বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন বিশ্বে রোল মডেল

মোতাহার হোসেন

দেশ স্বাধীন হয়েছে আজ থেকে ৪৯ বছর আগে। স্বাধীনতার আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ এক নয়। স্বাধীন বাংলাদেশের সুদীর্ঘ ৪৯ বছরের পথপরিক্রমায় অর্থনৈতিক, সামাজিক খাতসহ সামগ্রিকভাবেই দেশ এগিয়েছে অনেক দূর। বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত স্বপ্ন ‘জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি’ অর্জনের দ্বারপ্রান্তে উপনীত আমরা। বঙ্গবন্ধু দেশকে ভৌগোলিকভাবে স্বাধীন করেছেন আর তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতি অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতি ও সমৃদ্ধির দেশ হিসেবে পরিচিত। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হবে দেশ। একই সঙ্গে এ সময়ের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত হবে আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরের সক্ষমতা অর্জন করেছে।

মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস, বিদ্যুৎ, জ্বলানি খাতের উন্নয়ন, বিনামূল্যে প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ্য বই প্রদান, পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান, স্কুলফিডিং কর্মসূচি, নারী শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, যোগাযোগ, সড়ক অবকাঠামো, রাস্তাঘাট, পুল, কালভার্ট উন্নয়ন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পটুয়াখালীর পায়রা নদীতে ‘পায়রা বন্দর স্থাপন, রেলপথের সম্প্রসারণ, অত্যাধুনিক রেলবগি, ইঞ্জিন আমদানি, রাজধানীতে মেট্রোরেল স্থাপন, ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট চালু, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চার লেনে উন্নীত, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক চার লেনে উন্নীত, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে।

স্বাধীনতার এত বছর পরে বড় অর্জন হচ্ছে প্রায় ১৮ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কৃষিতে সরকারের নব নব সংযোজন, প্রযুক্তির প্রয়োগ, অঞ্চল, মাটি, আবহাওয়া উপযোগী ধান, গমসহ অন্যান্য বীজ উদ্ভাবন বিশেষ করে ৪৮ রকমের হাইব্রিড জাতের উন্নত ও অধিক ফলনশীল ধান উদ্ভাবন করায় হাজার বছরের খাদ্য ঘাটতির দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। শিক্ষার হার বেড়েছে, মানুষের গড় আয়, রিজার্ভ, রেমিটেন্স বেড়েছে ঈর্ষণীয় হারে, যা এখন দৃশ্যমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার ১০ মেগা প্রকল্পের শতভাগ বাস্তবায়ন হলে বিশ্বে বাংলাদেশ হবে উন্নয়নের রোল মডেল।

দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের সফলতার দিকে তাকিয়ে থাকে। এ বিশাল অংশ খুবই নিশ্চুপ থাকেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ এখনও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জিয়াউর রহমানের তুলনা করেন। বিএনপির শাসনামলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের শাসনামলের তুলনা করেন। এ তুলনা যারা করেন তারা রাজনৈতিকভাবে, মানসিকভাবে দৈন্যতায়, হীনমন্যতায় ভোগেন। এতে লাভবান হয় অপশক্তি, রাজনীনিতে অনাহূত বির্তক সৃষ্টি করা হয়। ঠিক এমনি করে দীর্ঘ ৪৯ বছর ধরে এই অপশক্তিই মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং বর্তমানে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের নিরন্তর অপচেষ্টায় লিপ্ত। এখন প্রয়োজন এই অপশক্তির বিরুদ্ধে সচেতন সমাজ, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্য।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিশ্বের নবীনতম দেশ ও অন্যতম দরিদ্র দেশও ছিল বটে। ২৫ মার্চ কালরাত্রির পর ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে বিশ্বব্যাংকের একটি বিশেষজ্ঞ দল কয়েকটি শহর পরিদর্শন শেষে মন্তব্য করেছিল- ‘এগুলো দেখতে পারমাণবিক হামলার পরের একটি সকালের মতোই।’ প্রায় ৬০ লাখ বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছিল। ১৪ লাখ কৃষক পরিবার চাষাবাসের সরঞ্জামাদি ও পশু হারিয়েছিল। পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। রাস্তা ক্ষতিগ্র্রস্ত, সেতু বিধ্বস্ত এবং অভ্যন্তরীণ জলপথ অবরুদ্ধ হয়েছিল।

শুধু তাই না, ত্রিশ লাখ শহীদ, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভম আর বিপুল সম্পদ ক্ষতির বিনিময়ে অর্জিত হলো বাঙালির বিজয় ও স্বাধীনতা। পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের আগ পর্যন্ত দেশটির ধ্বংসযজ্ঞ শুধুই বেড়েছে। কেননা পাকিস্তান বাংলাদেশের পোড়ামাটি চেয়েছিল। বাস্তবে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা তাই করেছিল।

আমরা বিজয়ের ৪৯ বছর পার করে ফেলেছি। এ ৪৯ বছরের মধ্যে ২৮ বছর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সরকার ক্ষমতায় ছিল। জাতি রাষ্ট্র গঠনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে সুস্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক মদদ ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি আখ্যা দিয়েছিল। অথচ স্বাধীনতার ৪৯ বছরে বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, ‘সম্পদে ভরপুর এবং সম্পদে উপচে পড়া ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে।’ এটা সম্ভব হয়েছে স্বাধীনতা অর্জন এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ, সাহসী, সৎ, যোগ্য নেতৃত্বের ফলে।

আশির দশকে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে তৈরি পোশাক রফতানি শুরু করে। কালক্রমে এ শিল্প এখন দেশের অন্যমত প্রধান রফতানি পণ্যে পরিণত হয়েছে। এখন আমরা বিশ্ব উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়কে চলমান রয়েছি। জেপি মরগ্যান বলেছে, বাংলাদেশ অগ্রসর দেশগুলোর মধ্যে ‘ফ্রন্টিয়ার ফাইভ’। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে ‘লিঙ্গভিত্তিক আয় সমতায় দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ’।

নতুন প্রজন্ম এ দেশকে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ১০ বছর আগে এটি ছিল অচিন্তনীয়। কাজেই স্বাধীনতার ৪৯ বছরে এখন যে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন, যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে তার ধারাবাহিকতা রক্ষায় প্রয়োজন আগামীতে সরকারের ধারাবাহিকতা। তাহলে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি পূর্ণতা পাবে।

[লেখক : সাংবাদিক]

motaherbd123@gmail.com

বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২০ , ৮ মাঘ ১৪২৬, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন বিশ্বে রোল মডেল

মোতাহার হোসেন

দেশ স্বাধীন হয়েছে আজ থেকে ৪৯ বছর আগে। স্বাধীনতার আগের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ এক নয়। স্বাধীন বাংলাদেশের সুদীর্ঘ ৪৯ বছরের পথপরিক্রমায় অর্থনৈতিক, সামাজিক খাতসহ সামগ্রিকভাবেই দেশ এগিয়েছে অনেক দূর। বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত স্বপ্ন ‘জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি’ অর্জনের দ্বারপ্রান্তে উপনীত আমরা। বঙ্গবন্ধু দেশকে ভৌগোলিকভাবে স্বাধীন করেছেন আর তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতি অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতি ও সমৃদ্ধির দেশ হিসেবে পরিচিত। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হবে দেশ। একই সঙ্গে এ সময়ের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত হবে আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরের সক্ষমতা অর্জন করেছে।

মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস, বিদ্যুৎ, জ্বলানি খাতের উন্নয়ন, বিনামূল্যে প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠ্য বই প্রদান, পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান, স্কুলফিডিং কর্মসূচি, নারী শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, যোগাযোগ, সড়ক অবকাঠামো, রাস্তাঘাট, পুল, কালভার্ট উন্নয়ন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পটুয়াখালীর পায়রা নদীতে ‘পায়রা বন্দর স্থাপন, রেলপথের সম্প্রসারণ, অত্যাধুনিক রেলবগি, ইঞ্জিন আমদানি, রাজধানীতে মেট্রোরেল স্থাপন, ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট চালু, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চার লেনে উন্নীত, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক চার লেনে উন্নীত, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে।

