সবজি বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই

শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম চললেও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি। প্রতিটি ফুলকপি-বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। অথচ শীতকালীন মৌসুমে প্রতিকেজি সবজি বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ টাকায়। অন্যদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে আমদানী রপ্তানির গতি শ্লথ হওয়ায় দাম বাড়তে শুরু করেছে রসুনের। গত এক মাসে রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

গতকাল কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, প্রতিটি ফুলকপি-বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতিটি দেশি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। গাজর ও শসা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। মুলা ৩০ টাকা, শালগম ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা ও সিমের বিচি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহে আমদানি করা পিয়াজের দাম বেড়েছে। আগে প্রতি কেজি চীনা পিয়াজ ৭০ টাকা এবং পাকিস্তান ও মায়ানমারের পিয়াজ ১০০ টাকা ছিল। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়ে চীনা পিয়াজ ১০০ টাকা ও আমদানি করা অন্য পিয়াজ ১১০ টাকা হয়েছে। দেশি পিয়াজ মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চীন নির্ভরতায় টালমাটাল দেশিয় রসুনের বাজার। করোনা ভাইরাসে বাণিজ্য স্থবিরতায় কেজিতে এই পণ্যের দাম বেড়েছে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এক মাস আগের ১৫০ টাকার রসুনের দাম এখন ২০০ টাকা। রাজধানীর শ্যামবাজারের আড়তগুলোতে চীনের রসুনের এখন সংকট। চীন থেকে আমদানির গতি কমায় ঘাটতি বাড়ছে। কারওয়ান বাজারের পাইকারী এবং খুচরা পর্যায়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে রসুন। দেশেই উৎপাদন হয় চাহিদার ৭০ ভাগ রসুন। কিন্তু ঘাটতির যোগান দিতে চীনের বাজারে নির্ভরশীল বাংলাদেশ। আমদানি করা রসুনের প্রায় শতভাগই আসে চীন থেকে। তাই চীনের সংকটে অস্থির রসুনের বাজার। কারওয়ান বাজারের একজন ব্যবসায়ী বলেন, চায়নার আদা-রসুনের দাম বাড়তি রয়েছে। দেশি রসুন বাজারে আসতে শুরু করেছে। এতে রসুনের দাম কিছুটা কমতে পারে।

গত সপ্তাহের মতো মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, কক মুরগি ১৮০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২১০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছ ১৮০ টাকা, কৈ মাছ ২০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০ টাকা, সরপুঁটি ২০০ টাকা, রুই মাছ ২৫০ টাকা, ছোট মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০ টাকা, পাঙ্গাশ মাছ ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও রাজধানীর খুচরা বাজারে চিনির দামও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরায় কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরেই চিনির পাইকারি দাম বাড়ছে। পাইকারিতে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) দাম বেড়েছে প্রায় ২৫০ টাকা। এ হিসাবে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়েছে। পাইকারিতে প্রতি বস্তা চিনি তিন হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ছে ৬৩ টাকা। খুচরায় ক্রেতাদের তা কিনতে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা গুনতে হচ্ছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়ছে চিনির দাম। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি চিনি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা ছিল। এখন তা বেড়ে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২০ , ৯ ফল্গুন ১৪২৬, ২৭ জমাদিউল সানি ১৪৪১

সবজি বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম চললেও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি। প্রতিটি ফুলকপি-বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। অথচ শীতকালীন মৌসুমে প্রতিকেজি সবজি বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ টাকায়। অন্যদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে আমদানী রপ্তানির গতি শ্লথ হওয়ায় দাম বাড়তে শুরু করেছে রসুনের। গত এক মাসে রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

গতকাল কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, প্রতিটি ফুলকপি-বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতিটি দেশি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। গাজর ও শসা বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। মুলা ৩০ টাকা, শালগম ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা ও সিমের বিচি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহে আমদানি করা পিয়াজের দাম বেড়েছে। আগে প্রতি কেজি চীনা পিয়াজ ৭০ টাকা এবং পাকিস্তান ও মায়ানমারের পিয়াজ ১০০ টাকা ছিল। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়ে চীনা পিয়াজ ১০০ টাকা ও আমদানি করা অন্য পিয়াজ ১১০ টাকা হয়েছে। দেশি পিয়াজ মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চীন নির্ভরতায় টালমাটাল দেশিয় রসুনের বাজার। করোনা ভাইরাসে বাণিজ্য স্থবিরতায় কেজিতে এই পণ্যের দাম বেড়েছে অন্তত ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এক মাস আগের ১৫০ টাকার রসুনের দাম এখন ২০০ টাকা। রাজধানীর শ্যামবাজারের আড়তগুলোতে চীনের রসুনের এখন সংকট। চীন থেকে আমদানির গতি কমায় ঘাটতি বাড়ছে। কারওয়ান বাজারের পাইকারী এবং খুচরা পর্যায়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে রসুন। দেশেই উৎপাদন হয় চাহিদার ৭০ ভাগ রসুন। কিন্তু ঘাটতির যোগান দিতে চীনের বাজারে নির্ভরশীল বাংলাদেশ। আমদানি করা রসুনের প্রায় শতভাগই আসে চীন থেকে। তাই চীনের সংকটে অস্থির রসুনের বাজার। কারওয়ান বাজারের একজন ব্যবসায়ী বলেন, চায়নার আদা-রসুনের দাম বাড়তি রয়েছে। দেশি রসুন বাজারে আসতে শুরু করেছে। এতে রসুনের দাম কিছুটা কমতে পারে।

গত সপ্তাহের মতো মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, কক মুরগি ১৮০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২১০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছ ১৮০ টাকা, কৈ মাছ ২০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০ টাকা, সরপুঁটি ২০০ টাকা, রুই মাছ ২৫০ টাকা, ছোট মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০ টাকা, পাঙ্গাশ মাছ ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও রাজধানীর খুচরা বাজারে চিনির দামও বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরায় কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরেই চিনির পাইকারি দাম বাড়ছে। পাইকারিতে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) দাম বেড়েছে প্রায় ২৫০ টাকা। এ হিসাবে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়েছে। পাইকারিতে প্রতি বস্তা চিনি তিন হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ছে ৬৩ টাকা। খুচরায় ক্রেতাদের তা কিনতে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা গুনতে হচ্ছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে বাড়ছে চিনির দাম। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি চিনি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা ছিল। এখন তা বেড়ে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।