নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে

নিরাপত্তা ও নজরধারিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুক্ত হচ্ছে আরও একটি নতুন আর্মড পুলিশের ব্যাটালিয়ন। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই ব্যাটালিয়নের কাজ করার অনুমোদন দিয়েছে। খুব শীঘ্রই ১৬তম আর্মড পুলিশের এ ব্যাটালিয়নটি কার্যক্রম শুরু করবে। এর আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ১৪তম ব্যাটালিয়নের অনুমোদন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুটি ব্যাটালিয়ন এক সঙ্গে কাজ করবে। গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মায়ানমারের রাখাইনে সে দেশের সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয় প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা।

এসব রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের অন্তত ১০ হাজার একর বনখভূমি বরাদ্দ দেয় সরকার। তাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবাসহ মানবিক সাহায্য দিয়ে আসছে সরকার। এখনও এসব রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু, দীর্ঘদিন হওয়ার সুবাধে ওই ক্যাম্পগুলোতে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা একের পর এক নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ইয়াবা ও মাদকপাচার, মানবপাচার, সন্ত্রাস, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এসব অপরাধ দমনে ২০১৮ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় ১৪তম আর্মড পুলিশের ব্যাটালিয়নের অনুমোদন দেয়। ওই ব্যাটালিয়নের আওতায় ৩৫০ জন সদস্যসহ অন্তত ৯৫০ জন সদস্য কাজ করছে। নতুন আর্মড পুলিশের আরও একটি ব্যাটালিয়ন যুক্ত হওয়ার কথা জানিয়ে কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক নিরাপত্তা ও অপরাধ দমনে আর্মড পুলিশের নতুন ব্যাটালিয়নের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় আইনি সহায়তা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কুইক রেসপন্স টিম, বিশেষ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

তিনি জানান, ‘বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৪তম ব্যাটালিয়নের সদস্যসহ ৯৫০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কাজ করছে। এরমধ্যে আর্মড পুলিশের সদস্য ৩৫০ জন, জেলা পুলিশের সদস্য ২২৫ জন ও বিভিন্ন জেলা থেকে ২৭৫ জন পুলিশ সদস্য কাজ করছে। সম্প্রতি আরও একটি নতুন করে আর্মড পুলিশের ব্যাটালিয়ন অনুমোদন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়। এতে যুক্ত হচ্ছে আরও ৫ শতাধিক সদস্য। সব মিলিয়ে উখিয়া- টেকনাফের পুরো ক্যাম্পগুলোতে ব্যাপক নজরধারি ও নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন, ‘মায়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে এসে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়। এছাড়া আগে থেকেই বাংলাদেশে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং, থাইংখালী, বালুখালী, মধুরছড়া, পালংখালী, টেকনাফের নয়াপাড়া, উনচিপ্রাং, জাদিমোরা, দমদমিয়াসহ ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১১ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯ জন রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। এই রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বের হয়ে স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি মানব পাচারকারীদের শিকার হওয়ারও ঝুঁকি রয়েছে। যে কারণে তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা প্রয়োজন। এসব রোহিঙ্গাকে নিরাপত্তা দেয়া ও নজরদারি করা কক্সবাজার জেলা পুলিশের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। এ কারণে কক্সবাজার জেলার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্থাপন করা হয়েছে।

আরও খবর
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউশন আইন অনুমোদন
নজরদারিতে নজর নেই
দক্ষ কর্মী নিতে চায় কাতার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
শীতলক্ষ্যার পূর্ব পাড়ে ৩ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ
‘অদৃশ্য কারণে পাচার করা টাকা ফেরতের উদ্যোগ থেমে গেছে’
বাংলাদেশে কর্মরত চীনা নাগরিকদের ফিরতে নিষেধ করা হয়েছে চীনা রাষ্ট্রদূত
আইনি সেবা নিতে আসা নাগরিকদের সহযোগিতা করতে হবে
ছন্দ-কবিতা, গল্পে বইমেলা মাতাচ্ছেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা
রাজধানীতে ভাষা সংগ্রামীদের মিলনমেলা
জীবনানন্দ দাশ বাংলা কবিতার প্রধান পুরুষ
রেললাইনে দুই যুবকের লাশ
দিনে গার্মেন্ট কর্মী রাতে খুনি
খালেদার স্বাস্থ্যের অবস্থা খারাপ মুক্তি দিন রিজভী

মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৫ ফল্গুন ১৪২৬, ২৩ জমাদিউল সানি ১৪৪১

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে

নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে

জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার

নিরাপত্তা ও নজরধারিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুক্ত হচ্ছে আরও একটি নতুন আর্মড পুলিশের ব্যাটালিয়ন। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই ব্যাটালিয়নের কাজ করার অনুমোদন দিয়েছে। খুব শীঘ্রই ১৬তম আর্মড পুলিশের এ ব্যাটালিয়নটি কার্যক্রম শুরু করবে। এর আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ১৪তম ব্যাটালিয়নের অনুমোদন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুটি ব্যাটালিয়ন এক সঙ্গে কাজ করবে। গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মায়ানমারের রাখাইনে সে দেশের সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয় প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা।

এসব রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের অন্তত ১০ হাজার একর বনখভূমি বরাদ্দ দেয় সরকার। তাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবাসহ মানবিক সাহায্য দিয়ে আসছে সরকার। এখনও এসব রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু, দীর্ঘদিন হওয়ার সুবাধে ওই ক্যাম্পগুলোতে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা একের পর এক নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ইয়াবা ও মাদকপাচার, মানবপাচার, সন্ত্রাস, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এসব অপরাধ দমনে ২০১৮ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয় ১৪তম আর্মড পুলিশের ব্যাটালিয়নের অনুমোদন দেয়। ওই ব্যাটালিয়নের আওতায় ৩৫০ জন সদস্যসহ অন্তত ৯৫০ জন সদস্য কাজ করছে। নতুন আর্মড পুলিশের আরও একটি ব্যাটালিয়ন যুক্ত হওয়ার কথা জানিয়ে কক্সবাজার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক নিরাপত্তা ও অপরাধ দমনে আর্মড পুলিশের নতুন ব্যাটালিয়নের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় আইনি সহায়তা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কুইক রেসপন্স টিম, বিশেষ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

তিনি জানান, ‘বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৪তম ব্যাটালিয়নের সদস্যসহ ৯৫০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কাজ করছে। এরমধ্যে আর্মড পুলিশের সদস্য ৩৫০ জন, জেলা পুলিশের সদস্য ২২৫ জন ও বিভিন্ন জেলা থেকে ২৭৫ জন পুলিশ সদস্য কাজ করছে। সম্প্রতি আরও একটি নতুন করে আর্মড পুলিশের ব্যাটালিয়ন অনুমোদন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়। এতে যুক্ত হচ্ছে আরও ৫ শতাধিক সদস্য। সব মিলিয়ে উখিয়া- টেকনাফের পুরো ক্যাম্পগুলোতে ব্যাপক নজরধারি ও নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন, ‘মায়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে এসে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়। এছাড়া আগে থেকেই বাংলাদেশে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং, থাইংখালী, বালুখালী, মধুরছড়া, পালংখালী, টেকনাফের নয়াপাড়া, উনচিপ্রাং, জাদিমোরা, দমদমিয়াসহ ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১১ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯ জন রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। এই রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বের হয়ে স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি মানব পাচারকারীদের শিকার হওয়ারও ঝুঁকি রয়েছে। যে কারণে তাদের নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা প্রয়োজন। এসব রোহিঙ্গাকে নিরাপত্তা দেয়া ও নজরদারি করা কক্সবাজার জেলা পুলিশের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। এ কারণে কক্সবাজার জেলার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্থাপন করা হয়েছে।