এবার চিত্র উল্টো যানজটমুক্ত স্বস্তিতে যাচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ

দেশের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে উত্তরাঞ্চলের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ মাধ্যম এই মহাসড়কটি। প্রতিবছর ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষ আর যানবাহনের ভিড়ে এই মহাসড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। ফলে ভোগান্তিতে পরে গাড়ির চালক আর যাত্রীরা। কিন্তু এ বছর চিত্র পুরোটাই উল্টো। যানজটমুক্ত পরিবেশে বাড়ি ফিরছে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ।

জানা যায়, ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে শনিবার ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের অংশে যানজট না থাকায় স্বস্তিতে ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ। ব্যস্ততম এই মহাসড়কে ভোগান্তি ছাড়াই ঈদে ঘরমুখো মানুষ যাতায়াত করতে পারছেন। এই মহাসড়কে টাঙ্গাইলের অংশে ৬৫ কিলোমিটার যানজট নিরসনে পুলিশের সাড়ে ৭শ সদস্য কাজ করছেন। মাঝে-মধ্যেই গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, এতে চাপ সৃষ্টি হলেও কিছুক্ষণ পরেই মহাসড়ক ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ বলছে, শুক্রবারের চেয়ে শনিবার মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু কোথায় কোন যানজটের সৃষ্টি হয়নি। মহাসড়কে অনেক সময় ফাঁকা অবস্থায় থাকছে। মহাসড়কে যানজট নিরসনে জেলা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছেন। জানা যায়, ঈদযাত্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা ছিল। কিন্তু পুলিশের ব্যাপক তৎপরতার কারণে মহাসড়কে এখন পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়নি। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রায় ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। তাই এই মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকে বেশি। প্রতিদিন এই মহাসড়কে গড়ে প্রায় ৭-৮ হাজার যানবাহন চলাচল করে। আর ঈদের সময় ঘরমুখো যাত্রীদের চাপে যানবাহনের সেই সংখ্যা ৫ থেকে ৬ গুণ বৃদ্ধি পায়। মহাসড়কের বিভিন্ন পরিবহনের চালক ও শ্রমিকরা বলেন, মহাসড়কে এখনও যানজটের সৃষ্টি হয়নি। তবে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে চাপ সৃষ্টি হলেও কিছুক্ষণ পরেই মহাসড়ক আবার ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। তবে গার্মেন্স ছুটির কারণে আগামী ৩ জুন থেকে মহাসড়কে গাড়ির সংখ্যা প্রচুর বৃদ্ধি পাবে। তখন এই মহাসড়কে কিছুটা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হতে পারে। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চারলেন থেকে টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার অংশ দুইলেনে গাড়ি চলাচল করে। এর ফলে মহাসড়কে চারলেন থেকে দুই লেনে গাড়ি চলায় এই সড়কে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে তেমন কোন যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে না। গত বছর ঈদের সময় মহাসড়ক ফাঁকা পেয়েছি। এ বছরও ফাঁকাই বাড়ি যাচ্ছি।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদুর রহমান মুনির বলেন, ঈদযাত্রায় এবার বঙ্গবন্ধু সেতুতে একটি বুথ বেশি করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই মহাসড়ক দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ২৫ হাজার ১৮৬টি যানবাহন চলাচল করেছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে উত্তরবঙ্গের দিকে যায় ১৩ হাজার ৮৪০টি ও উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকা দিকে যায় ১১ হাজার ৩৪৬টি যানবাহন। যা শুক্রবারের চেয়ে ৬ হাজার বেশি যানবাহন পারাপার হয়েছে। যদি সিরাজগঞ্জের অংশে কোন সমস্যা এবং মহাসড়কে বড় কোন ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে আশা করছি তাহলে নির্বিঘ্নেঈদে ঘরমুখো মানুষ বাড়ি যেতে পারবে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আহাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ঈদযাত্রায় এই মহাসড়কে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে। মহাসড়কে সাড়ে ৭শ পুলিশ কাজ করছেন। যানজট নিরসনে ৫টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। এছাড়া হুন্ডা মোবাইল ৩৫টি, ২টি ওয়াচ টাওয়ার, কন্টলরুম, বাঁশকল এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। অপরদিকে পুলিশ ৩ শিপ্টে ২৪ ঘণ্টাই কাজ করছে। আশা করছি অন্যান্য সময়ের তুলনায় এবার ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে।

রবিবার, ০২ জুন ২০১৯ , ১৯ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ২৭ রমজান ১৪৪০

