শ্রীলঙ্কাকে পাত্তাই দিল না নিউজিল্যান্ড

স্কোর :

শ্রীলঙ্কা ১৩৬ (২৯.২ ওভার);

নিউজিল্যান্ড ১৩৭/০(১৬.১ ওভার)।

ফল: নিউজিল্যান্ড ১০ উইকেটে জয়ী

সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করার মাধ্যমে এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে শুভ সূচনা করেছে নিউজিল্যান্ড। শনিবার কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে নিউজিল্যান্ড জয়ের জন্য ১৩৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ১৬.১ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে ১৩৭ রান করে জয়ী হয়। নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটিতে মার্টিন গাপটিল এবং কলিন মুনরো জুটির আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দলের জয় সহজ করে দেয়। সবুজ ঘাসে ঢাকা পিচে পেস বোলাররা দারুণ সাহায্য পেলেও কিউই ব্যাটসমানদের ওপর তা কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। উল্টো বলা চলে লঙ্কান বোলাররা এমন কোন লাইন লেংথে বল রাখতে পারেননি যা খেলতে কিউইদের সমস্যা হতে পারে। যে কারণে তারা চাপমুক্তভাবে খেলে সহজেই জয়ী হয়। নিউজিল্যান্ডের বোলররা সকালে দুরন্ত বোলিং করে দলের জন্য জয়ের যে রাস্তা তৈরি করে দিয়েছিলেন সেটিকে পূর্ণতা দেন ব্যাটসম্যানদ্বয়। মুনরো এবং গাপটিল জুটি পাওয়ার প্লের প্রথম দশ ওভারে ৭৭ রান তুলে দলকে একেবারেই চাপের বাইরে নিয়ে যেতে সক্ষম হন। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদ্বয় ব্যাটিং করেছেন টি-২০ স্টাইলে। ৫০ ওভারে তাদের দরকার ছিল ১৩৭ রান। অর্থাৎ ওভারপ্রতি তিন রানেরও কম। কিন্তু তারা অত দেরি করতে রাজী ছিল না। তারা ব্যাটিং করে রান তুলেছে ঝড়ের গতিতে। যার নিট ফল ৩৩.৫ ওভার বাকি থাকতেই জয়ের লক্ষ্য অর্জন করে ফেলে তারা। জয়ের পথে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দুই ওপেনারই। মুনরো পঞ্চাশ পূর্ণ করেন ৪১ বল খেলে ৫টি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে। গাপটিল ৫০ পূর্ণ করেন ৩৯ বল খেলে ৬টি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে। শেষ পর্যন্ত এ দুজনই ম্যাচ শেষ করেন। গাপটিল ৫১ বলে ৭৩ এবং মুনরো ৪৭ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক ৫ জন বোলার ব্যবহার করেও কোন উইকেটের পতন ঘটাতে পারেননি।

নিউজিল্যান্ড পেস বোলিংয়ে বেশ শক্তিশালী। কয়েকদিন আগে প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতকে পরাজিত করে সেটা বুঝিয়ে দিয়েছিল তারা। তাই বোলারদের ওপর আস্থা রেখে টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত পিচে টসে জিতে বোলিং করতে নেমে সাফল্যের জন্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই লাহিরু থিরিমানেকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ম্যাট হেনরি। যদিও এ উইকেটটি সরাসরি সিদ্ধান্তে পতন হয়নি। রেফারি বোলারের আবেদন সাড়া না দেয়ায় হেনরি রিভিউ করেন এবং তাতেই সফল হন। আউট হওয়ার আগে থিরিমানে প্রথম বলে চার মেরেছিলেন। এরপর কেবলই নিউজিল্যান্ড বোলারদের সাফল্যের গল্প। যদিও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে করুনারত্মে এবং পেরেরা মিলে ৪২ রান তুলে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের চেষ্টায় বাধ সাধেন সেই হেনরি। পেরেরা ২৯ রান করে গ্রান্ডহোমের হাতে ক্যাচ দিলে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে। তিনি ২৪ বল খেলে চারটি চারের সাহায্যে এ রান করেছিলেন। এর পর ছিল কেবল শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়া। করুনারত্মে এক প্রান্ত আগলে রাখলেও অপর প্রান্তে তাকে কেউই যোগ্য সহচার্য দিতে পারেননি। ফলে ৬০ রানেই তাদের ৬ উইকেটের পতন ঘটে। এর পর থিসারা পেরেরা নেমে চেষ্টা করেছিলেন কিউই বোলারদের আক্রমণের জবাব দিতে। তিনি সাময়িকভাবে সফলও হয়েছিলেন। কিন্তু তার চেষ্টা থেমে যায় স্পিনার স্যান্টনারের বলে বোল্টের হাতে ধরা পড়ে। আউট হওয়ার আগে তিনি নিজে করেন ২৩ বলে ২৭ রান। এর পর আর কেউই উল্লেখ করার মতো কোন রান তুলতে পারেনি। ২৯.২ ওভারে ১৩৬ রানে শেষ হয়ে যায় শ্রীলঙ্কান ইনিংস। ইনিংসের উদ্বোধন করতে নেমে করুনারত্মে শেষ পর্যন্ত ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন। বাকিরা চরমভাবে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হতাশ হতে হয় এশিয়ান দেশটিকে। কিউই বোলারদের মধ্যে উইকেট লাভের দিক থেকে সফল দুই পেসার হলেন লগি ফার্গুসন এবং হেনরি। উভয়ই দখল করেন তিনটি করে উইকেট। এছাড়া একটি করে উইকেট দখল করেন গ্রান্ডহোম, স্যান্টনার, নিশাম ও বোল্ট। হেনরি হন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : শ্রীলঙ্কা ২৯.২ ওভারে ১৩৬ (থিরিমান্নে ৪, করুনারতেœ ৫২*, কুসল পেরেরা ২৯, কুসল মেন্ডিস ০, ধনাঞ্জয়া ৪, ম্যাথিউস ০, জীবন মেন্ডিস ১, থিসারা ২৭, উদানা ০, লাকমল ৭, মালিঙ্গা ১; হেনরি ৭-০-২৯-৩, বোল্ট ৯-০-৪৪-১, ফার্গুসন ৬.২-০-২২-৩, ডি গ্র্যান্ডহোম ২-০-১৪-১, নিশাম ৩-০-২১-১, স্যান্টনার ২-০-৫-১)। নিউজিল্যান্ড ১৬.১ ওভারে ১৩৭/০ (গাপটিল ৭৩*, মুনরো ৫৮*; মালিঙ্গা ৫-০-৪৬-০, লকমল ৪-০-২৮-০, উদানা ৩-০-২৪-০, পেরেরা ৩-০-২৫-০, মেন্ডিস ১.১-০-১১-০)। প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ : ম্যাট হেনরি।

