি বিশেষজ্ঞ রোকেয়া আহমেদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাময় দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশ অন্যতম। আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানির গুণমান এবং সহজলভ্যতা কমেছে। এই প্রকল্পটি প্রকৃতি থেকে বিশুদ্ধ পানির সুযোগ এবং স্যানিটেশন সুবিধা তৈরি করবে। সেই সঙ্গে ভূ-পৃষ্ঠের জলাবদ্ধতা এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির দূষণ কমাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় দেড়শ নারী উদ্যোক্তাকে ঘরে ঘরে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রয় করার জন্য ক্ষুদ্র ঋণ দেয়া হবে। ময়মনসিংহ, রংপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ৭৮টি উপজেলায় এই প্রকল্প চলবে।