আচরণ বিধি ভঙ্গের হিড়িক

ব্যবস্থা নেয়া হবে : ইসি

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি) নির্বাচনের প্রচারণায় আচরণবিধি ভঙ্গের হিড়িক পড়েছে। কখনও প্রার্থীরা, কখন তাদের পক্ষের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আচরণবিধি না মেনে প্রচার চালাচ্ছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দিচ্ছেন নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জেল-জরিমানা করার ক্ষমতা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে না। তবে ইসি বলছে, মাঠে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটরা নজরদারি করছেন। এছাড়া, যেসব অভিযোগ আসছে তদন্ত সাপেক্ষে সেগুলোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গত কয়েকদিন সরেজমিন দুই সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডে দেখা গেছে, প্রচারে এক ওয়ার্ডে একাধিক মাইকের ব্যবহার, নির্ধারিত সময়ের পরেও উচ্চ স্বরে মাইকের ব্যবহার, দেয়ালে পোস্টার লাগানো, বিধি ভঙ্গ করে পোস্টার ছাপানো, পোস্টারে নিয়মের অতিরিক্ত ছবি ব্যবহার, মটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনের শো-ডাউন, মিছিল ও পথসভা করা করে যানজটের সৃষ্টি করাসহ নানাভাবে আরণবিধি লঙ্ঘন করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।

সিটি নির্বাচনে আচরণবিধি অমান্য করলে প্রার্থী বা তার সমর্থকের সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদ- বা পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দ-ের বিধান রয়েছে। সেই সঙ্গে প্রার্থিতা বাতিলসহ নিবন্ধিত দলকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার করারও বিধান করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জেল-জরিমানা করার ক্ষমতা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে না। তবে প্রার্থীদের দাবি, তারা আচরণবিধি মেনেই প্রচারণা চালাচ্ছেন।

গতকাল প্রচারণার ষষ্ঠদিন অতিবাহিত হয়েছে। এই কয়েকদিন সংবাদের একাধিক প্রতিবেদক মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি বেশকিছু কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রচারণার সঙ্গে ছিলেন। দেখা গেছে, মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণার সময় দলীয় নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। অনেক সময় এই সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। ভোট প্রার্থনা করতে প্রার্থীরা সাধারণত আবাসিক এলাকার দিকেই যান। আবাসিক এলাকার রাস্তাগুলো বেশি বড় হয় না। ফলে যখনই তারা গেছেন, তার আশপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী যানবাহন নিয়ে গণসংযোগ করছেন। বিধি ভেঙে ছাপানো হয়েছে পোস্টার-ব্যানার। বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই নিয়মের অতিরিক্ত ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।

দক্ষিণে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস গতকাল শ্যামপুর এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তার সঙ্গে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। ধোলাইপাড় উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে তিনি যখন বক্তব্য রাখছিলেন, তখন পিছনে বেশ লম্বা যানজটের সৃষ্টি হয়। ১৩ জানুয়ারি মানিকনগর এলাকায় প্রচারণা চালান তিনি। এ সময়ও একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এছাড়া তাপস যেখানে যান সেখানেই ভিড় বেড়ে যায়, ফলে তিনি যেখানে যতক্ষণ থাকেন তার আশপাশের এলাকায় যানজট লেগে যায়। এছাড়া তার প্রচারণার সময় একাধিক মাইক্রোফোন ব্যাবহার করতে দেখা গেছে। তিনি বলেন, আমি আচরণবিধি মেনেই প্রচারণা চালাচ্ছি। নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি যেন যানজট না লাগে, সেদিকে খেয়াল রাখতে। তবে নৌকার জোয়ার শুরু হয়ে গেছে। তাই সবার একটু অসুবিধা হচ্ছে।