image
আরও খবর
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবার সহযোগিতা চাইলেন
বাংলাদেশ মিশন শুরু করতে চায় জয় দিয়ে
ঝুঁকি মোকাবিলায় এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের দাবি টিআইবির
কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি
রেলের সিডিউল বিপর্যয় দুর্ভোগে যাত্রীরা
বইয়ে ‘জয় পাকিস্তান’ লেখার জন্য ক্ষমা চাইলেন এ কে খন্দকার
হত্যার দায় স্বীকার ভাড়াটিয়া ইমাম তানভীরের
সরকারি ভবনে বন্দুকধারীর গুলিতে ১২ জন নিহত
এবার চিত্র উল্টো যানজটমুক্ত স্বস্তিতে যাচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ
বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করবে মালয়েশিয়া
ইয়াবা ডনদের রাজপ্রাসাদ ক্রোক
বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিবাদীরা গণতন্ত্র নস্যাতের চেষ্টা করছে

রবিবার, ০২ জুন ২০১৯ , ১৯ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২৭ রমজান ১৪৪০

শ্রীলঙ্কাকে পাত্তাই দিল না নিউজিল্যান্ড

সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক

image

স্কোর :

শ্রীলঙ্কা ১৩৬ (২৯.২ ওভার);

নিউজিল্যান্ড ১৩৭/০(১৬.১ ওভার)।

ফল: নিউজিল্যান্ড ১০ উইকেটে জয়ী

সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করার মাধ্যমে এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে শুভ সূচনা করেছে নিউজিল্যান্ড। শনিবার কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে নিউজিল্যান্ড জয়ের জন্য ১৩৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ১৬.১ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে ১৩৭ রান করে জয়ী হয়। নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটিতে মার্টিন গাপটিল এবং কলিন মুনরো জুটির আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দলের জয় সহজ করে দেয়। সবুজ ঘাসে ঢাকা পিচে পেস বোলাররা দারুণ সাহায্য পেলেও কিউই ব্যাটসমানদের ওপর তা কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। উল্টো বলা চলে লঙ্কান বোলাররা এমন কোন লাইন লেংথে বল রাখতে পারেননি যা খেলতে কিউইদের সমস্যা হতে পারে। যে কারণে তারা চাপমুক্তভাবে খেলে সহজেই জয়ী হয়। নিউজিল্যান্ডের বোলররা সকালে দুরন্ত বোলিং করে দলের জন্য জয়ের যে রাস্তা তৈরি করে দিয়েছিলেন সেটিকে পূর্ণতা দেন ব্যাটসম্যানদ্বয়। মুনরো এবং গাপটিল জুটি পাওয়ার প্লের প্রথম দশ ওভারে ৭৭ রান তুলে দলকে একেবারেই চাপের বাইরে নিয়ে যেতে সক্ষম হন। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদ্বয় ব্যাটিং করেছেন টি-২০ স্টাইলে। ৫০ ওভারে তাদের দরকার ছিল ১৩৭ রান। অর্থাৎ ওভারপ্রতি তিন রানেরও কম। কিন্তু তারা অত দেরি করতে রাজী ছিল না। তারা ব্যাটিং করে রান তুলেছে ঝড়ের গতিতে। যার নিট ফল ৩৩.৫ ওভার বাকি থাকতেই জয়ের লক্ষ্য অর্জন করে ফেলে তারা। জয়ের পথে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন দুই ওপেনারই। মুনরো পঞ্চাশ পূর্ণ করেন ৪১ বল খেলে ৫টি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে। গাপটিল ৫০ পূর্ণ করেন ৩৯ বল খেলে ৬টি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে। শেষ পর্যন্ত এ দুজনই ম্যাচ শেষ করেন। গাপটিল ৫১ বলে ৭৩ এবং মুনরো ৪৭ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক ৫ জন বোলার ব্যবহার করেও কোন উইকেটের পতন ঘটাতে পারেননি।

