জেএমবি জঙ্গিরা এখন ইন্টারনেটে সক্রিয়

আইজিপি

বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, আমাদের দেশে তৈরি জেএমবির জঙ্গিরা আইএসআইয়ের অনুসারী হতে পারে। আমরা তাদের অনুসরণ করছি। এখন জঙ্গিরা ইন্টারনেটে বেশি সক্রিয়। তারা ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছে। তারা সদস্য রিক্রুট করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে। তবে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নজরদারি করছে। ইতোমধ্যে আমরা অনেক জঙ্গিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এটা গোয়েন্দাদের নিয়মিত নজরদারির ফল। আমরা তাদের যে কোন তৎপরতা নস্যাৎ করে দেব। তিনি গতকাল সকালে রংপুর নগরীর কাছারী বাজার এলাকায় অবস্থিত রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সমন্বিত সিসিটিভি ব্যবস্থা চালু, ওয়েবসাইটের উদ্বোধন ও মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মবণ্টন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, গত বছরের আগস্টে সিরিয়ায় আইএসের সর্বশেষ ঘাঁটির পতন ঘটেছে। এরপরই তারা ঘোষণা করেছিল যে দেশ থেকে জঙ্গিরা এখানে এসেছে, তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত চলে যেতে। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, যারা আমাদের দেশ থেকে সেখানে গিয়েছিল, তারা কেউই ফিরে আসেনিÑ এটা আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি। তিনি বলেন, হলি আর্টিজানে মামলার চার্জশিট দেয়ার পর এখন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে রায় ঘোষণা করা হবে। হলি আর্টিজান ঘটনার পর জঙ্গিদের তৎপরতা দমনে আমরা সম্মিলিতভাবে সবার সহযোগিতা পেয়েছি। স্টকহোল্ডারদের পেয়েছি। সাধারণ মানুষ, মিডিয়া আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সবাইকে পাশে পেয়েছিলাম বলেই দ্রুততম সময়ে জঙ্গি তৎপরতা থামিয়ে দিতে পেরেছি।

আইজিপি বরগুনার রিফাত হত্যার ঘটনার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, পুরো বিষয়টি সামাজিক অবক্ষয়ের ফল। আমাদের সমাজে পারিবারিক যে নিয়ন্ত্রণ ছিল, সেটি এখন নেই।

আইজিপি বলেন, সমাজে এখন যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, তা হচ্ছে অবক্ষয়ের চিত্র। এখন যে ছেলে পাড়া-মহল্লায় বড় হচ্ছেÑ তারা মুরুব্বিদের, এমনকি মা-বাবাকেও মানে না। তারা এটাকে অ্যাডভেঞ্চারের জায়গা মনে করছে। তারা ছোটখাটো গ্রুপ তৈরি করছে। মাস্তান গ্রুপ গড়ে তুলছে। আর এসব গ্রুপের সন্তানদের বাবারাও নিজেদের গর্বিত মনে করছেন। কারণ তাদের সালাম দিচ্ছে এলাকার লোকজন। কিন্তু এটি যে শ্রদ্ধার জন্য নয়, ভয়ে দিচ্ছেÑ তা বাবারা বোঝেন না। এটি সামাজিক অবক্ষয়। এই অবক্ষয়কে সামাজিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে তা মোকাবিলা করতে হবে। তিনি সমাজবিজ্ঞানীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেনÑ কীভাবে এই অবক্ষয় দূর করা যায়, এ জন্য চিন্তাভাবনা করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল আলীম মাহমুদ, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্যসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০১৯ , ১৮ আষাঢ় ১৪২৫, ২৮ শাওয়াল ১৪৪০

জেএমবি জঙ্গিরা এখন ইন্টারনেটে সক্রিয়

আইজিপি

জেলা বার্তা পরিবেশক, রংপুর

বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, আমাদের দেশে তৈরি জেএমবির জঙ্গিরা আইএসআইয়ের অনুসারী হতে পারে। আমরা তাদের অনুসরণ করছি। এখন জঙ্গিরা ইন্টারনেটে বেশি সক্রিয়। তারা ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছে। তারা সদস্য রিক্রুট করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছে। তবে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নজরদারি করছে। ইতোমধ্যে আমরা অনেক জঙ্গিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এটা গোয়েন্দাদের নিয়মিত নজরদারির ফল। আমরা তাদের যে কোন তৎপরতা নস্যাৎ করে দেব। তিনি গতকাল সকালে রংপুর নগরীর কাছারী বাজার এলাকায় অবস্থিত রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সমন্বিত সিসিটিভি ব্যবস্থা চালু, ওয়েবসাইটের উদ্বোধন ও মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মবণ্টন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, গত বছরের আগস্টে সিরিয়ায় আইএসের সর্বশেষ ঘাঁটির পতন ঘটেছে। এরপরই তারা ঘোষণা করেছিল যে দেশ থেকে জঙ্গিরা এখানে এসেছে, তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত চলে যেতে। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, যারা আমাদের দেশ থেকে সেখানে গিয়েছিল, তারা কেউই ফিরে আসেনিÑ এটা আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি। তিনি বলেন, হলি আর্টিজানে মামলার চার্জশিট দেয়ার পর এখন মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে রায় ঘোষণা করা হবে। হলি আর্টিজান ঘটনার পর জঙ্গিদের তৎপরতা দমনে আমরা সম্মিলিতভাবে সবার সহযোগিতা পেয়েছি। স্টকহোল্ডারদের পেয়েছি। সাধারণ মানুষ, মিডিয়া আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সবাইকে পাশে পেয়েছিলাম বলেই দ্রুততম সময়ে জঙ্গি তৎপরতা থামিয়ে দিতে পেরেছি।

আইজিপি বরগুনার রিফাত হত্যার ঘটনার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন, পুরো বিষয়টি সামাজিক অবক্ষয়ের ফল। আমাদের সমাজে পারিবারিক যে নিয়ন্ত্রণ ছিল, সেটি এখন নেই।

আইজিপি বলেন, সমাজে এখন যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, তা হচ্ছে অবক্ষয়ের চিত্র। এখন যে ছেলে পাড়া-মহল্লায় বড় হচ্ছেÑ তারা মুরুব্বিদের, এমনকি মা-বাবাকেও মানে না। তারা এটাকে অ্যাডভেঞ্চারের জায়গা মনে করছে। তারা ছোটখাটো গ্রুপ তৈরি করছে। মাস্তান গ্রুপ গড়ে তুলছে। আর এসব গ্রুপের সন্তানদের বাবারাও নিজেদের গর্বিত মনে করছেন। কারণ তাদের সালাম দিচ্ছে এলাকার লোকজন। কিন্তু এটি যে শ্রদ্ধার জন্য নয়, ভয়ে দিচ্ছেÑ তা বাবারা বোঝেন না। এটি সামাজিক অবক্ষয়। এই অবক্ষয়কে সামাজিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে তা মোকাবিলা করতে হবে। তিনি সমাজবিজ্ঞানীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেনÑ কীভাবে এই অবক্ষয় দূর করা যায়, এ জন্য চিন্তাভাবনা করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল আলীম মাহমুদ, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্যসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা।