উচ্চ আদালতে মামলায় যেতে পারে সুজন

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, আইনি নোটিশ দেয়ার পরও ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তথ্য দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে কমিশনের কাছ থেকে সব সময় তথ্য পাওয়া গেছে। কমিশন এবার তুঘলকি কা- ঘটিয়েছে। ইসির এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তথ্য না দেয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ‘সুজন’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ইভিএম ভোটের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গত নির্বাচনে একজন নির্বাচনী কর্মকর্তা নিজেই মেশিনকে অপারেট করে যাদের আঙ্গুলের ছাপ পড়ে না, তাদের ভোট দিতে পারতেন। এরকমভাবে তিনি ২৫ শতাংশ ভোট দিতে পারবেন। ব্যালট পেপারে ভোট দেয়া হলে তাতে তো একটা ডকুমেন্ট থাকে। কিন্তু ইভিএমে কাকে ভোট দিয়েছেন তার কোন ডকুমেন্ট থাকবে না। একজন ভোটার তার প্রার্থীকে ভোট দিলেন কিন্তু কাউন্ট হলো অন্যপ্রার্থীর পক্ষে। এ ক্ষেত্রে অডিট করার কোন সুযোগ নাই।

সুজনের সভাপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার দিলীপ কুমার সরকার। বক্তব্য রাখেন সুজনের সদস্য ক্যামেলিয়া চৌধুরী। এ সময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মেয়র প্রার্থীদের শিক্ষার হার বেড়েছে : কাউন্সিলরদের কমেছে

সুজনের প্রাক নির্বাচনী প্রার্থী বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়লেও কাউন্সিলরসহ মোট প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা আগের চেয়ে কমেছে। প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ীর সংখ্যা গতবারের তুলনায় বেশি।

প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ী বেশি : ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ী বেশি দেখা যাচ্ছে। তাতে মনে হচ্ছে, রাজনীতি এখন পুরোপুরি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এতে আমাদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসায়ীদের করায়ত্বে চলে যাচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে কাউন্সিলর প্রার্থীও দলীয় মনোনয়নের ভিত্তিতে হচ্ছে। অথচ শুধুমাত্র মেয়র পদে দলীয় ভিত্তিতে প্রার্থী হবেন। দলীয়ভাবে কাউন্সিলর প্রার্থী হলে প্রার্থী সংখ্যা কমে যায়, যা নাগরিকদের জন্য ইতিবাচক নয়। নির্বাচনে বেশি প্রার্থী মানেই যোগ্যপ্রার্থীর অংশগ্রহণ।

পরিবেশ রক্ষায় ইসির সক্রিয়তা নেই : পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক পলিথিনে মোড়ানো পোস্টারের বিষয়ে বদিউল আলম বলেন, এরইমধ্যে উচ্চ আদালত লেমিনেটিং করা পোস্টার প্রদর্শনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। এখন আদালত নিষেধাজ্ঞা দিলেও তাতো বাস্তবায়ন করতে হবে। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশনের কোন সক্রিয়তা নেই। এর কারণ সরকারি দল তাদের উপর বিরাগভাজন হবে। এটা একটা অশনি সংকেত। তার মানে অন্যায় আরও বেড়ে যাবে।

ইভিএমে ২৫ শতাংশ ভোট নির্বাচনী কর্মকর্তার হাতে :

ইভিএম ভোটের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গত নির্বাচনে একজন নির্বাচনী কর্মকর্তা নিজেই মেশিনকে অপারেট করে যাদের আঙ্গুলের ছাপ পড়ে না, তাদের ভোট দিতে পারতেন। এরকমভাবে তিনি ২৫ শতাংশ ভোট দিতে পারবেন। এটি যদি চালু থাকে, নির্বাচনী কর্মকর্তারা তাদের ক্ষমতা বলে পছন্দসই প্রার্থীকে ভোট দিয়ে দেন, তাহলে সেটি হবে ভয়ানক অবস্থা। আমরা জানি না এ নির্বাচনে এ রকম এখতিয়ার দেয়া হয়েছে কি না।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ব্যালট পেপারে ভোট দেয়া হলে তাতে তো একটা ডকুমেন্ট থাকে। কিন্তু ইভিএমে কাকে ভোট দিয়েছেন তার কোন ডকুমেন্ট থাকবে না। একজন ভোটার তার প্রার্থীকে ভোট দিলেন কিন্তু কাউন্ট হলো অন্যপ্রার্থীর পক্ষে। এ ক্ষেত্রে অডিট করার কোন সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন যা বলবে তাই বিশ্বাস করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২০ , ১২ মাঘ ১৪২৬, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪১

