ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবস আজ

অংশ নেবে বাংলাদেশ

আজ ২৬ জানুয়ারি। ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবস। প্রতি বছরের মতো এ বছরও দিল্লির রাজপথে ভারতীয় সামরিক বাহিনী প্যারেড অনুষ্ঠিত হবে। তবে এবারের এই প্যারেডে প্রথমবারের মতো অংশ নেবে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ১২২ সদস্যের একটি দল প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ভারতে পৌঁছেছে।

১৯৫০ সালে ২৬ জানুয়ারি সংবিধান কার্যকর হওয়ার তারিখ হিসেবে এই দিনটিকে স্মরণ করা হয়। এই দিনে ভারতীয় সামরিক বাহিনী এবং আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সম্মান জানানো হয়। সাধারণত, এই দিন প্যারেডের একটি অনুষ্ঠান থাকে। সেখানে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেয়। তবে মহামারী করোনার কারণে এই বছর প্রজাতন্ত্র দিবস খুব ছোট আকারে উদযাপিত হবে। এ বছর কোন প্রধান অতিথি থাকবেন না। প্রধান অতিথি ছাড়া এটি গত ৫০ বছরের মধ্যে প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ নয়। এ বছর প্রথমদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে ভারতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে যুক্তরাজ্যে নতুন কোভিড স্ট্রেনের প্রাদুর্ভাবের কারণে তিনি তার সফর বাতিল করতে বাধ্য হন। এর আগে, ১৯৫২, ১৯৫৩ ও ১৯৬৬ সালে প্যারেডের জন্য ভারতের প্রধান অতিথি ছিল না। পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানটি আজ সকাল ৮ টায় অনুষ্ঠিত হবে।

এই বছর দর্শকের সংখ্যা ২৫ হাজারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল দেড় হাজার। একইভাবে মিডিয়া প্রতিনিধি সংখ্যাও কমানে হয়েছে। গত বছর যেখানে ৩০০ জন ছিল, সেখানে এ বছর ২০০ জনের প্রবেশাধিকার দেয়া হয়েছে। ১৫ বছরের কম বয়সের বাচ্চারা এ বছর প্যারেডে উপস্থিতি থাকতে পারবেন না।

প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে শুরু হয়ে ইন্ডিয়া গেটে শেষ হবে। রুটটি রাজপথ হয়ে বিজয় চক, অমর জওয়ান জ্যোতি, ইন্ডিয়া গেট প্রিন্সেস প্যালেস, তিলক মার্গ হয়ে ইন্ডিয়া গেট হয়ে হবে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) রাফালে যুদ্ধবিমান এ বছর প্রথমবারের মতো কুচকাওয়াজে অংশ নেবে। প্যারেডে ভারতের অন্যতম প্রথম মহিলা যোদ্ধা ও ফাইটার জেট পাইলট ভাবনা কান্থ অংশ নেবেন। এছাড়া বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি দলও উপস্থিত থাকবে। উত্তরপ্রদেশের রাম মন্দিরের প্রতিলিপি এই কুচকাওয়াজে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের আত্মত্যাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং শ্রদ্ধা জানাতে পেরে দলটি গর্ববোধ করবে। প্যারেডে অংশ নিতে শনিবার সারাদিন রিহার্সেল করেছে বাংলাদেশের এই দলটি। রিহার্সেল শেষে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল মোহাম্মদ মোহতাশিম হায়দার চৌধুরী বলেছেন, ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের অংশ হতে পারা আমাদের জন্য অনেক সম্মানের।

তিনি বলেন, আমাদের দলের অধিকাংশ সদস্য ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বেড়ে উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে এমন একটি সময় ‘আমাদের বন্ধু’ ভারতের কুচকাওয়াজের অংশ হতে পেরে খুব ভাগ্যবান, যখন আমাদের দেশ ২০২০-২১ সাল আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী হিসেবে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ৫০ বছর হিসেবে পালন করছে।

এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের হাইকমিশন ২৬ জানুয়ারি ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে অংশ নিতে সশস্ত্র বাহিনীকে আমন্ত্রণ জানায়। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে সশস্ত্র বাহিনীর একটি সমন্বিত কন্টিনজেন্ট (মার্চিং ব্যান্ডসহ) গত ১২ জানুয়ারি ঢাকা ছাড়ে।

মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২১ , ১২ মাঘ ১৪২৭, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪২

ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবস আজ

অংশ নেবে বাংলাদেশ

সংবাদ ডেস্ক |

আজ ২৬ জানুয়ারি। ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবস। প্রতি বছরের মতো এ বছরও দিল্লির রাজপথে ভারতীয় সামরিক বাহিনী প্যারেড অনুষ্ঠিত হবে। তবে এবারের এই প্যারেডে প্রথমবারের মতো অংশ নেবে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ১২২ সদস্যের একটি দল প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ভারতে পৌঁছেছে।

১৯৫০ সালে ২৬ জানুয়ারি সংবিধান কার্যকর হওয়ার তারিখ হিসেবে এই দিনটিকে স্মরণ করা হয়। এই দিনে ভারতীয় সামরিক বাহিনী এবং আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সম্মান জানানো হয়। সাধারণত, এই দিন প্যারেডের একটি অনুষ্ঠান থাকে। সেখানে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেয়। তবে মহামারী করোনার কারণে এই বছর প্রজাতন্ত্র দিবস খুব ছোট আকারে উদযাপিত হবে। এ বছর কোন প্রধান অতিথি থাকবেন না। প্রধান অতিথি ছাড়া এটি গত ৫০ বছরের মধ্যে প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ নয়। এ বছর প্রথমদিকে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে ভারতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে যুক্তরাজ্যে নতুন কোভিড স্ট্রেনের প্রাদুর্ভাবের কারণে তিনি তার সফর বাতিল করতে বাধ্য হন। এর আগে, ১৯৫২, ১৯৫৩ ও ১৯৬৬ সালে প্যারেডের জন্য ভারতের প্রধান অতিথি ছিল না। পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানটি আজ সকাল ৮ টায় অনুষ্ঠিত হবে।

এই বছর দর্শকের সংখ্যা ২৫ হাজারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল দেড় হাজার। একইভাবে মিডিয়া প্রতিনিধি সংখ্যাও কমানে হয়েছে। গত বছর যেখানে ৩০০ জন ছিল, সেখানে এ বছর ২০০ জনের প্রবেশাধিকার দেয়া হয়েছে। ১৫ বছরের কম বয়সের বাচ্চারা এ বছর প্যারেডে উপস্থিতি থাকতে পারবেন না।

প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে শুরু হয়ে ইন্ডিয়া গেটে শেষ হবে। রুটটি রাজপথ হয়ে বিজয় চক, অমর জওয়ান জ্যোতি, ইন্ডিয়া গেট প্রিন্সেস প্যালেস, তিলক মার্গ হয়ে ইন্ডিয়া গেট হয়ে হবে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) রাফালে যুদ্ধবিমান এ বছর প্রথমবারের মতো কুচকাওয়াজে অংশ নেবে। প্যারেডে ভারতের অন্যতম প্রথম মহিলা যোদ্ধা ও ফাইটার জেট পাইলট ভাবনা কান্থ অংশ নেবেন। এছাড়া বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি দলও উপস্থিত থাকবে। উত্তরপ্রদেশের রাম মন্দিরের প্রতিলিপি এই কুচকাওয়াজে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের আত্মত্যাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং শ্রদ্ধা জানাতে পেরে দলটি গর্ববোধ করবে। প্যারেডে অংশ নিতে শনিবার সারাদিন রিহার্সেল করেছে বাংলাদেশের এই দলটি। রিহার্সেল শেষে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল মোহাম্মদ মোহতাশিম হায়দার চৌধুরী বলেছেন, ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের অংশ হতে পারা আমাদের জন্য অনেক সম্মানের।

তিনি বলেন, আমাদের দলের অধিকাংশ সদস্য ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বেড়ে উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে এমন একটি সময় ‘আমাদের বন্ধু’ ভারতের কুচকাওয়াজের অংশ হতে পেরে খুব ভাগ্যবান, যখন আমাদের দেশ ২০২০-২১ সাল আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী হিসেবে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ৫০ বছর হিসেবে পালন করছে।

এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের হাইকমিশন ২৬ জানুয়ারি ভারতের ৭২তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে অংশ নিতে সশস্ত্র বাহিনীকে আমন্ত্রণ জানায়। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে সশস্ত্র বাহিনীর একটি সমন্বিত কন্টিনজেন্ট (মার্চিং ব্যান্ডসহ) গত ১২ জানুয়ারি ঢাকা ছাড়ে।