এক দিন আগে উত্তরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম খিলগাঁও তালতলা মার্কেট এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালান। সেখানে ১০টা থেকেই একটি হলুদ রঙের পিকআপ ভ্যানে দুটি বড় কালো রঙের সাউন্ডবক্সে উচ্চ শব্দে বাজতে থাকে নৌকা প্রতীকের থিম সং। এরপর তিনি এসে প্রচারণা শুরু করেন। প্রচারণার সময়ও মাইকে ও বড় সাউন্ডবক্সে উচ্চ স্বরে সেøাগান ও মিছিল চলতে থাকে। এর একদিন আগে তার প্রচারনায় এক সংসদ সদস্য এসেছিলেন। অবশ্য পরে চলে গেছেন। আতিকুলের বিরুদ্ধে আরেক মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল লিখিত অভিযোগে জানান, বিধিমালার ৮ বিধির ৫ উপবিধি লঙ্ঘন করে পান্থকুঞ্জের বীরউত্তম সিআর দত্ত রোডে নিজ ছবি ও দলীয় প্রধানের ছবি ব্যতীত দলীয় সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য ছবি দিয়ে পোস্টার দেয়ালে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আতিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, এ রকম একটু হতে পারে। আমরা চেষ্টা করছি কোন আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা যাতে না ঘটে। আমি বলেছি, নির্বাচনী প্রচারে যাতে জনদুর্ভোগ না হয়।

১৪ জানুয়ারি কাওরান বাজার এলাকায় জনসংযোগ করেন ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। এ সময় সময় দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা রাস্তাজুড়ে মিছিল করেন। বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে এ সময় অন্তত ১০ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেলের বহর ছিলো। এরপর তিনি তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় বক্তব্য রাখেন। তার বক্তব্যের সময় ভিড়ের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ১০ জানুয়ারি নির্বাচনী প্রচার শুরুর দিনে উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টর জামে মসজিদের সামনে বিএনপির কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক জমায়েত হন। তারা প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে রাস্তা আটকে মিছিল করেন তারা। এ বিষয়ে তাবিথ আউয়াল বলেন, আমরা আচরণ বিধি ভাঙছি না। ভাঙছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তার বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগও দেয়া হয়েছে।

দক্ষিণে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন গতকাল ধানমন্ডি এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তার সঙ্গে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ছিলেন। এ কারণে ওই রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। ধানের শীষে প্রার্থী প্রচারণা শুরু করেছিলেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে থেকে। এর পরদিন জজকোর্ট এলাকায় প্রচারণা চালান। এ দু’দিনও তার প্রচারণার কারণে যানবাহন চলাচল বিঘিœত হয়। এছাড়া তার কর্মী-সমর্থকদের নির্ধারিত সময়ের পরও মাইকিং করতে দেখা গেছে। ১৩ জানুয়ারি প্রচারণায় সময় ইশরাকের সঙ্গে ১০টির বেশি মোটরসাইকেল ছিল। মিছিল, রাস্তা আটকে জনসংযোগ ও পথসভা করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইশরাক হোসেন বলেন, আচরণবিধি মেনেই প্রচারণা চালাচ্ছি। প্রচারে বের হওয়ার পর দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় লোকজন যখন গণসংযোগে যুক্ত হন, তখন তাদেরও বিধি মেনে প্রচার চালানোর অনুরোধ করি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের রিটানিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম বলেন, এখন পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের ৮টি অভিযোগ পেয়েছি। প্রত্যেকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। উচ্চস্বরে মাইকিং’র জন্য এক প্রার্থীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি বড় কথা নয় যেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করবে, আমরা তার বিরুদ্ধেই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন জানিয়েছেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। প্রার্থীদের আচরণবিধি নজরদারিতে আছে। লিখিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আচরণবিধিতে যা আছে :

প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থী বা দল প্রচারণায় সমান অধিকার ভোগ করবে; প্রার্থী বা তার দল, এমনকি তার পক্ষে অন্য কেউ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী এলাকায় কোন প্রকার চাঁদা বা অনুদান প্রদান বা প্রদানে অঙ্গীকার করতে পারবেন না; কোন প্রার্থী বা তার পক্ষে কোন রাজনৈতিক দল বা অন্য কোন ব্যক্তি প্রতীক বরাদ্দের আগে নির্বাচনী প্রচার করতে পারবে না; নির্বাচনের আগে প্রার্থী সরকারি সার্কিট হাউজ, ডাক বাংলো বা রেস্টহাউজে অবস্থান করতে পারবেন না। প্রার্থীর পক্ষে বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিপক্ষে প্রচারণার স্থান হিসেবে সরকারি কার্যালয় বা কর্তৃপক্ষকে ব্যবহার করতে পারবেন না; প্রার্থী বা তার দল বা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি পথসভা বা ঘরোয়া সভা ছাড়া অন্য কোন জনসভা বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না; পথসভা করতে চাইলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে স্থান ও সময় সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশকে জানাতে হবে;

পোস্টার : প্রার্থী প্রচারণায় দৈর্ঘ্যে ৬০ সেন্টিমিটার ও প্রস্থে ৪৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে সাদা-কালো পোস্টার ব্যবহার করতে হবে। পোস্টারে প্রার্থী নিজের ছবি ও প্রতীক ছাড়া অন্য কারও ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবেন না, তবে রাজনৈতিক দলের মনোনিত প্রার্থী হলে দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টার বা লিফলেটে ব্যবহার করতে পারবেন। নির্বাচনী এলাকায় কোন দেয়াল বা যানবাহনে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগাতে পারবেন না। নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতীক হিসেবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না।

ক্যাম্প-মিছিল-যানবাহন : মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রতি থানায় একটির বেশি নির্বাচনী ক্যাম্প বা অফিস স্থাপন করতে পারবেন না। আর কাউন্সিলর প্রার্থী ৩০ হাজার ভোটারের জন্য একটি ক্যাম্প এবং সর্বোচ্চ তিনটি ক্যাম্প বা অফিস ব্যবহার করতে পারবেন। প্রার্থী বা তার দল বা অন্য কোন ব্যক্তি ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল বা অন্য কোন যান্ত্রিক যানবাহনে করে মিছিল, মশাল মিছিল বা শোডাউন করতে পারবেন না। প্রচারণায় হেলিকপ্টার বা অন্য কোন আকাশযান ব্যবহার করা যাবে না।

নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের যাতায়াতের জন্য প্রার্থী কোন যানবাহন ভাড়া বা ব্যবহার করতে পারবেন না; কোন প্রার্থীর পক্ষে রংয়ের কালি, চুন বা কেমিকেল দিয়ে দেয়াল বা যানবাহনে লিখন, মুদ্রন, ছাপচিত্র করে নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবেন না; প্রার্থীর প্রচারণায় গেইট, তোরণ বা ঘের নির্মাণ করা যাবে না। ৩৬ বর্গমিটারের বেশি স্থান নিয়ে ক্যাম্প বা অফিস নির্মাণ করা যাবে না। প্রার্থীর ছবি বা প্রতীক চিহ্ন সম্বলিত শার্ট, জ্যাকেট বা ফতোয়া ব্যবহার করা যাবে না।

ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রচার নিষেধ : মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোন ধর্মীয় উপাসনালয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। একটি ওয়ার্ডে পথসভা বা নির্বাচনী প্রচারণার কাজে একের অধিক মাইক্রোফোন বা বেশি মাত্রার শব্দের যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী এলাকায় দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে মাইক ব্যবহার করা যাবে।

মন্ত্রী-এমপিদের প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা : সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং সরকারি কর্মকর্তা নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। তবে ওই ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার হলে তিনি কেবল ভোট প্রদান করতে পারবেন; নির্বাচনের কাজে সরকারি প্রচারযন্ত্র, যানবাহন বা অন্য কোন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ব্যবহার করতে পারবেন না। নির্বাচনের আগে প্রার্থী সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কোন প্রকল্প অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বা ফলক উন্মোচন করতে পাবরেন না। নির্বাচনী প্রচারণায় স্থায়ী বা অস্থায়ী বিলবোর্ড বা অন্য কোন কাঠামো স্থাপন ও ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্ধারিত ব্যয়সীমা অতিক্রম করতে পারবেন না।

ইভিএমে ভোট : আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরের মোট ১৮৫টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আছেন ৭৫৮জন। উত্তরে মেয়র পদে ৬ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলরের ১৮টি পদে ৭৭ জন ও সাধারণ ৫৪টি ওয়ার্ডের বিপরীতে ২৫১ জন অর্থাৎ ৩৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দক্ষিণে মেয়র পদে সাতজন, ২৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮২ জন ও ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৩৩৫ জন মোট ৪২৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। দক্ষিণে ইতোমধ্যে ৪ জন (২ জন সাধারণ, ২ জন সংরক্ষিত) প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। দুটি সিটির অর্ধ কোটিরও বেশি ভোটার ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনের সুযোগ পাবেন।

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২০ , ২ মাঘ ১৪২৬, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