তথ্য দিচ্ছে না ইসি

উচ্চ আদালতে মামলায় যেতে পারে সুজন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, আইনি নোটিশ দেয়ার পরও ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তথ্য দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর আগে কমিশনের কাছ থেকে সব সময় তথ্য পাওয়া গেছে। কমিশন এবার তুঘলকি কা- ঘটিয়েছে। ইসির এ ধরনের আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তথ্য না দেয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে ‘সুজন’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ইভিএম ভোটের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গত নির্বাচনে একজন নির্বাচনী কর্মকর্তা নিজেই মেশিনকে অপারেট করে যাদের আঙ্গুলের ছাপ পড়ে না, তাদের ভোট দিতে পারতেন। এরকমভাবে তিনি ২৫ শতাংশ ভোট দিতে পারবেন। ব্যালট পেপারে ভোট দেয়া হলে তাতে তো একটা ডকুমেন্ট থাকে। কিন্তু ইভিএমে কাকে ভোট দিয়েছেন তার কোন ডকুমেন্ট থাকবে না। একজন ভোটার তার প্রার্থীকে ভোট দিলেন কিন্তু কাউন্ট হলো অন্যপ্রার্থীর পক্ষে। এ ক্ষেত্রে অডিট করার কোন সুযোগ নাই।

সুজনের সভাপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার দিলীপ কুমার সরকার। বক্তব্য রাখেন সুজনের সদস্য ক্যামেলিয়া চৌধুরী। এ সময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মেয়র প্রার্থীদের শিক্ষার হার বেড়েছে : কাউন্সিলরদের কমেছে

সুজনের প্রাক নির্বাচনী প্রার্থী বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়লেও কাউন্সিলরসহ মোট প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা আগের চেয়ে কমেছে। প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ীর সংখ্যা গতবারের তুলনায় বেশি।

প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ী বেশি : ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে ব্যবসায়ী বেশি দেখা যাচ্ছে। তাতে মনে হচ্ছে, রাজনীতি এখন পুরোপুরি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এতে আমাদের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসায়ীদের করায়ত্বে চলে যাচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে কাউন্সিলর প্রার্থীও দলীয় মনোনয়নের ভিত্তিতে হচ্ছে। অথচ শুধুমাত্র মেয়র পদে দলীয় ভিত্তিতে প্রার্থী হবেন। দলীয়ভাবে কাউন্সিলর প্রার্থী হলে প্রার্থী সংখ্যা কমে যায়, যা নাগরিকদের জন্য ইতিবাচক নয়। নির্বাচনে বেশি প্রার্থী মানেই যোগ্যপ্রার্থীর অংশগ্রহণ।

পরিবেশ রক্ষায় ইসির সক্রিয়তা নেই : পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক পলিথিনে মোড়ানো পোস্টারের বিষয়ে বদিউল আলম বলেন, এরইমধ্যে উচ্চ আদালত লেমিনেটিং করা পোস্টার প্রদর্শনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। এখন আদালত নিষেধাজ্ঞা দিলেও তাতো বাস্তবায়ন করতে হবে। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশনের কোন সক্রিয়তা নেই। এর কারণ সরকারি দল তাদের উপর বিরাগভাজন হবে। এটা একটা অশনি সংকেত। তার মানে অন্যায় আরও বেড়ে যাবে।

ইভিএমে ২৫ শতাংশ ভোট নির্বাচনী কর্মকর্তার হাতে :

ইভিএম ভোটের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গত নির্বাচনে একজন নির্বাচনী কর্মকর্তা নিজেই মেশিনকে অপারেট করে যাদের আঙ্গুলের ছাপ পড়ে না, তাদের ভোট দিতে পারতেন। এরকমভাবে তিনি ২৫ শতাংশ ভোট দিতে পারবেন। এটি যদি চালু থাকে, নির্বাচনী কর্মকর্তারা তাদের ক্ষমতা বলে পছন্দসই প্রার্থীকে ভোট দিয়ে দেন, তাহলে সেটি হবে ভয়ানক অবস্থা। আমরা জানি না এ নির্বাচনে এ রকম এখতিয়ার দেয়া হয়েছে কি না।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ব্যালট পেপারে ভোট দেয়া হলে তাতে তো একটা ডকুমেন্ট থাকে। কিন্তু ইভিএমে কাকে ভোট দিয়েছেন তার কোন ডকুমেন্ট থাকবে না। একজন ভোটার তার প্রার্থীকে ভোট দিলেন কিন্তু কাউন্ট হলো অন্যপ্রার্থীর পক্ষে। এ ক্ষেত্রে অডিট করার কোন সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন যা বলবে তাই বিশ্বাস করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।