ঢাকা সিটি নির্বাচন : আর ২ দিন

ভোটগ্রহণ প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে : প্রচারণা তুঙ্গে

আর মাত্র ২ দিন পরই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেন্দ্রগুলো সিসিটিভির আওতায় আনা হচ্ছে। ভোটারদের সুবিধার্থে কেন্দ্রগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রদর্শন করা হচ্ছে।

আগামীকাল মধ্যরাতে শেষ হবে প্রচারণা। তাই হন্যে হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। মেয়র প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পাশাপাশি ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নানা প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ‘ভোট চাই ভোটারের, দোয়া চাই সকলের’ এমন স্লোগানে ঢাকার অলিগলি মুখরিত। পোস্টার ও মাইকিংয়ে ঢাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। গতকাল ব্যারিস্টার তাপসের একটি নির্বাচনী ক্যাম্প পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলেও সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল।

এদিকে, এ নির্বাচন নিয়ে ভোটারদেরও আগ্রহের কমতি নেই। চায়ের দোকান, আড্ডাস্থল কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাই আলোচনায় ব্যস্ত প্রার্থীদের নিয়ে। প্রায় ৫৪ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের জন্য দু’জনকে মেয়র নির্বাচিত করবেন। ইসির সিস্টেম ম্যানেজার মো. আশরাফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার জন্য ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা মক ভোটিংয়ের দিন, নির্বাচনের পূর্বের দিন ও নির্বাচনের দিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে, ভোটগ্রহণের দিন গোপন কক্ষের কোন দৃশ্য সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আসবে না।

রিটার্নিং কার্যালয় সূত্র জানায়, গতকাল সকাল থেকে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম প্রদর্শন করা হয়েছে। দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে ভোটাররা ইভিএমে ভোট দান পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মক ভোট হবে।

মঙ্গলবার ভোর রাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আ’লীগ প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের একটি নির্বাচনী ক্যাম্প দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিটি করপোরেশনের ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের দনিয়া বাজারের মায়ের দোয়া হোটেলের সামনে অবস্থিত অস্থায়ী ক্যাম্প পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তাপস এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীর অস্থায়ী নির্বাচনী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করছিলেন।

দনিয়া এলাকায় অব?স্থিত এ কে উচ্চ বিদ্যালয়ে শেখ ফজলে নূর তাপসের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আহ্সান বিন বাশার বলেন, এ ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি।

তাপস : দক্ষিণে নৌকার মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস গতকাল রাজারবাগ এলাকা থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। তিনি সদরঘাট এলাকায়ও প্রচারণা চালান। এ সময় তিনি বলেন, আমরা চাই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ যাতে কোনভাবে নষ্ট না হয়। সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে কেউ যাতে পরিবেশকে বিঘি্নত করতে না পারে। নির্বাচন কমিশনসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে আমি অনুরোধ করব, কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যবস্থা নিন।

ঢাকার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত আমরা যেখানেই গণসংযোগ করছি না কেন, সব জায়গায় ঢাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া আমরা পাচ্ছি।

বিকেলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশর নির্মিত জলবায়ু উদ্বাস্তু আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মেয়র সাঈদ খোকন। তখন তাপস ওই এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। পরে গণমাধ্যম কর্মীদের খোকন বলেন, আমরা দুই ভাই। ঢাকাবাসীর জন্য একসঙ্গেই কাজ করব। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে ব্যারিস্টার তাপসকে নির্বাচিত করলে আমরা ইতিবাচক পরিবর্তনের যে সূচনা করেছিলাম, সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। শেখ ফজলে নূর তাপসকে আমি ভোট দেব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। নির্বাচনী আচরণবিধির বাধ্যবাধকতা না থাকলে আমি ঢাকাবাসীকে ফজলে নূর তাপসকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানাতাম।

ইশরাক : দক্ষিণে ধানের শীষের প্রার্থী ইশরাক হোসেন গতকাল নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছেন। তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে কয়েকটি বৈঠকও করেছেন।

আতিকুল : উত্তরে নৌকার প্রার্থী আতিকুল ইসলাম গতকাল প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এদিন তিনি পল্লবী থানা মাঠ থেকে গণসংযোগ শুরু করেন এবং সন্ধ্যায় ফেনী সমিতির সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি বলেন, আমরা সবাই চাই একটি সুন্দর, সুষ্ঠু, সচল, গতিময় ও আধুনিক ঢাকা। আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেসব মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। এই শহরে যানজট, জলজট, মশার উপদ্রব, বায়ুদূষণসহ নানা চ্যালেঞ্জ। আমাদের শুরুটা করতে হবে, তাহলে শেষ হবেই। সিটি করপোরেশের ট্যাক্স আর ফেস টু ফেস এসে দিতে হবে না, আগামী ছয় মাসের সেই কাজ আমরা শুরু করব। ফেস টু ফেস সার্ভিস যত কমে যাবে, দুর্নীতি তত কমবে এবং আমাদের কাজের গতিও তত বাড়বে। সেই সঙ্গে নাগরিকদের ভোগান্তি হয়রানি কমবে এবং ট্যাক্স আদায়ও বাড়বে। আকাশের যত তারা, সিটি করপোরেশনের তত ধারা’ এমন এক জুজুর ভয়, ভোগান্তি আর থাকবে না। নৌকার গিয়ার একটাই সেটা হলো ফ্রন্টগিয়ার, ফ্রন্টগিয়ার মানেই উন্নয়নের গিয়ার। নৌকা দিয়েছে স্বাধীনতা, নৌকা দিয়েছে উন্নয়ন। নৌকা দেবে সুন্দর, সচল, আধুনিক ঢাকা।