ঢাকা সিটি নির্বাচন

আচরণ বিধি ভঙ্গের হিড়িক

ব্যবস্থা নেয়া হবে : ইসি

ফয়েজ আহমেদ তুষার ও ইমদাদুল হাসান রাতুল

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি) নির্বাচনের প্রচারণায় আচরণবিধি ভঙ্গের হিড়িক পড়েছে। কখনও প্রার্থীরা, কখন তাদের পক্ষের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আচরণবিধি না মেনে প্রচার চালাচ্ছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দিচ্ছেন নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জেল-জরিমানা করার ক্ষমতা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে না। তবে ইসি বলছে, মাঠে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটরা নজরদারি করছেন। এছাড়া, যেসব অভিযোগ আসছে তদন্ত সাপেক্ষে সেগুলোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গত কয়েকদিন সরেজমিন দুই সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডে দেখা গেছে, প্রচারে এক ওয়ার্ডে একাধিক মাইকের ব্যবহার, নির্ধারিত সময়ের পরেও উচ্চ স্বরে মাইকের ব্যবহার, দেয়ালে পোস্টার লাগানো, বিধি ভঙ্গ করে পোস্টার ছাপানো, পোস্টারে নিয়মের অতিরিক্ত ছবি ব্যবহার, মটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনের শো-ডাউন, মিছিল ও পথসভা করা করে যানজটের সৃষ্টি করাসহ নানাভাবে আরণবিধি লঙ্ঘন করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।

সিটি নির্বাচনে আচরণবিধি অমান্য করলে প্রার্থী বা তার সমর্থকের সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদ- বা পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয়দ-ের বিধান রয়েছে। সেই সঙ্গে প্রার্থিতা বাতিলসহ নিবন্ধিত দলকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার করারও বিধান করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জেল-জরিমানা করার ক্ষমতা থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে না। তবে প্রার্থীদের দাবি, তারা আচরণবিধি মেনেই প্রচারণা চালাচ্ছেন।

গতকাল প্রচারণার ষষ্ঠদিন অতিবাহিত হয়েছে। এই কয়েকদিন সংবাদের একাধিক প্রতিবেদক মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি বেশকিছু কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রচারণার সঙ্গে ছিলেন। দেখা গেছে, মেয়র প্রার্থীদের প্রচারণার সময় দলীয় নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। অনেক সময় এই সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। ভোট প্রার্থনা করতে প্রার্থীরা সাধারণত আবাসিক এলাকার দিকেই যান। আবাসিক এলাকার রাস্তাগুলো বেশি বড় হয় না। ফলে যখনই তারা গেছেন, তার আশপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী যানবাহন নিয়ে গণসংযোগ করছেন। বিধি ভেঙে ছাপানো হয়েছে পোস্টার-ব্যানার। বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই নিয়মের অতিরিক্ত ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।

দক্ষিণে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস গতকাল শ্যামপুর এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তার সঙ্গে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। ধোলাইপাড় উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে তিনি যখন বক্তব্য রাখছিলেন, তখন পিছনে বেশ লম্বা যানজটের সৃষ্টি হয়। ১৩ জানুয়ারি মানিকনগর এলাকায় প্রচারণা চালান তিনি। এ সময়ও একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এছাড়া তাপস যেখানে যান সেখানেই ভিড় বেড়ে যায়, ফলে তিনি যেখানে যতক্ষণ থাকেন তার আশপাশের এলাকায় যানজট লেগে যায়। এছাড়া তার প্রচারণার সময় একাধিক মাইক্রোফোন ব্যাবহার করতে দেখা গেছে। তিনি বলেন, আমি আচরণবিধি মেনেই প্রচারণা চালাচ্ছি। নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি যেন যানজট না লাগে, সেদিকে খেয়াল রাখতে। তবে নৌকার জোয়ার শুরু হয়ে গেছে। তাই সবার একটু অসুবিধা হচ্ছে।

এক দিন আগে উত্তরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম খিলগাঁও তালতলা মার্কেট এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালান। সেখানে ১০টা থেকেই একটি হলুদ রঙের পিকআপ ভ্যানে দুটি বড় কালো রঙের সাউন্ডবক্সে উচ্চ শব্দে বাজতে থাকে নৌকা প্রতীকের থিম সং। এরপর তিনি এসে প্রচারণা শুরু করেন। প্রচারণার সময়ও মাইকে ও বড় সাউন্ডবক্সে উচ্চ স্বরে সেøাগান ও মিছিল চলতে থাকে। এর একদিন আগে তার প্রচারনায় এক সংসদ সদস্য এসেছিলেন। অবশ্য পরে চলে গেছেন। আতিকুলের বিরুদ্ধে আরেক মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল লিখিত অভিযোগে জানান, বিধিমালার ৮ বিধির ৫ উপবিধি লঙ্ঘন করে পান্থকুঞ্জের বীরউত্তম সিআর দত্ত রোডে নিজ ছবি ও দলীয় প্রধানের ছবি ব্যতীত দলীয় সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য ছবি দিয়ে পোস্টার দেয়ালে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আতিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, এ রকম একটু হতে পারে। আমরা চেষ্টা করছি কোন আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা যাতে না ঘটে। আমি বলেছি, নির্বাচনী প্রচারে যাতে জনদুর্ভোগ না হয়।

১৪ জানুয়ারি কাওরান বাজার এলাকায় জনসংযোগ করেন ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। এ সময় সময় দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা রাস্তাজুড়ে মিছিল করেন। বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে এ সময় অন্তত ১০ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেলের বহর ছিলো। এরপর তিনি তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় বক্তব্য রাখেন। তার বক্তব্যের সময় ভিড়ের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ১০ জানুয়ারি নির্বাচনী প্রচার শুরুর দিনে উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টর জামে মসজিদের সামনে বিএনপির কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক জমায়েত হন। তারা প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে রাস্তা আটকে মিছিল করেন তারা। এ বিষয়ে তাবিথ আউয়াল বলেন, আমরা আচরণ বিধি ভাঙছি না। ভাঙছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তার বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগও দেয়া হয়েছে।

দক্ষিণে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন গতকাল ধানমন্ডি এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তার সঙ্গে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ছিলেন। এ কারণে ওই রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। ধানের শীষে প্রার্থী প্রচারণা শুরু করেছিলেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে থেকে। এর পরদিন জজকোর্ট এলাকায় প্রচারণা চালান। এ দু’দিনও তার প্রচারণার কারণে যানবাহন চলাচল বিঘিœত হয়। এছাড়া তার কর্মী-সমর্থকদের নির্ধারিত সময়ের পরও মাইকিং করতে দেখা গেছে। ১৩ জানুয়ারি প্রচারণায় সময় ইশরাকের সঙ্গে ১০টির বেশি মোটরসাইকেল ছিল। মিছিল, রাস্তা আটকে জনসংযোগ ও পথসভা করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইশরাক হোসেন বলেন, আচরণবিধি মেনেই প্রচারণা চালাচ্ছি। প্রচারে বের হওয়ার পর দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় লোকজন যখন গণসংযোগে যুক্ত হন, তখন তাদেরও বিধি মেনে প্রচার চালানোর অনুরোধ করি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের রিটানিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাশেম বলেন, এখন পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনের ৮টি অভিযোগ পেয়েছি। প্রত্যেকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। উচ্চস্বরে মাইকিং’র জন্য এক প্রার্থীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। আওয়ামী লীগ বা বিএনপি বড় কথা নয় যেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করবে, আমরা তার বিরুদ্ধেই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন জানিয়েছেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। প্রার্থীদের আচরণবিধি নজরদারিতে আছে। লিখিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আচরণবিধিতে যা আছে :

প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থী বা দল প্রচারণায় সমান অধিকার ভোগ করবে; প্রার্থী বা তার দল, এমনকি তার পক্ষে অন্য কেউ নির্বাচনের আগে নির্বাচনী এলাকায় কোন প্রকার চাঁদা বা অনুদান প্রদান বা প্রদানে অঙ্গীকার করতে পারবেন না; কোন প্রার্থী বা তার পক্ষে কোন রাজনৈতিক দল বা অন্য কোন ব্যক্তি প্রতীক বরাদ্দের আগে নির্বাচনী প্রচার করতে পারবে না; নির্বাচনের আগে প্রার্থী সরকারি সার্কিট হাউজ, ডাক বাংলো বা রেস্টহাউজে অবস্থান করতে পারবেন না। প্রার্থীর পক্ষে বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিপক্ষে প্রচারণার স্থান হিসেবে সরকারি কার্যালয় বা কর্তৃপক্ষকে ব্যবহার করতে পারবেন না; প্রার্থী বা তার দল বা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি পথসভা বা ঘরোয়া সভা ছাড়া অন্য কোন জনসভা বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না; পথসভা করতে চাইলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে স্থান ও সময় সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশকে জানাতে হবে;