স্বাধীনতার এত বছর পরে বড় অর্জন হচ্ছে প্রায় ১৮ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কৃষিতে সরকারের নব নব সংযোজন, প্রযুক্তির প্রয়োগ, অঞ্চল, মাটি, আবহাওয়া উপযোগী ধান, গমসহ অন্যান্য বীজ উদ্ভাবন বিশেষ করে ৪৮ রকমের হাইব্রিড জাতের উন্নত ও অধিক ফলনশীল ধান উদ্ভাবন করায় হাজার বছরের খাদ্য ঘাটতির দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। শিক্ষার হার বেড়েছে, মানুষের গড় আয়, রিজার্ভ, রেমিটেন্স বেড়েছে ঈর্ষণীয় হারে, যা এখন দৃশ্যমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার ১০ মেগা প্রকল্পের শতভাগ বাস্তবায়ন হলে বিশ্বে বাংলাদেশ হবে উন্নয়নের রোল মডেল।

দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের সফলতার দিকে তাকিয়ে থাকে। এ বিশাল অংশ খুবই নিশ্চুপ থাকেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ এখনও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে জিয়াউর রহমানের তুলনা করেন। বিএনপির শাসনামলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের শাসনামলের তুলনা করেন। এ তুলনা যারা করেন তারা রাজনৈতিকভাবে, মানসিকভাবে দৈন্যতায়, হীনমন্যতায় ভোগেন। এতে লাভবান হয় অপশক্তি, রাজনীনিতে অনাহূত বির্তক সৃষ্টি করা হয়। ঠিক এমনি করে দীর্ঘ ৪৯ বছর ধরে এই অপশক্তিই মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং বর্তমানে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের নিরন্তর অপচেষ্টায় লিপ্ত। এখন প্রয়োজন এই অপশক্তির বিরুদ্ধে সচেতন সমাজ, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্য।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিশ্বের নবীনতম দেশ ও অন্যতম দরিদ্র দেশও ছিল বটে। ২৫ মার্চ কালরাত্রির পর ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ দেখতে বিশ্বব্যাংকের একটি বিশেষজ্ঞ দল কয়েকটি শহর পরিদর্শন শেষে মন্তব্য করেছিল- ‘এগুলো দেখতে পারমাণবিক হামলার পরের একটি সকালের মতোই।’ প্রায় ৬০ লাখ বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছিল। ১৪ লাখ কৃষক পরিবার চাষাবাসের সরঞ্জামাদি ও পশু হারিয়েছিল। পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। রাস্তা ক্ষতিগ্র্রস্ত, সেতু বিধ্বস্ত এবং অভ্যন্তরীণ জলপথ অবরুদ্ধ হয়েছিল।

শুধু তাই না, ত্রিশ লাখ শহীদ, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভম আর বিপুল সম্পদ ক্ষতির বিনিময়ে অর্জিত হলো বাঙালির বিজয় ও স্বাধীনতা। পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের আগ পর্যন্ত দেশটির ধ্বংসযজ্ঞ শুধুই বেড়েছে। কেননা পাকিস্তান বাংলাদেশের পোড়ামাটি চেয়েছিল। বাস্তবে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা তাই করেছিল।

আমরা বিজয়ের ৪৯ বছর পার করে ফেলেছি। এ ৪৯ বছরের মধ্যে ২৮ বছর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সরকার ক্ষমতায় ছিল। জাতি রাষ্ট্র গঠনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে সুস্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক মদদ ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি আখ্যা দিয়েছিল। অথচ স্বাধীনতার ৪৯ বছরে বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, ‘সম্পদে ভরপুর এবং সম্পদে উপচে পড়া ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে।’ এটা সম্ভব হয়েছে স্বাধীনতা অর্জন এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ, সাহসী, সৎ, যোগ্য নেতৃত্বের ফলে।

আশির দশকে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে তৈরি পোশাক রফতানি শুরু করে। কালক্রমে এ শিল্প এখন দেশের অন্যমত প্রধান রফতানি পণ্যে পরিণত হয়েছে। এখন আমরা বিশ্ব উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়কে চলমান রয়েছি। জেপি মরগ্যান বলেছে, বাংলাদেশ অগ্রসর দেশগুলোর মধ্যে ‘ফ্রন্টিয়ার ফাইভ’। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে ‘লিঙ্গভিত্তিক আয় সমতায় দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ’।

নতুন প্রজন্ম এ দেশকে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ১০ বছর আগে এটি ছিল অচিন্তনীয়। কাজেই স্বাধীনতার ৪৯ বছরে এখন যে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন, যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে তার ধারাবাহিকতা রক্ষায় প্রয়োজন আগামীতে সরকারের ধারাবাহিকতা। তাহলে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি পূর্ণতা পাবে।

[লেখক : সাংবাদিক]

motaherbd123@gmail.com