প্রতিপক্ষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে মামলাবাজ নারী কারাগারে

জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে একাধিক মিথ্যা মামলায় প্রতিপক্ষকে হয়রানি করায় আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় এক নারীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত বিবি মরিয়ম (৪৫) বেগমগঞ্জের ১২নং কুতুবপুর ইউনিয়নের আবদুল্লাহপুর গ্রামের মফজল মিয়ার বাড়ির মো. ইউছুফ খোকনের স্ত্রী। গতকাল দুপুর ২টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে বিজ্ঞ আদালতে নেয়া হলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠায়। এর আগে গত ১৮ জুলাই নারী ও শিশু নিযাতন ট্রাইব্যুনাল ১ম আদালত কর্তৃক প্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, বিবি মরিয়ম নিজ বাড়িতে তার স্বামীর ফুফাতো ভাই, ও তাদের ছেলে, মেয়ে ও ছেলের বউদের ওপর দীর্ঘদিন যাবত জায়গা সম্পত্তি সংক্রান্ত ঝামেলার জন্য বিভিন্নভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আসছেন। ২৪ অক্টোবর ২০১৭ইং বেগমগঞ্জ থানায় একটি মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করতে গেলে অফিসার ইনচার্জ তা তদন্ত সাপেক্ষে মামলাটি মিথ্যা প্রতীয়মান হওয়ায় গ্রহণ করেননি। পরবর্তীতে বিবি মরিয়ম তার ছেলেকে দিয়ে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ৩নং আমলি আদালত, নোয়াখালী বরাবরে পিটিশন মামলা দাখিল করেন। ওই মামলায় যাদের আসামি করা হয় তারা সম্পর্কে চাচা, ভাতিজা, ও ভাগিনাসহ মোট ৫ জন। পরবর্তীতে বিজ্ঞ সিনিয়র বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ৩নং আমলি আদালত নোয়াখালী পিটিশন মামলা দাখিল করেন, বিজ্ঞ আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য দিলে পিবিআই তদন্ত রিপোর্টে মামলা মিথ্যা হিসেবে প্রতিবেদন দাখিল করে।

২৭ জুন ২০১৮ইং বিবি মরিয়ম নিজেই বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নিযাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত/৩) এর ১০ ধারায় মামলা করেন। পরবর্তীতে গত ২৩ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিজ্ঞ বিচারক (জেলা জজ) মামলার ফাইনাল রিপোর্ট ও অন্যান্য সার্র্বিক দিক বিবেচনা করে মামলাটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক হিসেবে আসামিদের বেকসুর খালাস প্রদান করেন। পরবর্তীতে সে আবার বাবা, ছেলে, মেয়ে চাচা, চাচিসহ মোট ৯ জনকে আসামি করে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নোয়াখালীতে পিটিশন মামলা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত মিথ্যা হিসেবে খারিজ করেন। সর্বশেষ গত ১ জুলাই বেগমগঞ্জ থানায় বিবি মরিয়মের ছেলে তানভীর আহমেদকে দিয়ে আরেকটি মামলা করান। ওই মামলায় বর্তমানে সবাই জামিনে মুক্ত আছেন। এই বিবি মরিয়মের মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়ে একটি একান্নবর্তী পরিবার দীর্ঘদিন যাবত সামাজিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিবি মরিয়মের দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর মামলাটি বাতিল হওয়ার কারণে ওই ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে ১৭ ধারায় মামলা করলে বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বিবি মরিয়মের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

বেগমগঞ্জ থানার ওসি মুহাম্মদ কামরুজ্জামান শিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানান, বিবি মরিয়ম ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রবিবার, ২৫ জুলাই ২০২১ , ৯ শ্রাবন ১৪২৮ ১৩ জিলহজ ১৪৪২

প্রতিপক্ষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে গিয়ে মামলাবাজ নারী কারাগারে

প্রতিনিধি, নোয়াখালী

জায়গা-সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে একাধিক মিথ্যা মামলায় প্রতিপক্ষকে হয়রানি করায় আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় এক নারীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত বিবি মরিয়ম (৪৫) বেগমগঞ্জের ১২নং কুতুবপুর ইউনিয়নের আবদুল্লাহপুর গ্রামের মফজল মিয়ার বাড়ির মো. ইউছুফ খোকনের স্ত্রী। গতকাল দুপুর ২টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে বিজ্ঞ আদালতে নেয়া হলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠায়। এর আগে গত ১৮ জুলাই নারী ও শিশু নিযাতন ট্রাইব্যুনাল ১ম আদালত কর্তৃক প্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, বিবি মরিয়ম নিজ বাড়িতে তার স্বামীর ফুফাতো ভাই, ও তাদের ছেলে, মেয়ে ও ছেলের বউদের ওপর দীর্ঘদিন যাবত জায়গা সম্পত্তি সংক্রান্ত ঝামেলার জন্য বিভিন্নভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আসছেন। ২৪ অক্টোবর ২০১৭ইং বেগমগঞ্জ থানায় একটি মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা দায়ের করতে গেলে অফিসার ইনচার্জ তা তদন্ত সাপেক্ষে মামলাটি মিথ্যা প্রতীয়মান হওয়ায় গ্রহণ করেননি। পরবর্তীতে বিবি মরিয়ম তার ছেলেকে দিয়ে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ৩নং আমলি আদালত, নোয়াখালী বরাবরে পিটিশন মামলা দাখিল করেন। ওই মামলায় যাদের আসামি করা হয় তারা সম্পর্কে চাচা, ভাতিজা, ও ভাগিনাসহ মোট ৫ জন। পরবর্তীতে বিজ্ঞ সিনিয়র বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ৩নং আমলি আদালত নোয়াখালী পিটিশন মামলা দাখিল করেন, বিজ্ঞ আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের জন্য দিলে পিবিআই তদন্ত রিপোর্টে মামলা মিথ্যা হিসেবে প্রতিবেদন দাখিল করে।

২৭ জুন ২০১৮ইং বিবি মরিয়ম নিজেই বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নিযাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত/৩) এর ১০ ধারায় মামলা করেন। পরবর্তীতে গত ২৩ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিজ্ঞ বিচারক (জেলা জজ) মামলার ফাইনাল রিপোর্ট ও অন্যান্য সার্র্বিক দিক বিবেচনা করে মামলাটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক হিসেবে আসামিদের বেকসুর খালাস প্রদান করেন। পরবর্তীতে সে আবার বাবা, ছেলে, মেয়ে চাচা, চাচিসহ মোট ৯ জনকে আসামি করে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নোয়াখালীতে পিটিশন মামলা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত মিথ্যা হিসেবে খারিজ করেন। সর্বশেষ গত ১ জুলাই বেগমগঞ্জ থানায় বিবি মরিয়মের ছেলে তানভীর আহমেদকে দিয়ে আরেকটি মামলা করান। ওই মামলায় বর্তমানে সবাই জামিনে মুক্ত আছেন। এই বিবি মরিয়মের মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়ে একটি একান্নবর্তী পরিবার দীর্ঘদিন যাবত সামাজিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিবি মরিয়মের দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর মামলাটি বাতিল হওয়ার কারণে ওই ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে ১৭ ধারায় মামলা করলে বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বিবি মরিয়মের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

বেগমগঞ্জ থানার ওসি মুহাম্মদ কামরুজ্জামান শিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানান, বিবি মরিয়ম ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।