তাবিথ : উত্তরে ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল গতকাল মোহাম্মদপুরের শেরশাহসুরী ঈদগাঁও মাঠের সামনে থেকে প্রচারণা শুরু করেন। এদিন তিনি তাজমহল রোড, কৃষি মার্কেট, আদাবর বাজার ও রোকেয়া স্মরণীসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তিনি বলেন, আপনারা (ইসি) নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুন। যাতে ভোটাররা ভয়-ভীতি মুক্ত হয়ে ভোট প্রয়োগ করতে পারেন। আমরা ইসিতে ১৪০টির বেশি অভিযোগ দিয়েছি। এগুলো আমলে না নিয়ে ১০২টি নিষ্পত্তি করে দিয়েছে। এই যদি হয় ইসির ভূমিকা তাহলে ঢাকায় নির্বাচনের যে উৎসব আছে বিলীন হয়ে যাবে। সরকার ভয় পাচ্ছে। ধানের শীষের পক্ষে গণঅভ্যুত্থান ঘটে গেছে এই ভেবে। এবার তাই তারা (প্রতিপক্ষ) বিশৃঙ্খলা ও বির্তক সৃষ্টি করতে চাইবে। আমরা কোন সুযোগ দেব না। ১ তারিখ সবাই নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আমরা আমাদের ভোট দেব। আমরা সবচেয়ে বড় পরির্বতন আনব। জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে আনব। ঢাকাকে আমরা বসবাসযোগ্য সবুজায়ন করব।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা জানায়, এবারের নির্বাচনে ৪০ হাজারের মতো ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। উত্তর সিটিতে ২৭ প্লাটুন ও দক্ষিণ সিটিতে ৩৮ প্লাটুন বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি দুইটি সাধারণ ওয়ার্ডে এক প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। ১৩০ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এবারের দুই সিটি ভোটে সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮জন করে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন থাকবে।

বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২০ , ১৫ মাঘ ১৪২৬, ৩ জমাদিউস সানি ১৪৪১

ঢাকা সিটি নির্বাচন : আর ২ দিন

ভোটগ্রহণ প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে : প্রচারণা তুঙ্গে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

আর মাত্র ২ দিন পরই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কেন্দ্রগুলো সিসিটিভির আওতায় আনা হচ্ছে। ভোটারদের সুবিধার্থে কেন্দ্রগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রদর্শন করা হচ্ছে।

আগামীকাল মধ্যরাতে শেষ হবে প্রচারণা। তাই হন্যে হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। মেয়র প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পাশাপাশি ভোটারদের আকৃষ্ট করতে নানা প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। কাউন্সিলর প্রার্থীরাও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ‘ভোট চাই ভোটারের, দোয়া চাই সকলের’ এমন স্লোগানে ঢাকার অলিগলি মুখরিত। পোস্টার ও মাইকিংয়ে ঢাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। গতকাল ব্যারিস্টার তাপসের একটি নির্বাচনী ক্যাম্প পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলেও সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিকই ছিল।

এদিকে, এ নির্বাচন নিয়ে ভোটারদেরও আগ্রহের কমতি নেই। চায়ের দোকান, আড্ডাস্থল কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাই আলোচনায় ব্যস্ত প্রার্থীদের নিয়ে। প্রায় ৫৪ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের জন্য দু’জনকে মেয়র নির্বাচিত করবেন। ইসির সিস্টেম ম্যানেজার মো. আশরাফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার জন্য ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা মক ভোটিংয়ের দিন, নির্বাচনের পূর্বের দিন ও নির্বাচনের দিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে, ভোটগ্রহণের দিন গোপন কক্ষের কোন দৃশ্য সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আসবে না।

রিটার্নিং কার্যালয় সূত্র জানায়, গতকাল সকাল থেকে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম প্রদর্শন করা হয়েছে। দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে ভোটাররা ইভিএমে ভোট দান পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মক ভোট হবে।

মঙ্গলবার ভোর রাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আ’লীগ প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের একটি নির্বাচনী ক্যাম্প দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিটি করপোরেশনের ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের দনিয়া বাজারের মায়ের দোয়া হোটেলের সামনে অবস্থিত অস্থায়ী ক্যাম্প পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তাপস এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীর অস্থায়ী নির্বাচনী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করছিলেন।

দনিয়া এলাকায় অব?স্থিত এ কে উচ্চ বিদ্যালয়ে শেখ ফজলে নূর তাপসের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আহ্সান বিন বাশার বলেন, এ ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি।