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু মহাসড়ক

এবার চিত্র উল্টো যানজটমুক্ত স্বস্তিতে যাচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ

জেলা বার্তা পরিবেশক, টাঙ্গাইল

দেশের অন্যতম ব্যস্ত মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে উত্তরাঞ্চলের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ মাধ্যম এই মহাসড়কটি। প্রতিবছর ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষ আর যানবাহনের ভিড়ে এই মহাসড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। ফলে ভোগান্তিতে পরে গাড়ির চালক আর যাত্রীরা। কিন্তু এ বছর চিত্র পুরোটাই উল্টো। যানজটমুক্ত পরিবেশে বাড়ি ফিরছে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ।

জানা যায়, ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে শনিবার ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের অংশে যানজট না থাকায় স্বস্তিতে ফিরছেন ঘরমুখো মানুষ। ব্যস্ততম এই মহাসড়কে ভোগান্তি ছাড়াই ঈদে ঘরমুখো মানুষ যাতায়াত করতে পারছেন। এই মহাসড়কে টাঙ্গাইলের অংশে ৬৫ কিলোমিটার যানজট নিরসনে পুলিশের সাড়ে ৭শ সদস্য কাজ করছেন। মাঝে-মধ্যেই গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, এতে চাপ সৃষ্টি হলেও কিছুক্ষণ পরেই মহাসড়ক ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ বলছে, শুক্রবারের চেয়ে শনিবার মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু কোথায় কোন যানজটের সৃষ্টি হয়নি। মহাসড়কে অনেক সময় ফাঁকা অবস্থায় থাকছে। মহাসড়কে যানজট নিরসনে জেলা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছেন। জানা যায়, ঈদযাত্রায় ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা ছিল। কিন্তু পুলিশের ব্যাপক তৎপরতার কারণে মহাসড়কে এখন পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়নি। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রায় ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। তাই এই মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকে বেশি। প্রতিদিন এই মহাসড়কে গড়ে প্রায় ৭-৮ হাজার যানবাহন চলাচল করে। আর ঈদের সময় ঘরমুখো যাত্রীদের চাপে যানবাহনের সেই সংখ্যা ৫ থেকে ৬ গুণ বৃদ্ধি পায়। মহাসড়কের বিভিন্ন পরিবহনের চালক ও শ্রমিকরা বলেন, মহাসড়কে এখনও যানজটের সৃষ্টি হয়নি। তবে গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে চাপ সৃষ্টি হলেও কিছুক্ষণ পরেই মহাসড়ক আবার ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। তবে গার্মেন্স ছুটির কারণে আগামী ৩ জুন থেকে মহাসড়কে গাড়ির সংখ্যা প্রচুর বৃদ্ধি পাবে। তখন এই মহাসড়কে কিছুটা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হতে পারে। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চারলেন থেকে টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার অংশ দুইলেনে গাড়ি চলাচল করে। এর ফলে মহাসড়কে চারলেন থেকে দুই লেনে গাড়ি চলায় এই সড়কে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে তেমন কোন যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে না। গত বছর ঈদের সময় মহাসড়ক ফাঁকা পেয়েছি। এ বছরও ফাঁকাই বাড়ি যাচ্ছি।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদুর রহমান মুনির বলেন, ঈদযাত্রায় এবার বঙ্গবন্ধু সেতুতে একটি বুথ বেশি করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই মহাসড়ক দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ২৫ হাজার ১৮৬টি যানবাহন চলাচল করেছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে উত্তরবঙ্গের দিকে যায় ১৩ হাজার ৮৪০টি ও উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকা দিকে যায় ১১ হাজার ৩৪৬টি যানবাহন। যা শুক্রবারের চেয়ে ৬ হাজার বেশি যানবাহন পারাপার হয়েছে। যদি সিরাজগঞ্জের অংশে কোন সমস্যা এবং মহাসড়কে বড় কোন ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে আশা করছি তাহলে নির্বিঘ্নেঈদে ঘরমুখো মানুষ বাড়ি যেতে পারবে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আহাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ঈদযাত্রায় এই মহাসড়কে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে। মহাসড়কে সাড়ে ৭শ পুলিশ কাজ করছেন। যানজট নিরসনে ৫টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। এছাড়া হুন্ডা মোবাইল ৩৫টি, ২টি ওয়াচ টাওয়ার, কন্টলরুম, বাঁশকল এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। অপরদিকে পুলিশ ৩ শিপ্টে ২৪ ঘণ্টাই কাজ করছে। আশা করছি অন্যান্য সময়ের তুলনায় এবার ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে।