প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেয়া ত্রাণ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে রাজধানীর বাড্ডায় দুস্থদের কাছ বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল একটি চক্র। চক্রটি টাকা নেয়ার পাশাপাশি ভোটার আইডি কার্ডও নিচ্ছিল। কিন্তু ত্রাণ তো দূরের কথা কোন সাহায্যই করেনি। শেষ পর্যন্ত অভিযোগ পেয়ে এমন একটি চক্রের ৬ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে বাড্ডা থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও নামের তালিকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

বাড্ডা থানার ওসি পারভেজ জানান, ছিন্নমূল মানুষকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেয়া ত্রাণ পাইয়ে দেয়ার আশ্বাসে গত ১৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাড্ডার দক্ষিণ আনন্দনগর এলাকায় জড়ো হয়ে একটি প্রতারক চক্র। চক্রটি সাধারণ মানুষদের কাছ হতে টাকা আদায় করছিল। এমন খবরের ভিত্তিতে বাড্ডা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. মনির হোসেন (৫২), কাউসার আহাম্মেদ (২৩), মো. রমজান হোসেন (২৫), সোবহান ফকির (২৯), মো. সজিব (২০) ও মো. জসিম (২৬)। এ সময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ হতে ১১ হাজার ৫ শত টাকাসহ ১১৫ জনের নামের তালিকার একটি খাতা এবং ছবি ও ভোটার আইডি কার্ড উদ্ধার হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, বাড্ডা, ভাটারা ও খিলক্ষেত থানা এলাকায় কিছু এলাকা রয়েছে যেগুলো উন্নত নয়। ওইসব এলাকায় নিম্ম আয়ের মানুষের বসবাস। এছাড়া গুলশান বিভাগে কিছু বস্তি এলাকা রয়েছে। এসব বস্তিগুলোতে নিম্ন আয়ের মানুষ, বিভিন্ন পেশার দিনমজুররা থাকেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে এখন সারাদেশই লকডাউন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সব কিছুই বন্ধ। মানুষ কোন কাজ করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে অনেক পরিবারে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। শুরুতেই পুলিশের পক্ষ থেকে গুলশান বিভাগের বিভিন্ন থানা এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জন প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও ত্রাণ বিতরণ হচ্ছে। এরপরও ত্রাণ পাইয়ে দেয়ার নামে একটি প্রতারক চক্র মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

ডিসি সুদীপ জানান, বাড্ডা এলাকায় এমন অভিযোগ পেয়ে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমন চক্র আরও অন্য কোন থানা এলাকায় সক্রিয় রয়েছে কিনা সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের পক্ষ থেকে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। এছাড়া পুলিশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকেও এ ধরনের প্রতারণা ঠেকাতে নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়েছে।