ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন : শিক্ষক বরখাস্ত

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মাদ্রাসাছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন ও অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষককে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পত্র দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত দারুল ফালাহ আলিম মাদরাসা ও বিএম কলেজে। বিভিন্ন দফতরে পাঠানো পত্রের সূত্র ধরে জানা যায়, ওই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. আবদুল কাদের সরকার দীর্ঘদিন যাবৎ গোপনে শ্রেণীকক্ষে বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত, যৌন নিপীড়ন ও অসদাচরণ করে আসছিল। কয়েকজন ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ গত ২ মে ওই শিক্ষককে শোকজ করে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ২০ জুন মাদ্রাসার গভর্নিং বডি সিদ্ধান্ত নিয়ে ১ জুলাই হতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রী জানান, ওই স্যারের ক্লাসে আমরা সহজে যাই না। গেলেও ভয়ে থাকি। ইতিপূর্বে ২০১৭ সালেও আমাদের এমন অভিযোগ ছিল। সে সময় থেকে তাকে ১ বছর যাবৎ ক্লাস করতে দেয়া হয়নি। এ অভিযোগের ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল কাদেরের ০১৭১৭-৩৬০৮১১ নম্ব^রে কল দেয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাকে বাড়িতেও পাওয়া যায়নি। মাদ্রাসা অধ্যক্ষ আলহাজ ইউসুফ আলী জানান, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এমন জঘন্যতম ঘটনায় কোনভাবেই ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীরা সন্তানের মতো। তাদের সামগ্রিক নিরাপত্তায় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, সে আত্মগোপনে রয়েছে। সে নিজেকে বাঁচাতে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। তার ভয়ে আমরা পাড়ার মেয়েদেরও সাবধানে রাখি। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, সাময়িক বরখাস্তের পত্র পাওয়ার পর ওই মাদ্রাসায় ৪ জুলাই সরেজমিন পরিদর্শন করি এবং ছাত্রীদের জবানবন্দি নিই। সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গত ৮ জুলাই বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত উপজেলা নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভায় লিখিতভাবে প্রতিবেদন দাখিল করি। চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম রব্বানী জানিয়েছেন, তিনি মৌখিকভাবে এ ঘটনা জেনেছেন। তবে তিনি জানান ইতোমধ্যে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অপরদিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

আরও খবর
জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকির মুখে বাংলাদেশ
জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান
বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার স্বাধীনতার প্রতীক
বাংলাদেশে বৈশ্বিক অভিযোজন কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব বান কি মুনের
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আর নেই
ভিকারুননিসার দুই শিক্ষিকার বিচার শুরুর আদেশ
১৩ জুলাই গণঅবস্থান বাম ঐক্যের
ভবন ভাঙচুর ও ৫ কোটি টাকার সম্পদ লুট
প্রবীণ সাংবাদিক অজয় বড়ুয়ার সুস্থতা কামনায় প্রার্থনা
তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দেয়ার হিড়িক!
শিশু নির্যাতন বন্ধে স্কুলে অভিযোগ বক্স রাখার নির্দেশ
ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট হাসান রেজা নিখোঁজ

বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০১৯ , ২৭ আষাঢ় ১৪২৫, ৭ জ্বিলকদ ১৪৪০

দিনাজপুরে

ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন : শিক্ষক বরখাস্ত

জেলা বার্তা পরিবেশক, দিনাজপুর

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মাদ্রাসাছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন ও অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষককে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পত্র দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত দারুল ফালাহ আলিম মাদরাসা ও বিএম কলেজে। বিভিন্ন দফতরে পাঠানো পত্রের সূত্র ধরে জানা যায়, ওই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. আবদুল কাদের সরকার দীর্ঘদিন যাবৎ গোপনে শ্রেণীকক্ষে বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত, যৌন নিপীড়ন ও অসদাচরণ করে আসছিল। কয়েকজন ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ গত ২ মে ওই শিক্ষককে শোকজ করে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ২০ জুন মাদ্রাসার গভর্নিং বডি সিদ্ধান্ত নিয়ে ১ জুলাই হতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রী জানান, ওই স্যারের ক্লাসে আমরা সহজে যাই না। গেলেও ভয়ে থাকি। ইতিপূর্বে ২০১৭ সালেও আমাদের এমন অভিযোগ ছিল। সে সময় থেকে তাকে ১ বছর যাবৎ ক্লাস করতে দেয়া হয়নি। এ অভিযোগের ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল কাদেরের ০১৭১৭-৩৬০৮১১ নম্ব^রে কল দেয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাকে বাড়িতেও পাওয়া যায়নি। মাদ্রাসা অধ্যক্ষ আলহাজ ইউসুফ আলী জানান, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এমন জঘন্যতম ঘটনায় কোনভাবেই ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীরা সন্তানের মতো। তাদের সামগ্রিক নিরাপত্তায় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, সে আত্মগোপনে রয়েছে। সে নিজেকে বাঁচাতে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। তার ভয়ে আমরা পাড়ার মেয়েদেরও সাবধানে রাখি। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনজুরুল হক জানান, সাময়িক বরখাস্তের পত্র পাওয়ার পর ওই মাদ্রাসায় ৪ জুলাই সরেজমিন পরিদর্শন করি এবং ছাত্রীদের জবানবন্দি নিই। সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য গত ৮ জুলাই বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত উপজেলা নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভায় লিখিতভাবে প্রতিবেদন দাখিল করি। চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম রব্বানী জানিয়েছেন, তিনি মৌখিকভাবে এ ঘটনা জেনেছেন। তবে তিনি জানান ইতোমধ্যে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অপরদিকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।