খেলাপি ঋণের অর্ধেকের বেশি রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংকের

আদায় করা যাচ্ছে না ঋণের ৩২ শতাংশই

মার্চ শেষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ছয় ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৮৭৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ৩২ দশমিক ২০ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিকে (ডিসেম্বর শেষে) সোনালী, রূপালী, জনতা, অগ্রণী, বেসিক ও বিডিবিএল এই ছয় ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ ছিল ৪৮ হাজার ৬৯৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, যা ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ২৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। সে হিসেবে তিন মাসে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫ হাজার ১৮৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। অথচ অর্থমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়ে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ আর বাড়তে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন। তারপর ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কম দেখাতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া হলেও থেমে থাকেনি খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি। আগামী প্রান্তিক (জুন) শেষে এ হার আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের মতো বিশেষায়িত (বাংলাদেশ কৃষি ও রাজশাহী কৃষি) দুই ব্যাংকের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণও বেড়েছে। এ সময় ব্যাংক দুটির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এই সময় তাদের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৬০২ কোটি টাকা।

উল্লেখ, ঋণখেলাপিদের নানা সুবিধার ঘোষণার মধ্যেই ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণ বেড়েছে। তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। মোট খেলাপি ঋণ এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যা এ যাবৎকালের রেকর্ড। পরিমাণের পাশাপাশি খেলাপি ঋণের হারও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে (জানুয়ারি-মার্চ) মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিক অর্থাৎ গত বছরের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ।

ব্যাংকাররা বলছেন, সাধারণত বছরের প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ মার্চে খেলাপি ঋণ কিছুটা বাড়ে। এর কারণ ডিসেম্বরে বছর শেষের হিসাব হয় বিধায় ব্যাংকগুলো পুনঃতফসিল বাড়িয়ে দেয়। ঋণ আদায়েও বাড়তি চেষ্টা থাকে। এর বাইরে অন্য কারণও রয়েছে। যেমন- এ বছর ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত ঋণ পরিশোধের বিশেষ সুবিধা নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। এ কারণে মোট খেলাপি ঋণ বেড়েছে। যদিও যেসব সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছে তা এখনও কার্যকর হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, মার্চ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বাড়ার অন্যতম কারণ হলো, ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকগুলো অনেক খেলাপি ঋণ কৌশলে লুকিয়ে রাখে। কারণ ডিসেম্বর মাস ব্যাংকের বার্ষিক হিসাবের সমাপনী প্রান্তিক হওয়ায় খেলাপি ঋণ কম হলে ব্যাংকের লাভ। লুকিয়ে রাখা এসব খেলাপি ঋণ মার্চ প্রান্তিকে হিসাবে ঢুকেছে। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা দুর্বলতার কারণে অনেক বছর ধরেই খেলাপি ঋণ বাড়ছে। এটা কমানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণকে খেলাপি হিসেবে শ্রেণীকৃত করার সময়সীমা বাড়িয়েছে। যদিও নিয়ম শিথিলের এই প্রভাব মার্চ প্রান্তিকে পড়েনি। আগামী জুন প্রান্তিকে পড়বে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক যা করেছে তা একটা ভুল পদ্ধতি। এতে প্রকৃত অর্থে খেলাপি ঋণ কমবে না বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। তিন মাসের ব্যবধানে বেসরকারি ৪০ ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ১১ হাজার ৮১০ কোটি টাকা বেড়েছে। মার্চ শেষে বেসরকারি ব্যাংকে মোট খেলাপি ঋণ ৪৯ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা, যা এসব ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৮ হাজার ১৩৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, যা ওই সময়ে তাদের বিতরণ করা ঋণের ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

মার্চ শেষে বিদেশি ৯ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৫৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ৬ দশমিক ২০ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে এসব ব্যাংকে মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর দুই বিশেষায়িত ব্যাংকের (কৃষি ও রাকাব) খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্যাংক দুটির বিতরণ করা ঋণের ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ খেলাপি।

ব্যাংক খাতে উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ নিয়ে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা মহলে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই খেলাপি ঋণ কমানোর বিষয়ে ব্যাপক সরব। খেলাপি ঋণ কমাতে এরই মধ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত ২১ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিং বিষয়ে নতুন নীতিমালা জারি করে। এতে খেলাপি হওয়ার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ১৬ মে তারিখে ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন ঋণ পরিশোধ সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা জারি করে। এর মাধ্যমে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছরে (এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ) পরিশোধের সুবিধা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরভিত্তিক মন্দমানের শ্রেণীকৃত ঋণের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেয়া যাবে। তবে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন গত ২১ মে ওই সার্কুলারের কার্যকারিতার ওপর আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা জারি করে।

আরও খবর
সামষ্টিক অর্থনীতি চাপের মুখে
বাজেট পেশ কাল : পাস ৩০ জুন
আরও আড়াই লাখ টন ধান কিনবে সরকার
ব্রিস্টলে বৃষ্টিতে ভাসল বাংলাদেশের আশা
ম্যাচ না হওয়ায় খুবই হতাশ বাংলাদেশ কোচ
গ্রামীণ জীবনে শহরের সুবিধা দিতে থাকবে দিকনির্দেশনা
তদন্ত কর্মকর্তার দুর্নীতির দায় এড়াতে পারে না দুদক
ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুদের পুনর্বাসন নীতিমালা তৈরিতে রুল
প্রাণ ও ড্যানিশসহ ১৮ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল
সব রেকর্ড আছে, কমিশন ডাকলে পেশ করব -ডিআইজি মিজান
স্কুলছাত্রী জান্নাতিকে পুড়িয়ে হত্যায় থানায় মামলা হয়নি
ওসি মোয়াজ্জেম ঢাকায় লুকিয়ে আছে
বাড়তি ভাড়াসহ নানা দুর্ভোগ নিয়েই ঢাকা ফিরছে মানুষ

বুধবার, ১২ জুন ২০১৯ , ২৯ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ৮ শাওয়াল ১৪৪০

খেলাপি ঋণের অর্ধেকের বেশি রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংকের

আদায় করা যাচ্ছে না ঋণের ৩২ শতাংশই

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

মার্চ শেষে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ছয় ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৮৭৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ৩২ দশমিক ২০ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিকে (ডিসেম্বর শেষে) সোনালী, রূপালী, জনতা, অগ্রণী, বেসিক ও বিডিবিএল এই ছয় ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ ছিল ৪৮ হাজার ৬৯৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, যা ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ২৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। সে হিসেবে তিন মাসে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫ হাজার ১৮৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। অথচ অর্থমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়ে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ আর বাড়তে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন। তারপর ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কম দেখাতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া হলেও থেমে থাকেনি খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি। আগামী প্রান্তিক (জুন) শেষে এ হার আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের মতো বিশেষায়িত (বাংলাদেশ কৃষি ও রাজশাহী কৃষি) দুই ব্যাংকের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণও বেড়েছে। এ সময় ব্যাংক দুটির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এই সময় তাদের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৬০২ কোটি টাকা।

উল্লেখ, ঋণখেলাপিদের নানা সুবিধার ঘোষণার মধ্যেই ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণ বেড়েছে। তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। মোট খেলাপি ঋণ এক লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যা এ যাবৎকালের রেকর্ড। পরিমাণের পাশাপাশি খেলাপি ঋণের হারও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে (জানুয়ারি-মার্চ) মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এর আগের প্রান্তিক অর্থাৎ গত বছরের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৩ হাজার ৯১১ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা ওই সময়ের বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ।

ব্যাংকাররা বলছেন, সাধারণত বছরের প্রথম প্রান্তিক অর্থাৎ মার্চে খেলাপি ঋণ কিছুটা বাড়ে। এর কারণ ডিসেম্বরে বছর শেষের হিসাব হয় বিধায় ব্যাংকগুলো পুনঃতফসিল বাড়িয়ে দেয়। ঋণ আদায়েও বাড়তি চেষ্টা থাকে। এর বাইরে অন্য কারণও রয়েছে। যেমন- এ বছর ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘোষিত ঋণ পরিশোধের বিশেষ সুবিধা নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। এ কারণে মোট খেলাপি ঋণ বেড়েছে। যদিও যেসব সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছে তা এখনও কার্যকর হয়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, মার্চ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বাড়ার অন্যতম কারণ হলো, ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকগুলো অনেক খেলাপি ঋণ কৌশলে লুকিয়ে রাখে। কারণ ডিসেম্বর মাস ব্যাংকের বার্ষিক হিসাবের সমাপনী প্রান্তিক হওয়ায় খেলাপি ঋণ কম হলে ব্যাংকের লাভ। লুকিয়ে রাখা এসব খেলাপি ঋণ মার্চ প্রান্তিকে হিসাবে ঢুকেছে। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা দুর্বলতার কারণে অনেক বছর ধরেই খেলাপি ঋণ বাড়ছে। এটা কমানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণকে খেলাপি হিসেবে শ্রেণীকৃত করার সময়সীমা বাড়িয়েছে। যদিও নিয়ম শিথিলের এই প্রভাব মার্চ প্রান্তিকে পড়েনি। আগামী জুন প্রান্তিকে পড়বে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক যা করেছে তা একটা ভুল পদ্ধতি। এতে প্রকৃত অর্থে খেলাপি ঋণ কমবে না বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। তিন মাসের ব্যবধানে বেসরকারি ৪০ ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ১১ হাজার ৮১০ কোটি টাকা বেড়েছে। মার্চ শেষে বেসরকারি ব্যাংকে মোট খেলাপি ঋণ ৪৯ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা, যা এসব ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের ৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৮ হাজার ১৩৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, যা ওই সময়ে তাদের বিতরণ করা ঋণের ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ।

মার্চ শেষে বিদেশি ৯ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৫৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ৬ দশমিক ২০ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে এসব ব্যাংকে মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর দুই বিশেষায়িত ব্যাংকের (কৃষি ও রাকাব) খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা অপরিবর্তিত রয়েছে। ব্যাংক দুটির বিতরণ করা ঋণের ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ খেলাপি।

ব্যাংক খাতে উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ নিয়ে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা মহলে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে। আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই খেলাপি ঋণ কমানোর বিষয়ে ব্যাপক সরব। খেলাপি ঋণ কমাতে এরই মধ্যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত ২১ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিং বিষয়ে নতুন নীতিমালা জারি করে। এতে খেলাপি হওয়ার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত ১৬ মে তারিখে ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন ঋণ পরিশোধ সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা জারি করে। এর মাধ্যমে মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছরে (এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ) পরিশোধের সুবিধা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরভিত্তিক মন্দমানের শ্রেণীকৃত ঋণের ক্ষেত্রে এই সুবিধা দেয়া যাবে। তবে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন গত ২১ মে ওই সার্কুলারের কার্যকারিতার ওপর আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত স্থিতাবস্থা জারি করে।