স্বাগত ২০২১ সাল

আজ খ্রিস্টীয় নববর্ষ। বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট এক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিশ্ববাসী নতুন বছরে পদার্পণ করছে। বাকি বিশ্বের মতো বাংলাদেশও মহামারী নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলা করছে। কোভিড-১৯-এ সংক্রমিত হয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মারা গেছে সাড়ে ৭ হাজারেরও বেশি মানুষ, সংক্রমিত হয়েছে প্রায় ৫ লাখ ১৩ হাজার জন। করোনা ইস্যুতে স্বাস্থ্য খাতে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

মহামারীর পাশাপাশি বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে গত বছর। দফায় দফায় বন্যার কারণে ফসলহানি হয়েছে। কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। করোনার প্রভাবে একদিকে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছে। অন্যদিকে চড়া দ্রব্যমূল্যের মাশুল গুনেছে। সবমিলিয়ে বিদায়ী ২০২০ সাল মানুষের জন্য স্বস্তির বছর ছিল না।

আশার খবরও আছে, ৪ লাখ ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ থেকে মুক্ত হয়েছে। রিজার্ভে নতুন নতুন রেকর্ড হয়েছে। টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটির পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। মেগা প্রজেক্টগুলোর কাজ আবার শুরু হয়েছে। দৃশ্যমান হয়েছে পদ্মা সেতুর পুরো কাঠামো। মহামারীর প্রভাবে সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে। সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রতিটি মানুষ নিজ নিজ জায়গা থেকে লড়াই করে যাচ্ছে।

সংকটের মধ্যেও ধর্মের নামে রাজনীতির এক মধ্যযুগীয় অপশক্তি দেশকে আচ্ছন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে যে কলঙ্কমোচন করেছি, মনুষ্যত্ব অর্জন করেছি, তা ধর্মান্ধ অবিবেকিদের চক্রান্তে নস্যাৎ হবে- সেটা মেনে নেয়া যায় না। নববর্ষে আমরা এ অপশক্তিকে মোকাবিলার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করব।

যে কোন সংকট থেকে মুক্তির উপায় হলো সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য। মতপার্থক্য ও বিভেদ ভুলে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে সংকট মোকাবিলা করে দেশের অগ্রগতির লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। হিংসা ও সংঘাতের পথ দেশ, সমাজ, ব্যক্তির বিকাশের পথ রুদ্ধ করে।

ধর্ম, জাতি, রাষ্ট্রিক ধ্যান-ধারণা নির্বিশেষে খ্রিস্টীয় নববর্ষ এখন আন্তর্জাতিক নববর্ষে পরিণত হয়েছে। নববর্ষকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ নববর্ষ আমাদের নতুন ভাবনায়, নতুন সাধনায় সামনে এগিয়ে চলার পথনির্দেশ দেয়। অতীতের ভুল-ভ্রান্তি ও অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই আমরা সব অন্ধকারকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারি আলোকিত ভবিষ্যতের দিকে। ২০২১ সালটি সবার জন্য সুসংবাদ বয়ে আনুক।

শুক্রবার, ০১ জানুয়ারী ২০২১ , ১৭ পৌষ ১৪২৭, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

স্বাগত ২০২১ সাল

আজ খ্রিস্টীয় নববর্ষ। বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট এক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিশ্ববাসী নতুন বছরে পদার্পণ করছে। বাকি বিশ্বের মতো বাংলাদেশও মহামারী নভেল করোনাভাইরাস মোকাবিলা করছে। কোভিড-১৯-এ সংক্রমিত হয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মারা গেছে সাড়ে ৭ হাজারেরও বেশি মানুষ, সংক্রমিত হয়েছে প্রায় ৫ লাখ ১৩ হাজার জন। করোনা ইস্যুতে স্বাস্থ্য খাতে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

মহামারীর পাশাপাশি বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে গত বছর। দফায় দফায় বন্যার কারণে ফসলহানি হয়েছে। কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। করোনার প্রভাবে একদিকে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছে। অন্যদিকে চড়া দ্রব্যমূল্যের মাশুল গুনেছে। সবমিলিয়ে বিদায়ী ২০২০ সাল মানুষের জন্য স্বস্তির বছর ছিল না।

আশার খবরও আছে, ৪ লাখ ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ কোভিড-১৯ থেকে মুক্ত হয়েছে। রিজার্ভে নতুন নতুন রেকর্ড হয়েছে। টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটির পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। মেগা প্রজেক্টগুলোর কাজ আবার শুরু হয়েছে। দৃশ্যমান হয়েছে পদ্মা সেতুর পুরো কাঠামো। মহামারীর প্রভাবে সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে। সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রতিটি মানুষ নিজ নিজ জায়গা থেকে লড়াই করে যাচ্ছে।

সংকটের মধ্যেও ধর্মের নামে রাজনীতির এক মধ্যযুগীয় অপশক্তি দেশকে আচ্ছন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে যে কলঙ্কমোচন করেছি, মনুষ্যত্ব অর্জন করেছি, তা ধর্মান্ধ অবিবেকিদের চক্রান্তে নস্যাৎ হবে- সেটা মেনে নেয়া যায় না। নববর্ষে আমরা এ অপশক্তিকে মোকাবিলার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করব।

যে কোন সংকট থেকে মুক্তির উপায় হলো সুদৃঢ় জাতীয় ঐক্য। মতপার্থক্য ও বিভেদ ভুলে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে একযোগে সংকট মোকাবিলা করে দেশের অগ্রগতির লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। হিংসা ও সংঘাতের পথ দেশ, সমাজ, ব্যক্তির বিকাশের পথ রুদ্ধ করে।

ধর্ম, জাতি, রাষ্ট্রিক ধ্যান-ধারণা নির্বিশেষে খ্রিস্টীয় নববর্ষ এখন আন্তর্জাতিক নববর্ষে পরিণত হয়েছে। নববর্ষকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ নববর্ষ আমাদের নতুন ভাবনায়, নতুন সাধনায় সামনে এগিয়ে চলার পথনির্দেশ দেয়। অতীতের ভুল-ভ্রান্তি ও অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই আমরা সব অন্ধকারকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারি আলোকিত ভবিষ্যতের দিকে। ২০২১ সালটি সবার জন্য সুসংবাদ বয়ে আনুক।