ইসলামী পর্যটনকে বিকশিত করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামী পর্যটন বিশ্ব বাণিজ্য ব্র্যান্ড হিসেবে বিকশিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বাসস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলামী পর্যটন ‘বিশ্ব বাণিজ্য ?ব্র্যান্ড’ হিসেবে গড়ে তুলতে সার্বিক প্রয়াস ও রোডম্যাপের প্রয়োজন অতি জরুরি। কারণ এর বাজার বার্ষিক ৮ দশমিক ৩ শতাংশ হারে বেড়ে ২০২১ সাল নাগাদ তা ২৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে। তিনি গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ঢাকা দ্য ওআইসি সিটি অব ট্যুরিজম ২০১৯’ উদযাপন উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে কাজ করা একান্তভাবে প্রয়োজনÑ যাতে আমরা সারা বিশ্বে সবার মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে চলতে পারি। নিজেদের যে কোন সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারিÑ যাতে অন্য কেউ মুসলমানদের ভাগ্য নিয়ে খেলতে না পারে। তিনি আন্তঃওআইসি পর্যটকপ্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংস্থাটির সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভিসা সহজীকরণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও পর্যটনকেন্দ্রিক খাতগুলোর মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের ওপরও বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মুসলিম পর্যটক ও পাশ্চাত্য দেশগুলোর জন্য বিশ্বের সববৃহৎ বালুময় সমুদ্রতট কক্সবাজারে পৃথক পর্যটন স্পট তৈরির প্রস্তাব করেন। এছাড়া বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী দেশগুলোকে নিয়ে বাংলাদেশের একটি নৌট্যুরিজম রুট তৈরির পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আরএএম ওবায়দুল মুকতাদির চৌধুরী, মন্ত্রণালয়টির সচিব এম মহিবুল হক এবং ওআইসির সহকারী মহাসচিব মুসা কুলাকলিকায়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে ৪০০ বছরের প্রাচীন নগরী ঢাকার মুসলিম ঐতিহ্য ও নিদর্শন নিয়ে একটি অডিও ভিজুয়াল পেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়।

মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর ও বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সাবেক মন্ত্রী ও উপদেষ্টাসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনার, কূটনৈতিক মিশনের সদস্য, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি এবং অনুষ্ঠানে যোগদানকারী প্রায় ৩০টি দেশের পর্যটনমন্ত্রী ও তাদের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ওআইসির পর্যটনমন্ত্রীদের ১০ম সম্মেলনে গৃহীত ঢাকা ঘোষণায় ঢাকাকে ওআইসি সিটি অব ট্যুরিজম ২০১৯ হিসেবে নির্বাচন করা হয়। ৪ ওআইসিভুক্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে শীর্ষস্থান দখল করে ঢাকা। সম্মেলনে বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আজারবাইজানের ‘গাবালা’কে ২০২০ সালের সিটি অব ট্যুরিজম হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

ঢাকাকে সিটি অব ট্যুরিজম ঘোষণা উদযাপনের জন্য বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিদেশি পর্যটকদের জন্য ঢাকা ও এর আশপাশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক মুসলিম নিদর্শনগুলো পরিদর্শন, কনসার্ট এবং হাতির ঝিলে লেজার শো ও আতশবাজির প্রদর্শন করা হয়েছে।

ওআইসির ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে মুসলিম ট্যুরিস্টের সংখ্যা ১৫৬ মিলিয়ন। তা ২০২০ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ১৮০ মিলিয়ন। একই বছর সারা বিশ্বের জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ হবে মুসলিম।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে ‘ইসলামি অর্থনীতি’ সম্পর্কে বলেন, এটি বর্তমানে নবরূপে বিকাশ লাভ করছে। তিনি হালাল ফুডস, ইসলামি ফিনান্স, হালাল ফার্মাসিউটিক্যালস ও প্রসাধনী, হালাল পর্যটন ইত্যাদি হচ্ছে ইসলামিক অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান খাত। এ খাতগুলো বিকাশের জন্য ওআইসি সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রসমূহের সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব একান্ত প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন।

image
আরও খবর
আর্থিক খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে সহযোগিতার আশ্বাস
শপথ নিলেন বগুড়ার এমপি সিরাজ
‘বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া রিকশা বন্ধে প্রাইভেটকার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা’
শিবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি নিহত
৪৪ দেশে ৮৮৪৮ জন বাংলাদেশি কারাগারে
বুড়িগঙ্গা তীরে স্থাপনা উচ্ছেদকালে হামলা ম্যাজিস্ট্রেটসহ আহত ৫
তথ্য গোপন করে মামলা বাতিলের আবেদনকারীকে গ্রেফতারের নির্দেশ
শিক্ষকদের দলাদলিতে ছাত্রলীগকে না জড়ানোর নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রীর
আজিজ কো-অপারেটিভের চেয়ারম্যান গ্রেফতার
প্রতিবন্ধী ধর্ষণ ঘটনায় মামলা, ধর্ষক ও এক সালিশকারী গ্রেফতার
৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ
ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার
নির্ধারিত তারিখের একদিন আগেই সিন্ডিকেট সভা করলেন উপাচার্য

শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯ , ২৮ আষাঢ় ১৪২৫, ৮ জিলকদ ১৪৪০

ইসলামী পর্যটনকে বিকশিত করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলামী পর্যটন বিশ্ব বাণিজ্য ব্র্যান্ড হিসেবে বিকশিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বাসস।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলামী পর্যটন ‘বিশ্ব বাণিজ্য ?ব্র্যান্ড’ হিসেবে গড়ে তুলতে সার্বিক প্রয়াস ও রোডম্যাপের প্রয়োজন অতি জরুরি। কারণ এর বাজার বার্ষিক ৮ দশমিক ৩ শতাংশ হারে বেড়ে ২০২১ সাল নাগাদ তা ২৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে। তিনি গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ঢাকা দ্য ওআইসি সিটি অব ট্যুরিজম ২০১৯’ উদযাপন উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে কাজ করা একান্তভাবে প্রয়োজনÑ যাতে আমরা সারা বিশ্বে সবার মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে চলতে পারি। নিজেদের যে কোন সমস্যা নিজেরাই সমাধান করতে পারিÑ যাতে অন্য কেউ মুসলমানদের ভাগ্য নিয়ে খেলতে না পারে। তিনি আন্তঃওআইসি পর্যটকপ্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংস্থাটির সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভিসা সহজীকরণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও পর্যটনকেন্দ্রিক খাতগুলোর মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের ওপরও বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মুসলিম পর্যটক ও পাশ্চাত্য দেশগুলোর জন্য বিশ্বের সববৃহৎ বালুময় সমুদ্রতট কক্সবাজারে পৃথক পর্যটন স্পট তৈরির প্রস্তাব করেন। এছাড়া বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী দেশগুলোকে নিয়ে বাংলাদেশের একটি নৌট্যুরিজম রুট তৈরির পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আরএএম ওবায়দুল মুকতাদির চৌধুরী, মন্ত্রণালয়টির সচিব এম মহিবুল হক এবং ওআইসির সহকারী মহাসচিব মুসা কুলাকলিকায়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে ৪০০ বছরের প্রাচীন নগরী ঢাকার মুসলিম ঐতিহ্য ও নিদর্শন নিয়ে একটি অডিও ভিজুয়াল পেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়।

মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর ও বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সাবেক মন্ত্রী ও উপদেষ্টাসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনার, কূটনৈতিক মিশনের সদস্য, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি এবং অনুষ্ঠানে যোগদানকারী প্রায় ৩০টি দেশের পর্যটনমন্ত্রী ও তাদের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ওআইসির পর্যটনমন্ত্রীদের ১০ম সম্মেলনে গৃহীত ঢাকা ঘোষণায় ঢাকাকে ওআইসি সিটি অব ট্যুরিজম ২০১৯ হিসেবে নির্বাচন করা হয়। ৪ ওআইসিভুক্ত রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে শীর্ষস্থান দখল করে ঢাকা। সম্মেলনে বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আজারবাইজানের ‘গাবালা’কে ২০২০ সালের সিটি অব ট্যুরিজম হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

ঢাকাকে সিটি অব ট্যুরিজম ঘোষণা উদযাপনের জন্য বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিদেশি পর্যটকদের জন্য ঢাকা ও এর আশপাশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক মুসলিম নিদর্শনগুলো পরিদর্শন, কনসার্ট এবং হাতির ঝিলে লেজার শো ও আতশবাজির প্রদর্শন করা হয়েছে।

ওআইসির ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে মুসলিম ট্যুরিস্টের সংখ্যা ১৫৬ মিলিয়ন। তা ২০২০ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ১৮০ মিলিয়ন। একই বছর সারা বিশ্বের জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ হবে মুসলিম।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে ‘ইসলামি অর্থনীতি’ সম্পর্কে বলেন, এটি বর্তমানে নবরূপে বিকাশ লাভ করছে। তিনি হালাল ফুডস, ইসলামি ফিনান্স, হালাল ফার্মাসিউটিক্যালস ও প্রসাধনী, হালাল পর্যটন ইত্যাদি হচ্ছে ইসলামিক অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান খাত। এ খাতগুলো বিকাশের জন্য ওআইসি সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রসমূহের সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব একান্ত প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন।