করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যথাযথ প্রস্তুতি রয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। কেউ আক্রান্ত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি আছে। এই ভাইরাস মোকাবিলায় কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ২০০ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্যদের জন্য আয়োজিত হেলথ ক্যাম্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করলেও বাংলাদেশে কেউ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। তাই করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। তবে বাংলাদেশে কোন মানুষের করোনাভাইরাস ধরা না পড়লেও এটি প্রতিরোধে নানা ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে তিনটি বিশেষায়িত হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে ২০ বেডের একটি আইসিইউ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আরও প্রায় ২০০ বেড রাখা হয়েছে একই হাসপাতালে। পুরো কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী যদি আসে তাদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সব হাসপাতালেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে ডেডিকেট করা হয়েছে কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালকে। আমরা আশা করি, এই রোগ আমাদের দেশে আসবে না। তাও চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ ও দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যদি কারও শরীরে এ ভাইরাস দেখা দেয়, তবে সে সব হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হবে। এর পাশাপাশি দেশের বেসরকারি হাসপাতালে এ সংক্রান্ত দিক-নির্দেশনামূলক লিফলেট, বুকলেট পাঠানো হয়েছে। সে অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, চীন থেকে ফিরিয়ে আনা ৩১২ জনকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে রেখে স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তাদের কারও শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি। ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পরে তাদের সবাইকেই বাড়িতে যেতে দেয়া হবে। সংবাদকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহের কাজে নানারকম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অবগত করা হলে তিনি বলেন, মিডিয়া কর্মীদের দিনভর নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। এতে রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকে। এ কারণে ডিআরইউ সেন্টারে প্রয়োজনীয় জায়গা পেলে একটি সার্বক্ষণিক হেলথ কর্নার ব্যবস্থা করা হলে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। করোনা মোকাবিলায় এরইমধ্যে এয়ারপোর্ট, ল্যান্ডপোর্টে স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলোকে দিন দিন আরও জোরদার করা হচ্ছে।

দেশের স্বাস্থ্যসেবায় জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধান সমস্যা জনবল সংকট। এ কারণে নতুন করে আরও এক হাজার ৫০০ নার্স নিয়োগের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে মামলাজনিত কারণে হাসপাতালে ৩য়-৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও সেটি আবারও চালু করা হচ্ছে। সারাদেশে প্রায় তিন থেকে চার হাজার কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হবে। সবমিলিয়ে এবার ৩০ হাজার জনবল নিয়োগ দেয়া হবে। দেশে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ বেড়ে গেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিকসসহ নানা ব্যাধি বেড়ে গেছে। এ কারণে সব সরকারি হাসপাতালে এসব রোগের আধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলার হাসপাতালে কিডনি রোগীদের জন্য ৮টি করে বেড স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও সেন্ট্রাল হাসপাতালগুলোতেও রোগীদের জন্য বেড বাড়ানো হচ্ছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউয়ের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ। এতে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি রুহুল আমিন খন্দকার, ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরীসহ অন্যরা।

আক্রান্ত কোন

রোগী এখনও দেশে পাওয়া যায়নি

করোনাভাইরাস সংক্রমণের বাংলাদেশে এখনও আক্রান্ত কোন রোগী পাওয়া যায়নি। ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া একজন সন্দেহজনক রোগীকে পরীক্ষা করে তার শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। সিঙ্গাপুরে যে দু’জন বাংলাদেশের নাগরিক করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সম্পর্কে অবহিত করা হয়। করোনাভাইরাসর নতুন নামকরণ কভিড (ঈঙঠওউ-১৯) সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে অবহিত করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সংকট ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে এবং জেনেভাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আহুত বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ সম্মেলন সম্পর্কে অবহিত করা হয়। গতকাল থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে ভারত থেকে আগত যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ স্বাস্থ্য অধিদফতরে ব্যক্তি মালিকানাধীন হাসপাতালসমূহের ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। উস্ত বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ব্যক্তি মালিকানাধীন হাসপাতালগুলোকে অতি দ্রুত আইসোলেশন ইউনিট খোলার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। ব্যবস্থাপকরা এতে সম্মতি প্রদান করেন ও সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস : গতকাল সকালে সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদফতরের উদ্যোগে করোনাভাইরাস বিষয়ক একটি সেমিনার ঢাকা সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে করোনা সংক্রান্ত বিশ্বি ও বাংলাদেশ পরিস্থিতি এবং সংক্রমণ ও লক্ষণ ভিত্তিক রোগ নির্ণয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইইডিসিআর-এর পরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এবং পরিচালক রোগ নিয়ন্ত্রণ ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী।

স্বাস্থ্য পরিস্থিতি : সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে রাখা ১১ জন এবং আশাকোনা কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রে উহান ফেরত ৩০১ যাত্রীরা সুস্থ আছেন। গতকাল পর্যন্ত বিমানবন্দরসহ স্থল ও নৌ বন্দরে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৯৩ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা (থার্মাল স্ক্যান) করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৫২১ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।

শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধে ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোবেন (অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ)। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না, ইতোমধ্যে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন, কাশি শিষ্টাচার মেনে চলুন (হাঁচি/কাশির সময় বাহু/টিস্যু/কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন), অসুস্থ পশু/পাখির সংস্পর্শ পরিহার করুন, মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খাবেন, অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন, জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত চীন ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন এবং প্রয়োজন ব্যতীত এ সময়ে বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করুন। অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করুন।

বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৩০ মাঘ ১৪২৬, ১৮ জমাদিউল সানি ১৪৪১

দেশে এখনও কেউ আক্রান্ত হয়নি

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যথাযথ প্রস্তুতি রয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। কেউ আক্রান্ত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি আছে। এই ভাইরাস মোকাবিলায় কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ২০০ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্যদের জন্য আয়োজিত হেলথ ক্যাম্প উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে করোনাভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করলেও বাংলাদেশে কেউ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। তাই করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। তবে বাংলাদেশে কোন মানুষের করোনাভাইরাস ধরা না পড়লেও এটি প্রতিরোধে নানা ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে তিনটি বিশেষায়িত হাসপাতালে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে ২০ বেডের একটি আইসিইউ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আরও প্রায় ২০০ বেড রাখা হয়েছে একই হাসপাতালে। পুরো কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী যদি আসে তাদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সব হাসপাতালেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে ডেডিকেট করা হয়েছে কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালকে। আমরা আশা করি, এই রোগ আমাদের দেশে আসবে না। তাও চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ ও দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যদি কারও শরীরে এ ভাইরাস দেখা দেয়, তবে সে সব হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হবে। এর পাশাপাশি দেশের বেসরকারি হাসপাতালে এ সংক্রান্ত দিক-নির্দেশনামূলক লিফলেট, বুকলেট পাঠানো হয়েছে। সে অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, চীন থেকে ফিরিয়ে আনা ৩১২ জনকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে রেখে স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তাদের কারও শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি। ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পরে তাদের সবাইকেই বাড়িতে যেতে দেয়া হবে। সংবাদকর্মীরা সংবাদ সংগ্রহের কাজে নানারকম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অবগত করা হলে তিনি বলেন, মিডিয়া কর্মীদের দিনভর নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। এতে রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকে। এ কারণে ডিআরইউ সেন্টারে প্রয়োজনীয় জায়গা পেলে একটি সার্বক্ষণিক হেলথ কর্নার ব্যবস্থা করা হলে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। করোনা মোকাবিলায় এরইমধ্যে এয়ারপোর্ট, ল্যান্ডপোর্টে স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেগুলোকে দিন দিন আরও জোরদার করা হচ্ছে।

দেশের স্বাস্থ্যসেবায় জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধান সমস্যা জনবল সংকট। এ কারণে নতুন করে আরও এক হাজার ৫০০ নার্স নিয়োগের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে মামলাজনিত কারণে হাসপাতালে ৩য়-৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও সেটি আবারও চালু করা হচ্ছে। সারাদেশে প্রায় তিন থেকে চার হাজার কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হবে। সবমিলিয়ে এবার ৩০ হাজার জনবল নিয়োগ দেয়া হবে। দেশে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ বেড়ে গেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিকসসহ নানা ব্যাধি বেড়ে গেছে। এ কারণে সব সরকারি হাসপাতালে এসব রোগের আধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলার হাসপাতালে কিডনি রোগীদের জন্য ৮টি করে বেড স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও সেন্ট্রাল হাসপাতালগুলোতেও রোগীদের জন্য বেড বাড়ানো হচ্ছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউয়ের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ। এতে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি রুহুল আমিন খন্দকার, ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরীসহ অন্যরা।

আক্রান্ত কোন

রোগী এখনও দেশে পাওয়া যায়নি

করোনাভাইরাস সংক্রমণের বাংলাদেশে এখনও আক্রান্ত কোন রোগী পাওয়া যায়নি। ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া একজন সন্দেহজনক রোগীকে পরীক্ষা করে তার শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। সিঙ্গাপুরে যে দু’জন বাংলাদেশের নাগরিক করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সম্পর্কে অবহিত করা হয়। করোনাভাইরাসর নতুন নামকরণ কভিড (ঈঙঠওউ-১৯) সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে অবহিত করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সংকট ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে এবং জেনেভাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আহুত বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ সম্মেলন সম্পর্কে অবহিত করা হয়। গতকাল থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে ভারত থেকে আগত যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ স্বাস্থ্য অধিদফতরে ব্যক্তি মালিকানাধীন হাসপাতালসমূহের ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। উস্ত বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ব্যক্তি মালিকানাধীন হাসপাতালগুলোকে অতি দ্রুত আইসোলেশন ইউনিট খোলার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। ব্যবস্থাপকরা এতে সম্মতি প্রদান করেন ও সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস : গতকাল সকালে সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদফতরের উদ্যোগে করোনাভাইরাস বিষয়ক একটি সেমিনার ঢাকা সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে করোনা সংক্রান্ত বিশ্বি ও বাংলাদেশ পরিস্থিতি এবং সংক্রমণ ও লক্ষণ ভিত্তিক রোগ নির্ণয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইইডিসিআর-এর পরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এবং পরিচালক রোগ নিয়ন্ত্রণ ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী।

স্বাস্থ্য পরিস্থিতি : সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে রাখা ১১ জন এবং আশাকোনা কোয়ারান্টাইন কেন্দ্রে উহান ফেরত ৩০১ যাত্রীরা সুস্থ আছেন। গতকাল পর্যন্ত বিমানবন্দরসহ স্থল ও নৌ বন্দরে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৯৩ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা (থার্মাল স্ক্যান) করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৫২১ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।

শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধে ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোবেন (অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবৎ)। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না, ইতোমধ্যে আক্রান্ত এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন, কাশি শিষ্টাচার মেনে চলুন (হাঁচি/কাশির সময় বাহু/টিস্যু/কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন), অসুস্থ পশু/পাখির সংস্পর্শ পরিহার করুন, মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খাবেন, অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করুন, জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত চীন ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন এবং প্রয়োজন ব্যতীত এ সময়ে বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করুন। অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করুন।