কঙ্গোতে দুই হাজার মানুষের প্রাণহানি

মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে ইবোলা ভাইরাসের প্রদুর্ভাবে প্রায় দুই হাজার মানুষ মারা গেছেন। বর্তমানে দেশটির সবচেয়ে বড় শহর গোমায়ও ইবোলা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কঙ্গোতে ইবোলা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে ‘বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে। সংস্থাটি জানায়, এটি এখন একটি ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জনস্বাস্থ্য সংকট।’

কঙ্গোর অধিবাসীরা ইবোলা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য রাজনীতিবিদদের দায়ী করেছে। তবে দেশটিতে ইবোলা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে না আসার পেছেনে স্থানীয় মানুষদের কুসংস্কারই দায়ী। কারণ অনেকেই ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ঔষধ গ্রহণ করতে চান না। অনেকে বিশ্বাস করে, যে ইবোলা ভাইরাসের ঔষধ গ্রহণ করবে সে অবশ্যই মারা যাবে। কুসংস্কার সম্পর্কে কঙ্গোর স্থানীয় ৪৩ বছরের এক কৃষক জানান, তার মা ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার কোন চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। তাদের বিশ্বাস ছিল, মেডিসিন ছাড়াই তার মা সুস্থ হয়ে যাবে। এভাবে চিকিৎসা ছাড়াই তার ৬ বোন মারা যায়। পরে ওই কৃষক তার স্ত্রী ও কন্যাকে ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যান। কারণ সে তার স্ত্রী ও কন্যাকে হারাতে চান না। কঙ্গোর স্থানীয় বিদ্রোহ গ্রুপের কারণে সবার কাছে চিকিৎসা সেবা পৌঁছানো সম্ভব হয় না। এসব কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যায়। অনেকে ইবোলা ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য মাস্ক পরা অবস্থায় চলতে পারে না। তাদের দৈনন্দিন কাজে সমস্যা হয়। ২০১৪ সালে বিশ্বে ইবোলা ভাইরাস মহামারী আকারে পশ্চিম আফ্রিকার গিনি, লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিয়নসহ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তখন কয়েক শ’ চিকিৎসক, নার্সসহ প্রায় বার হাজার মানুষ মারা যায়।

ইবোলা বিষয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করলে অনেক মানুষ ঔষধ গ্রহণ করতে চায় না। ফলে মৃতের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাচ্ছে। এ রোগের শতভাগ কার্যকর ঔষধ বা প্রতিষেধক নেই। এ রোগে আক্রান্ত ৭০ শতাংশ মানুষই মারা যায়। ১৯৭৬ সালে প্রথম ইবোলা ভাইরাস শনাক্ত হয়। মধ্য আফ্রিকার ইবোলা নদীর তীরে প্রথম সংক্রমণ ঘটে বলে নদীটির নামেই ভাইরাসটির নামকরণ হয়।

বুধবার, ৩১ জুলাই ২০১৯ , ১৬ শ্রাবন ১৪২৫, ২৭ জিলকদ ১৪৪০

ইবোলার প্রদুর্ভাব

কঙ্গোতে দুই হাজার মানুষের প্রাণহানি

সংবাদ ডেস্ক

মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে ইবোলা ভাইরাসের প্রদুর্ভাবে প্রায় দুই হাজার মানুষ মারা গেছেন। বর্তমানে দেশটির সবচেয়ে বড় শহর গোমায়ও ইবোলা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কঙ্গোতে ইবোলা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে ‘বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছে। সংস্থাটি জানায়, এটি এখন একটি ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ের জনস্বাস্থ্য সংকট।’

কঙ্গোর অধিবাসীরা ইবোলা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য রাজনীতিবিদদের দায়ী করেছে। তবে দেশটিতে ইবোলা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে না আসার পেছেনে স্থানীয় মানুষদের কুসংস্কারই দায়ী। কারণ অনেকেই ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ঔষধ গ্রহণ করতে চান না। অনেকে বিশ্বাস করে, যে ইবোলা ভাইরাসের ঔষধ গ্রহণ করবে সে অবশ্যই মারা যাবে। কুসংস্কার সম্পর্কে কঙ্গোর স্থানীয় ৪৩ বছরের এক কৃষক জানান, তার মা ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার কোন চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। তাদের বিশ্বাস ছিল, মেডিসিন ছাড়াই তার মা সুস্থ হয়ে যাবে। এভাবে চিকিৎসা ছাড়াই তার ৬ বোন মারা যায়। পরে ওই কৃষক তার স্ত্রী ও কন্যাকে ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যান। কারণ সে তার স্ত্রী ও কন্যাকে হারাতে চান না। কঙ্গোর স্থানীয় বিদ্রোহ গ্রুপের কারণে সবার কাছে চিকিৎসা সেবা পৌঁছানো সম্ভব হয় না। এসব কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যায়। অনেকে ইবোলা ভাইরাস থেকে বাঁচার জন্য মাস্ক পরা অবস্থায় চলতে পারে না। তাদের দৈনন্দিন কাজে সমস্যা হয়। ২০১৪ সালে বিশ্বে ইবোলা ভাইরাস মহামারী আকারে পশ্চিম আফ্রিকার গিনি, লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিয়নসহ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তখন কয়েক শ’ চিকিৎসক, নার্সসহ প্রায় বার হাজার মানুষ মারা যায়।

ইবোলা বিষয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করলে অনেক মানুষ ঔষধ গ্রহণ করতে চায় না। ফলে মৃতের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাচ্ছে। এ রোগের শতভাগ কার্যকর ঔষধ বা প্রতিষেধক নেই। এ রোগে আক্রান্ত ৭০ শতাংশ মানুষই মারা যায়। ১৯৭৬ সালে প্রথম ইবোলা ভাইরাস শনাক্ত হয়। মধ্য আফ্রিকার ইবোলা নদীর তীরে প্রথম সংক্রমণ ঘটে বলে নদীটির নামেই ভাইরাসটির নামকরণ হয়।