মায়ানমারে ফেসবুক, সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করল সেনাবাহিনী

মায়ানমারের সামরিক সরকার এবার ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা জনমতকে দমনের উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রয়টার্স

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে অভ্যুত্থানবিরোধী প্রতিবাদ জোরাল হয়ে ওঠার ইঙ্গিতের মধ্যেই ফেইসবুক বন্ধের এ নির্দেশ এলো।

অং সান সুচির বিরুদ্ধে অবৈধ যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য মামলার করার পরদিন সামাজিক যোগাযোগ বন্ধ করল সরকার। সে দেশের সাড়ে ৫ কোটি জনসংখ্যার অর্ধেকই ফেসবুক ব্যবহার করে। গত সোমবার সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের পর মায়ানমারের জনগণ এসব সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু করে। তারা বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত বিক্ষোভের ছবি শেয়ার করে। বিশেষ করে হাঁড়ি-কড়ই নিয়ে তাদের বিক্ষোভের ছবি শেয়ার হতে থাকে বেশি। এসব প্রতিবাদের ছবি ফেইসবুকের মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে।

সামাজিক এ যোগাযোগমাধ্যমটিকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ যেন আরও ছড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করতেই কর্তৃপক্ষ ফেইসবুক বন্ধের পথে হেঁটেছে বলে ভাষ্য পর্যবেক্ষকদের।

মায়ানমার যোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকবে।

তারা জানায়, যারা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায় তারা এসব মাধ্যমে ব্যপকভাবে ভুয়া খবর ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছিল, যাতে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছিল।

সারা বিশ্বের অনলাইন সেবা তদারককারী প্রতিষ্ঠান নেটব্লকস জানায় ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়াও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াও বন্ধ করে দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এমপিটি।

রয়টার্স জানিয়েছে, সামরিক জান্তার নির্দেশের পরও মিয়ানমারের কিছু কিছু অংশে এখনও বিক্ষিপ্তভাবে ফেইসবুক সচল আছে। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের আন্দোলনকারীরা সামাজিক এ যোগাযোগমাধ্যমে তাদের অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ সরাসরি সম্প্রচারও করেছে।

“সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদ,” বিক্ষোভকারীদের একটি ব্যানারে এমনটাই লেখা ছিল। এ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অল্প কিছু লোককে ‘আমাদের গ্রেপ্তার নেতাদের ছেড়ে দাও, ছেড়ে দাও’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে। মায়ানমারে ফেসবুক সেবার প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে ফেসবুকের পক্ষ থেকেও। তাদের মুখপাত্র এন্ডি স্টোন ফেসবুকের সংযোগ চালু করার জন্য মায়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যাতে মানুষ তাদের পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।

গত সোমবার প্রথম প্রহরে সু চিসহ তার এনএলডির শতাধিক নেতাকে গ্রেফতারের পর সকালে এক বছরের জন্য সামরিক শাসন ঘোষণা করে দেশের ক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমারের সেনাবাহিনী।

শুক্রবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২২ মাঘ ১৪২৭, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪২

মায়ানমারে ফেসবুক, সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করল সেনাবাহিনী

image

মায়ানমারের সামরিক সরকার এবার ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা জনমতকে দমনের উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রয়টার্স

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে অভ্যুত্থানবিরোধী প্রতিবাদ জোরাল হয়ে ওঠার ইঙ্গিতের মধ্যেই ফেইসবুক বন্ধের এ নির্দেশ এলো।

অং সান সুচির বিরুদ্ধে অবৈধ যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য মামলার করার পরদিন সামাজিক যোগাযোগ বন্ধ করল সরকার। সে দেশের সাড়ে ৫ কোটি জনসংখ্যার অর্ধেকই ফেসবুক ব্যবহার করে। গত সোমবার সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের পর মায়ানমারের জনগণ এসব সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু করে। তারা বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত বিক্ষোভের ছবি শেয়ার করে। বিশেষ করে হাঁড়ি-কড়ই নিয়ে তাদের বিক্ষোভের ছবি শেয়ার হতে থাকে বেশি। এসব প্রতিবাদের ছবি ফেইসবুকের মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে।

সামাজিক এ যোগাযোগমাধ্যমটিকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ যেন আরও ছড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করতেই কর্তৃপক্ষ ফেইসবুক বন্ধের পথে হেঁটেছে বলে ভাষ্য পর্যবেক্ষকদের।

মায়ানমার যোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বহাল থাকবে।

তারা জানায়, যারা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চায় তারা এসব মাধ্যমে ব্যপকভাবে ভুয়া খবর ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছিল, যাতে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছিল।

সারা বিশ্বের অনলাইন সেবা তদারককারী প্রতিষ্ঠান নেটব্লকস জানায় ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ছাড়াও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াও বন্ধ করে দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এমপিটি।

রয়টার্স জানিয়েছে, সামরিক জান্তার নির্দেশের পরও মিয়ানমারের কিছু কিছু অংশে এখনও বিক্ষিপ্তভাবে ফেইসবুক সচল আছে। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের আন্দোলনকারীরা সামাজিক এ যোগাযোগমাধ্যমে তাদের অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ সরাসরি সম্প্রচারও করেছে।

“সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদ,” বিক্ষোভকারীদের একটি ব্যানারে এমনটাই লেখা ছিল। এ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অল্প কিছু লোককে ‘আমাদের গ্রেপ্তার নেতাদের ছেড়ে দাও, ছেড়ে দাও’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে। মায়ানমারে ফেসবুক সেবার প্রবাহ ব্যাহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে ফেসবুকের পক্ষ থেকেও। তাদের মুখপাত্র এন্ডি স্টোন ফেসবুকের সংযোগ চালু করার জন্য মায়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যাতে মানুষ তাদের পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।

গত সোমবার প্রথম প্রহরে সু চিসহ তার এনএলডির শতাধিক নেতাকে গ্রেফতারের পর সকালে এক বছরের জন্য সামরিক শাসন ঘোষণা করে দেশের ক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমারের সেনাবাহিনী।