চলছে ৭৪তম কান চলচ্চিত্র উৎসব। গতবার করোনার জেরে এই সিনে উৎসব পিছু হটলেও, এবার তার প্রত্যাবর্তন দাপটের সঙ্গেই। ৬ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব চলবে ১৭ জুলাই পর্যন্ত। উৎসবের প্রথম দু’দিনেই কানের সবরকম উপাদান খানিক প্রত্যক্ষ করে ফেলেছেন বিনোদনপ্রেমীরা। উৎসবে করোনাজনিত বিধিনিষেধ রয়েছে। প্রোটোকল এবং রেড কার্পেটে মাস্ক না পরার অনুমতি থাকলেও, বাকি সর্বত্রই তা পরতে হবে। হ্যান্ডশেক, জড়িয়ে ধরা এবং চুমু এগুলো বিধিনিষেধের বেড়াজালে ফরাসিদের অভ্যর্থনার প্রিয় অনুষঙ্গগুলো। তবে নিয়ম ভাঙার ঘটনাও ঘটছে। যেমন এক ভিডিওতে দেখা গেছে সাদ এর ‘রেহানা মারিয়ম নুর’ চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনীর পর এর কেন্দ্রীয় চরিত্রের অভিনেত্রী বাঁধনকে এক বিদেশি আবেগে জড়িয়ে ধরেন।

করোনা বা বিধিনিষেধ ম্লান হয়ে গেল, যখন কানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জুরি প্রধান স্পাইক লি, জোডি ফস্টার, কোরিয়ান পরিচালক বং জুন-হো, স্প্যানিশ পরিচালক পেদ্রো আলমোদোভার একসঙ্গে এক মঞ্চে হাজির হলেন। বিশ্বসিনেমা যেন হাত ধরাধরি করে দাঁড়িয়ে। প্রত্যেকে বক্তব্য রাখলেন নিজস্ব ভাষায়। স্পাইক লি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি, যিনি কানের জুরি সদস্যদের প্রধান হলেন। এবারের পাম ডি’ওর পুরস্কার পেলেন জোডি ফস্টার। অভিনেত্রী রেড কার্পেটে হাজির হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী অ্যালেকজ্যান্ড্রা হেডিসনের সঙ্গে। এ বারের উৎসবে উদ্বোধনী ছবি ছিল মারিয়ন কোতিয়া এবং অ্যাডাম ড্রাইভার অভিনীত ছবি ‘অ্যানেট’।

উদ্বোধনী দিনটি বাংলা ও বাংলাদেশের ছবির দর্শকের জন্য গর্বের মুহূর্ত ছিল, আঁ সাতেঁ রিগা বিভাগের অফিশিয়াল সিলেকশনে বাংলাদেশি ছবি ‘রেহানা মারিয়ম নুর’-এর প্রদর্শনী। দেড় ঘণ্টার ছবিটি শেষ হওয়ার পর প্রেক্ষাগৃহজুড়ে ছিল জমাট নীরবতা। তার পরেই করতালিতে ভেসে যায় প্রেক্ষাগৃহ। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ পরিচালিত ছবিটির মুখ্য চরিত্রে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন দর্শকের প্রতিক্রিয়ায় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।

সংখ্যায় বেশি না হলেও ভারতীয় প্রতিনিধিত্ব এবারেও রয়েছে কান চলচ্চিত্র উৎসবে। পায়েল কাপাডিয়ার ‘আ নাইট অব নোয়িং নাথিং’ ছবিটি দেখানো হবে ডিরেক্টর্স ফোর্টনাইট বিভাগে। পাশাপাশি পায়েল ডেবিউ ডিরেক্টর বিভাগে প্রতিযোগিতার জন্যও মনোনীত। রয়েছে রাহুল জৈনের ৭০ মিনিটের তথ্যচিত্র ‘ইনভিজিবল ডেমনস’, যেটি দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে নির্মিত। কলকাতার সুমন সেনের ডেবিউ ছবি ‘একা’ (ইংরেজিতে ‘সোলো’) জায়গা করে নিয়েছে লা ফ্যাব্রিক সিনেমা বিভাগে।