ব্যবস্থা নিতে ৫ জেলা প্রশাসককে দুদকের চিঠি

বিআরটিএ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস এবং জেলা কারাগারসহ সরকারি সেবাদানকারী বিভিন্ন অফিসে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দেশের ৫ জেলা প্রশাসককে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। গতকাল দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে এ চিঠি পাঠানো হয়।

এদিকে এসএ জরিপের ম্যাপ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এবং জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম সংশোধনীতে হয়রানির অভিযোগ পেয়ে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুদক।

দুদক সূত্র জানায়, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে আসা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও জেলা কারাগারসহ সরকারি সেবাদানকারী অফিসগুলোর বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণপূর্বক কমিশনকে অবহিত করার জন্য রাঙামাটি, লক্ষ্মীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও নরসিংদী জেলা প্রশাসককে পত্র প্রদান করেছে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট। এসব জেলা উল্লিখিত অফিসসহ সরকারি অফিসগুলোয় সাধারণ মানুষ সেবা নিতে এসে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়। এসব জেলায় সরকারি অফিসগুলোয় ঘুষ লেনদেন ওপেন সিক্রেট। ঘুষ ছাড়া মানুষ কোন সেবা পায় না। দীর্ঘদিন ধরেই ঘুষ লেনদেন হয়ে আসছে। ভুক্তভোগীরা এসব জেলায় বিআরটিএ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস এবং কারাগারে সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হচ্ছে বলে দুদকে অভিযোগ করেছেন।

এর আগেও একই ধরনের অভিযোগের ভিত্তিত্বে অনেক জেলা প্রশাসককে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সরকারি অফিসগুলোয় ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকদের বলা হয়েছে। সেখানে কারা কীভাবে ঘুষের সঙ্গে জড়িত, ওই বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে।

দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) অভিযোগ আসে, একজন ভুক্তভোগী এসএমএস জরিপের ম্যাপপ্রাপ্তিতে বেশ কিছুদিন ধরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক অফিস সহকারী অভিযোগকারীর কাছ থেকে ঘুষ দাবি করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট টিম গতকাল অভিযান পরিচালনা করে। দুদক টিমের অভিযানের ফলে জেলা প্রশাসক অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং অভিযুক্ত অফিস সহকারীকে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সচেতন হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন। অন্যথায় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে তিনি দুদক টিমকে নিশ্চিত করেন।

এদিকে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম সংশোধনে হয়রানির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক। সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোর গতকাল এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে দুদক টিম নিশ্চিত হয়, যে অভিযোগকারী দুদক হটলাইনে (১০৬) অভিযোগ করেছেন, তিনি প্রকৃতপক্ষে ভুয়া তথ্য দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রপ্রাপ্তির চেষ্টা করছিলেন। দুদক টিম সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান ও সংশোধনের ক্ষেত্রে সব তথ্য যাচাইপূর্বক সচেতন এবং সতর্ক হওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করে। দুদক টিমের পক্ষে উপস্থিত জনসাধারণকে এরূপ অনিয়ম থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

এদিকে মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক ফিল্ড সুপারভাইজার মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমের কদমতলী থানার ২০০ শিক্ষকের বেতন থেকে জোরপূর্বক প্রতি মাসে জাকাত বা মক্তব ফান্ডের নামে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আত্মসাৎ করেছেন, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে এরূপ অভিযোগ লিপিবদ্ধ হয়।

বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০১৯ , ৩০ জৈষ্ঠ্য ১৪২৫, ৯ শাওয়াল ১৪৪০

সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ও অনিয়ম

ব্যবস্থা নিতে ৫ জেলা প্রশাসককে দুদকের চিঠি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বিআরটিএ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস এবং জেলা কারাগারসহ সরকারি সেবাদানকারী বিভিন্ন অফিসে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দেশের ৫ জেলা প্রশাসককে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। গতকাল দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে এ চিঠি পাঠানো হয়।

এদিকে এসএ জরিপের ম্যাপ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এবং জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম সংশোধনীতে হয়রানির অভিযোগ পেয়ে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুদক।

দুদক সূত্র জানায়, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে আসা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও জেলা কারাগারসহ সরকারি সেবাদানকারী অফিসগুলোর বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণপূর্বক কমিশনকে অবহিত করার জন্য রাঙামাটি, লক্ষ্মীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও নরসিংদী জেলা প্রশাসককে পত্র প্রদান করেছে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট। এসব জেলা উল্লিখিত অফিসসহ সরকারি অফিসগুলোয় সাধারণ মানুষ সেবা নিতে এসে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়। এসব জেলায় সরকারি অফিসগুলোয় ঘুষ লেনদেন ওপেন সিক্রেট। ঘুষ ছাড়া মানুষ কোন সেবা পায় না। দীর্ঘদিন ধরেই ঘুষ লেনদেন হয়ে আসছে। ভুক্তভোগীরা এসব জেলায় বিআরটিএ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস এবং কারাগারে সবচেয়ে বেশি ঘুষ দিতে হচ্ছে বলে দুদকে অভিযোগ করেছেন।

এর আগেও একই ধরনের অভিযোগের ভিত্তিত্বে অনেক জেলা প্রশাসককে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সরকারি অফিসগুলোয় ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকদের বলা হয়েছে। সেখানে কারা কীভাবে ঘুষের সঙ্গে জড়িত, ওই বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে।

দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) অভিযোগ আসে, একজন ভুক্তভোগী এসএমএস জরিপের ম্যাপপ্রাপ্তিতে বেশ কিছুদিন ধরে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এক অফিস সহকারী অভিযোগকারীর কাছ থেকে ঘুষ দাবি করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট টিম গতকাল অভিযান পরিচালনা করে। দুদক টিমের অভিযানের ফলে জেলা প্রশাসক অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং অভিযুক্ত অফিস সহকারীকে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সচেতন হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন। অন্যথায় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মে তিনি দুদক টিমকে নিশ্চিত করেন।

এদিকে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম সংশোধনে হয়রানির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক। সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোর গতকাল এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে দুদক টিম নিশ্চিত হয়, যে অভিযোগকারী দুদক হটলাইনে (১০৬) অভিযোগ করেছেন, তিনি প্রকৃতপক্ষে ভুয়া তথ্য দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রপ্রাপ্তির চেষ্টা করছিলেন। দুদক টিম সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান ও সংশোধনের ক্ষেত্রে সব তথ্য যাচাইপূর্বক সচেতন এবং সতর্ক হওয়ার জন্য পরামর্শ প্রদান করে। দুদক টিমের পক্ষে উপস্থিত জনসাধারণকে এরূপ অনিয়ম থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

এদিকে মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক ফিল্ড সুপারভাইজার মসজিদভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রমের কদমতলী থানার ২০০ শিক্ষকের বেতন থেকে জোরপূর্বক প্রতি মাসে জাকাত বা মক্তব ফান্ডের নামে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত আত্মসাৎ করেছেন, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে এরূপ অভিযোগ লিপিবদ্ধ হয়।