সামরিক অভ্যুত্থান

মালির প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রী আটক

মুক্তির আহ্বান জাতিসংঘের

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে সামরিক অভ্যুত্থান চালানো হয়েছে। দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদলের পর ওইদিনই ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। রয়টার্স

ক্ষমতা দখলের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট বাহ নদা, প্রধানমন্ত্রী মক্টর ওয়ান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোলাইমান ডোকুরেকে আটক করেছে তারা। তাদেরকে আটক করে রাজধানী বামাকো কাছেই একটি সামরিক ঘাঁটিতে নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে মালিতে মাত্র ৯ মাসের মাথায় দ্বিতীয় দফায় এমন ঘটনা ঘটল।

দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় মরুভূমির বিশাল এলাকা আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সম্পর্কিত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো দখলে থাকার মধ্যে রাজধানীতে পরপর এসব ঘটনায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে চলা অস্থিরতা আরও ডালপালা মেলতে পারে।

গত আগস্টে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে বেসামরিক শাসন ফেরানোর লক্ষ্যে এনদাও ও উয়ানকে ১৮ মাসের অন্তর্র্বতী সরকারের দায়িত্ব দেয় সামরিক বাহিনী। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে দুই সেনা কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেয়ার পর ফের সংকটের সূচনা হয়।

এ বিষয়ে মালির এক সাবেক সরকারি আমলা বলেন, অভ্যুত্থানের স্তম্ভদের পদচ্যুত করা বড় ধরনের ভুল ছিল। সম্ভবত তাদের তাদের নিজ জায়গায় ফেরানোর লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল।

সামরিক বাহিনীর মূল উদ্দেশ্য তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের ওই প্রধানদের গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তা কাতি থেকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তারা যা করেছে তা ভালো করেনি। সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, আমরা তাদের তা জানিয়ে দিচ্ছি।

আঞ্চলিক নিরাপত্তাহীনতায় ভূমিকা রেখে চলা দরিদ্র দেশ মালিকে পতনের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে প্রতিবেশী দেশ ও পশ্চিমা শক্তিগুলো। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব তাদের উদ্যোগকে জটিল করে তুলেছে।

মালিতে থাকা জাতিসংঘ মিশন দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের নেতাদের অবিলম্বে শর্তহীন মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, যারা এই নেতাদের আটক করে রেখেছে নিজেদের কর্মকা-ের জন্য তাদের জবাব দিতে হবে। পশ্চিম আফ্রিকার শীর্ষ আঞ্চলিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা ইসিওডব্লিউএএস-র একটি প্রতিনিধি দল বামাকো সফরে যাবেন।

তারা এই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার বিষয়টি সামধান করতে সহায়তা করবেন বলে ইসিওডব্লিউএএস, জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়ন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে। যাদের আটক করে রাখা হয়েছে এক বিবৃতিতে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদিকে, মালিতে সামরিক বাহিনীর হাতে আটক হওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট বাহ নদা ও প্রধানমন্ত্রী মক্টর ওয়ানকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এক টুইট বার্তায় সংস্থাটির পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে সামরিক অভ্যুত্থান চালায় সামরিক বাহিনী।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদলের পরই ক্ষমতা দখল করে নেয় সেনাবাহিনী। ক্ষমতা দখলের পর তারা দেশটির প্রেসিডেন্ট বাহ নদা, প্রধানমন্ত্রী মক্টর ওয়ান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোলাইমান ডোকুরেকে আটক করে।

এর মধ্যে গত সোমবার ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদল। এ সময় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন দুজন সেনা কর্মকর্তা। এতে ক্ষুব্ধ হয় দেশটির সেনাবাহিনী। পরে তারা অভ্যুত্থান চালিয়ে আটক করে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাহ নদা, প্রধানমন্ত্রী মক্টর ওয়ান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোলাইমান ডোকুরেকে।

বুধবার, ২৬ মে ২০২১ , ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৩ শাওয়াল ১৪৪২

