দ্বিগুণ ফলে বীজ বাদাম আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার নদীর চরসহ অনাবাদি জমিতে বীজ বাদাম চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে এলাকার কৃষকদের মাঝে।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এর চেয়ারম্যান আলহাজ ড. মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী বীজ বাদাম চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য উপজেলার সদর ইউপির দাউদপুর গ্রামে আদিবাসী চাষিদের মাঝে বীজ ও সহযোগিতা দিয়ে প্রথম পর্যায়ে ১০-১২ বিঘা জমিতে এই বীজ বাদাম চাষ করান। বীজ বাদাম একটি উন্নত প্রজাতির বাদাম। এ বাদাম চাষ হয় বার্মা ও মালয়েশিয়ায়। বিএমডিএ চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি থেকে এই বীজ বাদামের বীজ সংগ্রহ করে এনে এখানকার চাষিদের মাঝে বিতরণ করেন। প্রথম পর্যায়ে উপজেলার সদর ইউপির দাউদপুর গ্রামে ছোট যমুনা নদীর চরে ১০-১২ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক বীজ বাদাম চাষ করা হয়। তার পাশে কিছু জমিতে বারি-৮,৯ জাতের দেশীয় প্রজাতির বাদাম চাষ করা হয়। দেশীয় প্রজাতির বাদামের তুলনায় বীজ বাদাম গাছের গুণগতমান খুবই উন্নত। দেখলেই যেন মন ভরে ওঠে। দাউদপুর গ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উচ্চশিক্ষিত বিজয় পাহানের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক এই নদীর চরে তিন বিঘা জমিতে বীজ বাদাম চাষ করেছে। এছাড়া ওই গ্রামে আনোয়ার, উজ্জ্বল, জালাল, এরশাদ, মনোয়ার তারাও এই বীজ বাদাম চাষ করেছে। চাষিরা বীজ বাদাম চাষ করে অনেক লাভবান হবে এমনটা আশাবাদী। বীজ বাদামের এক একটি ফলে চারটি বীজ থাকে। দেখতেও সাইজে অনেক বড়। এ বাদামে ঠোসা পড়ে কম। দেশি বাদামের তুলনায় এই বাদাম দ্বিগুণেরও বেশি ফলন হয়। বর্তমান বাজার মূল্য দেশি বাদাম ১১০ টাকা কেজি এবং বীজ বাদাম ২৬০-২৬৫ টাকা কেজি। একবিঘা জমিতে বীজ বাদাম শুকিয়ে ৮-১০ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। প্রতি মণ বিক্রি হবে প্রায় ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি। একবিঘা এই বীজ বাদাম জমিতে চাষ করতে সর্বোচ্চ খরচ হবে দুই থেকে তিন হাজার টাকা। ইতোমধ্যেই কিছুদিন আগে রাজশাহীর বিএমডিএ চেয়ারম্যান ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী নদীর চরের বীজ বাদাম ক্ষেত পরিদর্শন করে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ দেশের কোন স্থানেই যেন একখ- জমি পড়ে না থাকে। সব জায়গাতেই যেন চাষাবাদের ব্যবস্থা করা হয়। তার এইা নির্দেশনা মোতাবেক বদলগাছী নদীর চড়ে অনাবাদি জমিতে বীজ বাদাম চাষ করা হয়। এ বাদাম সাধারণত ফেব্রুয়ারি-মার্চ-এপ্রিল মাসে চাষ করা হয়। বাদাম উত্তোলন হলে বীজ হিসেবে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ চাষিদের ন্যায্যমূল্য দিয়ে কিনে নিবে এবং পরবর্তীতে পদ্মা নদীর চড়সহ উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন চড় এলাকা বা অনাবাদি জমিতে এই বীজ বাদাম চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হবে। এতে চাষিরা লাভবান হবেন।

বাদাম চাষি দাউদপুর গ্রামের আদিবাসী শিক্ষিত যুবক বিজয় পাহান বলেন, বাদামের গাছে ফুল এসেছে এবং ফুল থেকে ডগা বের হয়েছে। গাছের গোড়া বেঁধে দেয়া হচ্ছে। তিনি প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে এই বাদাম চাষ করেছেন। তিনি লাভবান হবেন এমনটা আশাবাদী।

তার বাদাম চাষ দেখে আশেপাশের কৃষকরা আগামী বছরে এই বাদাম চাষ করবেন বলে তারা আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২০ , ১০ মাঘ ১৪২৬, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

দ্বিগুণ ফলে বীজ বাদাম আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

প্রতিনিধি, বদলগাছী (নওগাঁ)

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার নদীর চরসহ অনাবাদি জমিতে বীজ বাদাম চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে এলাকার কৃষকদের মাঝে।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এর চেয়ারম্যান আলহাজ ড. মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী বীজ বাদাম চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য উপজেলার সদর ইউপির দাউদপুর গ্রামে আদিবাসী চাষিদের মাঝে বীজ ও সহযোগিতা দিয়ে প্রথম পর্যায়ে ১০-১২ বিঘা জমিতে এই বীজ বাদাম চাষ করান। বীজ বাদাম একটি উন্নত প্রজাতির বাদাম। এ বাদাম চাষ হয় বার্মা ও মালয়েশিয়ায়। বিএমডিএ চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি থেকে এই বীজ বাদামের বীজ সংগ্রহ করে এনে এখানকার চাষিদের মাঝে বিতরণ করেন। প্রথম পর্যায়ে উপজেলার সদর ইউপির দাউদপুর গ্রামে ছোট যমুনা নদীর চরে ১০-১২ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক বীজ বাদাম চাষ করা হয়। তার পাশে কিছু জমিতে বারি-৮,৯ জাতের দেশীয় প্রজাতির বাদাম চাষ করা হয়। দেশীয় প্রজাতির বাদামের তুলনায় বীজ বাদাম গাছের গুণগতমান খুবই উন্নত। দেখলেই যেন মন ভরে ওঠে। দাউদপুর গ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উচ্চশিক্ষিত বিজয় পাহানের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক এই নদীর চরে তিন বিঘা জমিতে বীজ বাদাম চাষ করেছে। এছাড়া ওই গ্রামে আনোয়ার, উজ্জ্বল, জালাল, এরশাদ, মনোয়ার তারাও এই বীজ বাদাম চাষ করেছে। চাষিরা বীজ বাদাম চাষ করে অনেক লাভবান হবে এমনটা আশাবাদী। বীজ বাদামের এক একটি ফলে চারটি বীজ থাকে। দেখতেও সাইজে অনেক বড়। এ বাদামে ঠোসা পড়ে কম। দেশি বাদামের তুলনায় এই বাদাম দ্বিগুণেরও বেশি ফলন হয়। বর্তমান বাজার মূল্য দেশি বাদাম ১১০ টাকা কেজি এবং বীজ বাদাম ২৬০-২৬৫ টাকা কেজি। একবিঘা জমিতে বীজ বাদাম শুকিয়ে ৮-১০ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। প্রতি মণ বিক্রি হবে প্রায় ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি। একবিঘা এই বীজ বাদাম জমিতে চাষ করতে সর্বোচ্চ খরচ হবে দুই থেকে তিন হাজার টাকা। ইতোমধ্যেই কিছুদিন আগে রাজশাহীর বিএমডিএ চেয়ারম্যান ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী নদীর চরের বীজ বাদাম ক্ষেত পরিদর্শন করে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ দেশের কোন স্থানেই যেন একখ- জমি পড়ে না থাকে। সব জায়গাতেই যেন চাষাবাদের ব্যবস্থা করা হয়। তার এইা নির্দেশনা মোতাবেক বদলগাছী নদীর চড়ে অনাবাদি জমিতে বীজ বাদাম চাষ করা হয়। এ বাদাম সাধারণত ফেব্রুয়ারি-মার্চ-এপ্রিল মাসে চাষ করা হয়। বাদাম উত্তোলন হলে বীজ হিসেবে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ চাষিদের ন্যায্যমূল্য দিয়ে কিনে নিবে এবং পরবর্তীতে পদ্মা নদীর চড়সহ উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন চড় এলাকা বা অনাবাদি জমিতে এই বীজ বাদাম চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হবে। এতে চাষিরা লাভবান হবেন।

বাদাম চাষি দাউদপুর গ্রামের আদিবাসী শিক্ষিত যুবক বিজয় পাহান বলেন, বাদামের গাছে ফুল এসেছে এবং ফুল থেকে ডগা বের হয়েছে। গাছের গোড়া বেঁধে দেয়া হচ্ছে। তিনি প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে এই বাদাম চাষ করেছেন। তিনি লাভবান হবেন এমনটা আশাবাদী।

তার বাদাম চাষ দেখে আশেপাশের কৃষকরা আগামী বছরে এই বাদাম চাষ করবেন বলে তারা আগ্রহ প্রকাশ করছেন।