মানিলন্ডারিংসহ ২৮টি মামলার পলাতক আসামি ও ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের (এফআইসিএল) চেয়ারম্যান শামীম কবিরকে চার বছর পর গ্রেফতার করেছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট। গতকাল দুপুরে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি জানান, ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান শামীম কবির মানুষের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে তা আর ফেরত দেয়নি। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংসহ ২৮টি মামলা রয়েছে। সে চার বছর ধরে পলাতক ছিল। ৯ জুলাই সিলেটের জৈন্তাপুর থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড ২০০৬ সালে কুমিল্লার জেলা সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নেয়। অনুমোদনের পর শামীম কবির ও তার কাছের আত্মীয়সহ স্থানীয় কিছু যুবককে নিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মুন্সিরহাট বাজারে একটি অফিস খুলে কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে সংস্থাটি মুন্সিরহাট অফিসের নিবন্ধন সংশোধন করে থানা থেকে জেলা পর্যায়ে এবং আরও পরে চট্টগ্রাম বিভাগের অনুমোদন নিয়ে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন জায়গায় শাখা অফিসের অনুমোদন নেয়। সে ইসলাম ধর্মকে পুঁজি করে স্থানীয়দের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ শুরু করে। এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে মাসে দুই হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা লাভ দেয়ার কথা ঘোষণা দেয়। বেশি মুনাফার আশায় কেউ কেউ টাকা ধার এনে, জমি-জমা বিক্রি করে এই সমিতিতে টাকা রাখতেন। কোন কোন সরকারি-বেসরকারি কর্মচারী পেনশনের টাকা বাসায় না নিয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ করার জন্য ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডে জমা রাখেন। বিভিন্ন রকম ছলচাতুরি করে এই শামীম কবির ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে প্রায় ২৫টি অফিস খুলে আমানত সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলমান রাখে।
সিআইডি জানায়, শামীম কবিরসহ মামলার অন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। ২০১৩-১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়ে সে কৌশলে আত্মগোপন করে এবং প্রচার করতে থাকে যে, এফআসিএল-এর চেয়ারম্যান মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে। সিআইডিকে শামীম কবিরের দেয়া তথ্য মতে, আত্মসাৎকৃত বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে তার নিজ গ্রাম ও সিলেটের জৈন্তাপুর থানা এলাকায় প্রাসাদসম বাড়ি, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, গাজীপুরের কালিগঞ্জ, কক্সবাজার জেলার উখিয়া, চট্টগ্রাম জেলার সীতাকু-সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে প্লট, ফ্লাটসহ সম্পদ অর্জন করে। ২০১৫ সালে দুদক তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করে। বর্তমানে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করছে।
বুধবার, ১৭ জুলাই ২০১৯ , ৩ শ্রাবন ১৪২৫, ১৩ জিলকদ ১৪৪০
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
মানিলন্ডারিংসহ ২৮টি মামলার পলাতক আসামি ও ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের (এফআইসিএল) চেয়ারম্যান শামীম কবিরকে চার বছর পর গ্রেফতার করেছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিট। গতকাল দুপুরে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি জানান, ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান শামীম কবির মানুষের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে তা আর ফেরত দেয়নি। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংসহ ২৮টি মামলা রয়েছে। সে চার বছর ধরে পলাতক ছিল। ৯ জুলাই সিলেটের জৈন্তাপুর থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড ২০০৬ সালে কুমিল্লার জেলা সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নেয়। অনুমোদনের পর শামীম কবির ও তার কাছের আত্মীয়সহ স্থানীয় কিছু যুবককে নিয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মুন্সিরহাট বাজারে একটি অফিস খুলে কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে সংস্থাটি মুন্সিরহাট অফিসের নিবন্ধন সংশোধন করে থানা থেকে জেলা পর্যায়ে এবং আরও পরে চট্টগ্রাম বিভাগের অনুমোদন নিয়ে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন জায়গায় শাখা অফিসের অনুমোদন নেয়। সে ইসলাম ধর্মকে পুঁজি করে স্থানীয়দের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ শুরু করে। এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে মাসে দুই হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা লাভ দেয়ার কথা ঘোষণা দেয়। বেশি মুনাফার আশায় কেউ কেউ টাকা ধার এনে, জমি-জমা বিক্রি করে এই সমিতিতে টাকা রাখতেন। কোন কোন সরকারি-বেসরকারি কর্মচারী পেনশনের টাকা বাসায় না নিয়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ করার জন্য ফারইস্ট ইসলামী মাল্টি কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডে জমা রাখেন। বিভিন্ন রকম ছলচাতুরি করে এই শামীম কবির ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে প্রায় ২৫টি অফিস খুলে আমানত সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলমান রাখে।
সিআইডি জানায়, শামীম কবিরসহ মামলার অন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। ২০১৩-১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়ে সে কৌশলে আত্মগোপন করে এবং প্রচার করতে থাকে যে, এফআসিএল-এর চেয়ারম্যান মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে। সিআইডিকে শামীম কবিরের দেয়া তথ্য মতে, আত্মসাৎকৃত বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে তার নিজ গ্রাম ও সিলেটের জৈন্তাপুর থানা এলাকায় প্রাসাদসম বাড়ি, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, গাজীপুরের কালিগঞ্জ, কক্সবাজার জেলার উখিয়া, চট্টগ্রাম জেলার সীতাকু-সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরে প্লট, ফ্লাটসহ সম্পদ অর্জন করে। ২০১৫ সালে দুদক তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করে। বর্তমানে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করছে।