চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন : ইশতেহার ঘোষণা

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আ’লীগের ৩৭ দফা

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী গতকাল ‘রূপসী চট্টগ্রাম আমার আপনার অহংকার, অঙ্গিকার সবার যোগে সাজবে এ নগর, এ অঙ্গিকারে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ৩৭ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব প্রধান প্রধান বিষয়গুলো স্থান পেল সেগুলো হলো, জলাবদ্ধতা নিরসন, ১০০ দিনের কর্মসূচি, যানজট সমস্যা থেকে উত্তরণ, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পর্যটন রাজধানী, স্বাস্থ্য সেবাসহ চলমান মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করা।

মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জাতীয় অর্থনীতি চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। স্বাভাবিক কারণে চট্টগ্রাম দেশের অর্থনীতির প্রাণ ভোমরা, বর্তমান সরকার গত ১২ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বমানের গতিশীল আন্তর্জাতিক বন্দরে পরিণত হয়েছে। প্রতিবেশী ভারতের ভূমি বেষ্টিত সেভেন সিস্টার, চীনের কুনমিংসহ নেপাল ও ভুটানের আমদানি রপ্তানি ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার হবে চট্টগ্রাম। বঙ্গবন্ধু স্বপরিবার নিহত হওয়ায় ঘাতচক্রের সহযোগী সরকারগুলো দেশকে অনেক পিছিয়ে দেয়। জননেত্রী শেখ হাসিনা ধংসস্তুপ থেকে দেশ এবং চট্টগ্রাম বন্দরকে তুলে এনে বিশ্ব দরবারে অনন্য মর্যদা এনে দিয়েছেন। জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে করোনা সংকটেও তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সর্বকালের রেকর্ড ৪৩ বিলিয়ন ডলারের উপরে। তিনি আরও বলেন, আগামী ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হলে নাগরিক সচেতনতা গড়ে তোলাসহ ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে সমষ্ঠিগত স্বার্থের প্রতি দায়বদ্ধ নাগরী গড়ে তুলতে প্রতিটি ওয়ার্ডে নাগরিক উদ্ধুত্বকরণ পর্যদ গঠন করা হবে। ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে সমন্বয় করে এই পর্যদ গঠিত হবে।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমরা পরম সৌভাগ্যবান হয়েও প্রকৃতির চমৎকার উপহার চট্টগ্রামকে ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারছি না। এরজন্য শুধু দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ নয়, চট্টগ্রামের নাগরিক হিসেবে সবাই সমান দায়ী। কারণ আমাদের মধ্যে নাগরিক দায়িত্ব পালনে যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আমি নিজেও এই দায় এড়াতে পারি না। আপনাদের সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় অতীতের সব ভুল বিচ্যুতি পরিহার করে চট্টগ্রামকে সর্বাধুনিক বাসোপযোগী বিশ্বমানের উন্নত ও নান্দনিক নগর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে আমার ধারাবাহিক উন্নয়ন সূচির মূল অঙ্গীকারগুলো হলো- জলাবদ্ধতা নিরসন, নগরীর দখলকৃত খাল, নালা-নদী পুনরুদ্ধার ও পানি নিষ্কাশন উপযোগী করতে ১০০ দিনের মধ্যে সব ত্রুটি ও প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তা নির্মূলে কঠোর আইন প্রয়োগ, যানজট সমস্যা থেকে উত্তরণ, সড়ক শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন, চট্টগ্রামকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা, প্রতিনিয়ত মশক নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম অব্যাহত রাখা এবং হোল্ডিং ট্যাক্সসহ সব ধার্য্যকৃত কর সহনীয় পর্যায়ে রাখা। রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে একটি সেবামূলক ও কল্যাণ-জনমুখী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করাব। আমার পূর্বসূরি সাবেক সিটি মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী যে উচ্চতায় চট্টগ্রাম নগরীকে উন্নীত করেছিলেন তা পুনরুদ্ধার করে চলমান রাখব এবং তার আমলে প্রতিষ্ঠিত আয়বর্ধক প্রকল্পগুলো পুনরায় চালু করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে স্বনির্ভর ও আত্মনির্ভর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব। ইশতেহার ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ, আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান প্রমুখ।

রবিবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২১ , ১০ মাঘ ১৪২৭, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪২

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন : ইশতেহার ঘোষণা

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আ’লীগের ৩৭ দফা

চট্টগ্রাম ব্যুরো

image

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী গতকাল ‘রূপসী চট্টগ্রাম আমার আপনার অহংকার, অঙ্গিকার সবার যোগে সাজবে এ নগর, এ অঙ্গিকারে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ৩৭ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব প্রধান প্রধান বিষয়গুলো স্থান পেল সেগুলো হলো, জলাবদ্ধতা নিরসন, ১০০ দিনের কর্মসূচি, যানজট সমস্যা থেকে উত্তরণ, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পর্যটন রাজধানী, স্বাস্থ্য সেবাসহ চলমান মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করা।

মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জাতীয় অর্থনীতি চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। স্বাভাবিক কারণে চট্টগ্রাম দেশের অর্থনীতির প্রাণ ভোমরা, বর্তমান সরকার গত ১২ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বমানের গতিশীল আন্তর্জাতিক বন্দরে পরিণত হয়েছে। প্রতিবেশী ভারতের ভূমি বেষ্টিত সেভেন সিস্টার, চীনের কুনমিংসহ নেপাল ও ভুটানের আমদানি রপ্তানি ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার হবে চট্টগ্রাম। বঙ্গবন্ধু স্বপরিবার নিহত হওয়ায় ঘাতচক্রের সহযোগী সরকারগুলো দেশকে অনেক পিছিয়ে দেয়। জননেত্রী শেখ হাসিনা ধংসস্তুপ থেকে দেশ এবং চট্টগ্রাম বন্দরকে তুলে এনে বিশ্ব দরবারে অনন্য মর্যদা এনে দিয়েছেন। জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে করোনা সংকটেও তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সর্বকালের রেকর্ড ৪৩ বিলিয়ন ডলারের উপরে। তিনি আরও বলেন, আগামী ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হলে নাগরিক সচেতনতা গড়ে তোলাসহ ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে সমষ্ঠিগত স্বার্থের প্রতি দায়বদ্ধ নাগরী গড়ে তুলতে প্রতিটি ওয়ার্ডে নাগরিক উদ্ধুত্বকরণ পর্যদ গঠন করা হবে। ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে সমন্বয় করে এই পর্যদ গঠিত হবে।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমরা পরম সৌভাগ্যবান হয়েও প্রকৃতির চমৎকার উপহার চট্টগ্রামকে ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারছি না। এরজন্য শুধু দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ নয়, চট্টগ্রামের নাগরিক হিসেবে সবাই সমান দায়ী। কারণ আমাদের মধ্যে নাগরিক দায়িত্ব পালনে যথেষ্ট অভাব রয়েছে। আমি নিজেও এই দায় এড়াতে পারি না। আপনাদের সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় অতীতের সব ভুল বিচ্যুতি পরিহার করে চট্টগ্রামকে সর্বাধুনিক বাসোপযোগী বিশ্বমানের উন্নত ও নান্দনিক নগর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে আমার ধারাবাহিক উন্নয়ন সূচির মূল অঙ্গীকারগুলো হলো- জলাবদ্ধতা নিরসন, নগরীর দখলকৃত খাল, নালা-নদী পুনরুদ্ধার ও পানি নিষ্কাশন উপযোগী করতে ১০০ দিনের মধ্যে সব ত্রুটি ও প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তা নির্মূলে কঠোর আইন প্রয়োগ, যানজট সমস্যা থেকে উত্তরণ, সড়ক শৃঙ্খলায় ফিরিয়ে আনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন, চট্টগ্রামকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা, প্রতিনিয়ত মশক নিধনে ক্রাশ প্রোগ্রাম অব্যাহত রাখা এবং হোল্ডিং ট্যাক্সসহ সব ধার্য্যকৃত কর সহনীয় পর্যায়ে রাখা। রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে একটি সেবামূলক ও কল্যাণ-জনমুখী স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করাব। আমার পূর্বসূরি সাবেক সিটি মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী যে উচ্চতায় চট্টগ্রাম নগরীকে উন্নীত করেছিলেন তা পুনরুদ্ধার করে চলমান রাখব এবং তার আমলে প্রতিষ্ঠিত আয়বর্ধক প্রকল্পগুলো পুনরায় চালু করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে স্বনির্ভর ও আত্মনির্ভর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব। ইশতেহার ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ, আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান প্রমুখ।