নিউজিল্যান্ড পেস বোলিংয়ে বেশ শক্তিশালী। কয়েকদিন আগে প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতকে পরাজিত করে সেটা বুঝিয়ে দিয়েছিল তারা। তাই বোলারদের ওপর আস্থা রেখে টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত পিচে টসে জিতে বোলিং করতে নেমে সাফল্যের জন্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই লাহিরু থিরিমানেকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন ম্যাট হেনরি। যদিও এ উইকেটটি সরাসরি সিদ্ধান্তে পতন হয়নি। রেফারি বোলারের আবেদন সাড়া না দেয়ায় হেনরি রিভিউ করেন এবং তাতেই সফল হন। আউট হওয়ার আগে থিরিমানে প্রথম বলে চার মেরেছিলেন। এরপর কেবলই নিউজিল্যান্ড বোলারদের সাফল্যের গল্প। যদিও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে করুনারত্মে এবং পেরেরা মিলে ৪২ রান তুলে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের চেষ্টায় বাধ সাধেন সেই হেনরি। পেরেরা ২৯ রান করে গ্রান্ডহোমের হাতে ক্যাচ দিলে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে। তিনি ২৪ বল খেলে চারটি চারের সাহায্যে এ রান করেছিলেন। এর পর ছিল কেবল শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়া। করুনারত্মে এক প্রান্ত আগলে রাখলেও অপর প্রান্তে তাকে কেউই যোগ্য সহচার্য দিতে পারেননি। ফলে ৬০ রানেই তাদের ৬ উইকেটের পতন ঘটে। এর পর থিসারা পেরেরা নেমে চেষ্টা করেছিলেন কিউই বোলারদের আক্রমণের জবাব দিতে। তিনি সাময়িকভাবে সফলও হয়েছিলেন। কিন্তু তার চেষ্টা থেমে যায় স্পিনার স্যান্টনারের বলে বোল্টের হাতে ধরা পড়ে। আউট হওয়ার আগে তিনি নিজে করেন ২৩ বলে ২৭ রান। এর পর আর কেউই উল্লেখ করার মতো কোন রান তুলতে পারেনি। ২৯.২ ওভারে ১৩৬ রানে শেষ হয়ে যায় শ্রীলঙ্কান ইনিংস। ইনিংসের উদ্বোধন করতে নেমে করুনারত্মে শেষ পর্যন্ত ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন। বাকিরা চরমভাবে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হতাশ হতে হয় এশিয়ান দেশটিকে। কিউই বোলারদের মধ্যে উইকেট লাভের দিক থেকে সফল দুই পেসার হলেন লগি ফার্গুসন এবং হেনরি। উভয়ই দখল করেন তিনটি করে উইকেট। এছাড়া একটি করে উইকেট দখল করেন গ্রান্ডহোম, স্যান্টনার, নিশাম ও বোল্ট। হেনরি হন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : শ্রীলঙ্কা ২৯.২ ওভারে ১৩৬ (থিরিমান্নে ৪, করুনারতেœ ৫২*, কুসল পেরেরা ২৯, কুসল মেন্ডিস ০, ধনাঞ্জয়া ৪, ম্যাথিউস ০, জীবন মেন্ডিস ১, থিসারা ২৭, উদানা ০, লাকমল ৭, মালিঙ্গা ১; হেনরি ৭-০-২৯-৩, বোল্ট ৯-০-৪৪-১, ফার্গুসন ৬.২-০-২২-৩, ডি গ্র্যান্ডহোম ২-০-১৪-১, নিশাম ৩-০-২১-১, স্যান্টনার ২-০-৫-১)। নিউজিল্যান্ড ১৬.১ ওভারে ১৩৭/০ (গাপটিল ৭৩*, মুনরো ৫৮*; মালিঙ্গা ৫-০-৪৬-০, লকমল ৪-০-২৮-০, উদানা ৩-০-২৪-০, পেরেরা ৩-০-২৫-০, মেন্ডিস ১.১-০-১১-০)। প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ : ম্যাট হেনরি।