পোস্টার : প্রার্থী প্রচারণায় দৈর্ঘ্যে ৬০ সেন্টিমিটার ও প্রস্থে ৪৫ সেন্টিমিটারের মধ্যে সাদা-কালো পোস্টার ব্যবহার করতে হবে। পোস্টারে প্রার্থী নিজের ছবি ও প্রতীক ছাড়া অন্য কারও ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবেন না, তবে রাজনৈতিক দলের মনোনিত প্রার্থী হলে দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টার বা লিফলেটে ব্যবহার করতে পারবেন। নির্বাচনী এলাকায় কোন দেয়াল বা যানবাহনে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগাতে পারবেন না। নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতীক হিসেবে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না।

ক্যাম্প-মিছিল-যানবাহন : মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রতি থানায় একটির বেশি নির্বাচনী ক্যাম্প বা অফিস স্থাপন করতে পারবেন না। আর কাউন্সিলর প্রার্থী ৩০ হাজার ভোটারের জন্য একটি ক্যাম্প এবং সর্বোচ্চ তিনটি ক্যাম্প বা অফিস ব্যবহার করতে পারবেন। প্রার্থী বা তার দল বা অন্য কোন ব্যক্তি ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল বা অন্য কোন যান্ত্রিক যানবাহনে করে মিছিল, মশাল মিছিল বা শোডাউন করতে পারবেন না। প্রচারণায় হেলিকপ্টার বা অন্য কোন আকাশযান ব্যবহার করা যাবে না।

নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের যাতায়াতের জন্য প্রার্থী কোন যানবাহন ভাড়া বা ব্যবহার করতে পারবেন না; কোন প্রার্থীর পক্ষে রংয়ের কালি, চুন বা কেমিকেল দিয়ে দেয়াল বা যানবাহনে লিখন, মুদ্রন, ছাপচিত্র করে নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবেন না; প্রার্থীর প্রচারণায় গেইট, তোরণ বা ঘের নির্মাণ করা যাবে না। ৩৬ বর্গমিটারের বেশি স্থান নিয়ে ক্যাম্প বা অফিস নির্মাণ করা যাবে না। প্রার্থীর ছবি বা প্রতীক চিহ্ন সম্বলিত শার্ট, জ্যাকেট বা ফতোয়া ব্যবহার করা যাবে না।

ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রচার নিষেধ : মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোন ধর্মীয় উপাসনালয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। একটি ওয়ার্ডে পথসভা বা নির্বাচনী প্রচারণার কাজে একের অধিক মাইক্রোফোন বা বেশি মাত্রার শব্দের যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী এলাকায় দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে মাইক ব্যবহার করা যাবে।

মন্ত্রী-এমপিদের প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা : সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং সরকারি কর্মকর্তা নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। তবে ওই ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার হলে তিনি কেবল ভোট প্রদান করতে পারবেন; নির্বাচনের কাজে সরকারি প্রচারযন্ত্র, যানবাহন বা অন্য কোন সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ব্যবহার করতে পারবেন না। নির্বাচনের আগে প্রার্থী সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কোন প্রকল্প অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বা ফলক উন্মোচন করতে পাবরেন না। নির্বাচনী প্রচারণায় স্থায়ী বা অস্থায়ী বিলবোর্ড বা অন্য কোন কাঠামো স্থাপন ও ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্ধারিত ব্যয়সীমা অতিক্রম করতে পারবেন না।

ইভিএমে ভোট : আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরের মোট ১৮৫টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আছেন ৭৫৮জন। উত্তরে মেয়র পদে ৬ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলরের ১৮টি পদে ৭৭ জন ও সাধারণ ৫৪টি ওয়ার্ডের বিপরীতে ২৫১ জন অর্থাৎ ৩৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দক্ষিণে মেয়র পদে সাতজন, ২৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮২ জন ও ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৩৩৫ জন মোট ৪২৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। দক্ষিণে ইতোমধ্যে ৪ জন (২ জন সাধারণ, ২ জন সংরক্ষিত) প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। দুটি সিটির অর্ধ কোটিরও বেশি ভোটার ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচনের সুযোগ পাবেন।