শিশু আদুরী হত্যায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

মাদারীপুরের রাজৈরে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দেয়ায় শিশুকন্যা আদুরী আক্তারকে (৫) হত্যা মামলায় একটি আদালত ৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে বেকসুর খালাসের আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেছেন।

গতকাল সকালে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এই আদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পিরোজপুরের ভৈরমপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম মোল্লার ছেলে শফিকুল ইসলাম মোল্লা (৩০), মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার পশ্চিম সরমঙ্গল গ্রামের রফিক হাওলাদারের ছেলে রাজিব হাওলাদার (৩৯), রাজৈর উপজেলার কোদালিয়া বাজিতপুর গ্রামের মুহিত গাছীর ছেলে রিমন হোসাইন ওরফে ইমন গাছি (৩১)। এছাড়া এই মামলার আরেক আসামি বাগেরহাটের লাউপালা গ্রামের শাহজুদ্দিন হাওলাদারের ছেলে সেলিম হাওলাদার (৪০) খালাস পেয়েছেন। আদালতে আসামি রিমন হোসেন ওরফে ইমন গাছির উপস্থিতিতে আদালত এই রায় প্রদান করেন। বাকি দুই আসামি পলাতক রয়েছে।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের সেনদিয়া গ্রামের টুকু সরদারের পাঁচ বছরের শিশুকন্যা আদুরী আক্তারকে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে অপহরণ করে। ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে মুক্তিপণের টাকা পাওয়া এবং না পাওয়ার সন্দেহের মধ্যে নির্মাণাধীন সেনদিয়া জামে মসজিদের ভেতরে আদুরীকে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখে। এই ঘটনায় নিহতের বাবা টুকু সরদার রাজৈর থানায় একটি জিডি করার পরে পুলিশ সন্দেহজনক আসামি শফিকুল ইসলামকে আটক করে। পরে তার দেয়া জবানবন্দি অনুযায়ী ২২ সেপ্টেম্বর সেনদিয়া জামে মসজিদের ভেতরে মাটিতে পুঁতে রাখা আদুরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের বড় ভাই সুমন সরদার বলেন, মামলাটি দীর্ঘদিন রাজৈর থানা পুলিশের অধীনে তদন্তাধীন ছিল। কিন্তু তারা মামলার তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে গড়িমসি করায় মামলাটি সিআইডিতে দেয়া হয়। পরে মাদারীপুর সিআইডির পরিদর্শক মো. সাঈদ হাসান হাফিজ ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

নিহতের বাবা মামলার বাদী টুকু সরদার বলেন, চার্জশিট দাখিলের পর থেকে প্রায় ৩ বছর ধরে মামলাটি আদালতের বিচারাধীন ছিল। আমরা এখন আসামির যে ফাঁসির রায় পেয়েছি, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আমি সরকারের কাছে দাবি করছি, রায়টি যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করে।

এই বিষয়ে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলাটির বিচার কার্যক্রম চলেছে। গতকাল মামলার ৪ জন আসামির ভেতরে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ও এক জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। আমরা দ্রুত রায় কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি করছি।

মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর ২০২১ , ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ২৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

মাদারীপুরের রাজৈরে

শিশু আদুরী হত্যায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

জেলা বার্তা পরিবেশক, মাদারীপুর

মাদারীপুরের রাজৈরে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দেয়ায় শিশুকন্যা আদুরী আক্তারকে (৫) হত্যা মামলায় একটি আদালত ৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে বেকসুর খালাসের আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেছেন।

গতকাল সকালে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এই আদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- পিরোজপুরের ভৈরমপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম মোল্লার ছেলে শফিকুল ইসলাম মোল্লা (৩০), মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার পশ্চিম সরমঙ্গল গ্রামের রফিক হাওলাদারের ছেলে রাজিব হাওলাদার (৩৯), রাজৈর উপজেলার কোদালিয়া বাজিতপুর গ্রামের মুহিত গাছীর ছেলে রিমন হোসাইন ওরফে ইমন গাছি (৩১)। এছাড়া এই মামলার আরেক আসামি বাগেরহাটের লাউপালা গ্রামের শাহজুদ্দিন হাওলাদারের ছেলে সেলিম হাওলাদার (৪০) খালাস পেয়েছেন। আদালতে আসামি রিমন হোসেন ওরফে ইমন গাছির উপস্থিতিতে আদালত এই রায় প্রদান করেন। বাকি দুই আসামি পলাতক রয়েছে।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের সেনদিয়া গ্রামের টুকু সরদারের পাঁচ বছরের শিশুকন্যা আদুরী আক্তারকে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে অপহরণ করে। ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে মুক্তিপণের টাকা পাওয়া এবং না পাওয়ার সন্দেহের মধ্যে নির্মাণাধীন সেনদিয়া জামে মসজিদের ভেতরে আদুরীকে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখে। এই ঘটনায় নিহতের বাবা টুকু সরদার রাজৈর থানায় একটি জিডি করার পরে পুলিশ সন্দেহজনক আসামি শফিকুল ইসলামকে আটক করে। পরে তার দেয়া জবানবন্দি অনুযায়ী ২২ সেপ্টেম্বর সেনদিয়া জামে মসজিদের ভেতরে মাটিতে পুঁতে রাখা আদুরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের বড় ভাই সুমন সরদার বলেন, মামলাটি দীর্ঘদিন রাজৈর থানা পুলিশের অধীনে তদন্তাধীন ছিল। কিন্তু তারা মামলার তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে গড়িমসি করায় মামলাটি সিআইডিতে দেয়া হয়। পরে মাদারীপুর সিআইডির পরিদর্শক মো. সাঈদ হাসান হাফিজ ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

নিহতের বাবা মামলার বাদী টুকু সরদার বলেন, চার্জশিট দাখিলের পর থেকে প্রায় ৩ বছর ধরে মামলাটি আদালতের বিচারাধীন ছিল। আমরা এখন আসামির যে ফাঁসির রায় পেয়েছি, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আমি সরকারের কাছে দাবি করছি, রায়টি যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করে।

এই বিষয়ে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলাটির বিচার কার্যক্রম চলেছে। গতকাল মামলার ৪ জন আসামির ভেতরে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ও এক জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। আমরা দ্রুত রায় কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি করছি।