তাপস : দক্ষিণে নৌকার মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস গতকাল রাজারবাগ এলাকা থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। তিনি সদরঘাট এলাকায়ও প্রচারণা চালান। এ সময় তিনি বলেন, আমরা চাই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ যাতে কোনভাবে নষ্ট না হয়। সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে কেউ যাতে পরিবেশকে বিঘি্নত করতে না পারে। নির্বাচন কমিশনসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে আমি অনুরোধ করব, কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যবস্থা নিন।

ঢাকার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত আমরা যেখানেই গণসংযোগ করছি না কেন, সব জায়গায় ঢাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া আমরা পাচ্ছি।

বিকেলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশর নির্মিত জলবায়ু উদ্বাস্তু আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মেয়র সাঈদ খোকন। তখন তাপস ওই এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। পরে গণমাধ্যম কর্মীদের খোকন বলেন, আমরা দুই ভাই। ঢাকাবাসীর জন্য একসঙ্গেই কাজ করব। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে ব্যারিস্টার তাপসকে নির্বাচিত করলে আমরা ইতিবাচক পরিবর্তনের যে সূচনা করেছিলাম, সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। শেখ ফজলে নূর তাপসকে আমি ভোট দেব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। নির্বাচনী আচরণবিধির বাধ্যবাধকতা না থাকলে আমি ঢাকাবাসীকে ফজলে নূর তাপসকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানাতাম।

ইশরাক : দক্ষিণে ধানের শীষের প্রার্থী ইশরাক হোসেন গতকাল নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছেন। তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে কয়েকটি বৈঠকও করেছেন।

আতিকুল : উত্তরে নৌকার প্রার্থী আতিকুল ইসলাম গতকাল প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এদিন তিনি পল্লবী থানা মাঠ থেকে গণসংযোগ শুরু করেন এবং সন্ধ্যায় ফেনী সমিতির সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি বলেন, আমরা সবাই চাই একটি সুন্দর, সুষ্ঠু, সচল, গতিময় ও আধুনিক ঢাকা। আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেসব মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। এই শহরে যানজট, জলজট, মশার উপদ্রব, বায়ুদূষণসহ নানা চ্যালেঞ্জ। আমাদের শুরুটা করতে হবে, তাহলে শেষ হবেই। সিটি করপোরেশের ট্যাক্স আর ফেস টু ফেস এসে দিতে হবে না, আগামী ছয় মাসের সেই কাজ আমরা শুরু করব। ফেস টু ফেস সার্ভিস যত কমে যাবে, দুর্নীতি তত কমবে এবং আমাদের কাজের গতিও তত বাড়বে। সেই সঙ্গে নাগরিকদের ভোগান্তি হয়রানি কমবে এবং ট্যাক্স আদায়ও বাড়বে। আকাশের যত তারা, সিটি করপোরেশনের তত ধারা’ এমন এক জুজুর ভয়, ভোগান্তি আর থাকবে না। নৌকার গিয়ার একটাই সেটা হলো ফ্রন্টগিয়ার, ফ্রন্টগিয়ার মানেই উন্নয়নের গিয়ার। নৌকা দিয়েছে স্বাধীনতা, নৌকা দিয়েছে উন্নয়ন। নৌকা দেবে সুন্দর, সচল, আধুনিক ঢাকা।

তাবিথ : উত্তরে ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল গতকাল মোহাম্মদপুরের শেরশাহসুরী ঈদগাঁও মাঠের সামনে থেকে প্রচারণা শুরু করেন। এদিন তিনি তাজমহল রোড, কৃষি মার্কেট, আদাবর বাজার ও রোকেয়া স্মরণীসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রচারণা চালান। এ সময় তিনি বলেন, আপনারা (ইসি) নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করুন। যাতে ভোটাররা ভয়-ভীতি মুক্ত হয়ে ভোট প্রয়োগ করতে পারেন। আমরা ইসিতে ১৪০টির বেশি অভিযোগ দিয়েছি। এগুলো আমলে না নিয়ে ১০২টি নিষ্পত্তি করে দিয়েছে। এই যদি হয় ইসির ভূমিকা তাহলে ঢাকায় নির্বাচনের যে উৎসব আছে বিলীন হয়ে যাবে। সরকার ভয় পাচ্ছে। ধানের শীষের পক্ষে গণঅভ্যুত্থান ঘটে গেছে এই ভেবে। এবার তাই তারা (প্রতিপক্ষ) বিশৃঙ্খলা ও বির্তক সৃষ্টি করতে চাইবে। আমরা কোন সুযোগ দেব না। ১ তারিখ সবাই নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আমরা আমাদের ভোট দেব। আমরা সবচেয়ে বড় পরির্বতন আনব। জনগণের ক্ষমতা ফিরিয়ে আনব। ঢাকাকে আমরা বসবাসযোগ্য সবুজায়ন করব।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা জানায়, এবারের নির্বাচনে ৪০ হাজারের মতো ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। উত্তর সিটিতে ২৭ প্লাটুন ও দক্ষিণ সিটিতে ৩৮ প্লাটুন বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি দুইটি সাধারণ ওয়ার্ডে এক প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। ১৩০ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এবারের দুই সিটি ভোটে সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮জন করে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন থাকবে।