ভারতের ‘ওমিক্রন’ ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় বাংলাদেশ

করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন ভ্রমণ নির্দেশিকা ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে ভারত। ভারতের এই ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। এখন থেকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় থাকা যাত্রীদের ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিজ খরচে আরটি-পিসিআর পরীক্ষাসহ অতিরিক্ত ব্যবস্থা অনুসরণ করতে হবে।

বাংলাদেশ ছাড়া তালিকায় যুক্তরাজ্য ও গোটা ইউরোপের পাশাপাশি আরও ১০টি দেশ রয়েছে। এগুলো হলো- দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, বতসোয়ানা, চীন, মরিশাস, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, সিঙ্গাপুর, হংকং ও ইসরায়েল।

ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশোধিত দিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো থেকে ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের আরটি-পিসিআর টেস্টে নেগেটিভ হলে কোয়ারেন্টিনে এবং পজিটিভ হলে কঠোর আইসোলেশনে থাকতে হবে। ভারতে আগমনের ক্ষেত্রে যাত্রীদের অবশ্যই তাদের নিজস্ব খরচে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা দিতে হবে এবং তাদের ভারত ছেড়ে যাওয়া বা অন্য আরেকটি সংযোগকারী ফ্লাইটে ওঠার আগে তাদের টেস্টের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

যদি পরীক্ষায় নেগেটিভ আসে, তাহলে সেই যাত্রীকে ৭ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টিন অনুসরণ করতে হবে এবং ভারতে পৌঁছানোর অষ্টম দিনে আবারও পরীক্ষা করাতে হবে। এছাড়া, টেস্টে নেগেটিভ হলে, সেই যাত্রীদের পরবর্তী ৭ দিনে জন্য স্বাস্থ্যের বিষয়ে নিজস্ব পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। তবে, এই ধরনের যাত্রীরা যদি টেস্টে পজিটিভ হয়, তাহলে সেটা ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট কি না সেটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য জিনোমিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। ভারতের কনসোর্টিয়াম ল্যাবরেটরি নেটওয়ার্কে এবং তাদের আলাদা আইসোলেশন সুবিধায় রাখা হবে। কন্ট্রাক্ট ট্রেসিংসহ তাদের নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ড প্রোটোকল অনুযায়ী চিকিৎসা করানো হবে।

করোনা পজিটিভ যাত্রীদের সংস্পর্শে আসা লোকজনকেও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন অথবা হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। সে সময় রাজ্য সরকারের করোনা প্রোটোকল অনুযায়ী, করোনা পজিটিভ রোগীদের কঠোর কোয়ারেন্টিন বিধি মেনে চলতে হবে।

আগের সব ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় সম্ভাব্য অতি-সংক্রামক ওমিক্রন গত বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়। এরপর অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, বতসোয়ানা, ব্রিটেন, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ইসরায়েল, ইতালি, নেদারল্যান্ডস এবং স্কটল্যান্ডে এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এরপর গত রোববার ভারতের মহারাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত একজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর নতুন ভ্রমণ নির্দেশিকা ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা প্রকাশ করে নয়াদিল্লি। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের খবরে দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্বের অনেক দেশ।

শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের বি.১.১.৫২৯ রূপটিকে ‘উদ্বেগজনক ভেরিয়েন্ট’ হিসাবে আখ্যা দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, ‘এই ভ্যারিয়েন্টের তীব্রতার মাত্রা বোঝার জন্য কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত লাগতে পারে। এক ব্যক্তির দেহ থেকে অন্যের দেহে কোন ভাইরাস যত সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে, সেই ভাইরাস তত বেশি সংক্রামক। করোনাভাইরাসের ডেল্টা এবং অন্য রূপের তুলনায় ওমিক্রন বেশি সংক্রামক কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা এই রূপকে ধরতে সক্ষম বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। কোভিডের বিভিন্ন টিকার উপর এই ভাইরাসের প্রভাব কতটা, তা জানার জন্য কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১ , ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

ভারতের ‘ওমিক্রন’ ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় বাংলাদেশ

সংবাদ ডেস্ক

করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন ভ্রমণ নির্দেশিকা ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে ভারত। ভারতের এই ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। এখন থেকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় থাকা যাত্রীদের ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিজ খরচে আরটি-পিসিআর পরীক্ষাসহ অতিরিক্ত ব্যবস্থা অনুসরণ করতে হবে।

বাংলাদেশ ছাড়া তালিকায় যুক্তরাজ্য ও গোটা ইউরোপের পাশাপাশি আরও ১০টি দেশ রয়েছে। এগুলো হলো- দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, বতসোয়ানা, চীন, মরিশাস, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, সিঙ্গাপুর, হংকং ও ইসরায়েল।

ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশোধিত দিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো থেকে ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের আরটি-পিসিআর টেস্টে নেগেটিভ হলে কোয়ারেন্টিনে এবং পজিটিভ হলে কঠোর আইসোলেশনে থাকতে হবে। ভারতে আগমনের ক্ষেত্রে যাত্রীদের অবশ্যই তাদের নিজস্ব খরচে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা দিতে হবে এবং তাদের ভারত ছেড়ে যাওয়া বা অন্য আরেকটি সংযোগকারী ফ্লাইটে ওঠার আগে তাদের টেস্টের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

যদি পরীক্ষায় নেগেটিভ আসে, তাহলে সেই যাত্রীকে ৭ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টিন অনুসরণ করতে হবে এবং ভারতে পৌঁছানোর অষ্টম দিনে আবারও পরীক্ষা করাতে হবে। এছাড়া, টেস্টে নেগেটিভ হলে, সেই যাত্রীদের পরবর্তী ৭ দিনে জন্য স্বাস্থ্যের বিষয়ে নিজস্ব পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। তবে, এই ধরনের যাত্রীরা যদি টেস্টে পজিটিভ হয়, তাহলে সেটা ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট কি না সেটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য জিনোমিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। ভারতের কনসোর্টিয়াম ল্যাবরেটরি নেটওয়ার্কে এবং তাদের আলাদা আইসোলেশন সুবিধায় রাখা হবে। কন্ট্রাক্ট ট্রেসিংসহ তাদের নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ড প্রোটোকল অনুযায়ী চিকিৎসা করানো হবে।

করোনা পজিটিভ যাত্রীদের সংস্পর্শে আসা লোকজনকেও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন অথবা হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। সে সময় রাজ্য সরকারের করোনা প্রোটোকল অনুযায়ী, করোনা পজিটিভ রোগীদের কঠোর কোয়ারেন্টিন বিধি মেনে চলতে হবে।

আগের সব ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় সম্ভাব্য অতি-সংক্রামক ওমিক্রন গত বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয়। এরপর অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, বতসোয়ানা, ব্রিটেন, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ইসরায়েল, ইতালি, নেদারল্যান্ডস এবং স্কটল্যান্ডে এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এরপর গত রোববার ভারতের মহারাষ্ট্রে দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত একজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর নতুন ভ্রমণ নির্দেশিকা ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকা প্রকাশ করে নয়াদিল্লি। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের খবরে দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্বের অনেক দেশ।

শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের বি.১.১.৫২৯ রূপটিকে ‘উদ্বেগজনক ভেরিয়েন্ট’ হিসাবে আখ্যা দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, ‘এই ভ্যারিয়েন্টের তীব্রতার মাত্রা বোঝার জন্য কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত লাগতে পারে। এক ব্যক্তির দেহ থেকে অন্যের দেহে কোন ভাইরাস যত সহজে ছড়িয়ে পড়তে পারে, সেই ভাইরাস তত বেশি সংক্রামক। করোনাভাইরাসের ডেল্টা এবং অন্য রূপের তুলনায় ওমিক্রন বেশি সংক্রামক কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা এই রূপকে ধরতে সক্ষম বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। কোভিডের বিভিন্ন টিকার উপর এই ভাইরাসের প্রভাব কতটা, তা জানার জন্য কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।