বরিশাল ৩০৭ মে. ও. কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের দৃশ্যমান অগ্রগতি

বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলার তালতলি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল নিশানবড়ীয়া ইউনিয়নে নির্মিত হচ্ছে বরিশাল ৩০৭ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। যৌথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ‘পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড’ ও বাংলাদেশের আইসোটেক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আইসোটেক ইলেকট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেড’। সরেজমিন দেখা গেছে, প্রকল্পটির দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের (২০২২ সালের) আগেই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের পাশপাশি মিশ্র জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে বেসরকারিখাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে একাধিক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করলেও যথাসময়ে উৎপাদনে আসার দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানি। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বরিশাল ৩০৭ মে.ও. বিদ্যুৎকেন্দ্র। কোম্পানিটি ২০১৭ সালের এপ্রিলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডেও সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তিবদ্ধ হয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই ভূমি উন্নয়নের কাজ প্রায় শেষপর্যায়ে নিয়ে এসেছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা (৫৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। চুক্তি অনুযায়ী সরকারকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে এই কোম্পানি। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দর ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৭ টাকা (প্রতি টন কয়লার দর ১২০ ডলার হিসাবে)। কয়লার দাম কম থাকলে সেই অনুযায়ী বিদ্যুতের দামও কমে যাবে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট নির্মাণের জন্য জন্য জমির প্রয়োজন হবে প্রায় দেড়শ’ একর। আর দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য মোট আড়াইশ’ একর। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে প্রায় দুইশ’ একর জমি ভরাট শেষ হয়েছে। প্রথম ইউনিটের জমির উন্নয়নকাজ শেষ। এখন সাইট অফিসের কাজ চলছে। আগস্ট থেকে ডরমিটরি নির্মাণসহ অন্যান্য সিভিল ওয়ার্কেও সঙ্গে মূল ‘পাওয়ার প্লান্টের’ কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

আনোয়ার হোসেন বলেন, বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের সময় স্থানীয়দের পুনর্বাসন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তবে এখানে তা হয়নি। তিনি জানান, এই প্রকল্পের জায়গায় ১৩৯টি বাস্তুহারা পরিবার ছিল। তারা অস্থায়ীভাবে এখানে বসবাস করত। কোম্পানির পক্ষ থেকে তাদের জমি কিনে দেয়া হয়েছে।

বড়গুনা জেলার তালতলি উপজেলা একটি সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চল। উপজেলার পশ্চিমে বুড়িশ্বর নদী ও বরগুনা সদর উপজেলা, পূর্বে আন্ধারমানিক নদী ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে টেংরাগিরি বন ও বঙ্গোপসাগর এবং উত্তরে কচুপাত্রা, পচাকোড়ালিয়া নদী ও আমতলী উপজেলা। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যে স্থানে স্থাপিত হচ্ছে এটি নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চল। বিদ্যুৎকেন্দ্রের অদূরে নদী ও সাগরের মোহনা। অঞ্চলটি নদীভাঙন প্রবণ।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নদীভাঙনের মুখে প্রতিরোধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চারদিকে ভারি যন্ত্রপাতি বিরামহীন কাজ করছে। ড্রেজার দিয়ে বালি ভরাটের কাজ প্রায় শেষ। এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি খননকাজ চলছে। ক্রেন দিয়ে ভারি মালামাল ও যন্ত্রপাতি ওঠানামা চলছে। বুলডোজার ও ভেকু দিয়ে চলছে মাটি লেভেলিংয়ের কাজ। রোলার দিয়ে মাটি শক্ত করা হচ্ছে। ভরাটকৃত জমিতে হ্যামার দিয়ে কমপ্যাক্ট নিশ্চিত করার জন্য পানি শুষে নেয়া হচ্ছে। আবার পশ্চিম দিকে পায়রা নদীর কোলঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী শেড। প্রকল্প এলাকা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে বাস্তুহারাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোম্পানির টাকায় জমি কিনে এখন নিজেদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে, এমনটি জানালেন পুনর্বাসিত আইয়ুব আলীসহ আরও কয়েকজন।

আইসোটেক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মঈনুল আলম বলেন, সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী পাওয়ার প্লান্টটির নির্মাণকাজ ৪৫ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ, স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণ প্রত্যক্ষভাবে সহোযেগিতা করে যাচ্ছে। এজন্য আমরা সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের আগেই এই প্রকল্প থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, আমাদের পার্টনার ‘পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড’ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান। তারা ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, কম্বোডিয়াসহ বিশ্বের বেশকিছু দেশে দক্ষতার সঙ্গে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। তারা বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।

কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক আবদুস সবুর জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া এ অঞ্চলের জনগণের সুবিধার্থে প্রকল্প এলাকায় স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হবে। যেহেতু এখানকার পানি লবণাক্ত, তাই স্থানীয়দের জন্য গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে সুপেয় পানি ব্যবস্থা করা হবে।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, সৈকত সৌন্দর্যের বরগুনায় বিশেষ করে প্রত্যন্ত উপজেলা তালতলিতে সম্প্রতি ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। তালতলিতে নির্মিতব্য এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়ক হবে। সরকারও এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতা করছে। এখানে নির্মিতব্য অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শিপব্রেকিং ও শিপ রিসাইক্লিং সেক্টরে এই বিদ্যুৎ ব্যবহার হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাস্তবায়ন হলে স্থানীরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবে ও তাদের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। তিনি বলেন, আমরা পরিবেশও চাই আবার বিদ্যুৎও চাই। পরিবেশের কোন প্রকার ক্ষতি না করে যথাযথ নিয়মে যাতে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ ও পরিচালিত হয় সেদিকে প্রশসানের সজাগ দৃষ্টি থাকবে।

আরও খবর
বাম জোটের হরতাল ঢিলেঢালাভাবে পালিত
হরতালে মরিচা ধরে গেছে
পাঁচ বছরে ২ কোটি নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে
৯ম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড অচিরেই
এবার মগবাজার থেকে বাবুবাজার চালু হচ্ছে চক্রাকার বাস সার্ভিস
১৩ জুলাই প্রতিবাদ দিবস পালনের ঘোষণা ঐক্যন্যাপের
বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ মশকনিধনে কার্যকর ব্যবস্থার নির্দেশ
বিতর্কিত আদেশ সংশোধন করল মন্ত্রণালয়
রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারে বৈঠক
অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের লাঠিচার্জ, গ্রেফতার
ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই
এরশাদ শঙ্কামুক্ত নন
জকসু নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশনে ১১ শিক্ষার্থী
শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন
বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় ৩ কোটি ৩০ লাখ ডলারের প্রকল্প

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০১৯ , ২৪ আষাঢ় ১৪২৫, ৪ জ্বিলকদ ১৪৪০

পাওয়ার চায়না ও আইসোটেকের

বরিশাল ৩০৭ মে. ও. কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের দৃশ্যমান অগ্রগতি

ফয়েজ আহমেদ তুষার, (তালতলি) বরগুনা থেকে

বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলার তালতলি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল নিশানবড়ীয়া ইউনিয়নে নির্মিত হচ্ছে বরিশাল ৩০৭ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। যৌথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ‘পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড’ ও বাংলাদেশের আইসোটেক গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘আইসোটেক ইলেকট্রিফিকেশন কোম্পানি লিমিটেড’। সরেজমিন দেখা গেছে, প্রকল্পটির দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের (২০২২ সালের) আগেই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের পাশপাশি মিশ্র জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে বেসরকারিখাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে একাধিক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করলেও যথাসময়ে উৎপাদনে আসার দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানি। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বরিশাল ৩০৭ মে.ও. বিদ্যুৎকেন্দ্র। কোম্পানিটি ২০১৭ সালের এপ্রিলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডেও সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তিবদ্ধ হয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই ভূমি উন্নয়নের কাজ প্রায় শেষপর্যায়ে নিয়ে এসেছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা (৫৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। চুক্তি অনুযায়ী সরকারকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে এই কোম্পানি। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দর ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৭ টাকা (প্রতি টন কয়লার দর ১২০ ডলার হিসাবে)। কয়লার দাম কম থাকলে সেই অনুযায়ী বিদ্যুতের দামও কমে যাবে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট নির্মাণের জন্য জন্য জমির প্রয়োজন হবে প্রায় দেড়শ’ একর। আর দ্বিতীয় ইউনিটের জন্য মোট আড়াইশ’ একর। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে প্রায় দুইশ’ একর জমি ভরাট শেষ হয়েছে। প্রথম ইউনিটের জমির উন্নয়নকাজ শেষ। এখন সাইট অফিসের কাজ চলছে। আগস্ট থেকে ডরমিটরি নির্মাণসহ অন্যান্য সিভিল ওয়ার্কেও সঙ্গে মূল ‘পাওয়ার প্লান্টের’ কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

আনোয়ার হোসেন বলেন, বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের সময় স্থানীয়দের পুনর্বাসন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তবে এখানে তা হয়নি। তিনি জানান, এই প্রকল্পের জায়গায় ১৩৯টি বাস্তুহারা পরিবার ছিল। তারা অস্থায়ীভাবে এখানে বসবাস করত। কোম্পানির পক্ষ থেকে তাদের জমি কিনে দেয়া হয়েছে।

বড়গুনা জেলার তালতলি উপজেলা একটি সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চল। উপজেলার পশ্চিমে বুড়িশ্বর নদী ও বরগুনা সদর উপজেলা, পূর্বে আন্ধারমানিক নদী ও পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা, দক্ষিণে টেংরাগিরি বন ও বঙ্গোপসাগর এবং উত্তরে কচুপাত্রা, পচাকোড়ালিয়া নদী ও আমতলী উপজেলা। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যে স্থানে স্থাপিত হচ্ছে এটি নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চল। বিদ্যুৎকেন্দ্রের অদূরে নদী ও সাগরের মোহনা। অঞ্চলটি নদীভাঙন প্রবণ।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নদীভাঙনের মুখে প্রতিরোধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চারদিকে ভারি যন্ত্রপাতি বিরামহীন কাজ করছে। ড্রেজার দিয়ে বালি ভরাটের কাজ প্রায় শেষ। এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি খননকাজ চলছে। ক্রেন দিয়ে ভারি মালামাল ও যন্ত্রপাতি ওঠানামা চলছে। বুলডোজার ও ভেকু দিয়ে চলছে মাটি লেভেলিংয়ের কাজ। রোলার দিয়ে মাটি শক্ত করা হচ্ছে। ভরাটকৃত জমিতে হ্যামার দিয়ে কমপ্যাক্ট নিশ্চিত করার জন্য পানি শুষে নেয়া হচ্ছে। আবার পশ্চিম দিকে পায়রা নদীর কোলঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী শেড। প্রকল্প এলাকা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে বাস্তুহারাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোম্পানির টাকায় জমি কিনে এখন নিজেদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে, এমনটি জানালেন পুনর্বাসিত আইয়ুব আলীসহ আরও কয়েকজন।

আইসোটেক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মঈনুল আলম বলেন, সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী পাওয়ার প্লান্টটির নির্মাণকাজ ৪৫ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, বিআইডব্লিউটিএ, স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণ প্রত্যক্ষভাবে সহোযেগিতা করে যাচ্ছে। এজন্য আমরা সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের আগেই এই প্রকল্প থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, আমাদের পার্টনার ‘পাওয়ার চায়না রিসোর্স লিমিটেড’ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান। তারা ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, কম্বোডিয়াসহ বিশ্বের বেশকিছু দেশে দক্ষতার সঙ্গে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। তারা বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।

কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক আবদুস সবুর জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া এ অঞ্চলের জনগণের সুবিধার্থে প্রকল্প এলাকায় স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হবে। যেহেতু এখানকার পানি লবণাক্ত, তাই স্থানীয়দের জন্য গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে সুপেয় পানি ব্যবস্থা করা হবে।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, সৈকত সৌন্দর্যের বরগুনায় বিশেষ করে প্রত্যন্ত উপজেলা তালতলিতে সম্প্রতি ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। তালতলিতে নির্মিতব্য এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়ক হবে। সরকারও এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতা করছে। এখানে নির্মিতব্য অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং শিপব্রেকিং ও শিপ রিসাইক্লিং সেক্টরে এই বিদ্যুৎ ব্যবহার হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাস্তবায়ন হলে স্থানীরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবে ও তাদের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। তিনি বলেন, আমরা পরিবেশও চাই আবার বিদ্যুৎও চাই। পরিবেশের কোন প্রকার ক্ষতি না করে যথাযথ নিয়মে যাতে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ ও পরিচালিত হয় সেদিকে প্রশসানের সজাগ দৃষ্টি থাকবে।