ফের নুরসহ সহযোগীদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা ছাত্রলীগের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ বিশ্ববদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগ। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্ণ উপলক্ষে আয়োজিত বিজয় র‌্যালি থেকে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদকে ‘শিবিরের ছাত্রসংগঠন’ আখ্যা দিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরসহ তার সহযোগীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিল ছাত্রলীগ। এছাড়াও গত ২২ ডিসেম্বর ডাকসু ভবনে হামলার পর নুরকে ডাকসুতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিলেন ডাকসুর জিএস এবং ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসংলগ্ন সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ছাত্রলীগ নেতারা নুরসহ বিশ্ববদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করার ঘোষণা দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ অপেক্ষা এ সমাবেশে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হল ছাত্রলীগের নেতারা ছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটি, ইডেন কলেজ, ঢাকা কলেজ ও মহানগরের নেতাসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীসহ সিলেট এমসি কলেজে, খাগড়াছড়ি ও সাভারের ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা। প্রয়োজনে বিচারের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের আহ্বান জানান তারা।

সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ডাকসুর যত ভিপি আছে, নুর সবার মর্যাদাহানি করেছে। গুজব বাহিনী দ্বারা তিনি ডাকসুর ভিপি হয়েছিলেন। কিন্তু আজকে দেখা যাচ্ছে এই নাটকবাজ নুর সবাইকে ভুল বুঝিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। নুরু গংরা শিবিরদের নিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ গঠন করেছে। মিডিয়া ও সুশীল সমাজের সমালোচনা করে জয় বলেন, আমাদের মিডিয়া, তথাকথিত শিক্ষক, সুশীল সমাজ সিলেটে এমসি কলেজে ধর্ষক কে এটা দেখে, বার বার ছাত্রলীগকে দোষারোপ করছে। ধর্ষকের তো কোন দল নেই। তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। ড. কামাল হোসেন বলেন, ধর্ষকদের আইনি সহায়তা দেবেন। এ ধরনের লোকদের যারা আইনি সহায়তা দেয়, তাদের বয়কট করতে হবে। তারা নাকি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়েছেন। আমরা তা বিশ্বাস করি না। এই নুরু গংরা, ড. কামাল হোসেনরা রাষ্ট্রের শত্রু। তাদের এদেশে থাকার কোন অধিকার নাই। তাদেরকে বয়কটের সময় এসেছে।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষকের পক্ষে বিক্ষোভ হয়েছে। তারা ধর্ষকের বিচারকে বানচাল করতে আন্দোলনে নেমেছে, রাজপথে মোকাবিলার হুমকি দিয়েছে। তারা এটাকে সরকার ও ছাত্রলীগের ষড়যন্ত্র বলছে, অথচ এই মামলা করেছে তাদেরই সংগঠনের কর্মী। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রাজপথে থাকবে। তিনি বলেন, ধর্ষণ তো দূরের কথা, নারী সমাজের প্রতি বিন্দুমাত্র আড়চোখে তাকানোর সাহস করে বা কটাক্ষ করে, এমন কোন কর্মী বাংলাদেশ ছাত্রলীগে নেই। সিলেটের এমসি কলেজের ধর্ষণের ঘটনায় সবার আগে ছাত্রলীগ সেখানে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ওই ধর্ষকদের বিচার না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সিলেট জেলা এবং মহানগর ছাত্রলীগ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সময় জাতীয় জাদুঘরের সামনে খাগড়াছড়িতে এক প্রতিবন্ধী পাহাড়ি নারীকে দল বেঁধে ধর্ষণ, সিলেট এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া নারীকে ধর্ষণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনার বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী নিয়ে মানববন্ধন করেছেন ডাকসুর সাবেক সদস্য তানভীর হাসান সৈকত। এ সময় তারা ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান।

সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ০৯ মহররম ১৪৪২, ১০ আশ্বিন ১৪২৭