সামরিক অভ্যুত্থান

মালির প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রী আটক

মুক্তির আহ্বান জাতিসংঘের

image

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে সামরিক অভ্যুত্থান চালানো হয়েছে। দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদলের পর ওইদিনই ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। রয়টার্স

ক্ষমতা দখলের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট বাহ নদা, প্রধানমন্ত্রী মক্টর ওয়ান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোলাইমান ডোকুরেকে আটক করেছে তারা। তাদেরকে আটক করে রাজধানী বামাকো কাছেই একটি সামরিক ঘাঁটিতে নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে মালিতে মাত্র ৯ মাসের মাথায় দ্বিতীয় দফায় এমন ঘটনা ঘটল।

দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় মরুভূমির বিশাল এলাকা আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে সম্পর্কিত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো দখলে থাকার মধ্যে রাজধানীতে পরপর এসব ঘটনায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে চলা অস্থিরতা আরও ডালপালা মেলতে পারে।

গত আগস্টে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে বেসামরিক শাসন ফেরানোর লক্ষ্যে এনদাও ও উয়ানকে ১৮ মাসের অন্তর্র্বতী সরকারের দায়িত্ব দেয় সামরিক বাহিনী। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে দুই সেনা কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেয়ার পর ফের সংকটের সূচনা হয়।

এ বিষয়ে মালির এক সাবেক সরকারি আমলা বলেন, অভ্যুত্থানের স্তম্ভদের পদচ্যুত করা বড় ধরনের ভুল ছিল। সম্ভবত তাদের তাদের নিজ জায়গায় ফেরানোর লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল।

সামরিক বাহিনীর মূল উদ্দেশ্য তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের ওই প্রধানদের গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তা কাতি থেকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তারা যা করেছে তা ভালো করেনি। সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, আমরা তাদের তা জানিয়ে দিচ্ছি।

আঞ্চলিক নিরাপত্তাহীনতায় ভূমিকা রেখে চলা দরিদ্র দেশ মালিকে পতনের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে প্রতিবেশী দেশ ও পশ্চিমা শক্তিগুলো। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব তাদের উদ্যোগকে জটিল করে তুলেছে।

মালিতে থাকা জাতিসংঘ মিশন দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের নেতাদের অবিলম্বে শর্তহীন মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, যারা এই নেতাদের আটক করে রেখেছে নিজেদের কর্মকা-ের জন্য তাদের জবাব দিতে হবে। পশ্চিম আফ্রিকার শীর্ষ আঞ্চলিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা ইসিওডব্লিউএএস-র একটি প্রতিনিধি দল বামাকো সফরে যাবেন।

তারা এই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার বিষয়টি সামধান করতে সহায়তা করবেন বলে ইসিওডব্লিউএএস, জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়ন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে। যাদের আটক করে রাখা হয়েছে এক বিবৃতিতে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদিকে, মালিতে সামরিক বাহিনীর হাতে আটক হওয়া দেশটির প্রেসিডেন্ট বাহ নদা ও প্রধানমন্ত্রী মক্টর ওয়ানকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। এক টুইট বার্তায় সংস্থাটির পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে সামরিক অভ্যুত্থান চালায় সামরিক বাহিনী।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদলের পরই ক্ষমতা দখল করে নেয় সেনাবাহিনী। ক্ষমতা দখলের পর তারা দেশটির প্রেসিডেন্ট বাহ নদা, প্রধানমন্ত্রী মক্টর ওয়ান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোলাইমান ডোকুরেকে আটক করে।

এর মধ্যে গত সোমবার ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদল। এ সময় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েন দুজন সেনা কর্মকর্তা। এতে ক্ষুব্ধ হয় দেশটির সেনাবাহিনী। পরে তারা অভ্যুত্থান চালিয়ে আটক করে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাহ নদা, প্রধানমন্ত্রী মক্টর ওয়ান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোলাইমান ডোকুরেকে।