মাতৃ মৃত্যুহার কমাতে মায়েদের হোম ডেলিভারি নিরুৎসাহিত করতে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ আয়োজিত ‘শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহার কমানোর কৌশল নির্ধারণ’ সংক্রান্ত সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী দেশে মাতৃ মৃত্যুহার নিয়ে গত ১০ বছরের পরিসংখ্যান দেখে দেশের মাতৃ মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আরও জোরালো ভূমিকা রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দেশের আনাচে-কানাচে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে গেছে। এখন মায়েদের হোম ডেলিভারিতে নিরুৎসাহিত করতে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্যোগী হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যত্রতত্র ও অস্বাস্থ্যকর ক্লিনিকে মায়েদের ডেলিভারি বন্ধ করতে হবে। দেশের সরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে। যেসব ক্লিনিক স্বাস্থ্য সম্মত নয় সেগুলো প্রয়োজনে সিলগালা করে দিতে হবে। লোকবল আরও প্রয়োজন হলে নিয়োগ দিতে হবে। মিডওয়াইফ কর্মীদের কাজে লাগাতে হবে, তাদের নিরাপদ ডেলিভারি করতে উৎসাহিত করতে হবে। যেখানে যে উদ্যোগ প্রয়োজন সেখানে সেভাবেই কাজ করতে হবে, তবুও মাতৃ মৃত্যুহার ধীরে ধীরে ৫০-এর নিচে নামিয়ে আনতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী পরিসংখ্যান তুলে ধরে সভায় জানান, দেশে বর্তমানে প্রতি লাখ জীবিত জন্মে মাতৃ মৃত্যু ১৬৫ জন, যা ২০০৯ সালে ছিল ২৫৯ জন। গত ১০ বছরে মাতৃ মৃত্যু হার কমেছে প্রতি লাখ জীবিত জন্মে প্রায় ৯৪ জন। যদিও গত ১০ বছরের পরিসংখ্যানে কিছুটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে, কিন্তু মাতৃ মৃত্যুহার প্রতি লাখ জীবিত জন্মে ৭০ জনের নিচে নিয়ে আসতে প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, এনডিসি, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন, জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট) এর মহাপরিচালক সুশান্ত কুমার সাহাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।