ধর্ষণের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ

ফের নুরসহ সহযোগীদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা ছাত্রলীগের

প্রতিনিধি, ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ বিশ্ববদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ছাত্রলীগ। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্ণ উপলক্ষে আয়োজিত বিজয় র‌্যালি থেকে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদকে ‘শিবিরের ছাত্রসংগঠন’ আখ্যা দিয়ে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরসহ তার সহযোগীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিল ছাত্রলীগ। এছাড়াও গত ২২ ডিসেম্বর ডাকসু ভবনে হামলার পর নুরকে ডাকসুতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিলেন ডাকসুর জিএস এবং ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসংলগ্ন সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ছাত্রলীগ নেতারা নুরসহ বিশ্ববদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করার ঘোষণা দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ অপেক্ষা এ সমাবেশে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হল ছাত্রলীগের নেতারা ছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটি, ইডেন কলেজ, ঢাকা কলেজ ও মহানগরের নেতাসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের দুই শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীসহ সিলেট এমসি কলেজে, খাগড়াছড়ি ও সাভারের ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা। প্রয়োজনে বিচারের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন ও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের আহ্বান জানান তারা।

সমাবেশে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ডাকসুর যত ভিপি আছে, নুর সবার মর্যাদাহানি করেছে। গুজব বাহিনী দ্বারা তিনি ডাকসুর ভিপি হয়েছিলেন। কিন্তু আজকে দেখা যাচ্ছে এই নাটকবাজ নুর সবাইকে ভুল বুঝিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। নুরু গংরা শিবিরদের নিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ গঠন করেছে। মিডিয়া ও সুশীল সমাজের সমালোচনা করে জয় বলেন, আমাদের মিডিয়া, তথাকথিত শিক্ষক, সুশীল সমাজ সিলেটে এমসি কলেজে ধর্ষক কে এটা দেখে, বার বার ছাত্রলীগকে দোষারোপ করছে। ধর্ষকের তো কোন দল নেই। তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। ড. কামাল হোসেন বলেন, ধর্ষকদের আইনি সহায়তা দেবেন। এ ধরনের লোকদের যারা আইনি সহায়তা দেয়, তাদের বয়কট করতে হবে। তারা নাকি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়েছেন। আমরা তা বিশ্বাস করি না। এই নুরু গংরা, ড. কামাল হোসেনরা রাষ্ট্রের শত্রু। তাদের এদেশে থাকার কোন অধিকার নাই। তাদেরকে বয়কটের সময় এসেছে।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষকের পক্ষে বিক্ষোভ হয়েছে। তারা ধর্ষকের বিচারকে বানচাল করতে আন্দোলনে নেমেছে, রাজপথে মোকাবিলার হুমকি দিয়েছে। তারা এটাকে সরকার ও ছাত্রলীগের ষড়যন্ত্র বলছে, অথচ এই মামলা করেছে তাদেরই সংগঠনের কর্মী। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা রাজপথে থাকবে। তিনি বলেন, ধর্ষণ তো দূরের কথা, নারী সমাজের প্রতি বিন্দুমাত্র আড়চোখে তাকানোর সাহস করে বা কটাক্ষ করে, এমন কোন কর্মী বাংলাদেশ ছাত্রলীগে নেই। সিলেটের এমসি কলেজের ধর্ষণের ঘটনায় সবার আগে ছাত্রলীগ সেখানে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ওই ধর্ষকদের বিচার না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সিলেট জেলা এবং মহানগর ছাত্রলীগ আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সময় জাতীয় জাদুঘরের সামনে খাগড়াছড়িতে এক প্রতিবন্ধী পাহাড়ি নারীকে দল বেঁধে ধর্ষণ, সিলেট এমসি কলেজে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া নারীকে ধর্ষণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনার বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী নিয়ে মানববন্ধন করেছেন ডাকসুর সাবেক সদস্য তানভীর হাসান সৈকত। এ সময় তারা ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানান।