শীঘ্রই ব্রাজিল ও রাশিয়ায় রপ্তানি বাজার ধরবে বাংলাদেশ : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশের রপ্তানি বৃদ্ধি করতে নতুন বাজারে প্রবেশের চেষ্টা চলছে। আমরা আশা করছি, আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ব্রাজিল রাশিয়ার মতো বড় রপ্তানি বাজারে আমরা প্রবেশ করতে পারব। গত বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনের ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অফ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি : প্রোসপেক্ট অ্যান্ড অবসটেশলস’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও মেশিনারিজ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ এক্সপোর্ট এক্সিবিশন আয়োজিত বাংলাদেশ সরকারের সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউঅ্যাবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এসআরইডিএ) সহযোগিতায় এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে প্রতিযোগিতা করেই টিকে থাকতে হবে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প রাতারাতি বর্তমান অবস্থায় আসেনি। খুবই স্বল্প পরিসরে তৈরি পোশাকশিল্প যাত্রা শুরু করেছিল। অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প আজ বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম। আজ দেশের রপ্তানির প্রায় ৮৪ ভাগ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে ঘুড়ে দাঁড়ানোর পথ দেখিয়েছে। দেশে এখন অনেক অত্যাধুনিক তৈরি পোশাকশিল্প। গ্রিন ফ্যাক্টরির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তৈরি পোশাকশিল্পে বাংলাদেশ আজ অনেক শক্তিশালী। অনেক দেশে আমরা এ পণ্য রপ্তানি করতে পারি না। আমাদের পণ্য অন্যদেশ রপ্তানি করে লাভবান হচ্ছে। মধ্যস্থতাকারীরা লাভবান হচ্ছে। সেসব বাজারে আমাদের প্রবেশ করতে হবে। প্রচেষ্টা চলছে, আশা করি আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে আমরা ব্রাজিল-রাশিয়ার মতো বড় রপ্তানি বাজারগুলোতে প্রবেশ করতে পারব। আমরা উপযুক্ত মূল্য আদায় করতে পাচ্ছি না। এজন্য আমাদের বার্গেনিং ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে এবং উৎপাদন ব্যয় কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, শিল্পপ্রতিষ্ঠানে আমাদের এনার্জির ব্যবহার কমিয়ে সোলারের ব্যবহার বাড়াতে হবে। বিশ্বমানের সোলার প্যানেল এখন বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে এবং বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। রিসাইকেলিং করে পানির ব্যবহার অনেক কমানো সম্ভব। এতে পণ্যের উৎপাদন খরচ অনেক কমে আসবে। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় আমরা অনেক এগিয়ে যেতে পারব। এজন্য প্রয়োজন পণ্যের মূল্য নির্ধারণে বার্গেনিং দক্ষতা প্রদর্শন। ক্রেতারা সবসময় চাইবে কম দামে পণ্য ক্রয় করতে। এ ক্ষেত্রে দক্ষতার বিকল্প নেই। আমাদের দেশের পণ্যের মান ভালো এবং বিশ্ববাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। চলমান রপ্তানি বাজারের পাশাপাশি ব্রাজিল ও রাশিয়ার মতো বড় বাজারগুলোতে প্রবেশ করতে পারলে বাংলাদেশের রপ্তানি অনেক বাড়বে। আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রতি খুবই আন্তরিক। তিনি সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তার অবদান অনেক।

এসআরইডিএর সদস্য সিদ্দিক জোবায়েরের সঞ্চালনায় এবং বিদুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউঅ্যাবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এসআরইডিএ) চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং অনআস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ইনোওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্টারন্যাশনাল প্রা. লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ফার্নো সুসাই, বিকেএমইএর সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং প্লামি ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল হক, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সটাইলসের প্রফেসর ড. মো. জুলহাস উদ্দিন এবং অ্যাপলস গ্লোবাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিরেন্দ্র গয়াল।

শুক্রবার, ১৯ জুলাই ২০১৯ , ৪ শ্রাবন ১৪২৫, ১৫ জিলকদ ১৪৪০

শীঘ্রই ব্রাজিল ও রাশিয়ায় রপ্তানি বাজার ধরবে বাংলাদেশ : বাণিজ্যমন্ত্রী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দেশের রপ্তানি বৃদ্ধি করতে নতুন বাজারে প্রবেশের চেষ্টা চলছে। আমরা আশা করছি, আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ব্রাজিল রাশিয়ার মতো বড় রপ্তানি বাজারে আমরা প্রবেশ করতে পারব। গত বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনের ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অফ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রি : প্রোসপেক্ট অ্যান্ড অবসটেশলস’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও মেশিনারিজ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ এক্সপোর্ট এক্সিবিশন আয়োজিত বাংলাদেশ সরকারের সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউঅ্যাবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এসআরইডিএ) সহযোগিতায় এই আলোচনার আয়োজন করা হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে প্রতিযোগিতা করেই টিকে থাকতে হবে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প রাতারাতি বর্তমান অবস্থায় আসেনি। খুবই স্বল্প পরিসরে তৈরি পোশাকশিল্প যাত্রা শুরু করেছিল। অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প আজ বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম। আজ দেশের রপ্তানির প্রায় ৮৪ ভাগ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে ঘুড়ে দাঁড়ানোর পথ দেখিয়েছে। দেশে এখন অনেক অত্যাধুনিক তৈরি পোশাকশিল্প। গ্রিন ফ্যাক্টরির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তৈরি পোশাকশিল্পে বাংলাদেশ আজ অনেক শক্তিশালী। অনেক দেশে আমরা এ পণ্য রপ্তানি করতে পারি না। আমাদের পণ্য অন্যদেশ রপ্তানি করে লাভবান হচ্ছে। মধ্যস্থতাকারীরা লাভবান হচ্ছে। সেসব বাজারে আমাদের প্রবেশ করতে হবে। প্রচেষ্টা চলছে, আশা করি আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে আমরা ব্রাজিল-রাশিয়ার মতো বড় রপ্তানি বাজারগুলোতে প্রবেশ করতে পারব। আমরা উপযুক্ত মূল্য আদায় করতে পাচ্ছি না। এজন্য আমাদের বার্গেনিং ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে এবং উৎপাদন ব্যয় কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, শিল্পপ্রতিষ্ঠানে আমাদের এনার্জির ব্যবহার কমিয়ে সোলারের ব্যবহার বাড়াতে হবে। বিশ্বমানের সোলার প্যানেল এখন বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে এবং বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। রিসাইকেলিং করে পানির ব্যবহার অনেক কমানো সম্ভব। এতে পণ্যের উৎপাদন খরচ অনেক কমে আসবে। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় আমরা অনেক এগিয়ে যেতে পারব। এজন্য প্রয়োজন পণ্যের মূল্য নির্ধারণে বার্গেনিং দক্ষতা প্রদর্শন। ক্রেতারা সবসময় চাইবে কম দামে পণ্য ক্রয় করতে। এ ক্ষেত্রে দক্ষতার বিকল্প নেই। আমাদের দেশের পণ্যের মান ভালো এবং বিশ্ববাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। চলমান রপ্তানি বাজারের পাশাপাশি ব্রাজিল ও রাশিয়ার মতো বড় বাজারগুলোতে প্রবেশ করতে পারলে বাংলাদেশের রপ্তানি অনেক বাড়বে। আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রতি খুবই আন্তরিক। তিনি সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তার অবদান অনেক।

এসআরইডিএর সদস্য সিদ্দিক জোবায়েরের সঞ্চালনায় এবং বিদুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউঅ্যাবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এসআরইডিএ) চেয়ারম্যান মো. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং অনআস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, ইনোওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্টারন্যাশনাল প্রা. লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ফার্নো সুসাই, বিকেএমইএর সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং প্লামি ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল হক, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সটাইলসের প্রফেসর ড. মো. জুলহাস উদ্দিন এবং অ্যাপলস গ্লোবাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিরেন্দ্র গয়াল।